আধুনিকতা-ধর্মবোধ এবং আল-কুরআন- দ্বিতীয় পর্ব
ধর্ম যখন সততার কথা বলে
তখন শালীনতার কথাও বলে। কিন্তু মানুষ যখন কর্মে অসৎ হয়, তখন সে
চলাফেরায়ও হয় অশালীন। সৎ মানুষের জন্য শালীনতার পোশাকটি ধার করে আনতে হয়
না। কিন্তু যুগের প্রভাবে মানুষের সত্তা ও সভাবে পরিবর্তন ঘটেছে। আমরা
যুদ্ধে যুদ্ধে ক্ষত বিক্ষত পৃথিবীতে বাস করছি। সাম্যের কথা, সুন্দরের কথা
কবিতার কথা-কল্পনার কথা যেন এক ধরনের আত্মপ্রতারণার কথা বলে মনে হয়।
আধুনিকের কাছে দেহজ কামনা-বাসনার মধ্যেই জীবনের তৃপ্তি ও সমাপ্তি। ফলে
সমাজে এখন মহান কোন সুরের সাধক নেই। জেমস আর আইউব বাচ্চুর লাফালাফি দেখেই
আমরা সন্তুষ্ট।
মানুষের নান্দনিক তৃষ্ণার সীমা কত ছোট হয়ে গেছে, তা রাস্তার মোড়ে মোড়ে পর্নোগ্রাফির ভিডিও ক্লাবের চেহারা দেখলেই বোঝা যায়। হিন্দু সমাজে এখন একজন বিবেকানন্দ আর মুসলিম সমাজে একজন ইকবালের আগমন প্রায় অসম্ভব। যুগ তাদের প্রতিভাবে এখন আর কেয়ারই করবে না। ধর্মের দৃষ্টি থেকে যদি বিশ শতকের নামকরন করা হয় বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তাহলে হবে বিশ শতক ভন্ড পীরদের যুগ, যা এখনো ক্রমবর্ধমান গতিতে অব্যাহত আছে। এই ভন্ডদের উদ্ভবের অন্যতম কারণ, সাধারণ মানুষ্ নিরক্ষর, বিজ্ঞানকে প্রত্যাখ্যান করে ধর্মকে আকড়ে ধরেছে। আর ধর্মের যা কিছু কুসংস্কার, সেটাতে তাদের তীব্র আগ্রহ।
আধুনিকতা-সমকালীন চেতনার অন্য নাম; ধর্মবোধ-খৃষ্টিয় আধ্যাত্মিকতার সমার্থক এবং কোরআন একটি সর্বকালীন বিধানের উৎস। খৃষ্টান সভ্যতার সবচেয়ে বড় অবদান হল, আধুনিক জীবনের সব রকম পার্থিব সমস্যার সুরাহা করা এবং জীবনকে উপভোগ্য করার যান্ত্রিক পদ্ধতির আবিষ্কার। এ ক্ষেত্রে আধুনিক কালে কোরআন অনুসারীদের অবদান খুব ই কম। যদিও চতুর্দশ শতকে ইউরোপের জাগরনে আরবীয় বিজ্ঞানের অবদান অনস্বিকার্য। আমরা এখানে পাশ্চাত্যের দুটো বিষয় পাচ্ছি, এক-ধর্মবোধ যা ক্যাথলিক প্রোটেষ্টান্ট অর্থক্স চার্চ মিলে যে আধ্যাত্মিক ধর্মসাধনা। আর দুই নাম্বার হল আধুনিক জীবন সংস্কৃতি। এদুয়ের বিপরীতে কোরআন যা প্রাচ্য মুসলমানদের ইহকাল ও পরোকালের মুক্তির পথ নির্দেশক, সেটা কিভাবে কাজ করবে? তাসলিমা নাসরিন আধুনিক সমাজের উপযোগী করে কোরআনকে নতুনভাবে লেখার আহ্বান করায় এদেশের মুসল্লিদের আক্রমনের মুখে পালিয়ে গেছেন। আমি তার পক্ষে বলছি না, বরং তার দাবীটা উত্থাপনের মানসিকতাকে যাচাই করতে চাচ্ছি। তার মতে কোরআন মানুষকে এমন সব বিধি-বিধান মেনে চলার নির্দেশ দেয়, যা একজন আধুনিক মানুষের পক্ষে মেনে চলা সম্বব নয়, অতএব ঐ বিধান নতুন করে লেখা দরকার। আমার মনে হয় সে ধর্ম ও প্রগতির পার্থক্য বুঝতে পারে নি। কোরআন অপরিবর্তনীয় একথা জোরের সঙ্গে মিছিলকারী মাওলানারা বলবে এবং এর বিন্দুমাত্র পরিবর্তনকে তারা সহ্য করবে না। এটা স্বাভাবিক। কোরআন অপরিবর্তনীয়, একথা বলার চেয়ে যদি বরং বলা হয়, কেন কোরআন পরিবর্তন করতে হবে ? পরিবর্তন প্রত্যাশীদের পক্ষ থেকে তখন কোন সদুত্তর বা যুক্তি কি থাকবে যা কোরআনের আলোয় ব্যাখ্যা যোগ্য নয়? জরায়ুর স্বাধীনতা যে চাইল, তার ব্যাক্তিগত আকাঙ্খার সঙ্গে এ দেশের নারী সমাজ কি একমত হয়েছিল? না, একমত হবার প্রশ্ন উঠে না। কারণ জরায়ুর স্বাধীনতার দাবী কেবল মুসলিম সমাজের জন্য নয়, প্রাচীনকালের ধর্মহীন কোন সমাজেও ওটা নারীরা চায় নি। যেহেতু ওটা শুধু ব্যাভিচারের ক্ষেত্রই প্রসারিত করবে না-নারী ও পুরুষ সমন্বয়ে গঠিত মানব সমাজের মেরুদন্ডও ভেঙ্গে দিবে। ফলে প্রকৃতির বিধানের বিরুদ্ধে দাড়ালে কবেনো সমর্থন পাওয়া যায় না, নি:সঙ্গ থাকতে হয়। যে পাশ্চাত্য সমাজের অর্থনুকূল্যে সে এই মতবাদ প্রচার করছে, সেই পাশ্চাত্য সমাজ কি তার দাবী পুরনের জন্য পাশ্চাত্যে জরায়ুর স্বাধীনতা ঘোষনা করেছে? কনে নি। তারা সুকৌশলে মুসলিম সমাজকে অস্থিতিশীর করার জন্য তাকে অর্থ ও আশ্রয় দিয়ে ব্যাবহার করেছে মাত্র। সে যা চেয়েছিল তা হল প্রচার ও অর্থ। সে এই দুটোই পেয়েছে এবং প্রচার ও অর্থের বিস্তৃতির মাধে সে হারিয়ে গেছে। মানবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য তার একটিই রাস্তা খোলা আছে তা হল তওবা করে কোরআনের প্রতিটি অনুশাসন মেনে চলা।
যাই হোক আমরা বলছিলাম, খৃষ্টিয় আধ্যাত্মিকতা যার বিপরীত হল আধুনিকতা এই দুটোকে কোরআন কিভাবে সমন্বয় করছে সেটা আমাদের দেখবার বিষয়। একজন মানুষ আধুনিক হয়েও কীভাবে কট্টর মুসলমান হতে পারে সেটাই আমরা বিবেচনা করব। কারণ কথা উঠেছে, আধুনিকতা ও ইসলাম এক সঙ্গে চলতে পারে না। আমাদের এ কথা আগেই বিশ্বাস করে নিতে হবে, কালের সীমানা অতিক্রম করে কোরআন মানুষের দৈন্দিন জীবনের যে বিধি-বিধান দিয়েছে তা-কি কালগত প্রবনাতার দ্বারা খন্ডিত হচ্ছে ? প্রথমে জানতে হবে, কোরআন তার অনুসারীদের জন্য অবশ্য করণীয় কি কি কর্তব্য বিবেচনা করেছে।
১. খাঁটি বিশ্বাস, অদৃশ্য বিষয় যেমন, আল্লাহ, পরকাল, ফেরেস্তা, নবুওয়াত, শেষ বিচার, বেহশত-দোযখ
২. প্রার্থনা, নামায, প্রত্যহ পাঁচ বার
৩. সিয়াম, রোযা, বছরে একবার, ৩০ দিন
৪. যাকাত বা দারিদ্র কর
৫. হজ্জ্ব, সামর্থ্যবানদের কাবাঘর পরিদর্শন এবং প্রার্থনা
এই পাঁচটি বিধান পালন করার জন্য, প্রাচীন, মধ্য কিংবা আধুনিক- এর কোন যুগের প্রবনতাকে ইতিবাচক বা নেতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করার প্রয়োজন পড়ে না। যদি ঐ বিশ্বাসীর মন একটি বিষয়কে ভয় পায় যে, ইহকালের জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং পরোকালের জীবন চিরস্থায়ী। এবং আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবেই। আর যদি মানুষের মন এ ভেবে বসে থাকে যে ইহকালের জীবনই একমাত্র জীবন। তবে তার পক্ষে ধর্মের বিধান পালন করা সম্ভব নয়। যে জীবন কে অনুধাবন করা প্রথম নি:শংসয়ে বিশ্বাসের বিষয়, সেখানে নিরংকুষ বিশ্বাস স্থাপন ব্যাতিত অন্য কোন উপায়ে সেটা বোঝা যাবে না। আমরা একই চন্দ্র-সূর্য, গহ-নক্ষত্র তলে একটি পৃথিবীর পৃষ্টে দাড়িয়েই কেউ বিশ্বাস করছি আমাদের একজন সৃষ্টিকর্তা আছে, অন্যজন মনে করি করছি আমাদের কোন স্রষ্টা নেই। বিশ্বাসের পার্থক্যের জন্যই পার্থিব জীবনে যে সমাজ ও সভ্যতা কায়েম হয়েছে তার চরিত্র চেহারা সম্পূর্ণ আলাদা আলাদা। কোরআন মানুষের অর্ন্তগত এ অভিপ্রায় সম্পর্কে সম্যক অবগত বিধায়ই বলছে, 'তারা বলে, আমাদের এ পার্থিব জীবনই জীবন। আমাদের পুনরায় জীবিত করা হবে না" (সূরা আল-আনআম:২৯)
কিন্তু আল্লাহ পাক দৃঢ়তার সঙ্গেই ঘোষনা করেন-"পার্থিব জীবন ক্রীড়া কৌতুক ব্যাতিত আর কিছুই নয়। পরকালের আবাসই পরহেযগারদের জন্য শ্রেষ্ঠতর। তোমরা কি বুঝ না ? (সূরা আল-আনআম:৩২)
কোরআনের এই যে বক্তব্য, এটাকে বিশ্বাস করা এবং না করার উপর নির্ভর করছে ইসলামের অন্য সব বিধি-বিধান পালন করার ইচ্ছা বা অনিচ্ছা। সেজন্য আধুনিক কাল বা মধ্যযুগ কোন সমস্যা নয়। প্রাচীন কালেও সৃষ্টিকর্তাকে বেমালুম অস্বীকারকারী ছিল মধ্যযুগেও নাফরমান ছিল, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও আল্লাহর অস্তিত্ব সম্পর্কে সংশয় প্রকাশক লোকজনের অভাব হবে না। একজন আহমদ শরীফ যুগে যুগে আসবেন, সে জন্য কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু এজন্য হযরত মুহাম্মদ (স
কিংবা একজন ঈসা (আ
যুগে যুগে আসবেন না। ঠিক এ কথা মনে রেখে সকল মানুষকে কোরআন সমর্থিত যে
পাঁচটি মৌলিক প্রবিধান বিশ্বাসীদের ক্ষেত্রে অবশ্যপালনীয় বলে নির্ধারিত
হয়েছে, ঈমান, নামায, রোযা, যাকাত ও হ্জ্জ্ব এগুলো পরিপূর্ণভাবে পালন করা
সম্ভব, যে কোন কালে, যে কোন স্থানে বসে পালন করা যায়। ঈমান বা বিশ্বাস
ভয়ার্ত মানুষের মনের ব্যাপার। এটার জন্য অর্থ খরচ হয় না। নামায পাঁচ
ওয়াক্ত পড়া যায় একটু আন্তরিক হলে; এবং সফরকারীর জন্য নামাজের কিছু অংশ
কমিয়ে পড়ার বিধান রয়েছে যাতে সে পেরেশান না হয়। রোযার একমাস, দিনের
বেলায় পানাহার বন্ধ রাখা কেবল পেটকে কষ্ট দেয় না, বরং দেহের অন্য সব
Organ গুলোকে শক্তিশালী করা যায়। মারাত্মক অসুখ রোধ করার উপায় হল রোযা।
এরপর আসুন যাকাত প্রসঙ্গে। নিজের এবং পরিজনের নুন্যতম প্রয়োজন মিটিয়ে
বর্ধিত অংশের কিছুটা এতীম মিসকীন; দরিদ্র নিকটাত্মিয়দের দান করার বিষয়টা
কতনা মানবিক এবং মহৎ কাজ তা কি ভেবে দেখার মত নয়? ইসলামের সকল বিধানের
মধ্যে আর্থিক প্রশ্নজড়িত যাকাতই হল সবচেয়ে সুন্দর। অত:পর হজ্জ্বের কথা
যদি বলা হয়, তাহলে আমরা দেখব, পরিবার পরিজনের ভরণ পোষন রেখে, মক্কার কা'বা
ঘর পর্যন্ত যাতায়াত খরচ নির্বাহের সমর্থ্যবান ব্যাক্তির জন্যই কেবল
হজ্জ্ব এর বিধান পালনীয়। তাহলে বলুন, ইসলামের এই পাঁচচি বিধান পালন করতে
গিয়ে কাদের জন্য সমস্যা হচ্ছে ? সেই লোকের জন্য ইসলাম পালন অতীব কঠিন যে
মন থেকে ধরেই নিয়েছে, পার্থিব জীবনের সুখ শান্তিই একমাত্র উপভোগ্য বিষয়, এ
জীবনের আর কোন ঠিকানা নেই। সে কিন্তু শহরে একটি বাড়ি করার পর আর একটি
বাড়ির সন্ধানে লিপ্ত। তার স্ত্রী পুত্র পরিজন তার অবৈধ অর্থকড়ি অশালীন
ভোগলালসার মধ্যে উড়িয়ে শেষ করছে। এটা সেই প্রাচীন কালেও করেছে, মধ্যযুগেও
করেছে, এখনো করছে। সবচেয়ে বড় কথা হল, ধন সম্পদ স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততী-
মানবজীবনে এ পার্থিব অধ্যায়ের অলংকার স্বরূপ; একটি মেয়ের একশ ভরি স্বর্ণ
থাকলে সে আরো একশ ভরি চেয়ে বসবে। সারা দুনিয়ার অধিকারী হলেও মানুষের
আকাংক্ষা নিবৃত হবে না। এটা ফেরাউন, সাদ্দাক, কারুন ও নমরুদ- এর যেমন ধ্বংস
না হওয়া পর্যন্ত চাওয়া পাওয়ার শেষ হয়নি, তেমনি বর্তমান কালেও অনেক
ধর্মীর আকাঙ্খায় ছেদ পড়ছে না।
আধুনিককাল কিছু বিষয় মানুষের মন মনোযোগকে ব্যাস্ত রাখছে; আর তা হর-বিলাস সামগ্রী। জীবনকে উপভোগ্য করার জন্য, সহজ করার জন্য, আধুনিক বিজ্ঞান যে বস্তুসামগ্রী নির্মান করেছে জীবনটা কিন্তু সে কারনে অনেক সহজ হয়েছে। আর এ সহজতা ধর্মের প্রতি এক ধরনের অবজ্ঞার জন্ম দিয়েছে। কিন্তু আধুনিককালে ধর্মীয় জ্ঞানবুদ্ধিতে মানুষের মধ্যে দেউলিযাত্ব আসার কারণ কি? বিশ শতকে দুদুটো মহাযুদ্ধ হয়ে গেল, তারপরও মানুষের জন্য কি একজন স্রষ্টার প্রয়োজন নেই ? সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব কি টের পায় শুধু দুস্থ পঙ্গু নিরাশ্রয় ছিন্নমূল এতীম মিসকিন ও হাসপাতালের রোগীরা ? আধুনিককালে মানুষ যুক্তির বাটখাড়ায় মেপে নিতে চায় তার সকল প্রত্যাশা। আর সে কারনে নি:শর্ত বিশ্বাসের জায়গা তাদের অন্তরে নেই, কোরআন যা স্বত:স্ফূর্তভাবে আশা করে।
মানুষর মন থেকে সে ভয় দূর হয়ে গেছে যা তাকে ধর্মের দিকে চালিত করত। বিজ্ঞান মানুষকে শুধু বিলাস-উপকরণ দিয়েছে যে তাই নয়, বিজ্ঞান মানুষের মন থেকে অহেতুক অনেক ভয়ও দূর করে দিয়েছে। ফলে ধর্মের প্রতি মানুষের পূর্ববর্তী দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যপক পরিবর্তন ঘটেছে। পরিবর্তন স্বাভাবিক কিন্তু ধর্মের প্রতি সেটা যদি নেতিবাচক হয়, তাহলে সেখানেই আমাদের প্রশ্ন। ইউরোপে খৃষ্টিয় চার্চ এর বিরুদ্ধে দাড়িয়েছে বিজ্ঞান শিল্পকলা সহ সেখানকার মানুষের সব ধরনের মানবিক কর্মপ্রয়াস। সেকারনে সেটাকে বলা হয় রেনেসাঁস। কিন্তু ইসলাম, এমন এক বিধান যার বিরুদ্ধে দাড়ানোর কোন প্রয়োজন জনগনের হবে না। কারণ, কোরআন অবিকৃত ঐশী বানী, যা মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান সবিস্তারে আলোচনা করেছে। বরং কোরআন ও হাদীস সম্পর্কে অজ্ঞতার কারনে মুসলমানরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে।
আধুনিকতা মানুষের মধ্যে যে নি:সঙ্গতা, অনিকেত যন্ত্রনা, হতাশা ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে তা থেকে আশুমুক্তির উপায় কেবল কোরআন ও হাদীসের ভিতর পাওয়া সম্ভব। আমরা একটি কথা কিন্তু আগেই বলেছি, তাহল জীবনকে দেখবার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। আমরা আধুনিককালে নারী স্বধিনতার ব্যাপারে পাশ্চাত্যের কাছ থেকে অনেক উপদেশ শুনছি; কিন্তু কোরআন নারীদের প্রতি সহনশীল, যুক্তিসংগত ব্যবহার করার নির্দেশ চৌদ্দশত বছর আগেই দিয়ে রেখেছে। পাশ্চাত্যের নারী পন্যের উপকরণ, বানজ্যিক স্বার্থে, পর্যটন বৃদ্ধির জন্য যথেচ্ছা ব্যবহৃত হয়, কিন্তু মুসলিম সমাজে নারীরা পণ্য নয়, পণ্যের উপকরণ তো নয়ই। তবে, পাশ্চাত্যের দেখাদেখি মুসলিম দেশগুলোতে নারীকে পণ্যের পর্যয়ে নামিয়ে আনা হচ্ছে। কোরআন যে বিষয়গুলো সমুন্নত রেখেছে, পশ্চিমাদের প্রভাবে মুসলমানরা সেগুলো যদি ধরে রাখতে না পারে, তাহলে মুসলিম সমাজ ব্যাবস্থা ধবংস হয়ে যাবে। দশম শতকে গ্রীক দর্শনের যথেচ্ছা ব্যবহার ও অনুসরনের জন্য ইসলামী জীবনদর্শনে অনেক ভুল তত্ত্ব ও মতবাদ মিশে আছ, যা তৎকালীন মুসলিম বুদ্ধিজীবী সমাজকে পঙ্গু করে দিয়েছিল। আর সে অবস্থা থেকে ইমাম গাযালী ইসলামকে তুলে আনেন। আজকে আমরা আধুনিকতার নামে মুসলিম দেশগুলোতে যে অপসংস্কৃতির চর্চা দেখছি, তা প্রতিরোধ করা মুসলিম জনগনের ঈমানী দায়িত্ব। আবার আধুনিক জীবনের প্রগতিশীল চিন্তাকে ইসলাম প্রেমী জনগোষ্ঠীকে অবশ্যই সতর্কতার সঙ্গে সমর্থন জানাতে হবে। জীবনের প্রগতি মানে ছবি সিনেমায় নারীর বেলাল্লাপনাকে উপভোগ করা নয়, পর্যটন বৃদ্ধির জন্য মদও নারীকে পর্যটকদের কাছে সহজলভ্য করে দেয়া নয়; সাহিত্যে-শিল্পে যৌনতার চর্চা করা নয়, প্রগতি মানে জীবনাচারে সততা, মানুষের প্রতি প্রেম এবং স্রষ্টার প্রতি নি:শ্বর্ত আনুগত্য। "যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে তাদের জন্য কোন ভয় নেই। আল্লাহ ক্ষমাশীর, দয়ালু" (আল-কোরআন)।
মানুষের নান্দনিক তৃষ্ণার সীমা কত ছোট হয়ে গেছে, তা রাস্তার মোড়ে মোড়ে পর্নোগ্রাফির ভিডিও ক্লাবের চেহারা দেখলেই বোঝা যায়। হিন্দু সমাজে এখন একজন বিবেকানন্দ আর মুসলিম সমাজে একজন ইকবালের আগমন প্রায় অসম্ভব। যুগ তাদের প্রতিভাবে এখন আর কেয়ারই করবে না। ধর্মের দৃষ্টি থেকে যদি বিশ শতকের নামকরন করা হয় বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তাহলে হবে বিশ শতক ভন্ড পীরদের যুগ, যা এখনো ক্রমবর্ধমান গতিতে অব্যাহত আছে। এই ভন্ডদের উদ্ভবের অন্যতম কারণ, সাধারণ মানুষ্ নিরক্ষর, বিজ্ঞানকে প্রত্যাখ্যান করে ধর্মকে আকড়ে ধরেছে। আর ধর্মের যা কিছু কুসংস্কার, সেটাতে তাদের তীব্র আগ্রহ।
আধুনিকতা-সমকালীন চেতনার অন্য নাম; ধর্মবোধ-খৃষ্টিয় আধ্যাত্মিকতার সমার্থক এবং কোরআন একটি সর্বকালীন বিধানের উৎস। খৃষ্টান সভ্যতার সবচেয়ে বড় অবদান হল, আধুনিক জীবনের সব রকম পার্থিব সমস্যার সুরাহা করা এবং জীবনকে উপভোগ্য করার যান্ত্রিক পদ্ধতির আবিষ্কার। এ ক্ষেত্রে আধুনিক কালে কোরআন অনুসারীদের অবদান খুব ই কম। যদিও চতুর্দশ শতকে ইউরোপের জাগরনে আরবীয় বিজ্ঞানের অবদান অনস্বিকার্য। আমরা এখানে পাশ্চাত্যের দুটো বিষয় পাচ্ছি, এক-ধর্মবোধ যা ক্যাথলিক প্রোটেষ্টান্ট অর্থক্স চার্চ মিলে যে আধ্যাত্মিক ধর্মসাধনা। আর দুই নাম্বার হল আধুনিক জীবন সংস্কৃতি। এদুয়ের বিপরীতে কোরআন যা প্রাচ্য মুসলমানদের ইহকাল ও পরোকালের মুক্তির পথ নির্দেশক, সেটা কিভাবে কাজ করবে? তাসলিমা নাসরিন আধুনিক সমাজের উপযোগী করে কোরআনকে নতুনভাবে লেখার আহ্বান করায় এদেশের মুসল্লিদের আক্রমনের মুখে পালিয়ে গেছেন। আমি তার পক্ষে বলছি না, বরং তার দাবীটা উত্থাপনের মানসিকতাকে যাচাই করতে চাচ্ছি। তার মতে কোরআন মানুষকে এমন সব বিধি-বিধান মেনে চলার নির্দেশ দেয়, যা একজন আধুনিক মানুষের পক্ষে মেনে চলা সম্বব নয়, অতএব ঐ বিধান নতুন করে লেখা দরকার। আমার মনে হয় সে ধর্ম ও প্রগতির পার্থক্য বুঝতে পারে নি। কোরআন অপরিবর্তনীয় একথা জোরের সঙ্গে মিছিলকারী মাওলানারা বলবে এবং এর বিন্দুমাত্র পরিবর্তনকে তারা সহ্য করবে না। এটা স্বাভাবিক। কোরআন অপরিবর্তনীয়, একথা বলার চেয়ে যদি বরং বলা হয়, কেন কোরআন পরিবর্তন করতে হবে ? পরিবর্তন প্রত্যাশীদের পক্ষ থেকে তখন কোন সদুত্তর বা যুক্তি কি থাকবে যা কোরআনের আলোয় ব্যাখ্যা যোগ্য নয়? জরায়ুর স্বাধীনতা যে চাইল, তার ব্যাক্তিগত আকাঙ্খার সঙ্গে এ দেশের নারী সমাজ কি একমত হয়েছিল? না, একমত হবার প্রশ্ন উঠে না। কারণ জরায়ুর স্বাধীনতার দাবী কেবল মুসলিম সমাজের জন্য নয়, প্রাচীনকালের ধর্মহীন কোন সমাজেও ওটা নারীরা চায় নি। যেহেতু ওটা শুধু ব্যাভিচারের ক্ষেত্রই প্রসারিত করবে না-নারী ও পুরুষ সমন্বয়ে গঠিত মানব সমাজের মেরুদন্ডও ভেঙ্গে দিবে। ফলে প্রকৃতির বিধানের বিরুদ্ধে দাড়ালে কবেনো সমর্থন পাওয়া যায় না, নি:সঙ্গ থাকতে হয়। যে পাশ্চাত্য সমাজের অর্থনুকূল্যে সে এই মতবাদ প্রচার করছে, সেই পাশ্চাত্য সমাজ কি তার দাবী পুরনের জন্য পাশ্চাত্যে জরায়ুর স্বাধীনতা ঘোষনা করেছে? কনে নি। তারা সুকৌশলে মুসলিম সমাজকে অস্থিতিশীর করার জন্য তাকে অর্থ ও আশ্রয় দিয়ে ব্যাবহার করেছে মাত্র। সে যা চেয়েছিল তা হল প্রচার ও অর্থ। সে এই দুটোই পেয়েছে এবং প্রচার ও অর্থের বিস্তৃতির মাধে সে হারিয়ে গেছে। মানবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য তার একটিই রাস্তা খোলা আছে তা হল তওবা করে কোরআনের প্রতিটি অনুশাসন মেনে চলা।
যাই হোক আমরা বলছিলাম, খৃষ্টিয় আধ্যাত্মিকতা যার বিপরীত হল আধুনিকতা এই দুটোকে কোরআন কিভাবে সমন্বয় করছে সেটা আমাদের দেখবার বিষয়। একজন মানুষ আধুনিক হয়েও কীভাবে কট্টর মুসলমান হতে পারে সেটাই আমরা বিবেচনা করব। কারণ কথা উঠেছে, আধুনিকতা ও ইসলাম এক সঙ্গে চলতে পারে না। আমাদের এ কথা আগেই বিশ্বাস করে নিতে হবে, কালের সীমানা অতিক্রম করে কোরআন মানুষের দৈন্দিন জীবনের যে বিধি-বিধান দিয়েছে তা-কি কালগত প্রবনাতার দ্বারা খন্ডিত হচ্ছে ? প্রথমে জানতে হবে, কোরআন তার অনুসারীদের জন্য অবশ্য করণীয় কি কি কর্তব্য বিবেচনা করেছে।
১. খাঁটি বিশ্বাস, অদৃশ্য বিষয় যেমন, আল্লাহ, পরকাল, ফেরেস্তা, নবুওয়াত, শেষ বিচার, বেহশত-দোযখ
২. প্রার্থনা, নামায, প্রত্যহ পাঁচ বার
৩. সিয়াম, রোযা, বছরে একবার, ৩০ দিন
৪. যাকাত বা দারিদ্র কর
৫. হজ্জ্ব, সামর্থ্যবানদের কাবাঘর পরিদর্শন এবং প্রার্থনা
এই পাঁচটি বিধান পালন করার জন্য, প্রাচীন, মধ্য কিংবা আধুনিক- এর কোন যুগের প্রবনতাকে ইতিবাচক বা নেতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করার প্রয়োজন পড়ে না। যদি ঐ বিশ্বাসীর মন একটি বিষয়কে ভয় পায় যে, ইহকালের জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং পরোকালের জীবন চিরস্থায়ী। এবং আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবেই। আর যদি মানুষের মন এ ভেবে বসে থাকে যে ইহকালের জীবনই একমাত্র জীবন। তবে তার পক্ষে ধর্মের বিধান পালন করা সম্ভব নয়। যে জীবন কে অনুধাবন করা প্রথম নি:শংসয়ে বিশ্বাসের বিষয়, সেখানে নিরংকুষ বিশ্বাস স্থাপন ব্যাতিত অন্য কোন উপায়ে সেটা বোঝা যাবে না। আমরা একই চন্দ্র-সূর্য, গহ-নক্ষত্র তলে একটি পৃথিবীর পৃষ্টে দাড়িয়েই কেউ বিশ্বাস করছি আমাদের একজন সৃষ্টিকর্তা আছে, অন্যজন মনে করি করছি আমাদের কোন স্রষ্টা নেই। বিশ্বাসের পার্থক্যের জন্যই পার্থিব জীবনে যে সমাজ ও সভ্যতা কায়েম হয়েছে তার চরিত্র চেহারা সম্পূর্ণ আলাদা আলাদা। কোরআন মানুষের অর্ন্তগত এ অভিপ্রায় সম্পর্কে সম্যক অবগত বিধায়ই বলছে, 'তারা বলে, আমাদের এ পার্থিব জীবনই জীবন। আমাদের পুনরায় জীবিত করা হবে না" (সূরা আল-আনআম:২৯)
কিন্তু আল্লাহ পাক দৃঢ়তার সঙ্গেই ঘোষনা করেন-"পার্থিব জীবন ক্রীড়া কৌতুক ব্যাতিত আর কিছুই নয়। পরকালের আবাসই পরহেযগারদের জন্য শ্রেষ্ঠতর। তোমরা কি বুঝ না ? (সূরা আল-আনআম:৩২)
কোরআনের এই যে বক্তব্য, এটাকে বিশ্বাস করা এবং না করার উপর নির্ভর করছে ইসলামের অন্য সব বিধি-বিধান পালন করার ইচ্ছা বা অনিচ্ছা। সেজন্য আধুনিক কাল বা মধ্যযুগ কোন সমস্যা নয়। প্রাচীন কালেও সৃষ্টিকর্তাকে বেমালুম অস্বীকারকারী ছিল মধ্যযুগেও নাফরমান ছিল, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও আল্লাহর অস্তিত্ব সম্পর্কে সংশয় প্রকাশক লোকজনের অভাব হবে না। একজন আহমদ শরীফ যুগে যুগে আসবেন, সে জন্য কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু এজন্য হযরত মুহাম্মদ (স


আধুনিককাল কিছু বিষয় মানুষের মন মনোযোগকে ব্যাস্ত রাখছে; আর তা হর-বিলাস সামগ্রী। জীবনকে উপভোগ্য করার জন্য, সহজ করার জন্য, আধুনিক বিজ্ঞান যে বস্তুসামগ্রী নির্মান করেছে জীবনটা কিন্তু সে কারনে অনেক সহজ হয়েছে। আর এ সহজতা ধর্মের প্রতি এক ধরনের অবজ্ঞার জন্ম দিয়েছে। কিন্তু আধুনিককালে ধর্মীয় জ্ঞানবুদ্ধিতে মানুষের মধ্যে দেউলিযাত্ব আসার কারণ কি? বিশ শতকে দুদুটো মহাযুদ্ধ হয়ে গেল, তারপরও মানুষের জন্য কি একজন স্রষ্টার প্রয়োজন নেই ? সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব কি টের পায় শুধু দুস্থ পঙ্গু নিরাশ্রয় ছিন্নমূল এতীম মিসকিন ও হাসপাতালের রোগীরা ? আধুনিককালে মানুষ যুক্তির বাটখাড়ায় মেপে নিতে চায় তার সকল প্রত্যাশা। আর সে কারনে নি:শর্ত বিশ্বাসের জায়গা তাদের অন্তরে নেই, কোরআন যা স্বত:স্ফূর্তভাবে আশা করে।
মানুষর মন থেকে সে ভয় দূর হয়ে গেছে যা তাকে ধর্মের দিকে চালিত করত। বিজ্ঞান মানুষকে শুধু বিলাস-উপকরণ দিয়েছে যে তাই নয়, বিজ্ঞান মানুষের মন থেকে অহেতুক অনেক ভয়ও দূর করে দিয়েছে। ফলে ধর্মের প্রতি মানুষের পূর্ববর্তী দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যপক পরিবর্তন ঘটেছে। পরিবর্তন স্বাভাবিক কিন্তু ধর্মের প্রতি সেটা যদি নেতিবাচক হয়, তাহলে সেখানেই আমাদের প্রশ্ন। ইউরোপে খৃষ্টিয় চার্চ এর বিরুদ্ধে দাড়িয়েছে বিজ্ঞান শিল্পকলা সহ সেখানকার মানুষের সব ধরনের মানবিক কর্মপ্রয়াস। সেকারনে সেটাকে বলা হয় রেনেসাঁস। কিন্তু ইসলাম, এমন এক বিধান যার বিরুদ্ধে দাড়ানোর কোন প্রয়োজন জনগনের হবে না। কারণ, কোরআন অবিকৃত ঐশী বানী, যা মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান সবিস্তারে আলোচনা করেছে। বরং কোরআন ও হাদীস সম্পর্কে অজ্ঞতার কারনে মুসলমানরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে।
আধুনিকতা মানুষের মধ্যে যে নি:সঙ্গতা, অনিকেত যন্ত্রনা, হতাশা ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে তা থেকে আশুমুক্তির উপায় কেবল কোরআন ও হাদীসের ভিতর পাওয়া সম্ভব। আমরা একটি কথা কিন্তু আগেই বলেছি, তাহল জীবনকে দেখবার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। আমরা আধুনিককালে নারী স্বধিনতার ব্যাপারে পাশ্চাত্যের কাছ থেকে অনেক উপদেশ শুনছি; কিন্তু কোরআন নারীদের প্রতি সহনশীল, যুক্তিসংগত ব্যবহার করার নির্দেশ চৌদ্দশত বছর আগেই দিয়ে রেখেছে। পাশ্চাত্যের নারী পন্যের উপকরণ, বানজ্যিক স্বার্থে, পর্যটন বৃদ্ধির জন্য যথেচ্ছা ব্যবহৃত হয়, কিন্তু মুসলিম সমাজে নারীরা পণ্য নয়, পণ্যের উপকরণ তো নয়ই। তবে, পাশ্চাত্যের দেখাদেখি মুসলিম দেশগুলোতে নারীকে পণ্যের পর্যয়ে নামিয়ে আনা হচ্ছে। কোরআন যে বিষয়গুলো সমুন্নত রেখেছে, পশ্চিমাদের প্রভাবে মুসলমানরা সেগুলো যদি ধরে রাখতে না পারে, তাহলে মুসলিম সমাজ ব্যাবস্থা ধবংস হয়ে যাবে। দশম শতকে গ্রীক দর্শনের যথেচ্ছা ব্যবহার ও অনুসরনের জন্য ইসলামী জীবনদর্শনে অনেক ভুল তত্ত্ব ও মতবাদ মিশে আছ, যা তৎকালীন মুসলিম বুদ্ধিজীবী সমাজকে পঙ্গু করে দিয়েছিল। আর সে অবস্থা থেকে ইমাম গাযালী ইসলামকে তুলে আনেন। আজকে আমরা আধুনিকতার নামে মুসলিম দেশগুলোতে যে অপসংস্কৃতির চর্চা দেখছি, তা প্রতিরোধ করা মুসলিম জনগনের ঈমানী দায়িত্ব। আবার আধুনিক জীবনের প্রগতিশীল চিন্তাকে ইসলাম প্রেমী জনগোষ্ঠীকে অবশ্যই সতর্কতার সঙ্গে সমর্থন জানাতে হবে। জীবনের প্রগতি মানে ছবি সিনেমায় নারীর বেলাল্লাপনাকে উপভোগ করা নয়, পর্যটন বৃদ্ধির জন্য মদও নারীকে পর্যটকদের কাছে সহজলভ্য করে দেয়া নয়; সাহিত্যে-শিল্পে যৌনতার চর্চা করা নয়, প্রগতি মানে জীবনাচারে সততা, মানুষের প্রতি প্রেম এবং স্রষ্টার প্রতি নি:শ্বর্ত আনুগত্য। "যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে তাদের জন্য কোন ভয় নেই। আল্লাহ ক্ষমাশীর, দয়ালু" (আল-কোরআন)।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন