নূর মানে কি নূরের তৈরী? কুরআনের আয়াত দ্বারা নুরের ব্যাখ্যা
নূর (نُور) শব্দটি (ن و ر) ধাতু থেকে এসেছে। যার অর্থ আলো, আলোক,
উজ্জ্বলতা, কিরণ, জ্যোতি, প্রদীপ, বাতি এবং এর (form IV active participle)
হল مُنِير(মনির) যার অর্থ আলো দানকারী, আলোকময়, আলোকপ্রদ, দীপ্তমান,
উজ্জল।
অনেক বাতিলপন্থী বলে থাকে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নুরের তৈরী। এই জন্য তারা কুরআনের একটি আয়াত ও একটি জাল হাদীস পেশ করে থাকে।
اَوَّلُ مَا خَلَقَ اللهُ نُوْرِى ‘আল্লাহ সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন’ বলে যে হাদীছ তারা বলে, তা মওযূ বা জাল
(সিলসিলা ছহীহাহ হা/৪৫৮-এর আলোচনা দ্রঃ)।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নূরের তৈরী ছিলেন না। আল্লাহ বলেন- قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ (হে নবী) তুমি বলে দাও, আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। ১৮/১১০, ৪১/৬
✔✔
>>> বাতিলপন্থীরা যে আয়াত দিয়ে নুরের তৈরী বলে <<<
قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُبِينٌ
নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ হতে একটি উজ্জল নূর (জ্যোতি) ও একটি স্পষ্ট কিতাব এসেছে। আল-মায়িদাহ, ৫/১৫
বাতিলপন্থীরা বলে, “আল্লাহর পক্ষ থেকে নূর এসেছে এবং স্পষ্ট কিতাব এসেছে। উক্ত নূর দ্বারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে নূরের তৈরি সে কথা বুঝানো হয়েছে”।
তাদের এই দাবী, মিথ্যা ও বাতিল। এই নূর দ্বারা কি বুঝা যায় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নূরের তৈরি? এই নুরের ব্যাখ্যা পরের আয়াতে আল্লাহ উল্লেখ করেছেন। পরের আয়াতে আল্লাহ বলেন-
يَهْدِي بِهِ اللَّهُ مَنِ اتَّبَعَ رِضْوَانَهُ سُبُلَ السَّلامِ وَيُخْرِجُهُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ بِإِذْنِهِ وَيَهْدِيهِمْ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
তা দিয়ে আল্লাহ তাদেরকে শান্তির পথে পরিচালিত করেন, যারা তাঁর সন্তুষ্টির অম্বেষণ করে এবং তাঁর অনুমতিতে তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করেন আর তাদেরকে সরল-সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করেন। আল-মায়িদাহ, ৫/১৬
অর্থাৎ যে ব্যক্তি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ও কুরআনকে অনুসরণ করবে সে ব্যক্তি সিরাতুল মোস্তাকিমের দিকে তথা সহজ-সরল পথের দিকে হেদায়াত পাবে। অন্যত্র আল্লাহ বলেন-
الر كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ لِتُخْرِجَ النَّاسَ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ بِإِذْنِ رَبِّهِمْ إِلَى صِرَاطِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ
আলিফ-লাম-রা; এই কিতাব, যা তোমার প্রতি আমি অবতীর্ণ করেছি, যাতে তুমি মানুষকে তাদের রবের অনুমতিক্রমে অন্ধকার থেকে নিয়ে আসতে পারো আলোর (নূরের) দিকে- মহাপরাক্রমশালী, প্রশংসিত আল্লাহর পথে। ইবরাহীম, ১৪/১
هُوَ الَّذِي يُنَزِّلُ عَلَى عَبْدِهِ آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ لِيُخْرِجَكُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَإِنَّ اللَّهَ بِكُمْ لَرَءُوفٌ رَحِيمٌ
তিনিই তাঁর বান্দার প্রতি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ অবতীর্ণ করেন, যাতে তিনি তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর (নূরের) দিকে বের করে আনতে পারেন আর নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি অতিশয় দয়ালু, পরম করুণাময়। আল-হাদিদ, ৫৭/৯
هُوَ الَّذِي يُصَلِّي عَلَيْكُمْ وَمَلائِكَتُهُ لِيُخْرِجَكُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَكَانَ بِالْمُؤْمِنِينَ رَحِيمًا
তিনিই তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর ফেরেশতারা তোমাদের জন্য অনুগ্রহের প্রার্থনা করেন যেন তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর (নূরের) দিকে বের করে আনেন; আর তিনি মুমিনদের প্রতি পরম দয়ালু। আল-আহযাব, ৩৩/৪৩
رَسُولا يَتْلُو عَلَيْكُمْ آيَاتِ اللَّهِ مُبَيِّنَاتٍ لِيُخْرِجَ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَمَنْ يُؤْمِنْ بِاللَّهِ وَيَعْمَلْ صَالِحًا يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا قَدْ أَحْسَنَ اللَّهُ لَهُ رِزْقًا
একজন রাসূল, যিনি তোমাদের নিকট আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করেন; যেন যারা ঈমান আনে ও সৎকাজসমূহ করে, তাদেরকে অন্ধকার হতে বাহির করে আলোর (নূরের) দিকে নিয়ে আসতে পারেন; আর যে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে, তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হয়, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে; নিশ্চয় আল্লাহ তার জন্য উত্তম রিয্ক রেখেছেন। আত-তালাক, ৬৫/১১
وَالَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ أُولَئِكَ هُمُ الصِّدِّيقُونَ وَالشُّهَدَاءُ عِنْدَ رَبِّهِمْ لَهُمْ أَجْرُهُمْ وَنُورُهُمْ وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا أُولَئِكَ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ
আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলদের প্রতি ঈমান আনে, তারাই তাদের রবের নিকট সিদ্দীক ও শহীদ, তাদের জন্য রয়েছে তাদের প্রতিফল ও তাদের নূর আর যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে এবং মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, তারাই প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী। আল-হাদীদ, ৫৭/১৯
✔✔
>>> নূর দ্বারা পথ নির্দেশ বুঝিয়েছেন <<<
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَآمِنُوا بِرَسُولِهِ يُؤْتِكُمْ كِفْلَيْنِ مِنْ رَحْمَتِهِ وَيَجْعَلْ لَكُمْ نُورًا تَمْشُونَ بِهِ وَيَغْفِرْ لَكُمْ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ
হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর আর তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন, তিনি তাঁর রহমতে দ্বিগুণ পুরস্কার দিবেন, আর তোমাদেরকে নূর (জ্যোতি) দিবেন, যার সাহায্যে তোমরা পথ চলতে পারবে এবং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। হাদীদ, ৫৭/২৮
✔✔
>>> মুনাফিকরা নূর পাবে না <<<
يَوْمَ يَقُولُ الْمُنَافِقُونَ وَالْمُنَافِقَاتُ لِلَّذِينَ آمَنُوا انْظُرُونَا نَقْتَبِسْ مِنْ نُورِكُمْ قِيلَ ارْجِعُوا وَرَاءَكُمْ فَالْتَمِسُوا نُورًا فَضُرِبَ بَيْنَهُمْ بِسُورٍ لَهُ بَابٌ بَاطِنُهُ فِيهِ الرَّحْمَةُ وَظَاهِرُهُ مِنْ قِبَلِهِ الْعَذَابُ
সেদিন মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক নারীগণ মুমিনদেরকে বলবে, ‘তোমরা আমাদের জন্য অপেক্ষা কর, তোমাদের নূর থেকে আমরা একটু নিয়ে নেই’, তাদেরকে বলা হবে, ‘তোমরা তোমাদের পিছনে ফিরে যাও এবং নূরের সন্ধান কর,’ তারপর তাদের মাঝখানে একটি প্রাচীর স্থাপন করে দেয়া হবে, যাতে থাকবে একটি দরজা, তার ভিতরভাগে থাকবে রহমত এবং তার বহির্ভাগে থাকবে আযাব। হাদীদ, ৫৭/১৩
✔✔
>>> আল্লাহর নূরের উপমা <<<
اللَّهُ نُورُ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضِ مَثَلُ نُورِهِ كَمِشْكَاةٍ فِيهَا مِصْبَاحٌ الْمِصْبَاحُ فِي زُجَاجَةٍ الزُّجَاجَةُ كَأَنَّهَا كَوْكَبٌ دُرِّيٌّ يُوقَدُ مِنْ شَجَرَةٍ مُبَارَكَةٍ زَيْتُونَةٍ لا شَرْقِيَّةٍ وَلا غَرْبِيَّةٍ يَكَادُ زَيْتُهَا يُضِيءُ وَلَوْ لَمْ تَمْسَسْهُ نَارٌ نُورٌ عَلَى نُورٍ يَهْدِي اللَّهُ لِنُورِهِ مَنْ يَشَاءُ وَيَضْرِبُ اللَّهُ الأمْثَالَ لِلنَّاسِ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
আল্লাহ আসমানসমূহ ও যমীনের নূর, তাঁর নূরের উপমা একটি দীপাধার, যার মধ্যে আছে একটি প্রদীপ; প্রদীপটি একটি কাঁচের আবরণের মধ্যে স্থাপিত, কাঁচের আবরণটি যেন উজ্জ্বল নক্ষত্র; যা প্রজ্জ্বলিত করা হয় বরকতময় যাইতূন বৃক্ষের তেল দ্বারা যা পূর্ব দিকেরও নয় এবং পশ্চিম দিকেরও নয়, আগুন তাকে স্পর্শ না করলেও যেন তার তেল উজ্জ্বল আলো দিচ্ছে; নূরের উপর নূর, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাঁর নূরের দিকে পথ দেখান, আর আল্লাহ মানুষের জন্য উপমা পেশ করেন এবং আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ। আন-নূর, ২৪/৩৫
✔✔
>>> রবের নূরে উদ্ভাসিত হবে <<<
وَأَشْرَقَتِ الأرْضُ بِنُورِ رَبِّهَا وَوُضِعَ الْكِتَابُ وَجِيءَ بِالنَّبِيِّينَ وَالشُّهَدَاءِ وَقُضِيَ بَيْنَهُمْ بِالْحَقِّ وَهُمْ لا يُظْلَمُونَ
আর পৃথিবী তার রবের নূরে উদ্ভাসিত হবে আর আমলনামা পেশ করা হবে এবং নবীগণ ও সাক্ষীগণকে উপস্থিত করা হবে; সকলের মাঝে ন্যায়বিচার করা হবে আর তাদের প্রতি কোন যুলম করা হবে না। আয-যুমার, ৩৯/৬৯
✔✔
>>> নূর শব্দ দিয়ে আল্লাহ কুরআনকে বুঝিয়েছে <<<
يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَكُمْ بُرْهَانٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكُمْ نُورًا مُبِينًا فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَاعْتَصَمُوا بِهِ فَسَيُدْخِلُهُمْ فِي رَحْمَةٍ مِنْهُ وَفَضْلٍ وَيَهْدِيهِمْ إِلَيْهِ صِرَاطًا مُسْتَقِيمًا
হে মানবজাতি! অবশ্যই তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে দলিল প্রমাণ এসেছে আর আমি তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট নূর (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি। অতঃপর যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে এবং তাতে দৃঢ়তা অবলম্বন করে, ফলে শীঘ্রই তিনি তাদেরকে তাঁর রহমত ও অনুগ্রহের মধ্যে প্রবেশ করাবেন এবং তার সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করবেন। আন-নিসা, ৪/১৭৪-১৭৫
فَآمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَالنُّورِ الَّذِي أَنْزَلْنَا وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
কাজেই তোমরা ঈমান আনো আল্লাহ প্রতি ও তাঁর রাসূলের প্রতি আর সেই নূর (কুরআন)-এর প্রতি যা আমি নাযিল করেছি এবং তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ পুরোপুরি অবহিত। আত-তাগাবুন, ৬৪/৮
الَّذِينَ يَتَّبِعُونَ الرَّسُولَ النَّبِيَّ الأمِّيَّ الَّذِي يَجِدُونَهُ مَكْتُوبًا عِنْدَهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَالإنْجِيلِ يَأْمُرُهُمْ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَاهُمْ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ الطَّيِّبَاتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ الْخَبَائِثَ وَيَضَعُ عَنْهُمْ إِصْرَهُمْ وَالأغْلالَ الَّتِي كَانَتْ عَلَيْهِمْ فَالَّذِينَ آمَنُوا بِهِ وَعَزَّرُوهُ وَنَصَرُوهُ وَاتَّبَعُوا النُّورَ الَّذِي أُنْزِلَ مَعَهُ أُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
যারা অনুসরণ করে নিরক্ষর নবীকে, যা তারা উল্লেখ পায় তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইঞ্জীল কিতাবে লিখিত অবস্থায়, যে তাদেরকে সৎ কাজের নির্দেশ দেয় ও অন্যায় কাজের নিষেধ করে এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ বৈধ করে আর অপবিত্র বস্তুসমূহ অবৈধ করে আর তাদের উপর চাপানো বোঝা ও শৃংখল হতে তাদেরকে মুক্ত করে; সুতরাং যারা তার প্রতি ঈমান আনে, তাকে সম্মান করে, তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করে এবং তার সাথে যে নূর (কুরআন) নাযিল করা হয়েছে তার অনুসরণ করে, তারাই সফলকাম। আল-আ’রাফ, ৭/১৫৭
✔✔
>>> ঈমানকেও আল্লাহ নূর বলেছেন <<<
وَكَذَلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ رُوحًا مِنْ أَمْرِنَا مَا كُنْتَ تَدْرِي مَا الْكِتَابُ وَلا الإيمَانُ وَلَكِنْ جَعَلْنَاهُ نُورًا نَهْدِي بِهِ مَنْ نَشَاءُ مِنْ عِبَادِنَا وَإِنَّكَ لَتَهْدِي إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
আর এভাবে আমি তোমার প্রতি আমার নির্দেশ হতে ওহী পাঠিয়েছি রূহ (অর্থাৎ ওহী বা কুরআন); তুমি জানতে না কিতাব কি ও ঈমান কি? কিন্তু আমি একে করেছি নূর যার সাহায্যে আমি আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা সঠিক পথে পরিচালিত করি; তুমি অবশ্যই সঠিক সরল পথের দিকে নির্দেশ করছো। আশ-শুরা, ৪২/৫২
✔✔
>>> ঈমান কুফরীর অন্ধকার থেকে নূর অর্থাৎ আলোর দিকে নিয়ে আসে <<<
اللَّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُوا يُخْرِجُهُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَالَّذِينَ كَفَرُوا أَوْلِيَاؤُهُمُ الطَّاغُوتُ يُخْرِجُونَهُمْ مِنَ النُّورِ إِلَى الظُّلُمَاتِ أُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক, তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর (নূরের) দিকে, আর যারা কুফরী করে তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত, তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়; এরাই হলো জাহান্নামের অধিবাসী, তারা সেখানেই চিরকাল থাকবে। আল-বাক্বারা ২/২৫৭
✔✔
>>> ইসলামকেও আল্লাহ নূর বলেছেন <<<
أَفَمَنْ شَرَحَ اللَّهُ صَدْرَهُ لِلإسْلامِ فَهُوَ عَلَى نُورٍ مِنْ رَبِّهِ فَوَيْلٌ لِلْقَاسِيَةِ قُلُوبُهُمْ مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ أُولَئِكَ فِي ضَلالٍ مُبِينٍ
ইসলামের জন্য আল্লাহ যার বক্ষকে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন ফলে সে তার রবের পক্ষ থেকে নূরের উপর রয়েছে, সুতরাং ধ্বংস সেসব লোকদের জন্য, আল্লাহ স্মরণ থেকে যাদের অন্তর (হৃদয়) কঠিন হয়ে গেছে, এরাই সুস্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে। আয্-যুমার, ৩৯/২২
يُرِيدُونَ أَنْ يُطْفِئُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَيَأْبَى اللَّهُ إِلا أَنْ يُتِمَّ نُورَهُ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূর (অর্থাৎ ইসলামকে) নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নূর পরিপূর্ণ করা ছাড়া অন্য কিছুই হতে দিবেন না; যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে। আত-তাওবা, ৯/৩২
يُرِيدُونَ لِيُطْفِئُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূর (অর্থাৎ ইসলামকে) নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নূরকে পূর্ণতাদানকারী; যদিও কাফিরেরা তা অপছন্দ করে। আস-সাফ, ৬১/৮
✔✔
>>> ইঞ্জীলকে আল্লাহ নূর বলেছেন <<<
وَقَفَّيْنَا عَلَى آثَارِهِمْ بِعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ التَّوْرَاةِ وَآتَيْنَاهُ الإنْجِيلَ فِيهِ هُدًى وَنُورٌ وَمُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ التَّوْرَاةِ وَهُدًى وَمَوْعِظَةً لِلْمُتَّقِينَ
আর আমি তাদের পশ্চাতে মারইয়াম পুত্র ঈসাকে পাঠিয়েছিলাম তার সামনে তাওরাত কিতাবের যা কিছু ছিল তার সত্যায়নকারীরূপে এবং তাকে ইঞ্জীল দিয়েছিলাম, যাতে ছিল হিদায়াত ও নূর এবং (তা ছিল) পূর্ববর্তী কিতাব তাওরাতের সত্যায়নকারী আর মুত্তাকীদের জন্য হেদায়াত ও উপদেশ। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৬
✔✔
>>> তাওরাতকে আল্লাহ নূর বলেছেন <<<
إِنَّا أَنْزَلْنَا التَّوْرَاةَ فِيهَا هُدًى وَنُورٌ يَحْكُمُ بِهَا النَّبِيُّونَ الَّذِينَ أَسْلَمُوا لِلَّذِينَ هَادُوا وَالرَّبَّانِيُّونَ وَالأحْبَارُ بِمَا اسْتُحْفِظُوا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ وَكَانُوا عَلَيْهِ شُهَدَاءَ فَلا تَخْشَوُا النَّاسَ وَاخْشَوْنِ وَلا تَشْتَرُوا بِآيَاتِي ثَمَنًا قَلِيلا وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ
নিশ্চয় আমি তাওরাত অবতীর্ণ করেছিলাম তাতে ছিল হিদায়াত ও নূর, আত্মসমর্পণকারী নবীগণ তা দিয়ে ইয়াহূদীদের জন্য ফয়সালা দিতেন, আর আল্লাহওয়ালাগণ এবং আলিমগণও (তা দিয়ে ফয়সালা দিতেন) কারণ তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের রক্ষক করা হয়েছিল এবং তারা ছিল এর উপর সাক্ষী; সুতরাং তোমরা মানুষকে ভয় করো না, আমাকে ভয় কর; আমার আয়াতকে নগণ্য মূল্যে বিক্রয় কর না আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে যারা ফায়সালা করে না, তারাই কাফের। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৪
وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ إِذْ قَالُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى بَشَرٍ مِنْ شَيْءٍ قُلْ مَنْ أَنْزَلَ الْكِتَابَ الَّذِي جَاءَ بِهِ مُوسَى نُورًا وَهُدًى لِلنَّاسِ تَجْعَلُونَهُ قَرَاطِيسَ تُبْدُونَهَا وَتُخْفُونَ كَثِيرًا وَعُلِّمْتُمْ مَا لَمْ تَعْلَمُوا أَنْتُمْ وَلا آبَاؤُكُمْ قُلِ اللَّهُ ثُمَّ ذَرْهُمْ فِي خَوْضِهِمْ يَلْعَبُونَ
আর তারা আল্লাহকে যথার্থ মর্যাদা দেয়নি, যখন তারা বলেছিল, আল্লাহ কোন মানুষের উপর কোন কিছুই অবতীর্ণ করেননি; তুমি বল, ‘ঐ কিতাব কে অবতীর্ণ করেছিল, যা মূসা নিয়ে এসেছিল মানুষের জন্য নূর ও সঠিক পথের নির্দেশনা, তোমরা তা বিভিন্ন কাগজে লিখে রাখ, তার কিছু অংশ তোমরা প্রকাশ কর আর বেশির ভাগই গোপন কর; আর তোমাদেরকে শিক্ষা দেয়া হয়েছিল, যা তোমরা জানতে না আর তোমাদের বাপ-দাদারাও জানত না’? তুমি বলে দাও, আল্লাহই তা অবতীর্ণ করেছিলেন, সুতরাং তুমি তাদেরকে ছেড়ে দাও, তারা তাদের অযাচিত সমালোচনায় খেলতে থাকুক। আল-আন‘আম, ৬/৯১
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَى بِآيَاتِنَا أَنْ أَخْرِجْ قَوْمَكَ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَذَكِّرْهُمْ بِأَيَّامِ اللَّهِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِكُلِّ صَبَّارٍ شَكُورٍ
আর অবশ্যই আমি মূসাকে আমার নিদর্শনসহ পাঠিয়েছি যে, ‘তুমি তোমার কওমকে অন্ধকার হতে আলোর (নূরের) দিকে বের করে আনো এবং আল্লাহর দিবসসমূহ তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দাও’। নিশ্চয় এতে প্রতিটি পরম ধৈর্যশীল, পরম কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য রয়েছে নিদর্শন। ইবরাহীম, ১৪/৫
✔✔
>>> সকল আসমানি কিতাব হল জ্যোতিময় কিতাব <<<
فَإِنْ كَذَّبُوكَ فَقَدْ كُذِّبَ رُسُلٌ مِنْ قَبْلِكَ جَاءُوا بِالْبَيِّنَاتِ وَالزُّبُرِ وَالْكِتَابِ الْمُنِيرِ
তারপরও যদি তারা তোমার প্রতি মিথ্যারোপ করে তবে তোমার পূর্বেও রাসূলদেরকে মিথ্যারোপ করা হয়েছিল; তারা সুস্পষ্ট নিদর্শন, গ্রন্থাদি ও জ্যোতিময় কিতাবসহ এসেছিল। আলে-ইমরান, ৩/১৮৪
وَإِنْ يُكَذِّبُوكَ فَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ جَاءَتْهُمْ رُسُلُهُمْ بِالْبَيِّنَاتِ وَبِالزُّبُرِ وَبِالْكِتَابِ الْمُنِيرِ
আর তারা যদি তোমাকে মিথ্যাবাদী বলে অস্বীকার করে তাহলে তাদের পূর্ববর্তীরাও (নবী-রাসূলদেরকে) মিথ্যাবাদী বলেছিল; তাদের নিকট তাদের রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শন, গ্রন্থাদি ও জ্যোতিময় কিতাবসহ এসেছিল। আল-ফাতির, ৩৫/২৫
✔✔
>>> রাসূল হলেন সেরাজান মুনিরা অর্থাৎ আলোকদীপ্ত প্রদীপ <<<
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا وَدَاعِيًا إِلَى اللَّهِ بِإِذْنِهِ وَسِرَاجًا مُنِيرًا
হে নবী, নিশ্চয় আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। আর আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহবানকারী ও আলোকদীপ্ত প্রদীপরূপে। আল-আহযাব, ৩৩/৪৫-৪৬
✔✔
>>> চাঁদকে আল্লাহ নূর বলেছেন <<<
وَجَعَلَ الْقَمَرَ فِيهِنَّ نُورًا وَجَعَلَ الشَّمْسَ سِرَاجًا
আর তাদের মাঝে চাঁদকে বানিয়েছেন আলো (নূর) আর সূর্যকে বানিয়েছেন প্রদীপ। নুহ, ৭১/১৬
هُوَ الَّذِي جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَاءً وَالْقَمَرَ نُورًا وَقَدَّرَهُ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُوا عَدَدَ السِّنِينَ وَالْحِسَابَ مَا خَلَقَ اللَّهُ ذَلِكَ إِلا بِالْحَقِّ يُفَصِّلُ الآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
তিনি আল্লাহ, যিনি সূর্যকে তেজোদীপ্ত এবং চাঁদকে আলো (নূর) বানিয়েছেন এবং তার জন্য (হ্রাস-বৃদ্ধির) মানযিলসমূহ নির্ধারিত করেছেন, যাতে তোমরা বছরসমূহের গণনা ও তারিখের হিসাব জানতে পার; আল্লাহ এসব অনর্থক সৃষ্টি করেননি; জ্ঞানী লোকদের জন্য নিদর্শনগুলোকে তিনি বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন। ইউনুস, ১০/৫
تَبَارَكَ الَّذِي جَعَلَ فِي السَّمَاءِ بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَاجًا وَقَمَرًا مُنِيرًا
বরকতময় আল্লাহ, যিনি নভোমন্ডলে সৃষ্টি করেছেন তারকারাজি আর তাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ ও আলো বিকিরণকারী চাঁদ। আল-ফুরকান, ২৫/৬১
✔✔
>>> আগুনকে আল্লাহ নূর বলেছেন <<<
مَثَلُهُمْ كَمَثَلِ الَّذِي اسْتَوْقَدَ نَارًا فَلَمَّا أَضَاءَتْ مَا حَوْلَهُ ذَهَبَ اللَّهُ بِنُورِهِمْ وَتَرَكَهُمْ فِي ظُلُمَاتٍ لا يُبْصِرُونَ
তাদের উদাহরণ ঐ ব্যক্তির মত, যে আগুন জ্বালাল এরপর যখন আগুন তার চারপাশ আলোকিত করল, আল্লাহ তাদের আলো (নূর) কেড়ে নিলেন এবং তাদেরকে অন্ধকারের মধ্যে ছেড়ে দিলেন, সুতরাং তারা কিছুই দেখতে পায় না। আল-বাকারা, ২/১৭
✔✔
>>> অন্ধকার ও আলো (নূর)সৃষ্টি করেছেন <<<
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضَ وَجَعَلَ الظُّلُمَاتِ وَالنُّورَ ثُمَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ يَعْدِلُونَ
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি সৃষ্টি করেছেন আসমান ও যমীন আর সৃষ্টি করেছেন অন্ধকার ও আলো (নূর); তারপরও যারা কুফরী করেছে তারা অন্যকে তাদের রবের সমতুল্য স্থির করে। আল-আন‘আম, ৬/১
قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الأعْمَى وَالْبَصِيرُ أَمْ هَلْ تَسْتَوِي الظُّلُمَاتُ وَالنُّورُ
তুমি জিজ্ঞেস কর, ‘অন্ধ ও দৃষ্টিমান ব্যক্তি কি সমান? কিংবা অন্ধকার ও আলো কি সমান? আর-রাদ, ১৩/১৬
وَلا الظُّلُمَاتُ وَلا النُّورُ
আর অন্ধকার ও আলো সমান নয়। ফাতির, ৩৫/২০
✔✔
>>> জ্ঞান ও দীপ্তমান কিতাব ছাড়া মানুষ আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক্ করে <<<
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلا هُدًى وَلا كِتَابٍ مُنِيرٍ
আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক্ করে কোন জ্ঞান ছাড়া, আর না আছে কোন পথ নির্দেশনা, আর না আছে কোন দীপ্তমান কিতাব। লুকমান, ৩১/২০
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلا هُدًى وَلا كِتَابٍ مُنِيرٍ ثَانِيَ عِطْفِهِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ لَهُ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ وَنُذِيقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَذَابَ الْحَرِيقِ
আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক্ করে কোন জ্ঞান ছাড়া, আর না আছে কোন পথ নির্দেশনা, আর না আছে কোন দীপ্তমান কিতাব। সে তর্ক্ করে ঘাড় বাঁকিয়ে আল্লাহর পথ হতে বিভ্রান্ত করার জন্যে, তার জন্য দুনিয়ার রয়েছে লাঞ্জনা আর কিয়ামতের দিবসে আমি তাকে দহন যন্ত্রণা আস্বাদন করাবো। হজ্জ, সুরা-২২/৮-৯
>> পরকালের প্রতিদান <<<
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَصُوحًا عَسَى رَبُّكُمْ أَنْ يُكَفِّرَ عَنْكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَيُدْخِلَكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ يَوْمَ لا يُخْزِي اللَّهُ النَّبِيَّ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ نُورُهُمْ يَسْعَى بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَانِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَا إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
হে ঈমানদারগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তওবা কর, খাঁটি তাওবা, আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করে দিবেন আর তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে যার তলদেশে নহরসমুহ প্রবাহিত; সেইদিন নবী ও তার সাথে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন না তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানে ধাবিত হবে; তারা বলবে, “রাব্বানা--- আত্মিম্ লানা- নূ-রানা- ওয়াগ্ফির্ লানা- ইন্নাকা আলা ক্বুল্লি শায়য়িন্ ক্বাদি-র্”, ‘হে আমাদের রব! আমাদের জন্যে আমাদের নূরকে পরিপূর্ণ করে দিন আর আমাদেরকে ক্ষমা করুন, নিশ্চয় আপনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’। তাহরীম, ৬৬/৮
يَوْمَ تَرَى الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ يَسْعَى نُورُهُمْ بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَانِهِمْ بُشْرَاكُمُ الْيَوْمَ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
সেদিন মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের আপনি দেখতে পাবেন তাদের সামনে ও তাদের ডানপার্শ্বে তাদের নূর ছুটোছুটি করছে, (বলা হবে) আজ তোমাদের সুসংবাদ হল জান্নাত, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, এটাই মহাসাফল্য। হাদীদ, ৫৭/১২
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আল্লাহ নূর বলেছেন। উনাকে নূর বলাতে যদি উনি নুরের তৈরী হয়ে যান তাহলে নিন্মোক্ত বিষয়সমূহের প্রতি দৃষ্টি দেয়া দরকার।
১। আল্লাহ কুরআনকে নূর বলেছেন তাহলে কুরআন কি নুরের তৈরী?
২। আল্লাহ ইনজীলকে নূর বলেছেন তাহলে ইনজীল কি নুরের তৈরী?
৩। আল্লাহ তাওরাতকে নূর বলেছেন তাহলে তাওরাত কি নুরের তৈরী?
৪। আল্লাহ চাঁদকে নূর বলেছেন তাহলে চাঁদ কি নুরের তৈরী?
৫। আল্লাহ আগুনকে নূর বলেছেন আর ইবলীসকে আল্লাহ সৃষ্টি আগুন দ্বারা তাহলে ইবলীসও কি নুরের তৈরী? তাহলেতো ইবলীস নুরের তৈরী হয়ে যায়। এইসব বাতিলপন্থীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন-
مَثَلُهُمْ كَمَثَلِ الَّذِي اسْتَوْقَدَ نَارًا فَلَمَّا أَضَاءَتْ مَا حَوْلَهُ ذَهَبَ اللَّهُ بِنُورِهِمْ وَتَرَكَهُمْ فِي ظُلُمَاتٍ لا يُبْصِرُونَ
তাদের উদাহরণ ঐ ব্যক্তির মত, যে আগুন জ্বালাল এরপর যখন আগুন তার চারপাশ আলোকিত করল, আল্লাহ তাদের আলো (নূর) কেড়ে নিলেন এবং তাদেরকে অন্ধকারের মধ্যে ছেড়ে দিলেন, সুতরাং তারা কিছুই দেখতে পায় না। আল-বাকারা, ২/১৭
নূর মানে আলো, আমাদেরকে অনেক বস্তুই আলো দেয়। যেমনঃ বাতি, টিউব লাইট, মোমবাতি, হারিকেন, ইত্যাদি। এইগুলো আমাদেরকে আলো দেওয়ার কারণে এইগুলোকে কি আমরা আলো বা নূরের তৈরী বলব? নাকি এইগুলো অন্য উপাদান দ্বারা তৈরী। যারা এইরূপ বলবে তারা আসলে বোকার স্বর্গে বাস করে। তদ্ররূপ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যারা নুরের তৈরী বলে তারা আসলে বোকার স্বর্গে বাস করে। তারা জাহেল, অন্ধ, আল্লাহ বলেন-
قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الأعْمَى وَالْبَصِيرُ أَمْ هَلْ تَسْتَوِي الظُّلُمَاتُ وَالنُّورُ
তুমি জিজ্ঞেস কর, ‘অন্ধ ও দৃষ্টিমান ব্যক্তি কি সমান? কিংবা অন্ধকার ও আলো কি সমান? আর-রাদ, ১৩/১৬
পরিশেষে বলব, সকল আসমানি কিতাবকে আল্লাহ নূর বলেছেন বলেই সকল আসমানে কিতাবকে এখন অনুসরণ করা যাবে না। কুরআনের পূর্ববর্তী সকল আসমানি কিতাবকে আল্লাহ রহিত করেছেন। পূর্ববর্তী কিতাবসমূহকে কেবলমাত্র বিশ্বাস করতে হবে। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের পর যে ব্যক্তি কুরআন ও আল্লাহর রাসূলকে অনুসরণ করবে সেই সিরাতুল মোস্তাকিম তথা সরল-সঠিক পথে হেদায়াত পাবে ও পরিচালিত হবে আর নূর বলতে আল্লাহ সেই হেদায়াতের নূরকে বুঝিয়েছেন।
অনেক বাতিলপন্থী বলে থাকে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নুরের তৈরী। এই জন্য তারা কুরআনের একটি আয়াত ও একটি জাল হাদীস পেশ করে থাকে।
اَوَّلُ مَا خَلَقَ اللهُ نُوْرِى ‘আল্লাহ সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন’ বলে যে হাদীছ তারা বলে, তা মওযূ বা জাল
(সিলসিলা ছহীহাহ হা/৪৫৮-এর আলোচনা দ্রঃ)।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নূরের তৈরী ছিলেন না। আল্লাহ বলেন- قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ (হে নবী) তুমি বলে দাও, আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। ১৮/১১০, ৪১/৬
✔✔
>>> বাতিলপন্থীরা যে আয়াত দিয়ে নুরের তৈরী বলে <<<
قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُبِينٌ
নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ হতে একটি উজ্জল নূর (জ্যোতি) ও একটি স্পষ্ট কিতাব এসেছে। আল-মায়িদাহ, ৫/১৫
বাতিলপন্থীরা বলে, “আল্লাহর পক্ষ থেকে নূর এসেছে এবং স্পষ্ট কিতাব এসেছে। উক্ত নূর দ্বারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে নূরের তৈরি সে কথা বুঝানো হয়েছে”।
তাদের এই দাবী, মিথ্যা ও বাতিল। এই নূর দ্বারা কি বুঝা যায় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নূরের তৈরি? এই নুরের ব্যাখ্যা পরের আয়াতে আল্লাহ উল্লেখ করেছেন। পরের আয়াতে আল্লাহ বলেন-
يَهْدِي بِهِ اللَّهُ مَنِ اتَّبَعَ رِضْوَانَهُ سُبُلَ السَّلامِ وَيُخْرِجُهُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ بِإِذْنِهِ وَيَهْدِيهِمْ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
তা দিয়ে আল্লাহ তাদেরকে শান্তির পথে পরিচালিত করেন, যারা তাঁর সন্তুষ্টির অম্বেষণ করে এবং তাঁর অনুমতিতে তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করেন আর তাদেরকে সরল-সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করেন। আল-মায়িদাহ, ৫/১৬
অর্থাৎ যে ব্যক্তি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ও কুরআনকে অনুসরণ করবে সে ব্যক্তি সিরাতুল মোস্তাকিমের দিকে তথা সহজ-সরল পথের দিকে হেদায়াত পাবে। অন্যত্র আল্লাহ বলেন-
الر كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ لِتُخْرِجَ النَّاسَ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ بِإِذْنِ رَبِّهِمْ إِلَى صِرَاطِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ
আলিফ-লাম-রা; এই কিতাব, যা তোমার প্রতি আমি অবতীর্ণ করেছি, যাতে তুমি মানুষকে তাদের রবের অনুমতিক্রমে অন্ধকার থেকে নিয়ে আসতে পারো আলোর (নূরের) দিকে- মহাপরাক্রমশালী, প্রশংসিত আল্লাহর পথে। ইবরাহীম, ১৪/১
هُوَ الَّذِي يُنَزِّلُ عَلَى عَبْدِهِ آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ لِيُخْرِجَكُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَإِنَّ اللَّهَ بِكُمْ لَرَءُوفٌ رَحِيمٌ
তিনিই তাঁর বান্দার প্রতি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ অবতীর্ণ করেন, যাতে তিনি তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর (নূরের) দিকে বের করে আনতে পারেন আর নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি অতিশয় দয়ালু, পরম করুণাময়। আল-হাদিদ, ৫৭/৯
هُوَ الَّذِي يُصَلِّي عَلَيْكُمْ وَمَلائِكَتُهُ لِيُخْرِجَكُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَكَانَ بِالْمُؤْمِنِينَ رَحِيمًا
তিনিই তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর ফেরেশতারা তোমাদের জন্য অনুগ্রহের প্রার্থনা করেন যেন তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর (নূরের) দিকে বের করে আনেন; আর তিনি মুমিনদের প্রতি পরম দয়ালু। আল-আহযাব, ৩৩/৪৩
رَسُولا يَتْلُو عَلَيْكُمْ آيَاتِ اللَّهِ مُبَيِّنَاتٍ لِيُخْرِجَ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَمَنْ يُؤْمِنْ بِاللَّهِ وَيَعْمَلْ صَالِحًا يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا قَدْ أَحْسَنَ اللَّهُ لَهُ رِزْقًا
একজন রাসূল, যিনি তোমাদের নিকট আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করেন; যেন যারা ঈমান আনে ও সৎকাজসমূহ করে, তাদেরকে অন্ধকার হতে বাহির করে আলোর (নূরের) দিকে নিয়ে আসতে পারেন; আর যে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে, তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হয়, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে; নিশ্চয় আল্লাহ তার জন্য উত্তম রিয্ক রেখেছেন। আত-তালাক, ৬৫/১১
وَالَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ أُولَئِكَ هُمُ الصِّدِّيقُونَ وَالشُّهَدَاءُ عِنْدَ رَبِّهِمْ لَهُمْ أَجْرُهُمْ وَنُورُهُمْ وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا أُولَئِكَ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ
আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলদের প্রতি ঈমান আনে, তারাই তাদের রবের নিকট সিদ্দীক ও শহীদ, তাদের জন্য রয়েছে তাদের প্রতিফল ও তাদের নূর আর যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে এবং মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, তারাই প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী। আল-হাদীদ, ৫৭/১৯
✔✔
>>> নূর দ্বারা পথ নির্দেশ বুঝিয়েছেন <<<
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَآمِنُوا بِرَسُولِهِ يُؤْتِكُمْ كِفْلَيْنِ مِنْ رَحْمَتِهِ وَيَجْعَلْ لَكُمْ نُورًا تَمْشُونَ بِهِ وَيَغْفِرْ لَكُمْ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ
হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর আর তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন, তিনি তাঁর রহমতে দ্বিগুণ পুরস্কার দিবেন, আর তোমাদেরকে নূর (জ্যোতি) দিবেন, যার সাহায্যে তোমরা পথ চলতে পারবে এবং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। হাদীদ, ৫৭/২৮
✔✔
>>> মুনাফিকরা নূর পাবে না <<<
يَوْمَ يَقُولُ الْمُنَافِقُونَ وَالْمُنَافِقَاتُ لِلَّذِينَ آمَنُوا انْظُرُونَا نَقْتَبِسْ مِنْ نُورِكُمْ قِيلَ ارْجِعُوا وَرَاءَكُمْ فَالْتَمِسُوا نُورًا فَضُرِبَ بَيْنَهُمْ بِسُورٍ لَهُ بَابٌ بَاطِنُهُ فِيهِ الرَّحْمَةُ وَظَاهِرُهُ مِنْ قِبَلِهِ الْعَذَابُ
সেদিন মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক নারীগণ মুমিনদেরকে বলবে, ‘তোমরা আমাদের জন্য অপেক্ষা কর, তোমাদের নূর থেকে আমরা একটু নিয়ে নেই’, তাদেরকে বলা হবে, ‘তোমরা তোমাদের পিছনে ফিরে যাও এবং নূরের সন্ধান কর,’ তারপর তাদের মাঝখানে একটি প্রাচীর স্থাপন করে দেয়া হবে, যাতে থাকবে একটি দরজা, তার ভিতরভাগে থাকবে রহমত এবং তার বহির্ভাগে থাকবে আযাব। হাদীদ, ৫৭/১৩
✔✔
>>> আল্লাহর নূরের উপমা <<<
اللَّهُ نُورُ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضِ مَثَلُ نُورِهِ كَمِشْكَاةٍ فِيهَا مِصْبَاحٌ الْمِصْبَاحُ فِي زُجَاجَةٍ الزُّجَاجَةُ كَأَنَّهَا كَوْكَبٌ دُرِّيٌّ يُوقَدُ مِنْ شَجَرَةٍ مُبَارَكَةٍ زَيْتُونَةٍ لا شَرْقِيَّةٍ وَلا غَرْبِيَّةٍ يَكَادُ زَيْتُهَا يُضِيءُ وَلَوْ لَمْ تَمْسَسْهُ نَارٌ نُورٌ عَلَى نُورٍ يَهْدِي اللَّهُ لِنُورِهِ مَنْ يَشَاءُ وَيَضْرِبُ اللَّهُ الأمْثَالَ لِلنَّاسِ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
আল্লাহ আসমানসমূহ ও যমীনের নূর, তাঁর নূরের উপমা একটি দীপাধার, যার মধ্যে আছে একটি প্রদীপ; প্রদীপটি একটি কাঁচের আবরণের মধ্যে স্থাপিত, কাঁচের আবরণটি যেন উজ্জ্বল নক্ষত্র; যা প্রজ্জ্বলিত করা হয় বরকতময় যাইতূন বৃক্ষের তেল দ্বারা যা পূর্ব দিকেরও নয় এবং পশ্চিম দিকেরও নয়, আগুন তাকে স্পর্শ না করলেও যেন তার তেল উজ্জ্বল আলো দিচ্ছে; নূরের উপর নূর, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাঁর নূরের দিকে পথ দেখান, আর আল্লাহ মানুষের জন্য উপমা পেশ করেন এবং আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ। আন-নূর, ২৪/৩৫
✔✔
>>> রবের নূরে উদ্ভাসিত হবে <<<
وَأَشْرَقَتِ الأرْضُ بِنُورِ رَبِّهَا وَوُضِعَ الْكِتَابُ وَجِيءَ بِالنَّبِيِّينَ وَالشُّهَدَاءِ وَقُضِيَ بَيْنَهُمْ بِالْحَقِّ وَهُمْ لا يُظْلَمُونَ
আর পৃথিবী তার রবের নূরে উদ্ভাসিত হবে আর আমলনামা পেশ করা হবে এবং নবীগণ ও সাক্ষীগণকে উপস্থিত করা হবে; সকলের মাঝে ন্যায়বিচার করা হবে আর তাদের প্রতি কোন যুলম করা হবে না। আয-যুমার, ৩৯/৬৯
✔✔
>>> নূর শব্দ দিয়ে আল্লাহ কুরআনকে বুঝিয়েছে <<<
يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَكُمْ بُرْهَانٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكُمْ نُورًا مُبِينًا فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَاعْتَصَمُوا بِهِ فَسَيُدْخِلُهُمْ فِي رَحْمَةٍ مِنْهُ وَفَضْلٍ وَيَهْدِيهِمْ إِلَيْهِ صِرَاطًا مُسْتَقِيمًا
হে মানবজাতি! অবশ্যই তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে দলিল প্রমাণ এসেছে আর আমি তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট নূর (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি। অতঃপর যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে এবং তাতে দৃঢ়তা অবলম্বন করে, ফলে শীঘ্রই তিনি তাদেরকে তাঁর রহমত ও অনুগ্রহের মধ্যে প্রবেশ করাবেন এবং তার সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করবেন। আন-নিসা, ৪/১৭৪-১৭৫
فَآمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَالنُّورِ الَّذِي أَنْزَلْنَا وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
কাজেই তোমরা ঈমান আনো আল্লাহ প্রতি ও তাঁর রাসূলের প্রতি আর সেই নূর (কুরআন)-এর প্রতি যা আমি নাযিল করেছি এবং তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ পুরোপুরি অবহিত। আত-তাগাবুন, ৬৪/৮
الَّذِينَ يَتَّبِعُونَ الرَّسُولَ النَّبِيَّ الأمِّيَّ الَّذِي يَجِدُونَهُ مَكْتُوبًا عِنْدَهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَالإنْجِيلِ يَأْمُرُهُمْ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَاهُمْ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ الطَّيِّبَاتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ الْخَبَائِثَ وَيَضَعُ عَنْهُمْ إِصْرَهُمْ وَالأغْلالَ الَّتِي كَانَتْ عَلَيْهِمْ فَالَّذِينَ آمَنُوا بِهِ وَعَزَّرُوهُ وَنَصَرُوهُ وَاتَّبَعُوا النُّورَ الَّذِي أُنْزِلَ مَعَهُ أُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
যারা অনুসরণ করে নিরক্ষর নবীকে, যা তারা উল্লেখ পায় তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইঞ্জীল কিতাবে লিখিত অবস্থায়, যে তাদেরকে সৎ কাজের নির্দেশ দেয় ও অন্যায় কাজের নিষেধ করে এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ বৈধ করে আর অপবিত্র বস্তুসমূহ অবৈধ করে আর তাদের উপর চাপানো বোঝা ও শৃংখল হতে তাদেরকে মুক্ত করে; সুতরাং যারা তার প্রতি ঈমান আনে, তাকে সম্মান করে, তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করে এবং তার সাথে যে নূর (কুরআন) নাযিল করা হয়েছে তার অনুসরণ করে, তারাই সফলকাম। আল-আ’রাফ, ৭/১৫৭
✔✔
>>> ঈমানকেও আল্লাহ নূর বলেছেন <<<
وَكَذَلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ رُوحًا مِنْ أَمْرِنَا مَا كُنْتَ تَدْرِي مَا الْكِتَابُ وَلا الإيمَانُ وَلَكِنْ جَعَلْنَاهُ نُورًا نَهْدِي بِهِ مَنْ نَشَاءُ مِنْ عِبَادِنَا وَإِنَّكَ لَتَهْدِي إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
আর এভাবে আমি তোমার প্রতি আমার নির্দেশ হতে ওহী পাঠিয়েছি রূহ (অর্থাৎ ওহী বা কুরআন); তুমি জানতে না কিতাব কি ও ঈমান কি? কিন্তু আমি একে করেছি নূর যার সাহায্যে আমি আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা সঠিক পথে পরিচালিত করি; তুমি অবশ্যই সঠিক সরল পথের দিকে নির্দেশ করছো। আশ-শুরা, ৪২/৫২
✔✔
>>> ঈমান কুফরীর অন্ধকার থেকে নূর অর্থাৎ আলোর দিকে নিয়ে আসে <<<
اللَّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُوا يُخْرِجُهُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَالَّذِينَ كَفَرُوا أَوْلِيَاؤُهُمُ الطَّاغُوتُ يُخْرِجُونَهُمْ مِنَ النُّورِ إِلَى الظُّلُمَاتِ أُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক, তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর (নূরের) দিকে, আর যারা কুফরী করে তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত, তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়; এরাই হলো জাহান্নামের অধিবাসী, তারা সেখানেই চিরকাল থাকবে। আল-বাক্বারা ২/২৫৭
✔✔
>>> ইসলামকেও আল্লাহ নূর বলেছেন <<<
أَفَمَنْ شَرَحَ اللَّهُ صَدْرَهُ لِلإسْلامِ فَهُوَ عَلَى نُورٍ مِنْ رَبِّهِ فَوَيْلٌ لِلْقَاسِيَةِ قُلُوبُهُمْ مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ أُولَئِكَ فِي ضَلالٍ مُبِينٍ
ইসলামের জন্য আল্লাহ যার বক্ষকে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন ফলে সে তার রবের পক্ষ থেকে নূরের উপর রয়েছে, সুতরাং ধ্বংস সেসব লোকদের জন্য, আল্লাহ স্মরণ থেকে যাদের অন্তর (হৃদয়) কঠিন হয়ে গেছে, এরাই সুস্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে। আয্-যুমার, ৩৯/২২
يُرِيدُونَ أَنْ يُطْفِئُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَيَأْبَى اللَّهُ إِلا أَنْ يُتِمَّ نُورَهُ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূর (অর্থাৎ ইসলামকে) নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নূর পরিপূর্ণ করা ছাড়া অন্য কিছুই হতে দিবেন না; যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে। আত-তাওবা, ৯/৩২
يُرِيدُونَ لِيُطْفِئُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূর (অর্থাৎ ইসলামকে) নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নূরকে পূর্ণতাদানকারী; যদিও কাফিরেরা তা অপছন্দ করে। আস-সাফ, ৬১/৮
✔✔
>>> ইঞ্জীলকে আল্লাহ নূর বলেছেন <<<
وَقَفَّيْنَا عَلَى آثَارِهِمْ بِعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ التَّوْرَاةِ وَآتَيْنَاهُ الإنْجِيلَ فِيهِ هُدًى وَنُورٌ وَمُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ التَّوْرَاةِ وَهُدًى وَمَوْعِظَةً لِلْمُتَّقِينَ
আর আমি তাদের পশ্চাতে মারইয়াম পুত্র ঈসাকে পাঠিয়েছিলাম তার সামনে তাওরাত কিতাবের যা কিছু ছিল তার সত্যায়নকারীরূপে এবং তাকে ইঞ্জীল দিয়েছিলাম, যাতে ছিল হিদায়াত ও নূর এবং (তা ছিল) পূর্ববর্তী কিতাব তাওরাতের সত্যায়নকারী আর মুত্তাকীদের জন্য হেদায়াত ও উপদেশ। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৬
✔✔
>>> তাওরাতকে আল্লাহ নূর বলেছেন <<<
إِنَّا أَنْزَلْنَا التَّوْرَاةَ فِيهَا هُدًى وَنُورٌ يَحْكُمُ بِهَا النَّبِيُّونَ الَّذِينَ أَسْلَمُوا لِلَّذِينَ هَادُوا وَالرَّبَّانِيُّونَ وَالأحْبَارُ بِمَا اسْتُحْفِظُوا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ وَكَانُوا عَلَيْهِ شُهَدَاءَ فَلا تَخْشَوُا النَّاسَ وَاخْشَوْنِ وَلا تَشْتَرُوا بِآيَاتِي ثَمَنًا قَلِيلا وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ
নিশ্চয় আমি তাওরাত অবতীর্ণ করেছিলাম তাতে ছিল হিদায়াত ও নূর, আত্মসমর্পণকারী নবীগণ তা দিয়ে ইয়াহূদীদের জন্য ফয়সালা দিতেন, আর আল্লাহওয়ালাগণ এবং আলিমগণও (তা দিয়ে ফয়সালা দিতেন) কারণ তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের রক্ষক করা হয়েছিল এবং তারা ছিল এর উপর সাক্ষী; সুতরাং তোমরা মানুষকে ভয় করো না, আমাকে ভয় কর; আমার আয়াতকে নগণ্য মূল্যে বিক্রয় কর না আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে যারা ফায়সালা করে না, তারাই কাফের। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৪
وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ إِذْ قَالُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى بَشَرٍ مِنْ شَيْءٍ قُلْ مَنْ أَنْزَلَ الْكِتَابَ الَّذِي جَاءَ بِهِ مُوسَى نُورًا وَهُدًى لِلنَّاسِ تَجْعَلُونَهُ قَرَاطِيسَ تُبْدُونَهَا وَتُخْفُونَ كَثِيرًا وَعُلِّمْتُمْ مَا لَمْ تَعْلَمُوا أَنْتُمْ وَلا آبَاؤُكُمْ قُلِ اللَّهُ ثُمَّ ذَرْهُمْ فِي خَوْضِهِمْ يَلْعَبُونَ
আর তারা আল্লাহকে যথার্থ মর্যাদা দেয়নি, যখন তারা বলেছিল, আল্লাহ কোন মানুষের উপর কোন কিছুই অবতীর্ণ করেননি; তুমি বল, ‘ঐ কিতাব কে অবতীর্ণ করেছিল, যা মূসা নিয়ে এসেছিল মানুষের জন্য নূর ও সঠিক পথের নির্দেশনা, তোমরা তা বিভিন্ন কাগজে লিখে রাখ, তার কিছু অংশ তোমরা প্রকাশ কর আর বেশির ভাগই গোপন কর; আর তোমাদেরকে শিক্ষা দেয়া হয়েছিল, যা তোমরা জানতে না আর তোমাদের বাপ-দাদারাও জানত না’? তুমি বলে দাও, আল্লাহই তা অবতীর্ণ করেছিলেন, সুতরাং তুমি তাদেরকে ছেড়ে দাও, তারা তাদের অযাচিত সমালোচনায় খেলতে থাকুক। আল-আন‘আম, ৬/৯১
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَى بِآيَاتِنَا أَنْ أَخْرِجْ قَوْمَكَ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَذَكِّرْهُمْ بِأَيَّامِ اللَّهِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِكُلِّ صَبَّارٍ شَكُورٍ
আর অবশ্যই আমি মূসাকে আমার নিদর্শনসহ পাঠিয়েছি যে, ‘তুমি তোমার কওমকে অন্ধকার হতে আলোর (নূরের) দিকে বের করে আনো এবং আল্লাহর দিবসসমূহ তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দাও’। নিশ্চয় এতে প্রতিটি পরম ধৈর্যশীল, পরম কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য রয়েছে নিদর্শন। ইবরাহীম, ১৪/৫
✔✔
>>> সকল আসমানি কিতাব হল জ্যোতিময় কিতাব <<<
فَإِنْ كَذَّبُوكَ فَقَدْ كُذِّبَ رُسُلٌ مِنْ قَبْلِكَ جَاءُوا بِالْبَيِّنَاتِ وَالزُّبُرِ وَالْكِتَابِ الْمُنِيرِ
তারপরও যদি তারা তোমার প্রতি মিথ্যারোপ করে তবে তোমার পূর্বেও রাসূলদেরকে মিথ্যারোপ করা হয়েছিল; তারা সুস্পষ্ট নিদর্শন, গ্রন্থাদি ও জ্যোতিময় কিতাবসহ এসেছিল। আলে-ইমরান, ৩/১৮৪
وَإِنْ يُكَذِّبُوكَ فَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ جَاءَتْهُمْ رُسُلُهُمْ بِالْبَيِّنَاتِ وَبِالزُّبُرِ وَبِالْكِتَابِ الْمُنِيرِ
আর তারা যদি তোমাকে মিথ্যাবাদী বলে অস্বীকার করে তাহলে তাদের পূর্ববর্তীরাও (নবী-রাসূলদেরকে) মিথ্যাবাদী বলেছিল; তাদের নিকট তাদের রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শন, গ্রন্থাদি ও জ্যোতিময় কিতাবসহ এসেছিল। আল-ফাতির, ৩৫/২৫
✔✔
>>> রাসূল হলেন সেরাজান মুনিরা অর্থাৎ আলোকদীপ্ত প্রদীপ <<<
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا وَدَاعِيًا إِلَى اللَّهِ بِإِذْنِهِ وَسِرَاجًا مُنِيرًا
হে নবী, নিশ্চয় আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। আর আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহবানকারী ও আলোকদীপ্ত প্রদীপরূপে। আল-আহযাব, ৩৩/৪৫-৪৬
✔✔
>>> চাঁদকে আল্লাহ নূর বলেছেন <<<
وَجَعَلَ الْقَمَرَ فِيهِنَّ نُورًا وَجَعَلَ الشَّمْسَ سِرَاجًا
আর তাদের মাঝে চাঁদকে বানিয়েছেন আলো (নূর) আর সূর্যকে বানিয়েছেন প্রদীপ। নুহ, ৭১/১৬
هُوَ الَّذِي جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَاءً وَالْقَمَرَ نُورًا وَقَدَّرَهُ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُوا عَدَدَ السِّنِينَ وَالْحِسَابَ مَا خَلَقَ اللَّهُ ذَلِكَ إِلا بِالْحَقِّ يُفَصِّلُ الآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
তিনি আল্লাহ, যিনি সূর্যকে তেজোদীপ্ত এবং চাঁদকে আলো (নূর) বানিয়েছেন এবং তার জন্য (হ্রাস-বৃদ্ধির) মানযিলসমূহ নির্ধারিত করেছেন, যাতে তোমরা বছরসমূহের গণনা ও তারিখের হিসাব জানতে পার; আল্লাহ এসব অনর্থক সৃষ্টি করেননি; জ্ঞানী লোকদের জন্য নিদর্শনগুলোকে তিনি বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন। ইউনুস, ১০/৫
تَبَارَكَ الَّذِي جَعَلَ فِي السَّمَاءِ بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَاجًا وَقَمَرًا مُنِيرًا
বরকতময় আল্লাহ, যিনি নভোমন্ডলে সৃষ্টি করেছেন তারকারাজি আর তাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ ও আলো বিকিরণকারী চাঁদ। আল-ফুরকান, ২৫/৬১
✔✔
>>> আগুনকে আল্লাহ নূর বলেছেন <<<
مَثَلُهُمْ كَمَثَلِ الَّذِي اسْتَوْقَدَ نَارًا فَلَمَّا أَضَاءَتْ مَا حَوْلَهُ ذَهَبَ اللَّهُ بِنُورِهِمْ وَتَرَكَهُمْ فِي ظُلُمَاتٍ لا يُبْصِرُونَ
তাদের উদাহরণ ঐ ব্যক্তির মত, যে আগুন জ্বালাল এরপর যখন আগুন তার চারপাশ আলোকিত করল, আল্লাহ তাদের আলো (নূর) কেড়ে নিলেন এবং তাদেরকে অন্ধকারের মধ্যে ছেড়ে দিলেন, সুতরাং তারা কিছুই দেখতে পায় না। আল-বাকারা, ২/১৭
✔✔
>>> অন্ধকার ও আলো (নূর)সৃষ্টি করেছেন <<<
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضَ وَجَعَلَ الظُّلُمَاتِ وَالنُّورَ ثُمَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ يَعْدِلُونَ
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি সৃষ্টি করেছেন আসমান ও যমীন আর সৃষ্টি করেছেন অন্ধকার ও আলো (নূর); তারপরও যারা কুফরী করেছে তারা অন্যকে তাদের রবের সমতুল্য স্থির করে। আল-আন‘আম, ৬/১
قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الأعْمَى وَالْبَصِيرُ أَمْ هَلْ تَسْتَوِي الظُّلُمَاتُ وَالنُّورُ
তুমি জিজ্ঞেস কর, ‘অন্ধ ও দৃষ্টিমান ব্যক্তি কি সমান? কিংবা অন্ধকার ও আলো কি সমান? আর-রাদ, ১৩/১৬
وَلا الظُّلُمَاتُ وَلا النُّورُ
আর অন্ধকার ও আলো সমান নয়। ফাতির, ৩৫/২০
✔✔
>>> জ্ঞান ও দীপ্তমান কিতাব ছাড়া মানুষ আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক্ করে <<<
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلا هُدًى وَلا كِتَابٍ مُنِيرٍ
আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক্ করে কোন জ্ঞান ছাড়া, আর না আছে কোন পথ নির্দেশনা, আর না আছে কোন দীপ্তমান কিতাব। লুকমান, ৩১/২০
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلا هُدًى وَلا كِتَابٍ مُنِيرٍ ثَانِيَ عِطْفِهِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ لَهُ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ وَنُذِيقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَذَابَ الْحَرِيقِ
আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক্ করে কোন জ্ঞান ছাড়া, আর না আছে কোন পথ নির্দেশনা, আর না আছে কোন দীপ্তমান কিতাব। সে তর্ক্ করে ঘাড় বাঁকিয়ে আল্লাহর পথ হতে বিভ্রান্ত করার জন্যে, তার জন্য দুনিয়ার রয়েছে লাঞ্জনা আর কিয়ামতের দিবসে আমি তাকে দহন যন্ত্রণা আস্বাদন করাবো। হজ্জ, সুরা-২২/৮-৯
>> পরকালের প্রতিদান <<<
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَصُوحًا عَسَى رَبُّكُمْ أَنْ يُكَفِّرَ عَنْكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَيُدْخِلَكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ يَوْمَ لا يُخْزِي اللَّهُ النَّبِيَّ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ نُورُهُمْ يَسْعَى بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَانِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَا إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
হে ঈমানদারগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তওবা কর, খাঁটি তাওবা, আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করে দিবেন আর তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে যার তলদেশে নহরসমুহ প্রবাহিত; সেইদিন নবী ও তার সাথে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন না তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানে ধাবিত হবে; তারা বলবে, “রাব্বানা--- আত্মিম্ লানা- নূ-রানা- ওয়াগ্ফির্ লানা- ইন্নাকা আলা ক্বুল্লি শায়য়িন্ ক্বাদি-র্”, ‘হে আমাদের রব! আমাদের জন্যে আমাদের নূরকে পরিপূর্ণ করে দিন আর আমাদেরকে ক্ষমা করুন, নিশ্চয় আপনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’। তাহরীম, ৬৬/৮
يَوْمَ تَرَى الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ يَسْعَى نُورُهُمْ بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَانِهِمْ بُشْرَاكُمُ الْيَوْمَ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
সেদিন মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের আপনি দেখতে পাবেন তাদের সামনে ও তাদের ডানপার্শ্বে তাদের নূর ছুটোছুটি করছে, (বলা হবে) আজ তোমাদের সুসংবাদ হল জান্নাত, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, এটাই মহাসাফল্য। হাদীদ, ৫৭/১২
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আল্লাহ নূর বলেছেন। উনাকে নূর বলাতে যদি উনি নুরের তৈরী হয়ে যান তাহলে নিন্মোক্ত বিষয়সমূহের প্রতি দৃষ্টি দেয়া দরকার।
১। আল্লাহ কুরআনকে নূর বলেছেন তাহলে কুরআন কি নুরের তৈরী?
২। আল্লাহ ইনজীলকে নূর বলেছেন তাহলে ইনজীল কি নুরের তৈরী?
৩। আল্লাহ তাওরাতকে নূর বলেছেন তাহলে তাওরাত কি নুরের তৈরী?
৪। আল্লাহ চাঁদকে নূর বলেছেন তাহলে চাঁদ কি নুরের তৈরী?
৫। আল্লাহ আগুনকে নূর বলেছেন আর ইবলীসকে আল্লাহ সৃষ্টি আগুন দ্বারা তাহলে ইবলীসও কি নুরের তৈরী? তাহলেতো ইবলীস নুরের তৈরী হয়ে যায়। এইসব বাতিলপন্থীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন-
مَثَلُهُمْ كَمَثَلِ الَّذِي اسْتَوْقَدَ نَارًا فَلَمَّا أَضَاءَتْ مَا حَوْلَهُ ذَهَبَ اللَّهُ بِنُورِهِمْ وَتَرَكَهُمْ فِي ظُلُمَاتٍ لا يُبْصِرُونَ
তাদের উদাহরণ ঐ ব্যক্তির মত, যে আগুন জ্বালাল এরপর যখন আগুন তার চারপাশ আলোকিত করল, আল্লাহ তাদের আলো (নূর) কেড়ে নিলেন এবং তাদেরকে অন্ধকারের মধ্যে ছেড়ে দিলেন, সুতরাং তারা কিছুই দেখতে পায় না। আল-বাকারা, ২/১৭
নূর মানে আলো, আমাদেরকে অনেক বস্তুই আলো দেয়। যেমনঃ বাতি, টিউব লাইট, মোমবাতি, হারিকেন, ইত্যাদি। এইগুলো আমাদেরকে আলো দেওয়ার কারণে এইগুলোকে কি আমরা আলো বা নূরের তৈরী বলব? নাকি এইগুলো অন্য উপাদান দ্বারা তৈরী। যারা এইরূপ বলবে তারা আসলে বোকার স্বর্গে বাস করে। তদ্ররূপ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যারা নুরের তৈরী বলে তারা আসলে বোকার স্বর্গে বাস করে। তারা জাহেল, অন্ধ, আল্লাহ বলেন-
قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الأعْمَى وَالْبَصِيرُ أَمْ هَلْ تَسْتَوِي الظُّلُمَاتُ وَالنُّورُ
তুমি জিজ্ঞেস কর, ‘অন্ধ ও দৃষ্টিমান ব্যক্তি কি সমান? কিংবা অন্ধকার ও আলো কি সমান? আর-রাদ, ১৩/১৬
পরিশেষে বলব, সকল আসমানি কিতাবকে আল্লাহ নূর বলেছেন বলেই সকল আসমানে কিতাবকে এখন অনুসরণ করা যাবে না। কুরআনের পূর্ববর্তী সকল আসমানি কিতাবকে আল্লাহ রহিত করেছেন। পূর্ববর্তী কিতাবসমূহকে কেবলমাত্র বিশ্বাস করতে হবে। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের পর যে ব্যক্তি কুরআন ও আল্লাহর রাসূলকে অনুসরণ করবে সেই সিরাতুল মোস্তাকিম তথা সরল-সঠিক পথে হেদায়াত পাবে ও পরিচালিত হবে আর নূর বলতে আল্লাহ সেই হেদায়াতের নূরকে বুঝিয়েছেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন