৭১ এর যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস
https://youtu.be/qeNYZBnSKAo?si=ABThMKwibrcEGbQy
https://youtu.be/WYFy-oOmpZ0?si=xsfQLFFtuRbCzY0h
https://youtu.be/zfs_kiB_FkA?si=9AC78joegKZLcGOA
https://youtu.be/SArBBeK_75Q?si=L_RaW1i6wqZ4UiJc
কারা রাজাকার??
১৯৭১ সালে যারা ভারতের গোলাম হবার আশংকায় দেশ (পাকিস্তান) বিভাগের বিপক্ষে ছিলেন তারা যদি রাজাকার হয়, তাহলে:
(১) এই উপমহাদেশের প্রথম দুই রাজাকার হলেন শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক আর হাসান শহীদ সহরোওয়ার্দি, কারণ উনারা দু'জনই "টু নেশন থিওরি" অনুযায়ী ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত ভেংগে পাকিস্তান এবং ভারত দুই রাষ্ট্র গঠনের বিপক্ষে ছিলেন। ১৯৪০ সালে ফজলুল হক প্রস্তাবিত "লাহোর প্রস্তাব" অনুযায়ী ভারত বিভাগের পক্ষে ছিলেন উনারা। কিন্তু, ১৯৪৭ সালে যখন দুই রাষ্ট্র হয়েই গেল, তখন ফজলুল হক ততকালীন পূর্ব পাকিস্তান ভূখন্ডে এলেও সহরোওয়ার্দি ১৯৪৮ পর্যন্ত কোলকাতা থেকে পাকিস্তানে আসেন নি। যখন এলেন, তখনও এলেন ততকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে।
পাকিস্তান সরকার তাদেরকে রাজাকার বলেনি, যদিও ভাগোদাদোদের ফর্মুলায় উনারা রাজাকার। উল্লেখ্য, পরবর্তীতে দু'জনই পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।
(২) দ্বিতীয় এবং চ্যাম্পিয়ন রাজাকার হলো রবীন্দ্রনাথ এবং ভারতের কংগ্রেস দল। ১৯০৫ সালে ব্রিটিশরা পূর্ব বংগের (বর্তমান বাংলাদেশ) মুসলমানদের উন্নতির জন্য "বাংলা" রাজ্যকে ভেংগে পূর্ব ও পশ্চিম আলাদা করে দিলেন। মুসলমানদের উন্নতি কি হিন্দুদের সহ্য হয়, যেমন এখনো হচ্ছেনা। ব্যস, ভাগোদাদোদের পূজনীয় রবীন্দ্রনাথ এবং ভারতের হিন্দু কংগ্রেস দলের গায়ে আগুন লেগে গেল। তারা এই 'দেশ' বিভাগের বিরুদ্ধে "বংগ ভংগ রদ (বাতিল)" আন্দোলন শুরু করলো এবং টানা ৬ বছর আন্দোলন করে ব্রিটিশদের বাধ্য করলো বংগ ভংগ বাতিল করার জন্য। সুতরাং, এই উপমহাদেশের "শীর্ষ রাজাকার" খেতাব রবী ঠাকুরের প্রাপ্য।
আসুন, এখন থেকে আমরা সবাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে "শীর্ষ রাজাকার" বলে ডাকি। সেই সাথে, যারা এদেশে দিনরাত রবীন্দ্রনাথের পূজা করে, তারা সবাই-ই "রাজাকার"।
একাত্তরের যুদ্ধ ছিল পূর্ব পাকিস্তানকে প্রথমে ভারতের করদরাজ্য, এবং অঙ্গরাজ্য বানাতে। মুক্তিযুদ্ধের বীর উত্তমেরা সেটা যুদ্ধে যাবার পরে বুঝতে পারে, অনেকে বোঝে ২০/৩০ বছর পরে।
আর — মুসলিম লীগ, জমিয়েতে উলামায়ে ইসলাম, নেজামি ইসলামি, জামাতসহ সকল ইসলামপন্থীরা প্লাস ন্যাপ (মুজাফফর), চীনপন্থী কমিউনিস্ট পার্টি সমূহ তথা: কৃষক শ্রমিক পার্টি, পূর্ব-পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি, পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টি, কৃষক শ্রমিক সমাজবাদী দল যুদ্ধের আগেই অনুধাবন করেছিলো।
তাই তারা অখন্ড পাকিস্তানের পক্ষে এবং যুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহন করে।
শেখ মুজিব এবং হাসিনার সকল শাসন আমল নিয়ে ভাবলে একটা জিনিস ক্লিয়ার তারা দুইজনই বেসিক্যালি ইন্ডিয়ার সাথে সেমি ইন্ডিপেন্ডেন্ট একটা এরাঞ্জমেন্ট এ ছিলেন। বেসিকালি এরা ভারতের ভাইসরয়/গভর্নর হিসেবে পার্মানেন্টলি বাংলাদেশ শাসন করবে ভারতের ইচ্ছা অনুযায়ী। আওয়ামিলীগ এর লোকজন পিটিয়ে দেশবাসিকে বাধ্য রাখবে। বিনিময়ে এরা দেশবাসিকে লুট করে সংসার চালাবে ধনী হবে। বেসিকালি মডার্ন রাজাকার বাহিনী। ভারত এইদেশের পররাষ্ট্রনীতি এবং ব্যবিসা বানিজ্য সব কন্ট্রোল করবে। আমরা থাকবো ভারত কলোনাইজড, আওয়ামিলীগ হবে ট্যাক্স কালেক্টর। যেহেতু ডেমোক্রেটিক প্রসেস থাকলে এটা চলতে পারে না। এজন্য মুজিব আর হাসিনার দুই শাসনই এক নায়কতন্ত্রে রুপান্তরিত হয়েছে। এটা বাগ নয়, এটাই ফিচার।
আজকে দেখলাম বিশ্বের সব থেকে বড় সৌদি আরামকো কে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে দেয়া হয় নাই। দেশের শিক্ষা চিকিৎসা সব ধংস করেছে,বিডিআর হত্যা আর দশটা বছর হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে আমরা আর বেরোতে পারতাম না এদের হাত থেকে।
মেজর ডালিমের সাক্ষাৎকার এবং কিছু রিফ্লেকশান
সাংবাদিক ইলিয়াস গত ৫ই জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে মেজর ডালিমের সাক্ষাৎকার নেন, যেখানে সরাসরি সংযুক্ত ছিলেন প্রায় ৮ লক্ষ দর্শক। মাত্র তিনদিনের মাথায় ইউটিউবে এই দর্শকের সংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়ে যায়। বাংলা ভাষায় ইউটিউবের ইতিহাসে এটা একটা রেকর্ড। মেজর ডালিমের লেখা বই "আমি মেজর ডালিম বলছি" (যা শেখ হাসিনা আমলে নিষিদ্ধ ছিলো) এবং এই দীর্ঘ সাক্ষাৎকার বাংলাদেশের ইতিহাসকে নতুনকরে আবিস্কার করার ক্ষেত্র এবং সুযোগ তৈরি করবে নিসন্দেহে। আমি এখানে কয়েকটা চুম্বক পয়েন্ট এবং তার রিফ্লেকশান তুলে ধরছি।
১.
আওয়ামী লীগ একদম শুরু থেকেই ইন্ডিয়ান এজেন্ট হিসাবে কাজ করেছে, এবং এখনো করছে।
২.
মুক্তিযুদ্ধ ছিলো ভারতের পাতানো ফাঁদ। এই ফাঁদে পা দিয়ে মুজিব এবং আওয়ামী লীগ একটা স্বাধীন দেশকে দুই টুকরো করেছে, এবং ভারতের দাসত্ব এবং পদলেহনকে পুরো জাতির ঘাড়ে চাপিয়েছে।
৩.
চুরিতন্ত্র ছিলো আওয়ামী রাজনীতির মূল ভিত্তি। গাজী গোলাম মোস্তফার মতো একজন প্রকাশ্য চোরকে বানানো হয়েছিল আওয়ামী লীগের নেতা এবং রেডক্রসের প্রেসিডেন্ট। আর এইসব চোরদেরকে বাঁচাতে মুজিব বিসর্জন দিয়েছে সব ধরনের নীতি নৈতিকতা। অর্থাৎ, আওয়ামী লীগের কাছে দেশ থেকে দল বড়, দলের চেয়ে নেতা বড়। দেশ পরিচালনায় যখনই সততা, ইন্টিগ্রিটি, প্রেফেশনালিজম বনাম চুরিতন্ত্র ও দলতন্ত্রের প্রশ্ন এসে দাঁড়িয়েছে, শেখ মুজিব চুরিতন্ত্র এবং দলতন্ত্রকেই গ্রহণ এবং প্রতিষ্ঠা করেছেন।
৪.
শেখ মুজিবের মাথা ছিলো "গোবরে ভরা"। চাটাইদের তৈলমারা উনি বুঝতে না, বরং উপভোগ করতেন; রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বলে কিছু ছিলো না উনার মাথায়; গুন্ডামী স্বভাব, ক্ষমতার লোভ, আর ব্যক্তিপূজা উনাকে এতোটাই গভীর অন্ধকারে রেখেছিলো যে ইন্ডিয়ান হেজেমনির ভয়াল ফাঁদ উনার মাথায় ঢুকতো না।
৫.
জনাব তাজউদ্দিন এর সাথে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির গোপন সাতদফা চুক্তি হয়, যা ভারত আর মুজিবনগর সরকারের চুক্তি নামে পরিচিত। চুক্তির সময়কাল ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাস, যাতে ছিলো:
ক) প্রশাসনিক বিষয়ক - যারা সক্রিয় ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছে শুধু তারাই প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োজিত থাকতে পারবে। বাকিদের শুন্য জায়গা পুরণ করবে ভারতীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ।
খ) সামরিক বিষয়ক - বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশে অবস্থান করবে। ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাস থেকে আরম্ভ করে প্রতিবছর এসম্পর্কে পুনরীক্ষণের জন্য দু’দেশের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
গ) বাংলাদেশের নিজস্ব সেনাবাহিনী বিষয়ক - বাংলাদেশের নিজস্ব কোন সেনাবাহিনী থাকবেনা। অভ্যন্তরীণ আইন-শৃংখলা রক্ষার জন্য মুক্তিবাহিনীকে কেন্দ্র করে একটি প্যারামিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হবে।
ঘ) ভারত-পাকিস্তান সর্বাত্মক যুদ্ধ বিষয়ক - সম্ভাব্য ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে অধিনায়কত্ব দেবেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান, এবং যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিবাহিনী ভারতীয় বাহিনীর অধিনায়কত্বে থাকবে।
ঙ) বাণিজ্য বিষয়ক - খোলা বাজার ভিত্তিতে (open market) চলবে দু'দেশের বাণিজ্য। তবে বানিজ্যে প্রমাণের হিসাব নিকাশ হবে বছরওয়ারী এবং যার যা প্রাপ্য সেটা স্টার্লিং এ পরিশোধ করা হবে।
চ) পররাষ্ট্র বিষয়ক - বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রশ্নে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবে এবং যতদূর পারে ভারত বাংলাদেশকে সহায়তা দিবে।
ছ) প্রতিরক্ষা বিষয়ক - বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বিষয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করবে ভারত।
"স্বাধীনতার" পর প্রতিরক্ষার দায়িত্ব ভারতের হাতে থাকায় বাংলাদেশে বৈদেশিক সাহায্য আসতে সমস্যা হচ্ছিলো। এজন্য ভারতের পরমর্শে ভারতীয় সৈন্যের বিকল্প হিসাবে রক্ষীবাহিনী নামে প্যারামিলিটারী ফোর্স তৈরির প্রস্তাবনা আসে। যাইহোক, এই সাত চুক্তি স্বল্প পরিমার্জিত রূপে ১৯৭২ সালের ১৯শে মার্চে ঢাকায় ইন্দিরা গান্ধী সফরে এলে শেখ মুজিবের সাথে ২৫ বছরের "বন্ধুত্ব, সহযোগিতা, ও শান্তিচুক্তি" তে রূপান্তরিত হয়, গড়ে তোলা হয় প্যারামিলিটারি রক্ষীবাহিনী। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ২০ মাইলের মধ্যে অবস্থিত এলাকায় অবাধ বাণিজ্যের লক্ষ্যে শেখ মুজিব ভারতের সাথে "সীমান্ত অবাধ বাণিজ্য চুক্তি" স্বাক্ষর করেন ১৯৭২ সালের ২৭শে মার্চে। জাতীয় অর্থনীতিতে এর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
তাজউদ্দীনের এই সাতদফা চুক্তির পরেই ভারত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সরাসরি যুদ্ধ করার জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে ফেলে। অথচ বাংলাদেশের মানুষের কাছে এটা পরিচিতি পায় "স্বাধীনতার যুদ্ধ" হিসাবে! তাজউদ্দীন সাহেব এই চুক্তি করে ভারতকে সরাসরি যুদ্ধ ক্ষেত্রে নামাতে পেরেছেন, দেশ পাকিস্তানমুক্ত হয়েছে। কিন্তু তিনি একই সাথে দেশের স্বাধীনতাকে ভারতের হাতে তুলে দিয়ে ভারতের দাসখতে সই করে দিয়েছিলেন। আর সেই ভারতীয় আধিপত্য এবং দাসত্বের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন শেখ মুজিব নিজেই।
৬.
পূর্বপাকিস্তানকে "স্বাধীন" করার পর বাংলাদেশ হয়ে পড়ে ইন্ডিয়ার লুটপাটের কেন্দ্রস্থল। মেজর ডালিমের মতে, ভারত ঐ সময় বাংলাদেশ থেকে পাচার করে ১৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ, যা বর্তমান হিসাবে কয়েক ট্রিলিয়ন টাকা হবে। নয় নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিল এই সম্পদ পাচারে বাধা দিলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসব নিয়ে সোচ্চার হওয়ার কারণে সিরাজ সিকদারকে হত্যা করা হয়, আর চলচ্চিত্র বানানোর কারণে গুম করা হয় জহির রায়হানকে। বাংলাদেশে গুমের ইতিহাস সম্ভবত এখান থেকেই শুরু।
৭.
মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ মানুষ মারা যায়নি। বিবিসি বাংলার সাংবাদিক সিরাজুর রহমানকে মুজিব ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জিজ্ঞেস করলে তিনি তিন লাখের কথা বলেন। ডেভিড ফ্রষ্টের সাথে সাক্ষাৎকারে মুজিব তিন লাখকে তিন মিলয়ন বলে ফেলেছিলেন। সেখান থেকেই তিরিশ লক্ষ সংখ্যাটি এসেছে। ইংরেজিতে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মুজিব লেজেগোবরে মাখিয়ে ইংরেজি ভাষাকে পুরো বারোটা বাজিয়েছিলেন বলে ডেভিড ফ্রষ্ট কেঁদে ফেলেছিলেন। মেজর ডালিমের মতে, লক্ষ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিষয়টিও অতিরঞ্জিত। হাতেগোনা কয়েকজনের ক্ষেত্রে ঘটেছিলো, এবং তাদেরকে পূনর্বাসনের ব্যবস্থাও করা হয়েছিলো।
৮.
বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ইন্ডিয়া। বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করাই ছিলো তাদের উদ্দেশ্য।
৯.
হাসিনার নৃশংসতা তার বাবার চেয়ে ছিলো হাজার গুণ বেশি। ভয়ানক একনায়কতন্ত্রের ভিত্তি রচনা করেছিলেন মুজিব, আর সেটাকে ফুলে ফলে সুশোভিত করে চরম নৃশংসতার ইতিহাস গড়েছেন তার কন্যা শেখ হাসিনা।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে: তাহলে মুক্তিযুদ্ধ কি সত্য সত্যিই "শেয়ালের (পাকিস্তানের) হাত থেকে মুক্ত হয়ে বাঘের (ইন্ডিয়া) হাতে নিজেদেরকে সোপর্দ করা?" আজ এ জন্যই কি চব্বিশের বিপ্লব অনিবার্য ছিলো?
শেখ মুজিব ইন্ডিয়াকে লুটপাট করতে দিয়েছেন ১৬ হাজার কোটি টাকা, এবং ১৯৭২-৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিজেই ব্যাংক ডাকাতিসহ লুটপাট করেছে আরও প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।
শেখ হাসিনার আমালে এই লুটপাট সব রকম সীমা ছাড়িয়ে যায়। ২৪টি ব্যাংকিং কেলেঙ্কারির মাধ্যমে ৯২,২৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। খেলাপি ঋণ ৮ গুণ বেড়ে ১,৮২,২৯৫ কোটি টাকা হয়েছে। দেশের আর্থিক ব্যবস্থা থেকে প্রায় ১৭-৩০ বিলিয়ন ডলার চুরি করা হয়েছে। হাসিনার বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সহ ৬০ জনের দ্বারা শেয়ারবাজার কারসাজির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১,০০,০০০ কোটি টাকা লুট করা হয়েছে! জ্বালানীর নামে রাশিয়া এবং জাপান থেকে ১৯.৩৬ বিলিয়ন ডলার নেওয়া হয়েছে! এগুলো পরিশোধ করতে, এবং সেই সাথের আদানি চুক্তি সহ ক্যাপাসিটি চার্জের জন্য বিশাল ব্যয়ের কারণে বিদ্যুতের দাম ১৪ গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। রূপপুর পারমানবিক প্রকল্প থেকে হাসিনা, জয় এবং টিউলিপসহ হাসিনা পরিবার প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। হাসিনা আমলে কর এড়াতে এবং দেশের বাইরে অর্থ পাচারের জন্য ব্যবসায়ীদের পণ্যের মূল্য ভুল ইনভয়েস করার চর্চা ছিলো যত্রতত্র। এই দুর্নীতি এবং অর্থপাচারের কারণে বাংলাদেশ বছরে প্রায় ৮.২৭ বিলিয়ন ডলার হারায়। গত ১৫ বছরের হিসাব করলে এইভাবে অর্থপাচারের পরিমাণ দাঁড়ায় ১২৪ বিলিয়ন ডলার! ২০০৯ সালে হাসিনা ক্ষমতা গ্রহনের সময় বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ছিলো মাত্র ২৪.২ বিলিয়ন ডলার। হাসিনা আমলে এই ঋণ চার গুণ বেড়ে ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। স্বাধীনতার পর গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশ যতটাকা বৈদেশিক ঋণ নিয়েছে, তার ৭৬ ভাগই হাসিনা নিয়েছে তার ১৫ বছরের শাসনামলে!
সব মিলে মুক্তিযুদ্ধ, আওয়ামীলীগ, এবং সর্বপরি বাংলাদেশের ইতিহাসকে "চেতনার" মুখোশ উন্মোচন করে নতুন করে পাঠ করার সুযোগ এসেছে। চব্বিশের বিপ্লবই এই সুযোগটা করে দিয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর ডালিম (বীর উত্তম) এর বদৌলতে যে সত্য ইতিহাসগুলো জাতি অর্ধ শতাব্দী বছর পর জানলো:
১. মুজিব নিজে স্বয়ং ধরা দিয়ে পা'কি'স্তা'নি আর্মির কাছে ফ্যামিলির দায়িত্বভার দিলেন।
২. মুজিবের ভাষনে নয় মেজর জিয়াউর রহমানের ডাকে লক্ষ লক্ষ মানুষ একতাবদ্ধ হয়েছিলো এবং আমি নিজেও পা'কি'স্তা'ন থেকে চলে এসেছিলাম মেজর জিয়ার ডাকে।
৩. মুক্তিযুদ্ধে সর্বমোট শহীদের সংখ্যা ৩০ লক্ষ নয়, ৩ লক্ষ।
৪. মুক্তিযুদ্ধে ধ'র্ষ'ণের শিকার নারীদের সংখ্যা ২ লক্ষ নয় বরং আরো অনেক অনেক কম কারণ ডালিম সাহেব বলেছেন উনি মাত্র দুইজন ধ'র্ষি'তা নারীকে পেয়েছেন।
৫. মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাইনি।
৬.ভা'র'ত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করছে যাতে তাদের একটি প্রদেশ বানাতে পারে।
৭. মুজিব হ'ত্যায় প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানও জড়িত ছিলেন।
৮. কোরআন শপথ করে জিয়া আগস্ট বিপ্লবীদের সাথে থাকার ওয়াদা করেন। (কিন্তু তার বদলে) তিনি ক্ষমতা সুসংহত করতে ৪০০০ লোককে মৃ'ত্যু'দ'ন্ড দিয়েছিলেন।
৯. বুদ্ধিজীবীদের হ'ত্যা করেছিলো ভা'র'তীয় বাহিনী।
১০. ভারত তৎকালীন ১৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ বাংলাদেশ থেকে লুট করে নিয়ে যায়। বাঁধা দিলে মুজিব মেজর জলিলকে গ্রেপ্তার করে।
১১. জহির রায়হান ও শহিদুল্লাহ কায়াসারকে হ'ত্যা করেছিলো মুজিব।
১২. মুক্তিযুদ্ধে ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জৎ লু'ট হয়েছিলো এইটা একটা মিথ্যা প্রচারণা।
১৩. বিপ্লবী সিরাজ সিকদারকে পরিকল্পনা করে হ'ত্যা করে মুজিব।
১৪. কথা আর কাজে কোন মিল ছিলোনা মুজিবের৷
১৫. মুজিব হত্যার পরে মিষ্টি বিতরণ করে দেশের মানুষ।
১৬. মেজর ডালিমের স্ত্রীকে চিকিৎসা নিতে দেয়নি হাসিনা ও খালেদা।
১৭/ বিবিসি বাংলার হেড বলেন ৭১ যুদ্ধে মারা যায় ৩ লক্ষ মানুষ। শেখ মুজিব বিবিসির সাংবাদিককে জানায় ৩ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়।
১৮/ একাত্তরে শেখ মুজিব পরিবারকে পাকিস্তানের জিম্মায় রেখে,পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে নিজেকে সেইফ রাখে।
১৯/ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন জিয়াউর রহমান নিজের নামে;পরে ভারতের চাপে বক্তব্য পরিবর্তন করে বলেন মুজিবের ঘোষণা পত্র পাঠ করেছি।
২০/ মেজর ডালিম সহ সবাই যখন ভারতে যুদ্ধের জন্য যায় তখনই বুঝতে পারে বাংলাদেশকে করদ রাজ্য এবং পরবর্তীতে অঙ্গরাজ্য করার লক্ষ্যে মুলত ইন্দো পাকিস্তান যুদ্ধের আয়োজন হয়।
২১/ বুদ্ধিজীবী দিবস, ১৪ ই ডিসেম্বরের হত্যাযজ্ঞ চালায় ভারত, এটা বুঝতে হলে বিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নাই।
২২/ পাকিস্তানের আপত্তি এবং বহির্বিশ্বের চাপে ভারত তাদের সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করে বাংলাদেশ থেকে,মুজিবের অনুরোধে নয়।কিন্তু তাদের অবৈধ হস্তক্ষেপে কেউ বাধা দিতে না পারে তাই রক্ষীবাহিনী গঠন করে ভারতীয় বাহিনীর শূন্যতা পূরণ করে।
২৩/ পচাত্তরের ১৫ ই আগষ্টের মুজিব পরিবারকে হত্যার পরে সারাদেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আনন্দ মিছিলের জন্য বেরিয়ে আসে এবং মিষ্টি বিতরন করে।
২৪/ শেখ হাসিনা আর শেখ মুজিবের তুলনা করলে শেখ হাসিনা সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার; তার বাবা বীজ বপন করেছে আর সে ভারতের সহযোগিতায় বাস্তবায়ন করেছে।
২৫/ শেখ মুজিব যখন ইন্দিরা গান্ধীর কথামোতো পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ না এসে লন্ডন হয়ে ভারত হয়ে বাংলাদেশে আসে তখনও জানত না বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সে বিবিসির সাংবাদিক কে আশংকা জানায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, স্বাধীন কি আসলেই হয়েছে?
২৬/ দেশে ফিরে তাজউদ্দীন আহমদকে বলে তাজউদ্দীন তুমি সরে যাও আজ থেকে আমিই সরকারের প্রধান।
২৭/ নিম্মির ক্যান্সার ছিল, তাকে হাউজ এরেস্ট করে রাখা হয় ১৯৯৬ থেকে;ক্যান্সারের ৪র্থ স্টেজে ছিল নিম্মি।এমনকি খালেদা জিয়াও তাকে পাসপোর্ট দেন নাই,ফলে ক্যান্সারেই মারা যায়...
- মেজর ডালিম
তারিখ: জানুয়ারি ০৫, ২০২৫ ইং
দুই সূর্য সন্তান; অসংখ্য সূর্যসন্তান।
আজকের বাংলাদেশের কথিত রাজনৈতিক দল গুলোর গঠনতন্ত্রে ঝড়তোলা মেজর ডালিম এর সাক্ষাৎকার শুনে একটা কথা অবশ্যই বুঝতে পারবেন যে, মেজর ডালিম সহ তত্কালীন সত্তর দশকে বাংলাদেশের মেজররা ইসলামের প্রতি পরম আকর্ষিত ছিল। শুধু তাই নয় বরং আমি এই পোস্টে যা বলতে চাচ্ছি তা দেখে আপনি রিতিমত ভরকে যাবেন!
শেখ মুজিবের হত্যা ছিল বাংলাদেশ কে ইসলামিক রাষ্ট্র বানানোর জন্য! দাবি ভারতপন্থী পত্রিকা প্রথম আলোর।
এই বিষয়ে সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমান এর হত্যাকারীদের একজন কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান। ইংরেজিতে ফারুকের নিজের হাতে লেখা চিঠিটি এ–ফোর আকৃতির ৭ পৃষ্ঠার। তিনি নিচে সই করেছেন ২৪ (অস্পষ্ট) জুন, ১৯৭৬।
ফারুক রহমানের ওই চিঠির শিরোনাম ছিল, ‘দ্য ইসলামিক সোশ্যালিস্ট রেভল্যুশন ইন বাংলাদেশ’।
ফারুক রহমান লিখেছেন,
"একাত্তরে বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করেছিলেন যে শেখ মুজিব তাঁদের অভিপ্রায় পূরণের জন্য সঠিক নেতা। তাঁকে সব ক্ষমতাই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তাঁর ধর্ম ইসলামের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। অথচ এটাই ছিল বিপ্লব ও মানুষের ধর্মের মূল আদর্শগত প্রতিপাদ্য। এই বিশ্বাসঘাতকতার কারণেই তাঁকে ধ্বংস করেছি। কেউ তাঁকে বাঁচাতে পারেনি।"
একটি স্থানে তিনি লেখেন,
‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ইসলামি বিপ্লবের প্রয়োজনে আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহর নগণ্য হাতিয়ার (হাম্বল ইনস্ট্রুমেন্ট) হিসেবে শেখ মুজিবকে ধ্বংস করি। আর সেই মুহূর্তেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাংলাদেশে প্রকৃত পরিবর্তন তথা ইসলাম বাস্তবায়নের দায়িত্বভার গ্রহণ করি।’
জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে সৈয়দ ফারুক রহমান বলেন,
‘জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের সুযোগ তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। কারণ, ইসলামি বিপ্লবের আদর্শ তিনি বুঝতে পারেননি বা চাননি। তিনি বিভ্রান্ত ছিলেন। তিনি তাঁর উচ্চাভিলাষী এবং অসৎ স্টাফ অফিসারদের পরামর্শের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।’
ফারুক রহমান তাঁর চিঠির উপসংহারে লিখেছেন, ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর একজন খলিফা (সার্ভেন্ট) হিসেবে বিশ্বস্ততার সঙ্গে কোরআনে বর্ণিত বিপ্লবী নীতিসমূহ কার্যকর করাই হবে আমার মৌলনীতি। ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব আল্লাহর কাছ থেকে আসে। আমি আরও বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ সর্বশক্তিমান আল্লাহর হেফাজতে আছে এবং মুসলিম হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করার আরেকটি সুযোগ আমরা পেয়েছি।’
এক পর্যায়ে তিনি বলেন,
কেউ পছন্দ করুন আর না–ই করুন, আমিই বাংলাদেশের ইসলামি বিপ্লবের আদর্শগত নেতা। আমারই দায়িত্ব এটা প্রমাণ করা যে বাংলাদেশ উত্তমভাবে চলতে পারে। এর প্রমাণ দিতে না পারলে আমি এ জন্য আল্লাহ এবং জনগণের কাছে দায়ী থাকব।’
ইসলামিক সোশ্যালিস্ট রেভল্যুশনের জন্য ফারুক চার লক্ষ্য উল্লেখ করেছিলেন:
ক. ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা। পবিত্র কোরআনের নীতি অনুযায়ী ইসলামি আইন ও সামাজিক কাঠামো তৈরি করা।
খ. বাংলাদেশে একটি বিপ্লবী সরকার প্রতিষ্ঠা করা।
গ. পবিত্র কোরআনের ভিত্তিতে জনগণের প্রত্যক্ষ শাসন কায়েম করা।
ঘ. বিশেষ করে ইসলামি দেশগুলোর সঙ্গে থেকে ব্রাদারহুড অব ইসলাম কায়েম করা।
১৫ ই আগষ্ট মুজিবুর রহমান এর হত্যার পর, বাংলাদেশ বেতারে মেজর ডালিমের ঘোষণায় ছিল:
দেশে সামরিক শাসন জারি করা হয়েছে এবং এখন থেকে বাংলাদেশ ইসলামি প্রজাতন্ত্র হিসেবে পরিগণিত হবে’।
বাংলাদেশের ক্ষমতা হস্তগত করার পর খন্দকার মুশতাক আহমেদ ইসলামি প্রজাতন্ত্র নিয়ে ভেবেছিলেন। তবে ভারতের হুমকির মুখে এ ধারনা থেকে সরে এসেছিলেন।
ঐসময় ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশ সম্পর্কে তার দেশের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন মিশরের দৈনিক আল আহরাম পত্রিকায় একটি সাক্ষাৎকারে।
সেখানে তিনি বলেন,
‘ভারত বাংলাদেশ ও অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে সকল আদর্শের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, সে সকল আদর্শ রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরে প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দকে কাজ করতে হবে।’
তথ্য সুত্রঃ নিয়ে কিছু কথা,
প্রথম আলোর তথ্য মানেই হেরফের কাটাছেঁড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু খন্দকার মুশতাক কর্তৃক ইসলামী প্রজাতন্ত্রের দোহাই দিয়ে পাকিস্তানের কাছে ধরনা দেওয়ার চিঠিপত্র, মেজর জিয়া প্রাথমিক পর্যায়ে সংবিধানে ইসলামি বিষয় প্রয়োগ, কিন্তু পুরো ইসলামী প্রজাতন্ত্র ঘোষণা না করা, শেখ মুজিবের হত্যাকারী সূর্যসন্তানদের ইসলামী প্রজাতন্ত্র লিবিয়ার দিকে যাত্রা, এবং তাদের উপর গাদ্দাফির ছায়া ইত্যাদি বিষয়ে লক্ষ্য করলে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে, মুজিব হত্যার পেছনে ইসলামী প্রজাতন্ত্র কায়েমের বিষয় ছিল। যা বাস্তবায়ন করা হয়ে উঠেনি।
প্রথম আলো এই রিপোর্ট করেছিল শেখ মুজিবের হত্যা কে জঙ্গি হামলা বলে, অভিযুক্তদের ইন্টারপোলে নিয়ে আসার জন্য, কিন্তু তাসের ঘর উল্টে যাওয়ায়, বর্তমানে এই রিপোর্ট "১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পাতায় ইসলাম" বিষয়ে প্রতিবেদন হয়ে উঠেছে।
আহা যদি জাতির সূর্যসন্তানরা সবাই বেঁচে থাকতো!
আজকের ঘটনা থেকে একটি শিক্ষা নিন, আপনি ভালো কাজ করুন যদিও তা ৯৯% লোক খারাপ বলে চেঁচায়, ৫০ বছর পরে হলেও ৯৯% লোক সেটাকে ভালো বলতে বাধ্য হবে। কারন কাজটা আদতে ভালো ছিল।
স্যার, ৭১ এ শেখ মুজিব স্বাধীনতাই চায়নি চেয়েছিলো স্বায়ত্তশাসন, যুদ্ধেও তার ও তার দলের কোনো কন্ট্রিবিউটও ছিলো না, সে ছিলো পাকিস্তানে আর তার দলের বাকী সবাই ছিলো ইনডিয়ায়, ৭১ এর কৃতিত্তের দাবীদার দলের লোকগন আবার ৪৭ কে অসীকার করে কারন তা মুসলিম জাতিসত্বার সাথে সংশ্লিষ্ট, ৪৭ কে অসীকার করলে ৭১ আসে কিভাবে, আর ৭১ এর কারনেই কি এই ৫৩ বছর এ দেশ পাকির থেকে আলাদা হয়ে ভারতের দখলদারিত্তে ছিল না? আর ৭১ থেকে ৭৫ বছর পর্যন্ত এদেশের সবাচাইতে বড় মাফিয়া ডাকাত খুনি বাকশাল কি মুজিব নিজেই নয়?
আমাদের দেশের মানুষ যখন এদেশের উন্নয়নের ইতিহাস বলেন তখন শুধু শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ জিয়াউর রহমান, হুমু এরশাদ, বেগম খালেদা জিয়া, আর লৌহ মানবী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের কথা বলেন।
আমাদের মানুষের উন্নয়নের ফিরিস্তি শুনে শুনে নতুন প্রজন্মের মনে কি একবারও প্রশ্ন জাগেনা? তাহলে পাকিস্তানের ২৪ বছর কি পূর্ব পাকিস্তানে কোন উন্নয়ন করা হয়নি?
আসুন আমরা আবার আমাদের দেশের উন্নয়নের ইতিহাস ঘটে দেখি পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানের কি কি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল?
কি কি উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল, বাস্তবায়ন করা হয়েছিল!
পূর্ব পাকিস্তানের ২৪ বছরে আইয়ুব খানের শাসনামলে ২২ জন গবর্ণরদের মধ্যে একমাত্র মোনায়েম খান পূর্ব পাকিস্তানের যে উন্নয়ন করে গেছেন সে রকম উন্নয়নকারী পূর্ব পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয়জন পাওয়া যাবে না। পাকিস্তান আমলে মোনায়েম খানের আগের সকল গভর্ণর পূর্ব পাকিস্থানের উন্নয়নের টাকা ব্যয় করার মতো খাত না পেয়ে সে অর্থ কেন্দ্রে ফেরত পাঠিয়ে দিতেন ।
আইয়ুব খানের শাসনামলে গভর্নরের মধ্যে একমাত্র মোনায়েম খান যিনি আইয়ুব খান সরকার থেকে পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের উন্নয়নে পশ্চিম পাকিস্তানের চেয়ে বেশি বরাদ্দ পূর্ব পাকিস্তানের জন্য আইয়ুব খান থেকে আদায় করে ছেড়েছেন।
মোনায়েম খানই একমাত্র ব্যক্তি যিনি পূর্ব পাকিস্তানে অনেক বেশি উন্নয়ন করতে বাধ্য করেছিলেন আইয়ুব খানকে। গভর্নর হিসেবে জনাব আবদুল মোনায়েম খান সবচেয়ে দীর্ঘকাল দায়িত্ব পালন করেন, তাঁর সময়ে যেসব উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছিল তার মধ্যে আছে
১-শেরে বাংলানগর, (আগে নাম ছিলো আইয়ুব নগর)
২-জাতীয় সংসদ ভবন,
৩-বাংলাদেশ সচিবালয়ের কয়েকটি উচ্চতলা ভবন,
৪-বায়তুল মোকাররম মসজিদ ও মার্কেট,
৫-সুপ্রিম কোর্ট ভবন
৬-বাংলাদেশ ব্যাংক,
৭-সোনালী ব্যাংক ভবন (ন্যাশনাল ব্যাংক), ৮-বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়,
৯-চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়,
৮-জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়,
৯-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালভের একাধিক আধুনিক ভবন ও হল, নতুন কলাভবন, প্রশাসনিক ভবন, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, জিন্নাহ হল (বর্তমান সূর্যসেন হল), হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল, রোকেয়া হল, আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ, ঢাকা কারু ও চারুকলা কলেজ ভবন ও ছাত্রাবাস,
১০-কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, ১১-আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দরের ভিত্তি স্থাপন করেন, পরে যেটি জিয়া বিমান বন্দরে পরিণত হয়।
১২-জিপিও ভবন,
১৩-এটমিক অ্যানার্জি সেন্টার,
১৪-সাইন্স ল্যাবরেটরি,
১৫-পিজি হাসপাতালসহ ৭টি মেডিক্যাল কলেজ,
১৬- ডি আই টি ভবনে প্রথম টেলিভিশন কেন্দ্র,
১৭-বনানী, গুলশান, উত্তরা ও নাসিরাবাদ মডেল টাউন,
১৮-সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল,
১৯-জয়দেবপুর ধান গবেষণা কেন্দ্র,
২০-বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি,
২১-গাজীপুর অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি,
২২-চট্টগ্রাম ইস্পাত কারখানা,
২৩-আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ প্রকল্প।
২৪-কাপ্তাই বিদ্যুৎ প্রকল্প,
২৫-ঝিনাইদহ কলেজ,
২৬-রাজশাহী ক্যাডেট গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট, ২৭-ঘোড়াশাল সার কারখানা,
২৮-প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ
২৯-মার্কিন রিফাইনারি,
৩০-বাংলাদেশ ডিজেল প্লান্ট,
৩১-টেলিফোন কারখানা,
৩২-চট্টগ্রাম ইন্টার্নার্ড,
৩৩-নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড,
৩৪-নর্থবেঙ্গল পেপার মিল,
৩৫-খুলনা হার্ড কোর ফ্যাক্টরি,
৩৬-কর্ণফুলী পেপার মিল
৩৭-ইস্টার্ন কেবলস ইত্যাদি।
৩৮- মোনয়ের খানের আমলে ১০টি চিনিকল, ৩৯-১৬টি জুট মিল ও
৪০-শতকরা ৮০টি টেক্সটাই মিল প্রতিষ্ঠিত হয়। ৪১- ঈশ্বরদীতে প্রতিষ্ঠিত হয় সুগারকেইন রিসার্চ ইনস্টিটিউট।
৪২- নাটোরের দিঘাপতিয়ার রাজবাড়িকে সংস্কার করেন গভর্নমেন্ট হাউজ-
৪২-শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের স্থাপন;
৪৩- শাহবাগের কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির স্থাপন।
৪৪- মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ
৪৫- ওয়াটার অ্যান্ড পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অথরিটি সংক্ষেপে ওয়াপদা নামে পরিচিত। দেশের বিদ্যুৎ খাতে গতি সঞ্চারের লক্ষ্যে ১৯৫৯ সালে ওয়াপদা গঠন করা হয়।
৪৬- কাপ্তাই থেকে সিদ্ধিগঞ্জ ২৭৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য দেশের প্রথম জাতীয় পাওয়ার গ্রিড লাইন চালু করা হয়।
মোনায়েম খান এবং আইয়ুব খান এত করার পরও বাঙালিদের কাছে এরা খলনায়ক।
কারণ এরা এত উন্নয়ন করে গেলেও জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকার দিতেন না। বলতেন আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র।
রেফারেন্স, স্বৈরশাসক আইয়ুব খান সংস্কার শাসন ও উন্নয়ন পৃষ্ঠা ৬৭-৬৮ লেখক মাহমুদুল হাসান নিজামী।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন