মুসলিস মনীষিদের ধর্ম-বিমুখতা ও তৎপ্রতিক্রিয়ায় আলেমদের বিরোধিতার কারনে মুসলিমদের মাঝে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার বিলুপ্তি





পোষ্টটি মূলত ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত বিশিষ্ট গবেষক আব্দুল মওদুদ কর্তৃক লিখিত মুসলিম মনীষা গ্রন্থের কিয়দাংশ।

মুসলিম মনীষী কথাটা খুব ব্যাপক অর্থেই নেওয়া উচিত। একান্তভাবে ধর্মবিশ্বাস ও আচরণ দিয়ে বিচার করলে মুসিলম মনীষাকে খুজে পাওয়া সম্ভব নয়। ইবনুল আরাবীর ধর্ম বিশ্বাস আর মুজাদ্দেদ আলফে সানীর ধর্ম বিশ্বাস প্রায় পরস্পর বিরোধী। ইবনে তাইমিয়া তাসাউফের ঘোর বিরোধী। তার মত অনুসরণ করলে জালালুদ্দীন রুমীকেও কাফের বলা চলে। ওমর খৈয়্যামের মতবাদের সাথে শেখ আব্দুহুর বা আবুল আলা আল-মাআররীর সাথে ফখরুদ্দীন রাযীল তুলনা করলেই দেখা যাবে যে, ইসলামের ধর্মতত্ত্ব কত বিচিত্র রুপেই না বিভিন্ন মনীষীর মনে দেখা দিয়েছে।

ইসলামে মুতাকাল্লিমীন বা ধর্মতাত্ত্বিকদের আদি নায়ক ছিলেন নি:সন্দেহে আবুল হাসান আল-আশআরী, কিন্তু ইলমুল কালামকে পূর্ণতা দান করেন ইমাম গাযালী। অতপর যুক্তিবাদিতা ও ধর্মবাদিতার দ্বন্দে মুসলিম জগত প্রধানত শেষোক্ত মতেরই পোষকতা করতে থাকে। এবং ধর্মতত্ত্ব ও শরীয়ত ব্যাতিত অন্য সব বিষয়ে জ্ঞানার্জনও অপ্রয়োজনীয় মনে করে। এর পারিনতি ইসলামে কি ভয়াবহ হয়েছিল তার চিত্র বর্ণনাকালে মনীষী সৈয়দ আমীল আলী যা বলেছেন তা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেছেন, আবুল হাসান আল-আশআরী ও আহমদ আল-গাযালীর প্রভাবে যে প্রতিক্রিয়াশীল প্রগতিবিমুখ অবস্থার সৃষ্টি হয় তার সঠিক বর্ণনা দেয়া অসম্ভব। পন্ডিত ড:স্যাচাউ কয়েকটি কথায় বেশ সুন্দরভাবে বলেছেন যে, আল-আশআরী ও আল-গাযালী না জন্মালে আরবরা কেবল গ্যালিলিও, কেপলার ও নেউটনদের জাতি হত। বিজ্ঞান ও দর্শনের বিরুদ্ধ প্রচারনায় এবং ধর্মতত্ত্ব ও শরীয়ত ব্যাতিত অন্য বিষয়ে জ্ঞানার্জন অপ্রয়োজনীয় এরুপ নির্দেশদানে এ দুজন মুসলিম মনীষী অন্য সকলের চেয়ে মারাত্মকভাবে মুসলিম জগতের প্রগতির পথ রুদ্ধ করে দিয়েছিল।

মুতাযিলা সম্প্রদায়ের সমাধীল উপর ইসলামের যে মুতাকাল্লিমীন বা ধর্মতাত্ত্বিকদের অভ্যুদয় হয় এবং যাদের প্রভাবে ইসলামে ফালাসিফা বা দার্শনিকদের ও হুকামা বা বৈজ্ঞানিকদের আবির্ভাব ব্যাহত হয়ে উঠে তাদের আদি নায়ক হিসেবে নি:সন্দেহে আবুল হাসান আল-আশআরীর নাম করা চলে।

এগার শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায় চার শতক ধরে মুসলিম জ্ঞান বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষ হয়, মুসলিম মনীষিদের জ্ঞান সাধনা ও চিন্তা-ভাবনা বিশ্বের বুকে এক নয়া প্রানবন্ত ও গৌরবজ্জল কৃষ্টি ও কালচারের সৃষ্টি করে, তারপর থেকে মুক্তবুদ্ধি ও স্বাধীন চিন্তার প্রশস্ত ক্ষেত্র প্রগতি-বিমুখ প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তানায়কদের প্রচারনায় সংকুচিত ও উষর হয়ে উঠে।

দশ থেকে চৌদ্দ শতক পর্যন্ত ছিল মুসলিম দর্শনচর্চার স্বর্নযুগ। দশ ও এগারো শতকে মুসলিম অধ্যুষিত এশিয়া খন্ডে দর্শনের চরমোৎকর্ষ সাধিত হয় আল ফারাবী ও ইবনে সীনার মত বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিকদের হাতে। কিন্তু দশ শতকের গোড়ার দিক থেকেই ইলমুল কালাম বা ধর্মতাত্তিক দর্শনের জন্ম হয় এবং ইবনে সীনার মৃত্যুর পর মাত্র এক শতকের মধ্যেই মুসলিমদের দর্শন শাস্ত্র অধ্যায়ন ও চর্চা ইসলামের শিক্ষার পরিপন্থি হিসেবে বিবেচিত হয়।

ইসলামে মুক্তবুদ্ধি ও বিচারবাদের প্রথম সুচনা হয় আট শতকে ইমাম আবু হানিফার হাতে। কিন্তু এই বিচারবাদের বিরুদ্ধে তাকলীদ বা নির্বিচার পূর্বানুবর্তিতা দশম ও একাদশ শতাব্দি থেকে মুসলিম জগতে প্রসার লাভ করে। আবুল হাসান আল-আশাআরী ও ইমাম গাযালীর শিক্ষার প্রভাবে বিচারবাদ ব্যাহত হয় ও মুক্তবুদ্ধির পুজারীরা হন ধিকৃত ও নিন্দিত। আর ধীরে ধীরে তাকলীদের প্রাধান্য স্থাপিত হয়। আর হয় সুফিবাদের ব্যাপক প্রসার।

একথা অবিসংবাদিত যে, মুসলিম মননশক্তির মূলে রয়েছে গ্রীকদের প্রভাব। এবং মুসলিম চিন্তানায়করাও একথা মুক্তকন্ঠে স্বীকার করেছেন। মুসলিমরা পিথাগোরাস, এম্পিডোকলস, প্লেটো, এ্যারিষ্টটল এবং পরবর্তী কালের নিও-প্লেটোনিজ চিন্তাসম্ভারকে উজাড় করে আত্মসাৎ করেছেন মানবীয় শাশ্বত উত্তরাধিকার হিসেবে।

১.ইয়াকুব ইবনে ইসহাক আল-কিন্দী :

ষোল শতক পর্যন্ত জগতে যেসব মহামনীষী জন্ম গ্রহণ করেছেন তাদের শ্রেষ্ঠ ১২ জনের মধ্যে একজন হলেন ইয়াকুব ইবনে ইসহাক আল-কিন্দী। জ্ঞানের জন্যই জ্ঞানান্বেষন এটাই ছিল তার জীবনের মূল মন্ত্র। তার গভীর বিশ্বাস ছিল যে, দর্শনের মাধ্যমে যে সত্যের সন্ধান মেলে তা জাতি বা ধর্মের গন্ডীর বহু উদ্ধে।

আল-কিন্দী এ্যারিষ্টটলের অনুসরন করে তার দার্শনিক মতবাদ সৃষ্টিতত্ত্বের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন। তার মতে ঐশীশক্তিই সৃষ্টি জগতের মূল কারন। সৌরজগত পরিব্যাপ্তি করে পার্থিব জগতে তার শক্তি প্রবাহ বয়ে চলেছে। জগৎপ্রাণ স্রষ্টা ও সৃষ্টিলোকের মধ্যস্থতা করে। এই জগতপ্রাণ থেকেই সৌরজগতের সৃষ্টি। আর মানুষের প্রাণ জগতপ্রাণ থেকেই নি:সারিত। এ জন্য মানুষের মধ্যে দ্বিত্ব আছে- দেহের সঙ্গে আত্মা জড়িত বলেই সৌর জগতের দ্বারা প্রভাবিত, আবার আত্মা ঐশ্বরিক সৃষ্টি হওয়ার দরুন চিরস্বাধীন ও অন্যনিরপেক্ষ। স্বাধীনতা ও অমরতা লাভ করা যায় কেবলমাত্র জ্ঞানজগতে বিচরন করলে। তার জন্য মানুষের জ্ঞানশক্তির বিকাশের দরকার। আল্লাহ ও সৃষ্টিলোক সম্বন্ধে নির্ভূল অর্জনেই তা সম্ভব।

২. মোহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাযী :

পন্ডিতদের মতে দার্শনিক ইবনে সীনা ও রুশদের পর সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম চিকিৎসাবিদ এবং বিশ্বের সকল যুগের চিকিৎসকদের মধ্যে অন্যতম মোহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাযী ব্যাতিত অন্য কোন মুসলিম মনীষীই মধ্যযুগীয় শিক্ষা ও রেনেসায় অসামান্য প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন না্ই।

আল-বিরুনীর মত উদারমনা দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক সহ সকল মতাবলম্বী মুসলমান তাকে কাফের বলে। কেননা তিনি তার নবুয়্যত নামক গ্রন্থে বলেন - যুক্তির প্রাধান্য ওহীর উপর। তিনি এমন আল্লাহর সন্ধান করেছেন যিনি যুক্তি ও বুদ্ধির পথেই ধরা দেন।

৩. মুহাম্মদ আল-ফারাবী:

প্রচ্যের সুধী সমাজে এ্যরিষ্টটলকে মুয়াল্লিমুল আউয়াল বা আদি গুরু ও মুয়াল্লিমুস সানী বা দ্বিতীয় গুরা বলা হয় মুহাম্মদ আল-ফারাবীকে। মুসলিম শ্রেষ্ঠ দার্শনিকদের পিরামিডে তার নাম সবার প্রথম, তার পরই তার মন্ত্র শিষ্য ইবনে সীনা ও ইবনে রুশদের নাম।

মুসলিম হিসেবে ফারাবী এ্যারিষ্টটলের পরামাত্মা তত্ত্বরে দ্বৈতবাদকে একেশ্বরবাদে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি ইলাহীতত্ত্বে মর্মবাদের সন্ধান করেন। এবং দর্শনে মর্মবাদ বা মিষ্টিসিজমের স্থান নির্দেশ করেন। তারই অনুসরনে পরবর্তীকালে ইখওয়ানুস সাফা, দার্শনিকবৃন্দ এবং ইবনে সীনা, আবু নাসির তুসী, সুলামী, আবু সাইদ, আবুল খায়ের ও ইমাম গাযালী ইসলামে তাসাউফ তত্ত্বের পূর্ণরুপ দান করেন। তার ফলে ইসলামে ৩টি দার্শনিক-মর্মবাদী প্রধান মতবাদের সৃষ্টি হয়েছে- ইশরাকী, আখবারী ও মুজাদ্দেদী।

ইসলামী ধর্মতত্ত্বের আলোচনায় তিনি দর্শনের সংগে ধর্মের তুলনামূলক বিচারকালে ইসলাম-ধর্মীয় শব্দ ওহী, তাসবীহ, আরশ-কুরসী, তকদীর, তাকলীদ প্রভৃতি শব্দের বিশেষ ব্যাখ্যা দান করেন। এদিক দিয়ে তিনি ইসলামের ধর্মীয়- দর্শনেরও জন্মদাতা। তার মতে ভবিষ্যত বানীর গৌরব মানুষের নৈতিক ও আধ্যত্মিক মার্গে বিচরনের চরম অবস্থার অমৃতফল। কোনও জন্মগত দাবী নয় এবং দার্শনিকদের মর্যাদা ভাবিষ্যদ্বক্তার অনেক উর্দ্ধে। এখানে অবশ্য রাসূল বা আল্লাহর সংবাদ বাহককে তিনি ইংগিত করেন নাই । তবু এই মতবাদের দরুন মুসলিম মুসলিম ধর্মতাত্ত্বিকদের সাথে তার মতদ্বৈধ ঘটে। তিনি আরও বিশ্বাস করতেন যে, মানুষ যখন আকল-ফাআলের সাক্ষাত পায় তখন তার বাহিরাবরণ টুটে যায়। ধর্মজগতে অনায়াসে প্রবেশ করে অতি স্বাচ্ছন্দে শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ করে। আর সে আল্লাহর বানীই বলে !

ইবনে তাইমিয়া তার দর্শন পাঠকে হারাম বলে ফতোয়া দেন। কিন্তু তার দার্শনিক মতবাদ মাহিউদ্দিন ইবনুল আরাবী, মিশরী দার্শনিক ইবনে মুবাশশির ও গাযালী - যিনি তার মতবাদকে নস্যাত করার জন্য প্রান পন চেষ্টা করেছিলেন- উপরেও অলক্ষে অশেষ প্রভাব বিস্তার করেছিল।

৪. ইবনে সীনা :

ইবনে সীনা ছিলেন এ্যারিষ্টটলের সংগে ইসলামী ভাবধারার মিলন সেতু। এবং গ্রীক দর্শনের সবচেয়ে শক্তিশালী ভাষ্যকার। একদিকে তিনি গোড়া মুসলিম থিওলজীর যেমন গ্রীক দর্শনের সঙ্গে সামাঞ্জস্য ঘটিয়েছিলেন অন্যদিকে তেমনই প্রাচ্য মিষ্টিক ভাবধারার সঙ্গে তার যোগসূত্রও বেধে দিয়েছিলেন। তার বিশ্বাস ছিল যে, মানুষকে আল্লাহর শ্রেষ্ঠ দান হেচ্ছে বিশ্বাস ও যু্ক্তিবাদিতা। তার মতে ধার্মিকতার শ্রেষ্ঠ পুরস্কার হচ্ছে আল্লাহর মানসিক ও বুদ্ধিসুলভ উপলব্ধি। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধিসঞ্জাতে তাওহীদবাদে একান্ত বিশ্বাসী। আত্মার অমরতায় আস্থাশীল। এবং প্রজ্ঞাময় মননশীলতার অনন্ত সৌন্দর্যের চিরপিয়াসী।

তিনি কবর থেকে মানুষের শারীরিক পুনরুত্থানে, বেহেস্তের শারীরিক আনন্দ-উপভোগ ও দোযখের শাস্তিতে আদৌ বিশ্বাস করতেন না।

৫. ইবনে রুশদ :

ইবনে রুশদের উক্তি : আমাদের যেসব উদ্ভট বিশ্বাস আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে ধর্মই সকল সুখের আকর মনে করা। কিন্তু ধর্মের এমন কোন মূল্যই নেই। পাপ থেকে বিরত থাকার একমাত্র আশ্বাস এই যে, লাভজনক সুদে তার ক্ষতিপুরণ মিলবেনা।

কিন্তু আল-আনসারী, আব্দুল ওয়ালীদ প্রমুখ আলেমরা সাক্ষ্য দেন যে, ইবনে রুশদ শেষ জীবন পর্যন্ত ইসলামে একনিষ্ঠ বিশ্বাসী ছিলেন। তার আধুনিক জীবনী লেখক বিখ্যাত ফরাসী পন্ডিত রোনান্ বলেন : আমাদের সম্মুখে এমন কোন প্রমাণ নেই যার বলে আমরা বলতে পারি যে, ইবনে রুশদ ইসলামের একনিষ্ঠ সেবক ছিলেন না। বিশেষত : আমরা যখন ভাবি যে, এই ধর্মের অতি প্রয়োজনীয় মূলনীতিতে অলৌকিকতা বা অস্বাভিবকতার চিন্তা কতো অসংগত ও এই ধর্ম নিভাজ একেশ্বরবাদের কতো নিকটবর্তী, তখন আমাদের আর কোনই সন্দেহ থাকেনা।

৬. আবু বকর ইবনে বাজা :

এগার শতকের শ্রেষ্ঠ দার্শনিক আবু বকর ইবনে বাজা পাশ্চাত্যজগত যাকে Avenpace নামে আজো শ্রদ্ধাঞ্জলী দান করে।

আল-ফারাবীর আরো এক ধাপ উর্ধে উঠে ইবনে বাজা এই বিশ্বাস পোষণ করতেন যে, খাটি দর্শনের সঙ্গে প্রত্যাদিষ্ট ধর্মের সামাঞ্জস্য হতে পারে না। এই মতবাদ ইমাম গাযালী প্রমুখ ইসলামের গোড়া ধর্মতাত্বিকদের শিক্ষার একেবারে পরিপন্থি। এবং তার দ্বারা ফালাসিফার সঙ্গে মুতাকাল্লিমীনদের দ্বন্দই প্রকট হয়ে উঠে। তিনি আরো মত পোষণ করতেন যে, প্রত্যাদিষ্ট ধর্মের শিক্ষায় সত্যের পরিপূর্ণ রুপ অনুধাবন করা যায়- দার্শনিক শিক্ষায় বিশেষত এরিষ্টটল থেকেই তা পূর্ণরুপে ও নির্ভূলভাবে সম্ভব, তিনি স্বিকার করতেন যে, কুরআন ও তার ধর্ম সাধারণ মানুষকে মাত্র নিয়মানুবর্তিতা শিক্ষা দেয়, দার্শনিকদের যুক্তিতর্ক বুঝবার ইচ্ছা তাদের নেই, আর সে সামর্থও তাদের নেই।

ইবনে বাজা ছিলেন মিষ্টিক পন্থী। কিন্তু আল-ফারাবীর থেকে তার শিক্ষা সম্পূর্ণ পৃথক ছিল। আল-ফারাবী হাল বা দর্শনপ্রাপ্তির দ্বারা ফানাফিল্লাহ বা আল্লাহর অস্তিত্বে বিলীন হওয়ার মত পোষণ করতেন। কিন্তু ইবনে বাজা সন্নাস বা পার্থিব ভোগ সম্ভোগের সর্বোতভাবে বর্জনই আল্লাহ প্রাপ্তির পথ বলে নির্দেশ দেন। এভাবে ইসলামে ইত্তেসাল বা আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার নতুন পথপ্রদর্শক হিসেবে ইবনে বাজার মতবাদ প্রসিদ্ধি লাভ করেছে।

ইসলামে আল্লাহ প্রাপ্তির সহজ পন্থা মোটামুটি ভাবে চারটি - ইশক বা প্রেম, যুহদ বা সন্যাস, তাফাক্কুর বা জ্ঞান, খায়রাত বা সৎকর্ম।

ফারাবী যেমন ভক্তিমার্গেই বিশ্বাস করতেন এবং ফানাফিল্লাহকেই আল্লাহ প্রাপ্তির চরম অবস্থা বলে নির্দেশ দিতেন ইবনে বাজা সেই রকম যুহদ বা সন্নাসই আল্লাহ প্রাপ্তির শ্রেষ্ঠপন্থা বলে বিশ্বাস করতেন।

তার মতে মানবীয় জ্ঞান মূল জ্ঞান হতেই বিকশিত এবং তারই অনন্ত সত্তায় বিলীন হওয়ার মধ্যেই মানবীয় সত্তার চরম সার্থকতা। পাশ্চাত্য ধর্মতাত্ত্বিকদের নিকট ইবনে বাজা পৃথক সত্ত্বা মতবাদের প্রথম উদগাতা। তাদের মতে ইবনে বাজা বিশ্বাস করতেন যে, মানুষ বাস্তব সত্তার উর্দ্ধে উঠে গুনবাচক সত্তার সম্যক জ্ঞানের অধিকারী হয়। একথা আজ সর্ববাদীসম্মত যে, ইউরোপিয় ধর্মতাত্ত্বিকরা ইবনে বাজার নিকট থেকেই পৃথক স্বর্গীয় সত্ত্বার মতবাদ গ্রহণ করেছিলেন।

৭. আবুল আলা আল-মাআররী :

আবুল আলা আল-মাআররী পান্ডিত্য, মৌলিক চিন্তাশীলতার উৎকর্ষ ও সৃষ্টিধর্মের ঐশ্বর্যে আধুনিক ইউরোপীয় বিদগ্ধ সমাজে প্রাচ্য-খন্ডের অন্যতম মহামনীষী ও যুক্তিবাদী-প্রগতিবাদী কবি হিসেবে স্বিকৃতি লাভ করেছেন।

মাআররী তার লুমিয়াত গ্রন্থে কাবা শরীফ প্রদক্ষিণ, কালো পাথর চুম্বন, সাফা-মারওয়া পর্বর্তে দৌড়ানো, প্রস্তর নিক্ষেপ প্রভৃতি বর্ণনা করে হজ্জ করাটাকে একটা পৌত্তলিক ভ্রমন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি রোজ কেয়ামতেও বিশ্বাসী ছিলেন না। এবং মুত্যুতেই তার শেষ সমাপ্তি দেখে প্রত্যাদিষ্ট ধর্মের প্রতি আস্থাহীন হয়ে উঠেন। তার মতে ধর্ম হচ্ছে পুরাকালের রচনা-কাহিনী। যা ভন্ডরা কাজে লাগায় নিরীহ, নির্বোধ ও কুসংস্কারগ্রস্ত মানুষকে ঠকাবার জন্য। লোকাচারের ইসলামও অন্য কোন ধর্মের চেয়ে ভালোও নয়, খারাপও নয়। তিনি তার রিসালাতুল গাফরান গ্রন্থে বেহেশতকে পৌত্তলিক যুগের কবি ও দার্শনিকদের প্রমোদগার হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এবং বলেছেন তারা সকলেই আল্লাহর রহমত লাভ করেছেন।

রিসালার দ্বিতীয় ভাগে যিন্দীক ও মুসলিম স্বাধীন চিন্তানায়কদের বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছেন এবং তাদের উদৃতি ও রচনার দ্বারা দেখিয়েছেন যে, তাদেরকে যেভাবে অধার্মিক হিসেবে চিত্রিত করা হয় তা সঠিকও নয় সত্যও নয়। সম্প্রতি পন্ডিতদের দ্বারা নি:সন্দেহে প্রমাণিত হয়েছে যে, তার রিসালা কবি দান্তের ডিভাইনিয়ার রচনায় নিশ্চিত প্রভাব বিস্তার করেছিল। ওমর খৈয়ামের উপরও তার প্রভাব বিদ্যমান।

৮. মুহিউদ্দীন ইবনুল আরাবী :

শেখুল আকবর বা জ্ঞানীকুল শিরমনী, হুজ্জাতুল্লাহিল যাহিরা- আল্লাহর প্রত্যক্ষ্য সাক্ষ্য ও আয়াতুল্লাহিল যাহিরা- আল্লাহর আশ্চার্য ইংগিত হযরত মুহিউদ্দীন ইবনুল আরাবীর জীবন মিষ্টিক ভাবধারার চরম উৎকর্ষ এবং শরীয়তী গোড়ামীর এক অপূর্ব সংমিশ্রন।

মক্কায় অবস্থানকালে তিনি রাসূল (স.) কে ফেরেশতা, নবীগণ ও আউলিয়া সহ আলমে মামুরে তখতে বসে থাকতে দেখেন এবং তার দ্বারা ইলাহী রহস্য উদঘাটন পূর্বক তত্ত্বকথা লিখতে আদিষ্ট হন।

অন্য একসময় তিনি কাবা শরীফ তাওয়াফ কারা সময় এক নূরানী চেহারার যুবককে ও তার সঙ্গে তাওয়াফ করতে দেখেন এবং তিনিই তাকে অনন্ত রহস্যময় চির-শাশ্বত আল্লাহর আরশ দেখান। যার পর্দা সাধারণ চর্ম-চক্ষু ভেদ করতে পারে না । সেই চির সুন্দরেরও রুপ দর্শন তিনি করেন। তিনি তখন মুর্ছিত হয়ে পড়েন। এবং মুর্ছাভঙ্গে আদেশ পান, যেসব স্বর্গীয় দৃশ্য তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন সেসব যেন তিনি বর্ণনা ও ব্যাখ্যা করেন।

তিনি সৃষ্টি মাত্রই আল্লাহর সন্ধান করেছেন ওয়াহদাতুল ওয়াজুদ বা স্ববেশ্বরবাদ প্রচার করে। তিনি হুলুল বা মানুষে ঐশীরুপ দেখেছেন। এবং বিশ্বাস করেছেন যে, ইলাহীয়তে বা ঐশী সত্তার বিকাশ স্ফুরন হয় আদামিয়াত বা মানবত্বে। আর ইত্তিহাতের ভিত্তিমূলে তিনি আদম (আHappy কে সর্বপ্রথম আল্লাহর শারীরিক বিকাশ বরে ধরেছেন। মানবীয় দৈহিক সত্তায় ঐশী সত্তার পূর্ণতম প্রকাশই আল্লাহর এক চিরন্তন রহস্য- মানুষের মাঝে নিজেরই মধুরতম বিকাশ বাসনার খেয়ালে সৃষ্টি লোকের সম্ভব হয়েছে। আল্লাহর দীদার বা দর্শন অশরীরী অবস্থায় সম্ভব নয় এবং রমনী রুপে আল্লাহর বিকাশই সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ।

তিনি বলেন - নবুয়ত কেয়ামত পর্যন্ত জারী থাকবে। কিতাব দেয়া নবুওয়াতের একটা বিশিষ্ট কার্যমাত্র। এটা অসম্ভব যে, আল্লাহর সংবাদ ও সৃষ্টিলোকের জন্য তার চিন্তা ভাবনা শেষ হয়ে যাবে। যদি তা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সৃষ্টিলোক বেচে থাকার শক্তি বা আহার পাবে না।

মানুষের জন্য উৎকর্ষের স্তর চারটি - ঈমান, ওলিয়াত, নবুওয়াত ও রেসালাত। তিনি সকল ধর্মেই আল্লাহর সন্ধান করতেন। তিনি তাকলীদকে একেবারে পরিত্যাগ করেন। তিনি বলতেন, যারা বলে ইবনে হাজম এরকম বলেছেন, আহমদ এরকম বলেছেন, নোমান এরকম বলেছেন আমি নিশ্চয়ই তাদের দলভুক্ত নই।

বহু শতাব্দি কেটে গেল, তবু ইবনুল আরাবীর এসব আশ্চার্য মতবাদ নিয়ে মুসলিম ধর্ম তাত্ত্বিকদের মধ্যে বদানুবাদের শেষ হয় নাই। তাদের অনেকে এ বিষয়ে একমত যে, ইবনুল আরাবীর দুর্জ্ঞেয় মতবাদ সাধারন লোকের বোধগম্য নয়। এজন্য তার মতে আস্থা রেখেও তারা সেগুলির প্রচার নিসিদ্ধ করেছেন। তবু ইবনুল আরাবীর রচনাবলী মুসলিম জগতের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সাদরে ও সম্ভ্রমের সঙ্গে পঠিত হয়।

শেখুুল আকবর ইবনুল আরাবী সম্বন্ধে মুসলিম আলেমরা বিভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। ইবনে তাইমিয়া, আল-তাফতাযানী ও ইব্রাহীম আল-বিকায় তাকে কাফের ফতোয়া দিয়েছেন এবং তার হুলুল বা নর দেবতা ও ইত্তেহাদ বা অদ্বৈতবাদ মত প্রচারের জন্য তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। অন্যদিকে আল-কামুস রচয়িতা মজদুদ্দীন, জালালুদ্দীন সুয়ুতী, আব্দুর রাজ্জাক আল-কাশানী ও আব্দুল ওহাব শারানী তাকে একজন বিখ্যাত ওলী, সুফি ও সিদ্দীক হিসেবে অভিনন্দিত করেছেন। এবং জোর গলায় একথাও প্রচার করেছেন যে, তারা দ্বারা দ্বীন ইসলাম অনেকখানী উপকৃত হয়েছে। তার মহিমা লোক সমাজে উদঘাটিত হয়েছে। আল্লামা জালালুদ্দীন বলেছেন, মহিউদ্দীন ইবনুল আরাবী আলেমকুলের শীরমনি, আল্লাহ তাকে সব রকম হিকমত বা জ্ঞান দান করেছেন। ইবনুল জাওযী একদা তাকে বলেছিলেন : তোমার ফতুহাত আল-মক্কিয়াহ আমার তাযিয়ার ভাষ্য হিসেবে যথেষ্ট। সাহাবুদ্দীন সুহরাওয়ার্দী বলেছেন, মহিউদ্দীন হাকায়েক বা সত্যতার সমুদ্র বিশেষ।

৯. ইমাম আবু হানীফা :

ইমাম আবু হানীফার উদ্ভাবিত কিয়াস সহ বহু মত ফাতেমীয় মতবাদ হতে আগত। তার মতে সকল যুগের উম্মতের ইজমা গ্রহনীয় কিন্তু অনেকের মতে শুধুমাত্র সাহাবীদের বেশী হলে তাবেয়ীদের ইজমাই গ্রহণযোগ্য অন্যদের নয়। তিনি কম হাদীস গ্রহণ করার কারন হল জাল হাদিসের সংখ্যাধিক্যতা। তিনি সর্বাধিক উদার ছিলেন এমন কি সার্ফীতে নামাজ পড়ারও ফতোয়া দিয়েছিলেন।

১০. ইমাম বুখারী :

ইমাম বুখারী ৬ লক্ষ হাদীস সংগ্রহ করে তার মধ্যে মাত্র ৯ হাজারকেই সহীহ মনে করে কিতাব রচনা করেন। তিনি আবু হানীফার কিয়াসের বিরোধী ছিলেন।

১১. ইবনে জাবির আল-তাবারী:

ইবনে জাবির আল-তাবারী তার ইতিহাস গ্রন্থে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল কে একজন মাজহাব স্রষ্টা হিসেবে অস্বিকার করেন। তাই তৎকালীন তথাকার হাম্বলী মাযহাবীরা তাকে কাফের ফতোয়া দেন ও তার মৃত্যুর পর তার লাশ দাফনে বাধা দিলে তার অনুসারীরা রাতের অন্ধকারেে তার গৃহেই তাকে দাফন করেন।

১২. জাবীর ইবনে হাইয়ান:

রসায়নের জন্মদাতা ও প্রথম রসায়নবিদ জাবীর ইবনে হাইয়ান রসায়ন শিখেন ইমাম জাফর আস-সাদিক (র.) এর নিকট। জাবীর এই সময়ে জাফরের ৫০০ টি বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ সংকলন করেন। - ইবনে খাল্লিকান।

১৩. আলি ইবনে হাজম:

স্পেনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মনীষী ঐতিহাসিক ও দার্শনিক আলি ইবনে হাজম প্রচলিত ও সর্বজনমান্য ধর্মীয় বিধান ও আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে যে রকম তীব্র শ্লেষাত্মক ভাষায় কঠোর সমালোচনা করেন তাতে আলেম সমাজ তার প্রতি খড়গহস্ত হয়ে উঠেন ও জনসাধারনকে তার রচিত পুস্তক পাঠ করতে নিষেধ করেন ও বহু গ্রন্থ আগুনে পুড়ে ফেলেন।

তিনি তওককুল হামামাহ বা কপোতীর কন্ঠহার নামে একটি প্রেমমূলক অনবদ্য কাব্য রচনা করেন, তাতে তিনি নিষ্কাম বা স্বর্গীয় প্রেমের (এশকে এলাহী) গুনগান কীর্তন করেছেন।

ধর্ম মতবাদ গুলির তুলনামূলক সমালোচনার প্রথম পথ-প্রদর্শকের সম্মান দান কারী তার সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কিতাবুল মিনাল ওয়াল নিহাল বা ধর্ম সমূহ ও সম্প্রদায়গুলির পরিচয় গ্রন্থে ইবনে হাজম প্রমাণ করেছেন যে, ইসলামের বুকে বিভিন্ন মাযহাব ও মতবাদের উৎপত্তির জন্য ইরানীরাই প্রধানত দায়ী এবং তারাই জাতীয়ভাবে অনুপ্রানীত হয়ে ইসলামের বিজয় অভিযান সংযত ও ব্যাহত করেছিল।

১৪. আব্দুর রহমান জামী:

আব্দুর রহমান জামীর রচিত লওয়ায়ীহ মিষ্টিসিজম (সুফিবাদ) সম্বন্ধে একখানি অনবদ্য ও প্রামান্য গ্রন্থ। এতে নিও-প্লেটোনিজম এবং বৌদ্ধধর্মের শিক্ষার সংগে আশ্চার্য মিল দেখা যায়।

কুরআনে ইউসুফ যখন মিশরের উযিরের পদে বহাল হলেন তখনই যুলেখার কাহিনীর পরিসমাপ্তি হয়। কিন্তু আব্দুর রহমান জামীর লিখিত ইউসুফ ওয়া জুলায়খা কাব্য গ্রন্থে তিনি ইউসুফ (আHappy ও জুলায়খাকে নিয়ে তার কল্পনার জাল শেষ পর্যন্ত বুনে গেছেন। অবেশেষ সাদীর পবিত্রতম বন্ধনে আবদ্ধকরে তাদেরকে সুন্দরতম ও মহিমাময় প্রেমরাজ্যের আসন দান করেছেন।

১৫. মানুষ যে বিষয়ে অজ্ঞ সে তারই বিরুদ্ধবাদী হয় - ইমাম গাযালী।

১৬. জালালুদ্দীন রুমী নারীকে দেখেছেন আল্লাহরই একটি রশ্মিরেখার মত। আর ইবনুল আরাবী বলেছেন- আল্লাহর পুর্ণাঙ্গ দিদার মিলে রুপসী কিশোরীর কল্পনায়।

১৭. ইবনে তাইমিয়া:

ইবনে তাইমিয়া বহুক্ষেত্রে প্রথিতযশা মুসলিম বিধানদাতাদের বিরুদ্ধ মত পোষণ করতেন। তার মতে ইজমার বিরুদ্ধ মত পোষণ করা অধর্ম নয় নাস্তিকতাও নয়। তাকলীদ অস্বিকার করেই ইবনে তাইমিয়া ক্ষান্ত হন নাই সর্বজনবিদিত বহু বিশিষ্ট ব্যাক্তির ভুল-ভ্রান্তির দিকে আঙ্গুলি নির্দেশ করে তিনি তাকলীদের অসারতা প্রতিপন্ন করেন। এক বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, ওমর রা. বহু ভুল করেছিলেন, আলী রা. জীবনে তিনশত ভুল করেছিলেন। ইবনে তাইমিয়া বহু সর্বজনমান্য সূফী বিশেষত ইমাম গাযালী, ইবনুল আরাবী ও ওমর আল-ফরিদের তীব্র সমালোচনা করেন।

দর্শন সম্বন্ধে তার মত ছিল : দর্শন কি শেষ পর্যন্ত আমাদের নাস্তিকতার দিকে টেনে নিয়ে যায় না ? ইসলামের বুকে যে বহু মতবাদের ঠাই হয়েছে তার জন্য কি দর্শণ দায়ী নয় ? তার মত ছিল যে কোরআনের কোন উক্তি সম্বন্ধে কেন, কিভাবে প্রভৃতি তর্কমূলক প্রশ্ন করা যাবে না। কুরআনে যা উক্তি তার সহজ সরল অর্থ গ্রহণ করতে হবে। কোন রুপক বা অলংকারের অবতারনা করা ধর্ম বিরুদ্ধ। কথিত আছে তিনি প্রায় পাচশত পুস্তক রচনা করেন। বর্তমানে মাত্র ৬৪ টির অস্তিত্ব মিলে।

তার মৃত্যুতে দামেস্ক শহর শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। ২ লক্ষ পুরুষ ও ১৫ হাজার নারী তার জানাযায় শরীক হয়েছিল।

১৮. উমহাদেশ এ পর্যন্ত মাত্র একজন প্রকৃত আলেমের জন্ম দিয়েছে এবং তার নাম মুহাম্মদ ইসমাইল - (আল্লামা ইকবাল)।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সাড়ে তিন হাত বডিতে ইসলাম !

নির্ভেজাল ইসলামের স্বরুপ সন্ধানে

শর্ষীনা, ফুরফুরা, জৌনপুরী, ফুলতলী, সোনাকান্দা সহ সকল বালাকোটি পীরগনের শেরেকী আকীদা