পীর পন্থিদের গোমর ফাস




পূর্ববর্তী সকল পীর-ওলীদের ফতোয়ামতেই বর্তমানযুগের সকল পীর কাফের !
ইলমে তাসাউফ/ইলমে মারেফাতের সকল তরীকার সকল ইমাম, পীর বুযুর্গ যেমন কাদরীয়া তরীকার হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (র.), চিশ্তিয়া তরীকার হযরত মুঈনুদ্দীন চিশতী (র.), মুজাদ্দিদীয়া তরীকার হযরত মুজাদ্দিদ আলফে সানী (র.), নকশেবন্দিয়া তরীকার হযরত বাহাউদ্দীন নকশেবন্দী সহ সকলে এ ব্যাপারে একমত যে, শরীয়ত বিহীন মারেফাত কুফরী। যে শরীয়ত মানলনা মারেফতি করার চেষ্টা করল সে কাফের হয়ে গেল। আর শরীয়তের মূল আমল ই হল সমাজ ও রাষ্ট্রে শরীয়তের বিধি বিধান কায়েম করে বিশ্বমানবতাকে মুক্তি দেয়া। অতএব যারা ইসলামী রাজনীতি করার মাধ্যমে শরীয়তের এ সর্বচ্চো দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করে যাচ্ছে যেমন জামায়াতে ইসলামী সহ সকল ইসলামী রাজনৈতিক দল তাদের বিরোধীতা করে বর্তমান যুগের সকল পীর কাফের হয়ে গেছে। আর পূর্ববর্তী পীর গণ এ ব্যাপরটি এভাবে বলার প্রয়োজন বোধ করেন নাই কারন তখন ইসলামী রাষ্ট্র বিরোধী যে মতবাদ রয়েছে যেমন সেকুলারিজম বা কমিউনিজম এ সকল মতবাদের উদ্ভব ঘটেনাই, কিছুদিন আগ পর্যন্তও মুসলিমদের তুর্কী খেলাফত কায়েম ছিল। তাই তাদেরকে এ ব্যাপারে বলার প্রয়োজন পড়েনি। যদিও যেসকল জায়গায় সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় ভাবে ইসলামী আইন লংঘিত হত সেসকল ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী সকল পীর গণ ই জিহাদ করেছেন কেউ ই বর্তমান পীরগণের মত সেকুলারদের সহয়োগী হওয়া বা বাম হাত হিসেবে ব্যাবহত হন নাই। তাই পূর্ববর্তী সকল পীর বুযুর্গদের ফতোয়া মোতাবেক বর্তমান যুগের সকল পীর কাফের।

সূফীদের মাযহাবসমূহ
সূফীদের তিনটি মাযহাবে ভাগ করা যায়। যেমন :


(১) প্রাচ্য দর্শন ভিত্তিক মাযহাব الموهب الإشراقى যা দক্ষিণ এশীয় হিন্দু ও বৌদ্ধদের নিকট থেকে এসেছে। এই মাযহাবের অনুসারী সূফীরা মা’রেফাত হাসিল করার জন্য দেহকে চরমভাবে কষ্ট দিয়ে স্বীয় ক্বলবকে তাদের ধারণা মতে জ্যোতির্ময় করার চেষ্টা করে থাকে। প্রায় সকল সূফীই এরূপ প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকে।

(২) খৃস্টানদের থেকে আগত মাযহাব, যা ‘হুলূল’ ও ‘ইত্তেহাদ’ দু’ভাগে বিভক্ত। (الموهب الحلولى) অর্থ ‘মানুষের দেহে আল্লাহর অনুপ্রবেশ’ (هو القول بأن الله يحل فى الإنسان) হিন্দু মতে ‘নররূপী নারায়ণ’। ইরানের আবূ ইয়াযীদ বিস্তামী (মৃত ২৬১ হিঃ) ওরফে বায়েজীদ বুস্তামী ছিলেন এই মতের হোতা। (আল-ফিকরূস সূফী ৬৫ পৃঃ, কুয়েত- মাকতাবা ইবনু তাইমিয়াহ ২য় সংস্করণ)

এই মাযহাবের অন্যতম নেতা হুসাইন বিন মানসূর হাল্লাজ (মৃত ৩০৯ হিঃ) নিজেকে সরাসরি ‘আল্লাহ’ (আনাল হক্ব) বলে দাবী করায় মুরতাদ হওয়ার কারণে তাকে শূলে বিদ্ধ করে হত্যা করা হয়। (মাদখালী, হাক্বীক্বাতুস্ সূফীইয়াহ ১৯ পৃষ্ঠা)

৩। ইত্তেহাদ বা ওয়াহ্দাতুল উজুদ (وحدة الوجود) বলতে অদ্বৈতবাদী দর্শন বুঝায়, যা ‘হুলূল’-এর পরবর্তী পরিণতি হিসাবে রূপ লাভ করে। এর অর্থ হল আল্লাহর অস্তিত্বের মধ্যে বিলীন হয়ে যাওয়া (الفناء فى الله)। অস্তিত্ব জগতে যা কিছু আমরা দেখছি, সবকিছু একক এলাহী সত্তার বহিঃপ্রকাশ। এই আক্বীদার অনুসারী সূফীরা স্রষ্টা ও সৃষ্টিতে কোন পার্থক্য করে না। এদের মতে মূসা (‘আ.)-এর সময়ে যারা বাছুর পূজা করেছিল, তারা মূলতঃ আল্লাহ্কে পূজা করেছিল। কারণ তাদের দৃষ্টিতে সবই ‘আল্লাহ’। আল্লাহ আরশে নন; বরং সর্বত্র ও সব কিছুতে বিরাজমান। অতএব মানুষের মধ্যে মু’মিন ও মুশরিক বলে কোন পার্থক্য নেই। যে ব্যক্তি মূর্তিপূজা করে বা পাথর, গাছ, মানুষ, তারকা ইত্যাদি পূজা করে, সে মূলতঃ আল্লাহ্কে পূজা করে। সবকিছুর মধ্যে আল্লাহর নূর বা জ্যোতির প্রকাশ রয়েছে। তাদের ধারণায় খৃস্টানরা কাফের এজন্য যে, তারা কেবল ঈসা (‘আ.)-কেই প্রভু বলেছে। যদি তারা সকল সৃষ্টিকে আল্লাহ বলত, তাহলে তারা কাফির হত না। বলা বাহুল্য এটাই হল হিন্দুদের ‘সর্বেশ্বরবাদ’।

তৃতীয় শতাব্দী হিজরী থেকে প্রচলিত এই সব কুফুরী আক্বীদার সূফী সম্রাট হলেন সিরিয়ার মুহিউদ্দ্বীন ইবনুল আরাবী (মৃত ৬৩৮ হিঃ)। তার একটি কবিতা দ্বারা তার আক্বীদা ফুটে ওঠে, যেমন তিনি বলেন :

العبد حق والرب حق- ياليت شعرى من المكلف

إن قلت عبد فداك حق- أو قلت رب إنى يكلف

বান্দাও সত্য, রবও সত্য। জানি না কে শারী‘আতের বাধ্য? যদি তুমি বল যে, সে হল বান্দা, তবে সেটাও সত্য। কিংবা যদি তুমি বল যে, সে হল রব, তবে কোথায় কাকে বাধ্য করা হবে? (হাক্বীক্বাতুস্ সূফীয়া, ২০ পৃষ্ঠা)

বর্তমানে এই আক্বীদাই মা’রেফাতপন্থী সূফীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। এই আক্বীদার নেতৃত্বে আরও রয়েছেন ইবনু সাবাঈন, ইবনুল ফারিয, আকীক তিলমেসানী, আবদুল করীম জায়লী (মৃত ৮১১ হিঃ) আবদুল গণী নবলুসী ও আধুনিককালে আবিষ্কৃত বিভিন্ন তরীকার সূফীরা- (ফাজায়েদুস সুফীইয়াহ ৪৪ পৃষ্ঠা)।


এদের দর্শন হল এই যে, প্রেমিক ও প্রেমাস্পদের মধ্যকার সম্পর্ক এমন হতে হবে যেন উভয়ের অস্তিত্বের মধ্যে কোন ফারাক না থাকে। অথচ আল্লাহ কারো সাথে মিলতে পারেন না। আল্লাহ এবং বান্দা কখনোই এক হতে পারে না। যেমন আল্লাহ বলেন-لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ ‘‘তাঁর তুলনীয় কিছুই নেই। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’’ (সূরা শূরা ১১)। ‘‘তিনি কাউকে জন্ম দেন না, আর তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই’’ (সূরা ইখলাস ৩-৪)। বলাবাহুল্য ‘ফানাফিল্লাহ’র উক্ত আক্বীদা সম্পূর্ণরূপে কুফরী আক্বীদা। এই আক্বীদাই বর্তমানে চালু আছে।

হিন্দু দার্শনিকগণ ইশ্বর, মানুষ ও ব্যাঙের মধ্যে কোন পার্থক্য খুঁজে না পেয়ে বলেন, ‘হরির উপরে হরি, হরি শেভা পায়। হরিকে দেখিয়া হরি হরিতে লুকায়।’

একই দর্শনের প্রভাবে কথিত মুসলিম সূফীগণ আহমাদ ও আহাদ-এর মধ্যে কোন পার্থক্য খুঁজে পান না। এজন্য তারা বলেন,

আকার কি নিরাকার সেই রববানা;

‘আহমাদ’ ‘আহাদ’ হলে তবে যায় জানা।

মীমের ঐ পর্দাটিরে উঠিয়ে দেখবে মন,

দেখবি সেথায় বিরাজ করে ‘আহাদ’ নিরঞ্জন।

এরা আরও বলেন, যত কল্লা তত আল্লাহ।

উর্দু কবি বলেছেন :

بتاء مهرمنور مين نور كسى كاهـﮯ

ميان انجم تابان ظهور كسى كاهـﮯ

বল, জ্যোতির্ময় চন্দ্রের মধ্যে আলো কার? বল তারকারাজির দীপ্তির মাঝে কার প্রকাশ?




হক্কানি পীরের শাজরানামা তথা সিলসিলা দেখুন। সেখানে দেখবেন সর্বশেষ ধাপে হাসান বসরী রহঃ থেকে আলী (রাঃ) অতঃপর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যস্ত পৌঁছেছে। অর্থাৎ এরা বুঝাতে চায়, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পীর-মুরিদী'র জন্য আলী (রাঃ) কে খেলাফত দিয়েছেন, আলী (রাঃ) আবার হাসান বসরী (রহঃ)কে খেলাফত দিয়েছেন, এভাবে পর্যায়ক্রমে তাদের পীর-মুরিদী'র সিলাসিলা। 
.
#প্রশ্ন: পুরো হাদিস-সীরাত-তারীখের কিতাব থেকে চ্যালেঞ্জ; মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলী (রাঃ) কে, তিনি হাসান বসরী (রহঃ) কে খেলাফত দিয়েছেন এরকম একটি সহীহ নজির দেখান।
.
এ প্রশ্ন করলে কথিত পীর আর মুরিদগুলো কাকতাড়ুয়া'র মতো বাকরুদ্ধ হয়ে চেয়ে থাকবে এবং তলপেট হালকা চাপ সৃষ্টি হবে।
মূলত, রাসূল (সাঃ) শানে মিথ্যাচারের মাধ্যমে পীর-মুরিদী'র জন্ম!
.

যারা আজকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তরিকা বাদ দিয়ে চিশতীয়া, কাদেরিয়া, নক্সবন্দীয়া ইত্যাদি তরিকা ধরেছে তাদের জিজ্ঞাসা করবেন; আত্মাশুদ্ধি সর্বকালের, সর্বযুগের জন্য ফরজ। আর আব্দুল কাদের জিলানী, মঈনুদ্দিন চিশতী জন্মগ্রহন করেছে আজ থেকে ৯০০-১০০০ বছর আগে।
.
#প্রশ্ন: চিশতী, কাদেরী প্রমু্খদের জন্মের আগের মানুষগুলো কোন তরীকায় আত্মাশুদ্ধি হয়েছিল??
#প্রশ্ন: ইমাম আবু হানিফা রহঃ, ইমাম শাফেয়ী রহঃ, ইমাম মালেক রহঃ, ইমাম হাম্বল রহঃ কোন তরিকায় আত্মাশুদ্ধি করতেন, কিভাবে আত্মাশুদ্ধি করতেন??
#প্রশ্ন: ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) কি পীর ছিলেন, তাঁর পীরের নাম কি? তাঁর খলিফাদের নাম কি?
এ প্রশ্নগুলো করলে ওদের তলদেশে সৃষ্ট চাপ নিম্ম প্রদেশ দিয়ে ইয়ে ফোঁটা ফোঁটা বের হতে শুরু করবে :-D
.

আমরা বলি, বায়আতের যত হাদিস আছে, তার সবগুলো রাষ্ট্রীয় আনুগত্য, আমীরুল মু'মিনীন, আমীরুল মুজাহিদীনের সাথে সম্পর্কিত। এসব বায়আত থেকে যে হাত গুটিয়ে নিবে, সে রাষ্ট্রদ্রোহী হবে, মুসলিম সরকার চাইলে তার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষনা করতে পারে। 
.
#প্রশ্ন: কথিত এসব পীরদের ব্যাপারে আমি যদি হাত গুটিয়ে নেই অথবা তার হুকুম অমান্য করি, তবে পীরের কি অধিকার আছে আমাকে দন্ডবিধি প্রয়োগ করার?
#প্রশ্ন: পীরের হুকুম অমান্য করার শাস্তি কি? (কুরআন-সহীহ হাদিসের আলোক জবাব চাই)
এ প্রশ্নে ওদের হৃদপিন্ডের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম শুরু হবে।
.

অবস্থা যাই হোক, যেতে দিবেন না। :-P ধরে রেখে সর্বশেষ প্রশ্ন বরুন।
যেহেতু তাজকিয়া তথা আত্মাশুদ্ধি ফরজ। সেহেতু এর হুকুম কিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে।
.
#প্রশ্ন: ঈসা ইবনে মারিয়াম (আঃ) এবং মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ যখন পুনরায় পৃথিবীতে আসবেন, তখন কি পীর-মুরিদীর অস্তিত্ব থাকবে? 
#প্রশ্ন: তখন কি এসব খানকাওয়ালা কথিত পীর থাকবে, যে বসে বসে মুরিদ'দের ক্বলব পরিচ্ছন্ন করবে?
#প্রশ্ন: যদি না থাকে, তবে সেসময়ের মানুষেরা কোন পদ্ধতি আত্মশুদ্ধি করবে?
===================================================================================== 
তাযকিয়া, তাসাউফ ও হাসান বসরী র.
এক. ইমামু আহলিল বসরা সাইয়েদুনা হাসান বসরী র.। শীর্ষস্থানীয় তাবেয়ীদের একজন। সাহাবীদের হাতে বড় হয়েছেন। তাঁর ব্যাপারে সমকালীন উলামায়ে কিরামের বক্তব্য হচ্ছে: তার চেয়ে সাহাবাদের অধিক সদৃশ আর কেউ আমাদের চোখে পড়েনি।
দুই. ইসলামে যতগুলো ফিরক্বা ও দল-উপদল রয়েছে। হক হোক কিংবা বাতিল হোক- প্রত্যেকেই হক হওয়ার প্রমাণ স্বরূপ নবীজী সা. ও সাহাবায়ে কিরামের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করে। এএটা একটা প্রশংসাপত্রের মতো। একারণে দেখা যায়, খাওয়ারেজ-কাদেরিয়া থেকে শুরু করে শিয়া ও (ভণ্ড) সুফিরাও সাহাবায়ে কিরাম কিংবা বড় কোনো ইমাম বা ব্যক্তিত্বের সঙ্গে নিজের নিসবত আবিষ্কার করে। উদাহরণত শিয়ারা নিজেদের আলী রা. এর অনুসারী বলে দাবি করে। কিন্তু আলী কি শিয়া ছিলেন? তথাকথিত ইসলামী কমিউনিজমের দাবিদাররা আবু যর গিফারীর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা দাবি করে। আবু যর গিফারী কি কমিউনিস্ট ছিলেন? ক্বাদেরিয়া সম্প্রদায় হাসান বসরীর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা দাবি করতো এবং এ ব্যাপারে তার নামে কিতাবও লিখেছে। হাসান বসরী কি তকদীর অস্বিকারকারী ভ্রান্ত ক্বাদরিয়া সম্প্রদায়ের জনক ছিলেন? মাইজভাণ্ডারীরা তাদের গ্রন্থে আব্দুল হক্ব দেহলভী, ইমাম গাযালীসহ অনেকের নাম তাদের সালাফ হিসেবে উল্লেখ করে। এর মানে দেহলভী কিংবা গাযালী মাইজভাণ্ডারী? প্রত্যেকটির উত্তর না।
তিন. ইমাম আবু নুআইম ইস্পাহানী 'হিলয়াতুল আউলিয়া' গ্রন্থে তাসাউফের ইমামদের আলোচনা করেছেন। সেখানে তিনি আবু বকর, উমর, উসমান ও আলী রা. এর মতো বড় বড় সাহাবায়ে কিরামের জীবনীও এনেছেন। এর অর্থ তারাও সুফি ছিলেন! কেউ বলতে পারেন, যুহদ ও ইবাদতের ভিত্তি করে তাদের আলোচনা আনতে পারেন। ইবনুল জাওযী এর জবাবে বলেছেন, তাসাউফ একটি মতাদর্শ এবং কেবল যুহদ নয়; বরং আরও অনেক কিছু এর ভেতরে রয়েছে। বরং যাদের জীবনী তাতে এনেছেন, উদহারণত ইমাম শাফেয়ী, কথিত তাসাউফের বিরুদ্ধে তার বক্তব্য রয়েছে'।
চার. বর্তমান অনেক (হক এবং বাতিল) সুফী তরীকা হাসান বসরী র. এর দিকে নিজেদের নিসবত করে। হাসান বসরী- আলী- রাসূলুল্লাহ সা.। অথবা হাসান বসরী-আনাস বিন মালিক-রাসূল সা.। কোনো তরীকাতে আবু বকরও রা. রয়েছেন। এর অর্থ কী? দু'টি অর্থ করা যেতে পারে। এক. তারা বুযুর্গ ছিলেন অন্য আরও দশজনের মতোই। কিন্তু তাদের কোনো ছাত্র তাসাউফের সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন এবং পরবর্তীতে পরম্পরায় তরীকার আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। দুই. তাদের কাছে আলাদা কোনো ইলম ছিল, ইবাদতের আলাদা তরীকা ছিল, আলাদা দুআ-দরূদ ও অজীফা ছিল, বাইয়াত ও খিরকা ছিল। দ্বিতীয়টি অসম্ভব। আবু বকর কিংবা আলী রা. এর আলাদা কোনো ইলম ছিল না। আলাদা ইবাদত-পদ্ধতি কিংবা দুআ-অজীফা ছিল না। তবে প্রথমটি সম্ভব। কিন্তু কথা হলো- কোনো ছাত্র কিংবা ছাত্রের ছাত্র যদি নিজস্ব কোনো পদ্ধতি আবিষ্কার করে তার জন্য উস্তাদ দায়ী হন কীভাবে?
পাঁচ. হাসান বসরী র. এর আমলে ইবাদত-বন্দেগীর ওপর জোর দিতেন এমন একশ্রেণীর মানুষের সমাজে উদ্ভব ঘটেছিল। এরা খুব কান্নাকাটি, ইবাদত ও দুনিয়াবিমুখ ছিলেন। যিকির ও ইবাদত করতে গিয়ে কখনও বেহুঁশ হয়ে যেতেন। আসমা বিনতে আবু বকর, আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর ও মুহাম্মাদ ইবনে সীরীনের মতো সাহাবী ও তাবেয়ীরা এদের সমালোচনা করতেন। সে যাই হোক, হাসান বসরী র. অত্যন্ত পরহেযগার ও বুযুর্গ তাবেয়ী ছিলেন। প্রচুর ইবাদত-বন্দেগী ও মুজাহাদ করতেন। তার কয়েকজন শিষ্য ছিলেন ইবাদতের ক্ষেত্রে আরও অগ্রগণ্য। ইবাদত করতে করতে হাদীস ও ইলমের প্রতিও দুর্বলতা এসে গিয়েছিল। হাসান বসরী র. তাদের সঙ্গে নিজ ঘরে আলাদা বৈঠক করতেন। সেখানে তাসাউফ-যুহদ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হতো। পরবর্তীতে এসব ছাত্ররা যেমন আব্দুল ওয়াহেদ বিন যায়দ ও আমর বিন উবায়েদের মতো বুযুর্গ মানুষ বিভিন্ন ত্বরীকা ও খানকা প্রতিষ্ঠা করেন। আর হাসান বসরী হয়ে যান ত্বরীকার ইমাম!
ছাত্ররা খানকা প্রতিষ্ঠা করে সুফি ও ত্বরীকার প্রতিষ্ঠাতা হলে হাসান বসরীও ত্বরীকার প্রতিষ্ঠাতা হয়ে যান? তাহলে আলী রা. কেন শিয়া হবেন না? হাসানী বসরী কেন ক্বাদরী (তকদীর অস্বিকারকারী) হবেন না? আবু যর রা. কেন কমিউনিস্ট হবেন না? ত্বরীকা বলতে যা কিছু বোঝায়, সুফিবাদ বলতে যা কিছু বোঝায়- হাসান বসরী র. এর যুগে এসব কিছু ছিল না। তিনি ইবাদত করতেন, যাহেদ ছিলেন। তাকওয়া, যুহদ, ইলম, নুসুক ইত্যাদি নিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা-পর্যালোচনা করতেন। তাঁর ছাত্র সুফি হলে তিনি সুফিদের ইমাম হতে যাবেন কেন? আবুদল ওয়াহিদ বিন যায়েদ আর হাসানের ইলম, চিন্তাগত মানহাজ, রাজনৈতিক মানহাজ কোনোকিছুই মিল ছিল না।
ছয়. সাহাবায়ে কিরাম, তাবেঈন, চার ইমাম, সিহাহ সিত্তার আইম্মায়ে কিরাম, মুহাদ্দিসীন হাতে গনা দুয়েকজন ব্যতীত কেউ ত্বরীকাপন্থী ছিলেন না। হুম সকলে ছিলেন যাহেদ, মুত্তাকী, বুযুর্গ, আল্লাহর অলী। আজও পৃথিবীতে ত্বরীকাপন্থী উলামােয়ে কিরামের চেয়ে ত্বরীকার বাইরের উলামায়ে কিরামের সংখ্যা বেশি। তাযকিয়া ও ইসলাহ ফরজ। তাই অঞ্চল কিংবা প্রেক্ষাপট ভেদে যদি ব্যক্তিবিশেষ কারও কাছ থেকে ইসলাহী ফায়েদা নিতে হয় সেটা নিতে সমস্যা নয়; বরং জরুরী। এটার বিরোধিতা করা হচ্ছে না। গুরত্বও অস্বীকার করা হচ্ছে না। অস্বীকার করা হচ্ছে জগতের বড়বড় আয়িম্মায়ে কিরাম যারা এগুলো চিনতেনও না তাদের নামের 'তাযকিয়া' নেয়াটাকে। আজ যদি হাসান বসরী কিংবা আব্দুল কাদের জিলানী র. দুনিয়াতে আসতেন, চিশতিয়া কিংবা ক্বাদেরিয়া ত্বরীকা দেখে তারা আবার মনোকষ্টে মরে যেতেন।
=================================================================================
যারা আল্লাহকে ছাড়া অন্য কাউকে ওলী আওলিয়া হিসেবে গ্রহন করে তাদের দৃষ্টান্ত মাকড়সার দুর্বল ঘরের মত!!
আল্লাহ বলেনঃ
مَثَلُ الَّذِينَ اتَّخَذُوا مِن دُونِ اللَّهِ أَوْلِيَاء كَمَثَلِ الْعَنكَبُوتِ اتَّخَذَتْ بَيْتًا وَإِنَّ أَوْهَنَالْبُيُوتِ لَبَيْتُ الْعَنكَبُوتِ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُون
যারা আল্লাহর পরিবর্তে অপরকে আওলিয়া হিসেবে গ্রহণ করে তাদের উদাহরণ মাকড়সা।
সে ঘর বানায়। আর সব ঘরের মধ্যে মাকড়সার ঘরই তো অধিক দুর্বল, যদি তারা জানত।
সুরা আনকাবুত,আয়াত ৪১
 =====================================================================================
ওলী আওলিয়ার নাম নিলে যারা আনন্দিত হয় অথচ তাওহীদের নাম নিলে অন্তর সংকোচিত হয়ে যায় তারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা!
আল্লাহ বলেনঃ
وَإِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَحْدَهُ اشْمَأَزَّتْ قُلُوبُ الَّذِينَ لا يُؤْمِنُونَ بِالآخِرَةِ وَإِذَا ذُكِرَ الَّذِينَ مِنْ دُونِهِ إِذَا هُمْ يَسْتَبْشِرُونَ
আর যখন এক আল্লাহর উল্লেখ করা হয়, যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না তাদের অন্তর তখন সঙ্কুচিত হয়ে যায় আর যখন আল্লাহ ছাড়া অন্য ইলাহের উল্লেখ করা হয় তখন তারা আনন্দে উৎফুল্ল হয়।
(আয-যুমার, ৩৯/৪৫)
ওলী নামে খাজা বাবা আর মাইজভান্ডারীর কথা বললে খুব আনন্দিত কিন্তু আল্লাহর তাওহীদের কথা বললে সত্য থেকে পালায়।
মহান আল্লাহ বলেন;
وَجَعَلْنَا عَلَى قُلُوبِهِمْ أَكِنَّةً أَنْ يَفْقَهُوهُ وَفِي آذَانِهِمْ وَقْرًا وَإِذَا ذَكَرْتَ رَبَّكَ فِي الْقُرْآنِ وَحْدَهُ وَلَّوْا عَلَى أَدْبَارِهِمْ نُفُورًا
আর আমি তাদের অন্তরের উপর আবরণ দিয়েছি, যাতে তারা তা (কুরআন) বুঝতে না পারে এবং তাদের কানে দিয়েছি বধিরতা আর যখন তুমি কুরআনে তোমার রবের একত্বের উল্লেখ কর, তখন তারা (সত্য থেকে) পালিয়ে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
(আল-ইসরা, ১৭/৪৬)
 =====================================================================================
ওলী আওলিয়া কে বা কারা??
দেখুনতো আল্লাহর দেওয়া সংজ্ঞা অনুযায়ী আপনি আল্লাহর ওলী কিনা???
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
সত্যকে জানুন, ভন্ডামী থেকে বাচুন
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কুরআনের বানী-
‎أَلا إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللَّهِ لا خَوْفٌ ‏
عَلَيْهِمْ وَلا هُمْ يَحْزَنُونَ‏
জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর ওলীদের (অর্থাৎ বন্ধুদের) কোন ভয় নেই আর তারা চিন্তিত হবে না।
(ইউনুস, ১০/৬২)
উপরের আয়াত থেকে জানতে পারলাম যারা আল্লাহর ওলী তাদের কোন ভয় ও চিন্তা নেই…
✔ তাহলে প্রশ্ন জাগে আল্লাহর সেই ওলী কারা??
------------------------------------
আল্লাহর ওলী বা বন্ধু কে তা উপরের আয়াতের নিচের আয়াতেই বলা হয়েছে. তো দেখুন…….

الَّذِينَ آمَنُوا وَكَانُوا يَتَّقُونَ‏
‎(আল্লাহর ওলী) হল তারা যারা ঈমান এনেছে ও তাকওয়া অবলম্বন করেছে।
(ইউনুস, ১০/৬৩)
সুরা ইউনুসের ৬৩ নাম্বার আয়াত থেকে ওলীদের ২টি গুন জানতে পারলাম,
১,যারা ঈমানদার
২,যারা আল্লাহকে ভয় করে
, অর্থাৎ তারাই আল্লাহর ওলী যারা খাটিভাবে আল্লাহর উপর ঈমান আনে ও আল্লাহকে ভয় করে,
বন্ধুরা এবার ভেবে বলুনতো আপনি কি আল্লাহর উপর ঈমান আনেননি??
আপনি কি আল্লাহকে ভয় করেননা??
যদি উত্তর হয় হ্যাঁ ।
তাহলে তো আল্লাহর ঘোষনা অনুযায়ী আপনিও আল্লাহর ওলী!
আরেকটি আয়াত দেখুন, যেখানে আল্লাহ আরো সুন্দর করে ওলীদের পরিচয় দিয়েছেন
-------------------
সুরা আল মায়েদা ৫৫ আয়াতে আল্লাহ বলেনঃ
إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلاَةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ رَاكِعُونَ‏
তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ তাঁর রসূল এবং মুমিনবৃন্দ- যারা ছলাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং বিনম্র।
[সুরা মায়েদা: ৫৫]
অর্থাৎ সব মুমিনই আল্লাহর ওলী!
যারা সালাত কায়েম করে, যারা যাকাত দেয় , যারা সুন্দর ও বিনয়ী আচরন করে তারাই আল্লাহর ওলী..
তো ভাই আপনি কি সালাত আদায় করেননা?
আপনি কি যাকাত আদায় করেননা??
আপনি কি বিনম্র নন??
যদি উত্তর হয় হ্যা…
তাহলে তো আল্লাহর ঘোষনা অনুযায়ী আপনিও আল্লাহর ওলী..
তাহলে কেন হাতে গুনা কয়েকটি মানুষকে আপনারা ওলী বানিয়ে দিয়ে তাদের কাছে মুরিদ হন?
কেন তারা কেউ আপনার হাতে মুরিদ হয়না?
এটা কি ভন্ডামী নয়??
কেন তাদের ইবাদত করেন??
কেন তারা আপনার ইবাদত করেনা?
কেন তাদের জান্নাতী বলেন?
কেন তারা আপনাকে জান্নাতী বলেনা?
কেন তাদের শুপারিস চান?
তারা কেন আপনার শুপারিশ চায়না?
===================================================================================== 
 ব্রাহ্মণবাদ→পীরতন্ত্র বা সূফীবাদ !
🌎আমাদের সমাজের সূফীবাদ বা পীরতন্ত্র ভ্যাজাল আমল সমূহ আগমন করেছে ব্রাহ্মণবাদ থেকে। বিশ্বাস হয় না? তাহলে দেখুন তো সূফীবাদীদের বিভিন্ন আমলগুলো হিন্দু ধর্মের ব্রাহ্মণবাদ-এ পাওয়া যায় কিনা?
■পরিচিতিঃ 
☞ হিন্দুদের আছে ঋষি, মণি, মহাত্মা, অবতার, সাধু, শান্ত, সৈন্যাসী, ইয়োগী, শাস্ত্রী, চত্রবেদী ইত্যাদি আর সূফী-পীরদের আছে গাউজ, কুতুব, নজীব, আব্দাল, ওলী, ফকীর, দরবেশ ইত্যাদি। 
☞ হিন্দুদের আখরা আর সূফী-পীরদের খানকা! 
☞ হিন্দুদের দুর্গা মা থাকে মন্দিরে আর পীরতন্ত্রে মুরিদদের বাবা থাকে দর্গাতে, 
☞ হিন্দুরা যায় মন্দিরে, পীরতন্ত্রে মুরিদরা যায় মাজারে! 
☞ হিন্দুরা বিপদে পড়লে মাকে ডাকে আর পীরতন্ত্রে মুরিদরা বিপদে পড়লে বাবাকে ডাকে! 
☞ হিন্দুরা বলে, ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’, পীরতন্ত্রে মুরিদরা বলে, ‘ইয়া গাউসুল আজম’, 
☞ হিন্দুরা খায় পূজার প্রসাদ আর পীরতন্ত্রে মুরিদরা খায় ওরশের মিলাদ! 
☞ হিন্দুরা দেয় মাকে সেজদা, আর পীরতন্ত্রে মুরিদরা দেয় বাবাকে সেজদা! 
☞ হিন্দুদের আছে ঠাকুর-দেবতা আর পীরতন্ত্রে আছে পীর-অলী!
■আক্বীদাঃ
☞ হিন্দু ধর্মের অবতার, বৌদ্ধ ধর্মের নিরওয়ানা আর সুফীবাদে অদ্বৈতবাদ বা ওয়াহদাতুল ওয়াজুদ।
☞হিন্দুধর্মে ব্যাপকভাবে বলা হয়, “ভক্তের হ্নদয়ই ভগবানের আসন”, সুফীবাদে ব্যাপকভাবে বলা হয়, “মুমিনের কলব আল্লাহর আরশ বা আসন”। 
☞ হিন্দুদের ঈশ্বরের সত্তার মিলন আর সূফী-পীরদের ফানা!
■প্রথাঃ
☞ ব্রাহ্মণবাদে গুরু-শিষ্য আর সূফীবাদে পীর-মুরীদ!
☞ ব্রাহ্মণদের শালিগ্রাম ছুঁয়ে শপথ গ্রহণ করে আর পীরের পাগড়ী ধরে হলফ করা হয়!
☞ ব্রাহ্মণদের যজমান আর পীরদের গদ্দিনশীল!
☞ ব্রাহ্মণের ছেলে ব্রাহ্মণ হবে আর পীরের ছেলে পীর হবে!
☞ ব্রাহ্মণদের তত্ত্বজ্ঞান ও আত্মোপলদ্ধি আর সূফীবাদে মারেফাত!
■দীক্ষাঃ
☞ হিন্দুরা গুরুর কাছে করে দীক্ষা আর পীরেরা মুরীদকে করে বাইয়াত!
☞ হিন্দু সাধকদের পদ্ধতি আর সূফী-পীরদের তরিকা!
☞ ব্রাহ্মণদের সংযম আর সূফী-পীরদের মুজাহীদা!
☞ ব্রাহ্মণদের ধ্যান-তপস্যা আর সূফী-পীরদের মুরাকাবা!
☞ হিন্দুদের দর্শন আর সূফী-পীরদের মুশাহাদা!
■ইবাদতঃ
☞ হিন্দুদের কুলকগুলিনী শক্তি আর সূফী-পীরদের লতিফা
☞ হিন্দুদের জপ বা প্রাণায়ম আর সূফী-পীরদের যিকির-ফিকির!
☞ বৌদ্ধদের নির্বান বা ঈশ্বরত্ব লাভ আর সূফী-পীরদের বাকা!
☞ হিন্দুধর্মে মুর্তিপুজা আর পীরতন্ত্রে কবরপুজা, মাযারপুজা।
☞ হিন্দুদের আছে দুর্গা আর পীরদের আছে দর্গা!
উৎসবঃ
☞ হিন্দুদের সংগীত আর সূফী-পীরদের সামা!
☞ হিন্দুদের মুর্ছা বা ভাবোন্মাদ, আর সূফী-পীরদের জুনুন।
☞ খৃস্টানদের ক্রিসমাস, হিন্দুদের জম্মাঅষ্টামী আর সূফী-পীরদের ঈদে-মিলাদ, ওরস!
■পরিনয়ঃ
☞ হিন্দুদের রাধা ও কৃষ্ণ আর সূফী-পীরদের আশীক ও মাশুক!
☞ হিন্দুদের বিরহ ও মিলন এবং সূফী-পীরদের হিজরান ও ওসাল!
☞ হিন্দুদের প্রেম ও প্রীতিচী, সূফীদের মায় ও শরাব!
☞ হিন্দুদের ভগবত প্রেম আর সূফী-পীরদের ইশক ইলাহী!
☞ হিন্দুদের কৃষ্ণপ্রেম আর সূফী-পীরদের আশেকে রাসুল!
■দর্শনীয় স্থানঃ
☞হিন্দুদের রাম-নারায়ন আর পীরতন্ত্রের শাহ-জালাল, শাহ-পরান!
☞হিন্দুরা যায় কাশীতে আর পীরতন্ত্রে মুরিদরা যায় আজমীরে!
■মন্তব্যঃ
উপরের পর্যালোচানায় হিন্দুধর্ম ও সূফীবাদ তথা পীরতন্ত্রের মধ্যে কতগুলি নামের পার্থক্য ছাড়া কোন পার্থক্য খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। এইসব নাম সম্পর্কে 📖আল্লাহ বলেন-
مَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِهِ إِلَّا أَسْمَاءً سَمَّيْتُمُوهَا أَنتُمْ وَآبَاؤُكُم مَّا أَنزَلَ اللَّهُ بِهَا مِن سُلْطَانٍ ۚ إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ ۚ أَمَرَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ ۚ ذَٰلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
-তাঁকে (আল্লাহকে) বাদ দিয়ে তোমরা শুধু কতগুলো নামের ইবাদত করছ, যাদের নামকরণ তোমরা ও তোমাদের পিতৃপুরুষরা করেছ, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ দলীল-প্রমাণ নাযিল করেননি, বিধান একমাত্র আল্লাহরই; তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে, তাঁকে (আল্লাহকে) ছাড়া আর কারো ইবাদাত কর না, এটিই সঠিক দীন, কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না। [ইউসুফ ৪০]
.
সুফী-পীরদের এই সব মোরাকাবা, মোশাহেদা, লতিফা, সামা, ফানা, বাকা, মনগড়া যিকির, খানকা, দর্গা ইত্যাদির সমর্থনে আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ বা রাসূলুল্লাহর ﷺ এর পক্ষ থেকে কোন সহীহ হাদীস পাওয়া যায় না। সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেঈগণের যুগেও এই জাতীয় আমল বা কার্যাবলী খুজে পাওয়া যায় না। যা পরবর্তীকালে ইসলামের দুশমনরা দ্বীনের মধ্যে নতুন সংযোজন করেছে। 
আয়েশা (رض الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন- 
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رد
-যে ব্যক্তি আমাদের এ দ্বীনে নতুন কিছু উদ্ভাবন করেছে যা এতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। [বুখারি হা/২৪৭৯, মুসলিম হা/১৭১৮]
জাবির (رض الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ ﷺ বলেছেন-
وَشَرُّ الْأُمُورِ مُحْدَثَاتُهَا، وَكُلُّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلُّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ، وَكُلُّ ضَلَالَةٍ فِي النَّارِ
-আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট হল দ্বীনের মধ্যে নতুন জিনিস সৃষ্টি করা আর সকল নতুন জিনিসই বিদআত আর সকল বিদআত-ই-গুমরাহী (পথভ্রষ্ট) আর সকল গুমরাহীর (পথভ্রষ্ট) পরিণাম জাহান্নাম। [নাসায়ী হা/ ১৫৭৮]
.
সূফীবাদে এইসব নতুন সংযোজন করা হয়েছে তাই পীরতন্ত্রের আমল গ্রহনযোগ্য নয়। আল্লাহ বলেন-
وَقَدِمْنَا إِلَى مَا عَمِلُوا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنَاهُ هَبَاءً مَنْثُورًا 
-আর তারা (দুনিয়ায়) যে সকল আমল করেছিল আমি সেদিকে অগ্রসর হব অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধুলিকণারূপে পরিণত করে দেব। [ফুরকান, ২৫/২৩]
.
📖মহান আল্লাহ আরও বলেন-
اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ
-তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদের আলেম ও ধর্ম যাজকদেরকে রব হিসেবে গ্রহণ করেছে। [আত-তাওবা, ৯/৩১]
.===============================================================================

ফার্সিতে পীর, আরবীতে শায়েখ, বাংলায় ওস্তাদ!!!
এটা কি সত্য, নাকি পীরদের ধোঁকাবাজি???
(পুরোটা পড়ুন আর ওদের ধোঁকাবাজির জবাব দিন)
.
জ্বি, এটা পীরদের সুক্ষ্ম ধোঁকাবাজি। বলদ মার্কা, মূর্খ মুরিদগুলো এসব বুঝেও না। সামান্য ইলম থাকলেই পীর নামক ছাগলদের এ ধোঁকাবাজি বুঝা সম্ভব। 
পীর আর শায়েখ মধ্যে পার্থক্য কোথায় আসুন জানার এবং বুঝার চেষ্টা করে ওদের লুঙ্গি উম্মোচন করি।
.
ওরা বলে; আরবীত যেটা মুর্শিদ, শায়েখ, বাংলায় সেটা ওস্তাদ, শিক্ষক এবং ফার্সিতে পীর। যাই হোক! প্রথমে এটা মনে রাখুন পীর-মুরিদীর জন্মই হয়েছে মিথ্যাচারের মাধ্যমে! সুতরাং ওদের প্রতিটি কথার মাঝে রয়েছে ভন্ডামি, ধোঁকাবাজি, মিথ্যাচার।
.
পীর মানে যদি শিক্ষক হতো, তবে আমাদের আপত্তি কিসের! ইলম অর্জনের জন্য শিক্ষক কিংবা ওস্তাদের শরণাপন্ন হবে, যেটা জানে না সেটা জেনে নিবে, যেটা বুঝে না সেটা বুঝে নিবে। তবে শর্ত হচ্ছে দলিল সহকারে, অন্ধভাবে নয়। আর এমনটি কুরআন বলছে।
.
এবার আসুন, এ ত্রিশব্দের পার্থক্য কোথায়!!
আপনি একজন পীরের কাছে গেলেন, সর্বপ্রথম আপনাকে বায়আত করাবে! কিসের বায়আত? চিশতিয়া-সাবেরিয়া, কাদেরিয়া, নক্সবন্দীয়া প্রমুখ তরিকার! :-D
আজ পর্যন্ত দেখাতে পারবেন, কোন শায়েখ কিংবা ওস্তাদ অমুক, তমুক তরিকায় বায়আত করেছেন, বায়আত নিয়েছেন?? পারবেন দেখাতে! পারবেন না।
তবে কেমন করে পীর, শায়েখ, ওস্তাদ এক হলো???
.
এরপর আপনি পীরের কাছে বায়আত হওয়ার পর ছবক দিবে(কুরআন-সুন্নাহ বহির্ভূত) এই জিকির এত বার, ইল্লাল্লাহ'র জিকির, ৬ লতিফার জিকির কিংবা চক্ষু মুদিয়া লা বলে টান দিয়ে ইল্লাল্লাহ বলে ক্বলবে জরফ মারতে হপে :-P
আজ পর্যন্ত কেউ দেখাতে পারবে কোন শায়েখ এরকম ভন্ডামি, কুরআন-সুন্নাহ বহির্ভূত জিকির-আযকার দিয়েছে?? পারবেন দেখাতে! পারবেন না।
তবে পীর, শায়েখ, ওস্তাদ এক হয় কি করে ভাউ??
.
এরপর মুরিদ হলে আপনাকে অবশ্যই ফানা ফিসশায়েখ তথা পীরের মধ্যে নিজেকে ফানা করতে হবে, নিজেকে বিলিয়ে দিতে হবে পীরের মধ্যে, পীরের প্রতিটি কথা, কাজ বিনা আপত্তিতে পালন করতে হবে। চাই সেটা কুরআন-হাদিসে থাকুক কিংবা না থাকুক!
তা আপনি কি দেখাতে পারবেন, কোন শায়েখ এমনটি বলেছে যে, আমার মধ্যো নিজেকে ফানা করে দাও। আমি যা বলি তাই মান? পারবেন দেখাতো! পারবেন না।
তবে কি করে পীর, শায়েখ, ওস্তাদ এক হয়!!
.
পীরেরা মিথ্যা, গাঁজাখুরি কিচ্ছা-কাহিনী না বললে পেটের ভাত হজম হয় না, রাত্রে ঘুমও ঠিকমতো হয় না!
আজ পর্যন্ত কোন শায়েখ গাঁজাখুরি কিচ্ছা-কাহিনী বলেছে বলে আমার জানা নাই!
.
অমুক পীর আকাশে ওড়েছে, তমুক পীর পানিতো ভেসেছে, কেউবা মৃতকে যিন্দা করছে নিজের হুকুমে, কেউবা জায়গায় বসে পুরো পৃথিবী ভ্রমন করে হারানো সন্তানকে নিয়ে আসে! (ভেদে মারেফতে পাবেন)
আজ পর্যন্ত কোন শায়েখ এমন শিরকী-কুফরী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছে বলে আমার জানি নাই। এমনটি দেখাতে পারবেন!
এরপরও পীর, শায়েখ, ওস্তাদ এক হয় কি করে??

========================================================================================
যারা রাসুলের সঃ পথ ছেড়ে বিভিন্ন পীর ও ইমামের অনুসরন করছেন তারা জাহান্নামে নিজের হাত কামড়িয়ে আপসুস করতে থাকবে!
কাজেই এখনও সময় আছে মৃত্যুর আগে ঠিক হয়ে যান……
আল্লাহ বলেনঃ
وَيَوْمَ يَعَضُّ الظَّالِمُ عَلَىٰ يَدَيْهِ يَقُولُ يَا لَيْتَنِي اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُولِ سَبِيلًا 
''যালিম ব্যক্তি সেদিন নিজ হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবেঃ হায়! আমি যদি রাসূলের
সাথে সৎ পথ অবলম্বন করতাম'

يَا وَيْلَتَىٰ لَيْتَنِي لَمْ أَتَّخِذْ فُلَانًا خَلِيلًا 
''হায় দুর্ভোগ আমার! আমি যদি অমুককে 
তমুককে বন্ধু রূপে গ্রহণ না করতাম!'
لَقَدْ أَضَلَّنِي عَنِ الذِّكْرِ بَعْدَ إِذْ جَاءَنِي ۗ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِلْإِنْسَانِ خَذُولًا ''আমাকেতো সে বিভ্রান্ত করেছিল আমার নিকট কোরআন পৌঁছার পর; শাইতানতো মানুষের জন্য মহাপ্রতারক। '
সুরা ফুরকান, আয়াত ২৭-২৯
 ==========================================================================================================================
 কেউ যদি মনে করেন, আপনার পছন্দের হুজুর, আলেম, বক্তা, লেখক, দাঈ বা ইমাম কখনও ভুল বলতে বা করতে পারেন না, তাহলে জেনে রাখুন! আপনি ভুলের মধ্যে আছেন। কারণ কোন মানুষই ভুলের উর্দ্ধে নয়। সুতরাং ছোট হোক, বড় হোক আপনার পছন্দের আলেমের ভুলকে যদি ভুল হিসেবে স্বীকার না করেন, অথবা কেউ তার ভুল ধরলে যদি আপনার কষ্ট লাগে তাহলে আপনি ভুল থেকে খুব সহজে বের হতে পারবেন না। 
আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত; রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
كُلُّ بَنِىْ اٰدَمَ خَطَّاءٌ وَخَيْرُ الْخَطَّائِينَ التَّوَّابُونَ
প্রত্যেক আদম সন্তানই ভুলকারী, আর সর্বোত্তম ভুলকারী যিনি তাওবা করেন। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, দারিমী)
আল্লাহ বলেন;
ثُمَّ إِنَّ رَبَّكَ لِلَّذِينَ عَمِلُوا السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ تَابُوا مِنْ بَعْدِ ذَٰلِكَ وَأَصْلَحُوا إِنَّ رَبَّكَ مِنْ بَعْدِهَا لَغَفُورٌ رَحِيمٌ
তারপর নিশ্চয় তোমার রব তাদের জন্য, যারা ভুলবশতঃ মন্দ কাজ করেছে, এরপর তারা তওবা করেছে এবং সংশোধন করেছে, নিশ্চয় তোমার রব এসবের পর পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (আন-নাহল, ১৬/১১৯)
 ==========================================================================================================================
যারা কোরআন হাদিস বাদ দিয়ে বিভিন্ন পীর ও হুজুরদের কথা দিয়ে মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বিরত রাখে তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি!
আল্লাহ বলেনঃ
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا ۚ أُولَٰئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ
''মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করার জন্য মনগড়া বা অসার বাক্য ক্রয় করে এবং আল্লাহর প্রদর্শিত পথ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে, তাদেরই জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি l
সুরা লোকমান,আয়াত ৬
 ==========================================================================================================================
আপনি কি চান রাসুল সঃ আপনার জান্নাতের জিম্মাদার হবেন??
তাহলে মানুষের কাছে সাহায্য চাওয়া বন্ধ করুন
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ عَنْ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ قَيْسٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ ثَوْبَانَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ يَتَقَبَّلُ لِي بِوَاحِدَةٍ وَأَتَقَبَّلُ لَهُ بِالْجَنَّةِ قُلْتُ أَنَا قَالَ لَا تَسْأَلْ النَّاسَ شَيْئًا قَالَ فَكَانَ ثَوْبَانُ يَقَعُ سَوْطُهُ وَهُوَ رَاكِبٌ فَلَا يَقُولُ لِأَحَدٍ نَاوِلْنِيهِ حَتَّى يَنْزِلَ فَيَأْخُذَهُ.
সাওবান (রাঃ)
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কে আমার একটি কথা কবুল করবে, তাহলে আমি তার জান্নাতের জামিন হবো। আমি বললাম, আমি। তিনি বললেনঃ তুমি লোকদের নিকট কিছু প্রার্থনা করবে না। রাবী বলেন, সাওবান (রাঃ)-এর চাবুক আরোহিত অবস্থায় নিচে পড়ে যেতো, কিন্তু তিনি কাউকে বলতেন না, এটি আমাকে তুলে দাও। তিনি বাহন থেকে নেমে তা তুলে নিতেন। [১৮৩৭]
সুনানে ইবনে মাজাহ,ইফাঃ হাদিস নং ১৮৩৭
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
 ==========================================================================================================================
'‎কবর যিয়ারত করার সুন্নতী পদ্ধতি কি? 
 ===================
পুরুষের জন্য নিয়ম দেয়া হল--মেয়েদের জন্য কবর জিয়ারত নিশেদ
--------------------
কোন দিন-ক্ষণ নির্ধারণ না করে, দল না বেঁধে একাকী যে কোন সময় কবর যিয়ারত করতে যাবে। সেখানে
গিয়ে প্রথমে কবরবাসীকে উদ্দেশ্য করে সালাম দিবে। বলবেঃ
(السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ أهْلَ الدِّيَارِ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُسْلِمِيْنَ وإناَّ إنْ شاَءَ اللهُ بِكُمْ لاَحِقُوْنَ ويَرْحَمُ اللهُ الْمُسْتَقْدِمِيْنَ مِنَّا وَالْمُسْتَأْخِرِيْنَ أسألُ اللهَ لَناَ وَلَكُمُ الْعاَفِيَةَ) 
অর্থঃ হে কবরের অধিবাসী মুমিন ও মুসলিমগণ, আপনাদের প্রতি শান্তি ধারা বর্ষিত হোক। নিশ্চয় আমরাও আপনাদের সাথে এসে মিলিত হব ইনশআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের উপর রহম করুন, আমি আমাদের জন্য তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে নিরাপত্তার প্রার্থনা করছি।
(মুসলিম, ইবনু মাজাহ)
এভাবে সালাম দেয়ার পর কবরবাসীর জন্য জানা যে কোন দুআ পাঠ করবে। 
যেমন এ দুআগুলো পাঠ করতে পারেঃ
১-(اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ، وَعاَفِهِ واَعْفُ عَنْهُ، وَأَكْرِمْ نُزُلَهُ، وَوَسِّعْ مُدْخَلَهُ، وَاغْسِلْهُ بِالْماَءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرْدِ، وَنَقِّهِ مِنْ الْخَطاَياَ كَمَا يُنَقَّىالثَّوْبُ الأبْيَضُ مِنْ الدَّنَسِ، وَأَبْدِلْهُ دَارًا خَيْرًا مِّنْ دَارِهِ، وَأَهْلاً خَيْراً مِّنْ أَهْلِهِ، وَزَوْجاً خَيْراً مِنْ زَوْجِهِ، وَأَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ، وَأَعِذْهُ مِنْ عَذاَبِ الْقَبْرِ، وَعَذاَبِ النَّارِ)
অর্থ: হে আল্লাহ্‌! আপনি তাকে ক্ষমা করুন, তার প্রতি দয়া করুন, তাকে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তায় রাখুন। তাকে মাফ করে দিন। তার আতিথেয়তা সম্মানজনক করুন। তার বাসস্থানকে প্রশস্থ করে দিন। আপনি তাকে ধৌত করুন পানি, বরফ ও শিশির দিয়ে। গুনাহ হতে এমন ভাবে পরিস্কার করুন যেমন করে সাদা কাপড়কে ময়লা হতে পরিস্কার করা হয়। তাকে দুনিয়ার ঘরের পরিবর্তে উত্তম ঘর দান করুন। দুনিয়ার পরিবার অপেক্ষা উত্তম পরিবার দান করুন। আরো তাকে দান করুন (দুনিয়ার) স্ত্রী অপেক্ষা উত্তম স্ত্রী। তাকে বেহেস্তে প্রবেশ করিয়ে দিন। আর পরিত্রাণ দিন কবরের আযাব ও জাহান্নামের আযাব হতে। (ছহীহ্‌ মুসলিম ২/৬৬৩)
২- (اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّناَ وَمَيِّتِناَ، وَشاَهِدِناَ وَغاَئِبِناَ، وَصَغِيْرِناَ وَكَبِيْرِناَ، وَذَكَرِناَ وَأُنْثاَناَ، اللَّهُمَّ مَنْ أحْيَيْتَهُ مِناَّ فَأَحْيِهِ عَلىَ الإسْلاَمِ، وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِناَّ فَتَوَفِّهِ عَلىَ الإيْماَنِ، اللَّهُمَّ لاَتَحْرِمْناَ أجْرَهُ وَلاَتُضِلَّناَ بَعْدَهُ)
অর্থ: হে আল্লাহ্‌! আপনি আমাদের জীবিত-মৃত, উপস্থিত অনুপস্থিত, ছোট ও বড় নর ও নারীদেরকে ক্ষমা করো। হে আল্লাহ্‌! আপনি আমাদের মাঝে যাদের তুমি জীবিত রেখেছো তাদেরকে ইসলামের উপরে জীবিত রাখ। এবং যাদেরকে মৃত্যু দান করেন তাদেরকে ঈমানের সাথে মৃত্যু দান কর। হে আল্লাহ্‌! আমাদেরকে তার সওয়াব হতে বঞ্চিত করো না এবং তার মৃত্যুর পর আমাদেরকে পথ ভ্রষ্ট করো না। (ইবনে মা-জাহ্‌)
আরবী ভাষায় দুআ না জানলে যে কোন ভাষায় করতে পারে। মৃতের গোর আযাব ক্ষমা করার জন্য যে কোন শব্দ ব্যবহার করতে পারবে। হাত তুলে না তুলে উভয়ভাবে দুআ করা যায়। হাত তুললে কিবলা মুখী হয়ে নিবে তারপর দুআ করবে। এটাই হল কবর যিয়ারতের সুন্নাতী পদ্ধতি।
কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্য কি?
কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্য হতে হবে মাত্র দুটি। (১) কবরবাসীকে সালাম দেয়া ও তার মাগফিরাতের জন্য দুআ করা এবং (২) কবর দেখে উপদেশ গ্রহণ করা তথা আখেরাতের কথা স্মরণ করা।
==========================================================================================================================
৭৩ দলের কোন ১ দল জান্নাতি?
>>>নাজী বা মুক্তিপ্রাপ্ত কারা? >>> এর জবাবে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে তিনটি বক্তব্য এসেছে।
এক- যে দলটি জান্নাতে যাবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) বলেন, إِلاَّ مِلَّةً وَاحِدَةً কেবলমাত্র একটি দল (যারা জান্নাতী), সাহাবীগণ বললেন, وَمَنْ هِيَ يَا رَسُولَ اللهِ؟ হে আল্লাহর রাসূল! তারা কারা ? (যারা জান্নাতী), উত্তরে তিনি বললেন مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِيْ ‘যার উপরে আমি ও আমার সাহাবীগণ আছি’। [আত-তিরমিযী: ২৬৪১]
অন্যত্র রাসূল (ﷺ) বলেন, مَا أَنَا عَلَيْهِ الْيَوْمَ وَأَصْحَابِي ‘আজকের দিনে আমি ও আমার ছাহাবীগণ যার উপরে আছি’ (হাকেম ১/১২৯)।
অর্থাৎ এখানে রাসূল (ﷺ) কেবল তরীকা ও বৈশিষ্ট্যের কথা বলেছেন, কোন দলের নাম বলে যাননি।
দুই- وَهِيَ الْجَمَاعَةُ ‘সেটি হ’ল আল-জামা‘আত’।
[ইবনু মাজাহ হা/৩৯৯২; আহমাদ, আবুদাঊদ হা/৪৫৯৭; মিশকাত হা/১৭২।] 
যার অর্থ جماعة الصحابة ‘ছাহাবীগণের জামা‘আত’।
তারা হল الْجَمَاعَةُ [আল-জামা‘আহ] একটি দল। আওফ বিন মালেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
افْتَرَقَتْ الْيَهُودُ عَلَى إِحْدَى وَسَبْعِينَ فِرْقَةً فَوَاحِدَةٌ فِي الْجَنَّةِ وَسَبْعُونَ فِي النَّارِ وَافْتَرَقَتْ النَّصَارَى عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً فَإِحْدَى وَسَبْعُونَ فِي النَّارِ وَوَاحِدَةٌ فِي الْجَنَّةِ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَتَفْتَرِقَنَّ أُمَّتِي عَلَى ثَلَاثٍ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً وَاحِدَةٌ فِي الْجَنَّةِ وَثِنْتَانِ وَسَبْعُونَ فِي النَّارِ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ هُمْ قَالَ الْجَمَاعَةُ
ইহুদীরা একাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে, তন্মধ্যে একদল জান্নাতী এবং সত্তর দল জাহান্নামী। খ্রীষ্টানরা বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে, তন্মধ্যে একাত্তর দল জাহান্নামী ও একদল জান্নাতী। ঐ সত্ত্বার শপথ! যাঁর হাতে মুহাম্মাদের জীবন, নিশ্চয়ই আমার উম্মত তেহাত্তর দলে বিভক্ত হবে, তাদের একদল জান্নাতী এবং বাহাত্তর দল জাহান্নামী। জিজ্ঞেস করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! তারা কারা? (যারা জান্নাতী) তিনি বললেন, তারা হল الْجَمَاعَةُ (আল-জামা‘আহ) একটি দল। [ইবনে মাজা: ২/৩২১]
অর্থাৎ এখানে রাসূল (ﷺ) আল-জামা‘আহ-এর কথা বলেছেন, কোন দলের নাম বলে যাননি।
ইসলামী আকীদার পরিভাষায় জামাআত হল, উম্মতে মুহাম্মাদীর নেককার ব্যক্তিবর্গ। যেমন-সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ী এবং কিয়ামত পর্যন্ত আগত নিষ্ঠার সাথে তাদের অনুসারীগণ, যারা কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাতে রাসূলের উপর ঐকমত্য পোষণকারী। [শরহু আকীদাতি আত-তহাবী: ৬৮পৃ:]
খ্যাতনামা ছাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ)-এর কাছে রাসূল (ﷺ) বর্ণিত ‘আল-জামা‘আত’ অর্থ কি- একথা জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন,
اَلْجَمَاعَةُ مَا وَافَقَ الْحَقَّ وَإِنْ كُنْتَ وَحْدَكَ 
‘হক-এর অনুগামী দলই জামা‘আত, যদিও তুমি একাকী হও’। 
[ইবনু আসাকির, তারীখু দিমাশ্ক্ব, সনদ ছহীহ; হাশিয়া মিশকাত আলবানী, হা/১৭৩।]
নুয়াইম ইবনে হাম্মাদ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, যখন জামাআত ভেঙ্গে যাবে তখন তোমার জন্য আবশ্যক হল, ভেঙ্গে যাওয়ার পূর্বে জামাআত যে উদ্দেশ্য ও আর্দশের উপর ছিল সে আর্দশের উপর অটল থাকা, যদিও তুমি একা হও। কেননা সে সময় তুমি একাই জামাআত হিসেবে গণ্য হবে। [ইগাসাতিল লাফহান, ইবনে তাইমিয়া: ১/৭০]
তিন- السَّوَادُ الأَعْظَمُ ‘বড় দল’। 
[মুসনাদে আবী ইয়া‘লা হা/৩৯৪৪, আলবানী সনদ যঈফ; মিশকাত হা/১৭৪।] 
অর্থাৎ বড় দল ব্যতীত ছোট দল সব জাহান্নামী হবে। অথচ সংখ্যায় বড় দল হওয়ার কোন গুরুত্ব ইসলামে নেই। কেননা আল্লাহ বলেন,
وَإِنْ تُطِعْ أَكْثَرَ مَنْ فِي الْأَرْضِ يُضِلُّوكَ عَنْ سَبِيلِ اللهِ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلاَّ الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلاَّ يَخْرُصُونَ 
‘যদি তুমি অধিকাংশ লোকের অনুসরণ করো, তাহ’লে ওরা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে ফেলবে। কেননা ওরা কেবল ধারণার অনুসরণ করে এবং অনুমান ভিত্তিক কথা বলে’ (আন‘আম ৬/১১৬)।
সে কারণ ছাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন مَنِ السَّوَادُ الْأَعْظَمُ يَا رَسُوْلَ اللهِ؟ ‘বড় দল কোনটি হে আল্লাহর রাসূল’? জবাবে তিনি বললেন, مَنْ كَانَ عَلىَ مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِيْ ‘আমি ও আমার ছাহাবীগণ যার উপরে আছি, যে ব্যক্তি তার অনুসারী হবে’।
[ত্বাবারাণী কাবীর হা/৭৬৫৯ সনদ যঈফ; সৈয়ূত্বী, জাম‘উল জাওয়ামে‘ হা/৫৬৯।] 
অর্থাৎ এখানে ‘বড়’ সংখ্যায় নয়, বরং মর্যাদায় বড়। কেননা আল্লাহ বলেন, وَقَلِيلٌ مِنْ عِبَادِيَ الشَّكُورُ ‘আমার কৃতজ্ঞ বান্দার সংখ্যা কম হবে’(সাবা ৩৪/১৩)।
অতএব দেখা যাচ্ছে যে, বর্ণিত তিনটি বক্তব্যের সারমর্ম একটাই। রাসূল (ﷺ) কোন দলের নাম বলে যাননি বরং তিনি বলেছেন, যারা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও তাঁর ছাহাবাদের তরীকা, বৈশিষ্ট্যের অনুসারী, তারাই ফের্কায়ে নাজিয়াহ বা মুক্তিপ্রাপ্ত দল। সুতরাং একা হলেও যদি নীতি বা আর্দশ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাদের হয় তাহলে সেটাই হকপন্থী দল। নিঃসন্দেহে তারা হলেন যথার্থভাবেই নবীর সুন্নাত ও সাহাবীগণের জামা‘আতের অনুসারী ব্যক্তি বা দল।
কুরআনে আল্লাহর দল >>>
إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ رَاكِعُونَ وَمَنْ يَتَوَلَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا فَإِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْغَالِبُونَ 
তোমাদের বন্ধু কেবলমাত্র আল্লাহ ও তাঁর রাসূল আর মুমিনগণ যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহর কাছে অবনত হয়। আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল আর মুমিনদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তবে নিশ্চয় সেটি আল্লাহর দল আর তারাই বিজয়ী হবে। আল-মায়িদাহ, ৫/৫৫-৫৬
لا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ أُولَئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ الإيمَانَ وَأَيَّدَهُمْ بِرُوحٍ مِنْهُ وَيُدْخِلُهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ أُولَئِكَ حِزْبُ اللَّهِ أَلا إِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাসী এমন কোন সম্প্রদায়/দল তুমি পাবে না যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচারীদেরকে ভালবাসে, হোক না এই বিরোধীরা তাদের পিতা, পুত্র, ভাই অথবা তাদের জ্ঞাতি গোষ্ঠি। আল্লাহ এদের অন্তরে ঈমান বদ্ধমূল করে দিয়েছেন, এবং তাদেরকে তাঁর অদৃশ্য শক্তি দ্বারা শক্তিশালী করেছেন; তিনি তাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবাহিত হয়, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে; আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে; এরাই আল্লাহর দল; জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর দলই সফলকাম। আল-মুজাদালাহ, ৫৮/২২
 ==========================================================================================================================
‘হায়াতুন্নবী’ সম্পর্কিত বিশুদ্ধ আক্বীদা ও শিরকী আক্বীদা কি কি?
উত্তর : ‘হায়াতুন্নবী’ সম্পর্কিত বিশুদ্ধ আক্বীদা হ’ল, রাসূল (ছাঃ) সহ সকল নবী মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁদের রূহ ‘আলমে বারযাখে’ জীবিত আছে। যা দুনিয়াবী জীবন থেকে পৃথক। যে জগত সম্পর্কে আল্লাহ ব্যতীত কেউ অবগত নন (আলবানী, ছহীহাহ হা/৬২১-এর আলোচনা)।
আল্লাহ বলেন, ‘আর তাদের (মৃতদের) সামনে পর্দা থাকবে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত’ (মুমিনূন ২৩/১০০)। আর উক্ত পর্দা ভেদ করে দুনিয়াবী জীবনের সাথে সম্পর্ক করা কোন মৃতের পক্ষে সম্ভব নয়।
অতঃপর এ বিষয়ে শিরকী আক্বীদা হ’ল, রাসূল (ছাঃ) কবরে দুনিয়াবী জীবনের ন্যায় বেঁচে আছেন এবং তিনি মানুষের প্রার্থনা শোনেন ও ভাল-মন্দ করেন বলে ধারণা করা।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, কেউ আমাকে সালাম দিলে আল্লাহ তা‘আলা আমার রূহে ফেরত দেন। অতঃপর আমি উক্ত সালামের উত্তর দেই (আবুদাউদ হা/২০৪১; মিশকাত হা/৯২৫; ছহীহাহ হা/২২৬৬)।
ছহীহ বুখারীর ভাষ্যকার হাফেয ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন,لِأَنَّهُ بَعْدَ مَوْتِهِ وَإِنْ كَانَ حَيًّا فَهِيَ حَيَاةٌ أُخْرَوِيَّةٌ لاَ تُشْبِهُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا ‘রাসূল (ছাঃ) মৃত্যুর পরে যদিও জীবিত আছেন, তবুও সেটি পরকালীন জীবন। দুনিয়াবী জীবনের সাথে যা সামঞ্জস্যশীল নয়’। নবীগণ তাদের প্রভুর নিকটে জীবিত আছেন শহীদদের ন্যায়’ (ফাৎহুল বারী হা/৪০৪২-এর ব্যাখ্যা, ৭/৩৪৯ পৃ.)।
অতএব বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে বারযাখী জীবনের অন্তর্ভুক্ত। যেখানে মানুষের হায়াত বা মঊত বলে কিছু নেই। তাই রূহে ফেরত দেওয়ার অর্থ তাঁকে অবহিত করানো এবং তিনি তা বুঝতে পারেন। আর সেটাই হ’ল তাঁর উত্তর দেওয়া’ (মির‘আত হা/৯৩১-এর ব্যাখ্যা, ৪/২৬২-৭৪)।
অতএব তিনি শুনছেন এরূপ ধারণায় তাঁর কবরের পাশে গিয়ে দরূদ পাঠ করা সুস্পষ্টভাবে শিরক।
আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি শুনাতে পারো না কোন মৃত ব্যক্তিকে’ (নামল ২৭/৮০)। আর ‘তুমি শুনাতে পারো না কোন কবরবাসীকে’ (ফাত্বির ৩৫/২২)।
এছাড়া ‘যে ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর কবরে গিয়ে দরূদ পাঠ করবে, তিনি তার জন্য সাক্ষী হবেন ও সুফারিশকারী হবেন’, ‘যে ব্যক্তি আমার কবর যেয়ারত করবে, তার জন্য আমার শাফা‘আত ওয়াজিব হবে’, ‘আমি তার জন্য ক্বিয়ামতের দিন সাক্ষী হব’ ইত্যাদি মর্মে যেসব হাদীছ বলা হয়ে থাকে, সবগুলিই জাল 
(আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৪৭, ২০৩, ১০২১; ইরওয়াউল গালীল হা/১১২৭-২৮ প্রভৃতি)
 ==========================================================================================================================
কাউকে নির্দিষ্ট করে জান্নাতী বলে আল্লাহর স্থানে নিজেকে বসাবেননা!! 
কে হক পথে আছে, কে হেদায়ত প্রাপ্ত, কে প্রকৃত মুত্তাকী , তা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা!!
শিরক থেকে বাচুন
কোরআন হাদিস থেকে দলিল
~~~~~~~~~~~~~~~~~
আল্লাহ বলেনঃ
ذَٰلِكَ مَبْلَغُهُمْ مِنَ الْعِلْمِ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اهْتَدَىٰ '
'তাদের জ্ঞানের দৌড় এই পর্যন্ত। তোমার রাব্বই ভাল জানেন কে তাঁর পথ হতে বিচ্যুত; তিনিই ভাল জানেন কে সৎপথ প্রাপ্ত। '
সুরা নাজম, আয়াত ৩০
আল্লাহ বলেন;
الَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ كَبَائِرَ الْإِثْمِ وَالْفَوَاحِشَ إِلَّا اللَّمَمَ ۚ إِنَّ رَبَّكَ وَاسِعُ الْمَغْفِرَةِ ۚ هُوَ أَعْلَمُ بِكُمْ إِذْ أَنْشَأَكُمْ مِنَ الْأَرْضِ وَإِذْ أَنْتُمْ أَجِنَّةٌ فِي بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ ۖ فَلَا تُزَكُّوا أَنْفُسَكُمْ ۖ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اتَّقَىٰ
যারা বিরত থাকে গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কার্য হতে, ছোট-খাট অপরাধ করলেও তোমার রবের ক্ষমা অপরিসীম; তিনি তোমাদের সম্পর্কে ভাল জানেন, যখন তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলেন মাটি হতে এবং যখন তোমরা মাতৃগর্ভে ভ্রুণরূপে অবস্থান কর। অতএব তোমরা আত্মপ্রশংসা কর না, তিনি ভাল জানেন কে তাকওয়া অবলম্বন করেছে। 
সুরা নাজম, আয়াত ৩২
হাদিস থেকে দলিল
~~~~~~~~~~~~~~
বইঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ২০/ জানাযা, হাদিস নম্বরঃ ১১৭০
باب الدُّخُولِ عَلَى الْمَيِّتِ بَعْدَ الْمَوْتِ إِذَا أُدْرِجَ فِي كَفَنِهِ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي خَارِجَةُ بْنُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، أَنَّ أُمَّ الْعَلاَءِ ـ امْرَأَةً مِنَ الأَنْصَارِ ـ بَايَعَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّهُ اقْتُسِمَ الْمُهَاجِرُونَ قُرْعَةً فَطَارَ لَنَا عُثْمَانُ بْنُ مَظْعُونٍ، فَأَنْزَلْنَاهُ فِي أَبْيَاتِنَا، فَوَجِعَ وَجَعَهُ الَّذِي تُوُفِّيَ فِيهِ، فَلَمَّا تُوُفِّيَ وَغُسِّلَ وَكُفِّنَ فِي أَثْوَابِهِ، دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ رَحْمَةُ اللَّهِ عَلَيْكَ أَبَا السَّائِبِ، فَشَهَادَتِي عَلَيْكَ لَقَدْ أَكْرَمَكَ اللَّهُ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ وَمَا يُدْرِيكِ أَنَّ اللَّهَ قَدْ أَكْرَمَهُ ‏"‏‏.‏ فَقُلْتُ بِأَبِي أَنْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَمَنْ يُكْرِمُهُ اللَّهُ فَقَالَ ‏"‏ أَمَّا هُوَ فَقَدْ جَاءَهُ الْيَقِينُ، وَاللَّهِ إِنِّي لأَرْجُو لَهُ الْخَيْرَ، وَاللَّهِ مَا أَدْرِي ـ وَأَنَا رَسُولُ اللَّهِ ـ مَا يُفْعَلُ بِي ‏"‏‏.‏ قَالَتْ فَوَاللَّهِ لاَ أُزَكِّي أَحَدًا بَعْدَهُ أَبَدًا‏.‏
ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু বুকাইর (রহঃ) ... আনসারী মহিলা ও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বাই'আতকারী উম্মুল আলা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, (হিজরতের পর) কুরআর মাধ্যমে মুহাজিরদের বণ্টন করা হচ্ছিল। তাতে উসমান ইবনু মাযঊন (রাঃ) আমাদের ভাগে পড়লেন, আমরা (সা’দরে) তাঁকে আমাদের বাড়িতে স্থান দিলাম। এক সময় তিনি সেই রোগে আক্রান্ত হলেন, যাতে তাঁর মৃত্যু হল। যখন তাঁর মৃত্যু হল এবং তাঁকে গোসল করিয়ে কাফনের কাপড় পরানো হল, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করলেন। তখন আমি বললাম, হে আবূস্‌-সায়িব, আপনার উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক! আপনার সম্বন্ধে আমার সাক্ষ্য এই যে, আল্লাহ আপনাকে সম্মানিত করেছেন।
তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি কি করে জানলে যে, আল্লাহ তাঁকে সম্মানিত করেছেন? আমি বললাম, আমার পিতা আপনার জন্য কুরবান, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাহলে আল্লাহ আর কাকে সম্মানিত করবেন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাঁর ব্যাপার তো এই যে, নিশ্চয় তাঁর মৃত্যু হচ্ছে এবং আল্লাহর কসম! আমি তাঁর জন্য মঙ্গল কামনা করি। আল্লাহর কসম! আমি জানিনা আমার সঙ্গে কী ব্যবহার করা হবে, অথচ আমি আল্লাহর রাসূল। সেই আনসারী মহিলা বললেন, আল্লাহর কসম! এরপর আর কোন দিন আমি কোন ব্যাক্তি সম্পর্কে পবিত্র বলে মন্তব্য করব না।
 ===============================================================================
রাসুল সঃ বলেছেন কিছু মুসলিম মূর্তি বানিয়ে তার পূজা করবে অর্থাৎ মূর্তিকে সম্মান দেখাবে শ্রদ্ধা করবে! কিছু মুসলিম মুশরিকদের সাথে মিশে যাবে!
এরা কারা??
সাওবান রাঃ থেকে বর্নিত,
রাসুল সঃ বলেনঃ
مِنْ أُمَّتِي بِالْمُشْرِكِيِنَ وَإِنَّ بَيْنَ يَدَىِ السَّاعَةِ دَجَّالِينَ كَذَّابِينَ قَرِيبًا مِنْ ثَلاَثِينَ كُلُّهُمْ يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ
অচিরেই আমার উম্মাতের কোন কোন গোত্র বা সম্প্রদায় মূর্তি পূজায় লিপ্ত হবে এবং আমার উম্মাতের কতক গোত্র মুশরিকদের সাথে যোগ দিবে। অচিরেই কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে ত্রিশজন মিথ্যাবাদী দাজ্জালের আবির্ভাব হবে। তাদের প্রত্যেকেই নিজেকে নবী দাবি করবে।
সুনানে ইবনে মাজাহ,ইফাঃ অধ্যায়ঃ ৩০/ কলহ-বিপর্যয়, হাদিস নম্বরঃ ৩৯৫২
সুনানে তিরমিযি, ইফাঃ হাদিস নাম্বার ২২২২
 ===============================================================================
যারা কোরআন হাদিস বাদ দিয়ে বিভিন্ন পীর ও হুজুরদের কথা দিয়ে মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বিরত রাখে তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি!
আল্লাহ বলেনঃ
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا ۚ أُولَٰئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ
''মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করার জন্য মনগড়া বা অসার বাক্য ক্রয় করে এবং আল্লাহর প্রদর্শিত পথ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে, তাদেরই জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি l
সুরা লোকমান,আয়াত ৬

নবীকে সঃ কেন হায়াতুন্নবী বা চিরজীবি নবী বলা যাবেনা??
নিচে উত্তর দেখুন…
আল্লাহ বলেনঃ
اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
''আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন
(সত্য) ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সুপ্রতিষ্ঠিত ধারক। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করে না। তাঁর জন্যই আসমানসমূহে যা রয়েছে তা এবং যমীনে যা আছে তা। কে সে, যে তাঁর নিকট সুপারিশ করবে তাঁর অনুমতি ছাড়া? তিনি জানেন যা আছে তাদের সামনে এবং যা আছে তাদের পেছনে। আর তারা তাঁর জ্ঞানের সামান্য পরিমাণও আয়ত্ব করতে পারে না, তবে তিনি যা চান তা ছাড়া। তাঁর কুরসী আসমানসমূহ ও যমীন পরিব্যাপ্ত করে আছে এবং এ দু’টোর সংরক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না। আর
তিনি সুউচ্চ, মহান। (আয়াতুল কুরসী)) (
সুরা বাকারাহ,আয়াত ২৫৫
এবার আয়াতুল কুরসীর প্রথম লাইনে লক্ষ্য করুন! ১ থেকে শুরু করে ৬ নাম্বার শব্দে গিয়ে দেখুন সেখানে حي ""হায়্যু" মুল হল "হায়া" শব্দ আছে যার অর্থ হল চিরজীবী ..যার কোন মৃত্যু নেই !
اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ
অর্থাৎ আল্লাহ চিরজীবি আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই..
অর্থাৎ حي হায়্যু যার মুল হল "হায়া" বা চীরজিবী হওয়া একমাত্র আল্লাহর খাস গুন তাই কোন সৃষ্টি حي বা চিরজীবি হতে পারেননা!
তাই কেউ যদি কোন সৃষ্টিকে এই গুনে গুনান্বিত করে তাহলে সে ঐ সৃষ্টিকে আল্লাহর সমকক্ষ স্থীর করল!
অথচ
আল্লাহ কাউকে তার সমকক্ষ নির্ধারণ করতে নিষেধ করেছেন!
আল্লাহ বলেনঃ
الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ فِرَاشًا وَالسَّمَاءَ بِنَاءً وَأَنْزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَخْرَجَ بِهِ مِنَ الثَّمَرَاتِ رِزْقًا لَكُمْ ۖ فَلَا تَجْعَلُوا لِلَّهِ أَنْدَادًا وَأَنْتُمْ تَعْلَمُونَ
'' যিনি তোমাদের জন্য ভূতলকে শয্যা ও আকাশকে ছাদ স্বরূপ সৃষ্টি করেছেন এবং আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন, অতঃপর তদ্বারা তোমাদের জন্য উপজীবিকা স্বরূপ ফলপুঞ্জ উৎপাদন করেন, অতএব তোমরা আল্লাহর সমকক্ষ স্থির করনা এবং তোমরা এটা অবগত আছ। 
' সুরা বাকারাহ, আয়াত ২২
এরপর আল্লাহ কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন যদি কেউ আল্লাহর সমকক্ষ নির্ধারণ করে তাহলে তার স্থান হবে জাহান্নাম!
আল্লাহ বলেনঃ
وَجَعَلُوا لِلَّهِ أَنْدَادًا لِيُضِلُّوا عَنْ سَبِيلِهِ ۗ قُلْ تَمَتَّعُوا فَإِنَّ مَصِيرَكُمْ إِلَى النَّارِ
''আর তারা আল্লাহর সমকক্ষ উদ্ভাবন করে তাঁর পথ হতে বিভ্রান্ত করার জন্য; তুমি বলঃ ভোগ করে নাও, পরিণামে আগুনই তোমাদের প্রত্যাবর্তন স্থল।
সুরা ইব্রাহীম, আয়াত ৩০
অর্থাৎ حي বা চীরজিবী একমাত্র আল্লাহর খাস গুন তাই আল্লাহর এই খাস গুনে নবীকে গুনান্বিত করা যাবেনা! করলে শিরক হবে…
তাই নবীকে হায়াতুন্নবী বলা যাবেনা..  ===============================================================================
 #পীর কি? 
ফার্সিতে পীর, আরবীতে শায়েখ, বাংলায় ওস্তাদ!!!
এটা কি সত্য, নাকি পীরদের ধোঁকাবাজি???
(পুরোটা পড়ুন আর ওদের ধোঁকাবাজির জবাব নিন)
.
জ্বি, এটা পীরদের সুক্ষ্ম ধোঁকাবাজি। বলদ মার্কা, মূর্খ মুরিদগুলো এসব বুঝেও না। সামান্য ইলম থাকলেই পীর নামক ছাগলদের এ ধোঁকাবাজি বুঝা সম্ভব। 
পীর আর শায়েখ মধ্যে পার্থক্য কোথায় আসুন জানার এবং বুঝার চেষ্টা করে ওদের লুঙ্গি উম্মোচন করি।
.
ওরা বলে; আরবীত যেটা মুর্শিদ, শায়েখ, বাংলায় সেটা ওস্তাদ, শিক্ষক এবং ফার্সিতে পীর। যাই হোক! প্রথমে এটা মনে রাখুন পীর-মুরিদীর জন্মই হয়েছে মিথ্যাচারের মাধ্যমে! সুতরাং ওদের প্রতিটি কথার মাঝে রয়েছে ভন্ডামি, ধোঁকাবাজি, মিথ্যাচার।
.
পীর মানে যদি শিক্ষক হতো, তবে আমাদের আপত্তি কিসের! ইলম অর্জনের জন্য শিক্ষক কিংবা ওস্তাদের শরণাপন্ন হবে, যেটা জানে না সেটা জেনে নিবে, যেটা বুঝে না সেটা বুঝে নিবে। তবে শর্ত হচ্ছে দলিল সহকারে, অন্ধভাবে নয়। আর এমনটি কুরআন বলছে।
.
এবার আসুন, এ ত্রিশব্দের পার্থক্য কোথায়!!
আপনি একজন পীরের কাছে গেলেন, সর্বপ্রথম আপনাকে বায়আত করাবে! কিসের বায়আত? চিশতিয়া-সাবেরিয়া, কাদেরিয়া, নক্সবন্দীয়া প্রমুখ তরিকার! :-D
আজ পর্যন্ত দেখাতে পারবেন, কোন শায়েখ কিংবা ওস্তাদ অমুক, তমুক তরিকায় বায়আত করেছেন, বায়আত নিয়েছেন?? পারবেন দেখাতে! পারবেন না।
তবে কেমন করে পীর, শায়েখ, ওস্তাদ এক হলো???
.
এরপর আপনি পীরের কাছে বায়আত হওয়ার পর ছবক দিবে(কুরআন-সুন্নাহ বহির্ভূত) এই জিকির এত বার, ইল্লাল্লাহ'র জিকির, ৬ লতিফার জিকির কিংবা চক্ষু মুদিয়া লা বলে টান দিয়ে ইল্লাল্লাহ বলে ক্বলবে জরফ মারতে হপে :-P
আজ পর্যন্ত কেউ দেখাতে পারবে কোন শায়েখ এরকম ভন্ডামি, কুরআন-সুন্নাহ বহির্ভূত জিকির-আযকার দিয়েছে?? পারবেন দেখাতে! পারবেন না।
তবে পীর, শায়েখ, ওস্তাদ এক হয় কি করে ভাউ??
.
এরপর মুরিদ হলে আপনাকে অবশ্যই ফানা ফিসশায়েখ তথা পীরের মধ্যে নিজেকে ফানা করতে হবে, নিজেকে বিলিয়ে দিতে হবে পীরের মধ্যে, পীরের প্রতিটি কথা, কাজ বিনা আপত্তিতে পালন করতে হবে। চাই সেটা কুরআন-হাদিসে থাকুক কিংবা না থাকুক!
তা আপনি কি দেখাতে পারবেন, কোন শায়েখ এমনটি বলেছে যে, আমার মধ্যো নিজেকে ফানা করে দাও। আমি যা বলি তাই মান? পারবেন দেখাতো! পারবেন না।
তবে কি করে পীর, শায়েখ, ওস্তাদ এক হয়!!
.
পীরেরা মিথ্যা, গাঁজাখুরি কিচ্ছা-কাহিনী না বললে পেটের ভাত হজম হয় না, রাত্রে ঘুমও ঠিকমতো হয় না!
 ===============================================================================

কোরআন হাদিসের রেফারেন্স দেওয়ার পরও যদি কেউ না মানে বা টাট্রা করে এবং এতে আপনি উত্তেজিত হয়ে যান তাহলে আল্লাহ্ আমাদের শিখিয়ে দিচ্ছেন কি করতে হবে, >>>
ﻭَﻗَﺪْ ﻧَﺰَّﻝَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏِ ﺃَﻥْ ﺇِﺫَﺍ ﺳَﻤِﻌْﺘُﻢْ ﺁﻳَﺎﺕِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻳُﻜْﻔَﺮُ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﻳُﺴْﺘَﻬْﺰَﺃُ ﺑِﻬَﺎ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﻘْﻌُﺪُﻭﺍ ﻣَﻌَﻬُﻢْ ﺣَﺘَّﻰٰ ﻳَﺨُﻮﺿُﻮﺍ ﻓِﻲ ﺣَﺪِﻳﺚٍ ﻏَﻴْﺮِﻩِ ۚ ﺇِﻧَّﻜُﻢْ ﺇِﺫًﺍ ﻣِّﺜْﻠُﻬُﻢْ ۗ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺟَﺎﻣِﻊُ ﺍﻟْﻤُﻨَﺎﻓِﻘِﻴﻦَ ﻭَﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮِﻳﻦَ ﻓِﻲ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ ﺟَﻤِﻴﻌًﺎ [ আন নিসা - ১৪০ ] 
আর কোরআনের মাধ্যমে
তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারি করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহ তা’ আলার আয়াতসমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রুপ হতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গান্তরে চলে যায়। তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন।
ﻭَﻋِﺒَﺎﺩُ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَـٰﻦِ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﻤْﺸُﻮﻥَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﻫَﻮْﻧًﺎ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺧَﺎﻃَﺒَﻬُﻢُ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠُﻮﻥَ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﺳَﻠَﺎﻣًﺎ (আল ফুরকান - ৬৩) রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মুর্খরা কথা বলতে থাকে, তখন তারা বলে, সালাম।
  ===============================================================================

যারা অমুক আর তমুক কে #নিরাপদ মনে করে অনুসরণ করে তারা দুনিয়ায় এর শাস্তি না বুঝলেও যখন জাহান্নামে যাবে তখন হায় হায় করে বলবে ইস যদি অমুক আর তমুকের অনুসরন না করে রাসুলের অনুসরন করতাম!!!! 
আল্লাহ বলেনঃ
يَوْمَ تُقَلَّبُ وُجُوهُهُمْ فِي النَّارِ يَقُولُونَ يَا لَيْتَنَا أَطَعْنَا اللَّهَ وَأَطَعْنَا الرَّسُولَا ''যেদিন তাদের মুখ-মন্ডল আগুনে উলট পালট করা হবে সেদিন তারা বলবেঃ হায়! আমরা যদি 
আল্লাহকে মানতাম ও রাসূলকে মানতাম! '
وَقَالُوا رَبَّنَا إِنَّا أَطَعْنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَاءَنَا فَأَضَلُّونَا السَّبِيلَا ''তারা আরও বলবেঃ হে আমাদের রাবব! আমরা আমাদের নেতা ও বড় লোকদের আনুগত্য করেছিলাম এবং তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল। '
সুরা আহযাব, আয়াত ৬৭-৬৮
   ===============================================================================

নবী করিমের সঃ এর ব্যাপারে অতিরঞ্জন।
عن انس رضي لله عنه ان رجلا قال للنبي صلي الله عليه و سلم - يا سيدنا وابن سيدنا و خيرنا وابن خيرنا فقال النبي صلي الله عليه و سلم يا ايها الناس! قولو بقولكم و لا يستهوينكم الشيطان انا محمد ابن عبد الله و رسول الله. و الله ما احب ان ترفعوني فوق ما رفعني الله عزوجلا.
অর্থঃ আনাস (রাঃ) আনহু থেকে বর্নিত, একদা কিছু লোক বলল হে আল্লাহর রাসল(দঃ)! হে আমাদের সর্বশ্রেষ্ট ব্যাক্তি! হে আমাদের সর্বশ্রেষ্ট ব্যাক্তির পুত্র! হে আমাদের সর্দার! হে আমাদের সর্দারের পুত্র! এসব শুনে রাসুল (দঃ) বললেন হে লোক সকল, তোমরা তোমাদের কথা বল। আর অবশ্যই যেন শয়তান তোমাদেরকে বিভ্রান্ত না করে। আমি আব্দুল্লাহর পুত্র এবং আল্লাহর রাসুল। আল্লাহর কসম, আমি পছন্দ করিনা যে তোমরা আমাকে সেই স্থানের উর্ধ্বে উত্তোলন কর। যেই স্থানে আল্লাহ আমাকে উত্তোলন করেছেন।
মুসনাদে আহমদ, ১৩৫২৯
   ===============================================================================
পীর ও তার মুরিদরা কুরআনের ভুল অনুবাদ প্রচার করছেন <<<
প্রথমে পীরদের ভুল অনুবাদটি দিলাম তারপর মন্তব্য দিয়ে আরবীসহ আয়াতের সঠিক অনুবাদ দিলাম। আপনারা ইচ্ছা করলে ৮/১০টি অনুবাদ যাচাই করে দেখতে পারেন?
ভুল অনুবাদ >>> ১। হে মুমিনগন তোমরা অনুস্মরণ কর,আল্লাহ্রর রসুলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা ধর্মীয় নেতা । (সুরাঃ নিসা-৫৯,)
মন্তব্যঃ ধর্মীয় নেতা নিজেদের মনগড়া অর্থ করেছে, আবার সম্পূর্ণ আয়াতটি দেয়নি। সম্পূর্ণ আয়াতটি পড়ুন।
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺃَﻃِﻴﻌُﻮﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺃَﻃِﻴﻌُﻮﺍ ﺍﻟﺮَّﺳُﻮﻝَ ﻭَﺃُﻭﻟِﻲ ﺍﻷﻣْﺮِ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻓَﺈِﻥْ ﺗَﻨَﺎﺯَﻋْﺘُﻢْ ﻓِﻲ ﺷَﻲْﺀٍ ﻓَﺮُﺩُّﻭﻩُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟﺮَّﺳُﻮﻝِ ﺇِﻥْ ﻛُﻨْﺘُﻢْ ﺗُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟْﻴَﻮْﻡِ ﺍﻵﺧِﺮِ ﺫَﻟِﻚَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻭَﺃَﺣْﺴَﻦُ ﺗَﺄْﻭِﻳﻼ
সঠিক অনুবাদ >>> হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর ও রাসূলের আনুগত্য কর আর তোমাদের মধ্যে যারা কর্তৃত্বের অধিকারী তাদের আনুগত্য কর; অতঃপর যদি কোন বিষয়ে তোমরা মতবিরোধ কর তাহলে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও; যদি তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখ, এটাই কল্যানকর এবং শ্রেষ্ঠতর সমাধান। আন-নিসা, ৪/৫৯
ভুল অনুবাদ >>> ৩। মুমিন পুরুষ ও মুমিনা মেয়েলোকের ভিতর হতে কতেক কতেকের বন্ধু । (সুরাঃ তাওবাহ-৭১)
মন্তব্যঃ সে এখানে অনুবাদ ভুল করেছে তারপর আবার সম্পূর্ণ আয়াতটি দেয়নি। আয়াতের পরের অংশে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সম্পূর্ণ আয়াত দিলে সব পরিস্কার হয়ে যেত কারা মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী। তাদের বৈশিষ্ট্য কি?
ﻭَﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﻭَﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕُ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀُ ﺑَﻌْﺾٍ ﻳَﺄْﻣُﺮُﻭﻥَ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑِ ﻭَﻳَﻨْﻬَﻮْﻥَ ﻋَﻦِ ﺍﻟْﻤُﻨْﻜَﺮِ ﻭَﻳُﻘِﻴﻤُﻮﻥَ ﺍﻟﺼَّﻼﺓَ ﻭَﻳُﺆْﺗُﻮﻥَ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻭَﻳُﻄِﻴﻌُﻮﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُ ﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﺳَﻴَﺮْﺣَﻤُﻬُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻋَﺰِﻳﺰٌ ﺣَﻜِﻴﻢٌ
সঠিক অনুবাদ >>> আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী তারা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় ও অন্যায় কাজ হতে নিষেধ করে, আর তারা সালাত প্রতিষ্ঠা করে আর যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করে, তাদের উপর আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আত-তাওবা, ৯/৭১
ভুল অনুবাদ >>> ৪। তোমাদের মধ্যে এমন একদল লোক যারা কল্যানের দিকে আহবান করবে । (সুরাঃ আল ইমরান ১০৪)
মন্তব্যঃ অনুবাদ ভুল হয়েছে। এখানেও সম্পূর্ণ আয়াতটি দেয়নি। এতটুকু দিলে তাদের মতের দিকে নেওয়া যায় তাই এতটুকু দিয়েছে। আয়াতের পরের অংশে দলটির বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ﻭَﻟْﺘَﻜُﻦْ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﺃُﻣَّﺔٌ ﻳَﺪْﻋُﻮﻥَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﺨَﻴْﺮِ ﻭَﻳَﺄْﻣُﺮُﻭﻥَ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑِ ﻭَﻳَﻨْﻬَﻮْﻥَ ﻋَﻦِ ﺍﻟْﻤُﻨْﻜَﺮِ ﻭَﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻤُﻔْﻠِﺤُﻮﻥَ
সঠিক অনুবাদ >>> আর তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হওয়া উচিত যারা কল্যাণের দিকে আহবান করে এবং সৎ কাজের আদেশ করে আর অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করে আর তারাই সফলকাম হবে। আলে-ইমরান, ৩/১০৪
মন্তব্যঃ ইমায়িন নামে কোন সুরা আমার জানা নাই; এটি হবে ইয়াসীন। এখানে সম্পূর্ণ আয়াত দিয়েছে কারণ এতেই তাদের মতের দিকে নেওয়া যায়। এই ২১নং আয়াতটি আগের আয়াতের সাথে সম্পর্ক আছে, দুটি আয়াত পড়লে আসল কাহিনী কি তা জানা যায়? তাই আমি আগের আয়াতটিও দিলাম। আপনারা এবার পড়ে দেখুন।
ভুল অনুবাদ >>> ৫) অনুস্মরণ কর তাঁদের যারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাহে না, এবং যারা সৎ পথ প্রাপ্ত । (সুরাঃ ইমায়িন, আয়াতঃ ২১)
ﻭَﺟَﺎﺀَ ﻣِﻦْ ﺃَﻗْﺼَﻰ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ ﺭَﺟُﻞٌ ﻳَﺴْﻌَﻰ ﻗَﺎﻝَ ﻳَﺎ ﻗَﻮْﻡِ ﺍﺗَّﺒِﻌُﻮﺍ ﺍﻟْﻤُﺮْﺳَﻠِﻴﻦَ ﺍﺗَّﺒِﻌُﻮﺍ ﻣَﻦْ ﻻ ﻳَﺴْﺄَﻟُﻜُﻢْ ﺃَﺟْﺮًﺍ ﻭَﻫُﻢْ ﻣُﻬْﺘَﺪُﻭﻥَ
সঠিক অনুবাদ >>> আর শহরের এক প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি দৌড়ে এসে বলল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা রাসূলদের অনুসরণ কর। তাদের অনুসরণ কর যারা তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চায় না আর তারা সৎ পথপ্রাপ্ত। ইয়াসীন, ৩৬/২০-২১
ভুল অনুবাদ >>> ৬) যে বিশুদ্ধ চিত্তে আমার অভিমুখি হয়েছে তাঁর পথ অনুস্মরণ কর (সুরাঃ লোকমান, আয়াতঃ ১৫)।
মন্তব্যঃ এখানে আয়াতের মধ্য অংশ থেকে নিয়েছে কারণ এই অংশটি তাদের মনমত। এতে আয়াতের আসল উদ্দেশ্য কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। আমি সম্পূর্ণ আয়াত দিলাম।
ﻭَﺇِﻥْ ﺟَﺎﻫَﺪَﺍﻙَ ﻋَﻠﻰ ﺃَﻥْ ﺗُﺸْﺮِﻙَ ﺑِﻲ ﻣَﺎ ﻟَﻴْﺲَ ﻟَﻚَ ﺑِﻪِ ﻋِﻠْﻢٌ ﻓَﻼ ﺗُﻄِﻌْﻬُﻤَﺎ ﻭَﺻَﺎﺣِﺒْﻬُﻤَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻣَﻌْﺮُﻭﻓًﺎ ﻭَﺍﺗَّﺒِﻊْ ﺳَﺒِﻴﻞَ ﻣَﻦْ ﺃَﻧَﺎﺏَ ﺇِﻟَﻲَّ ﺛُﻢَّ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣَﺮْﺟِﻌُﻜُﻢْ ﻓَﺄُﻧَﺒِّﺌُﻜُﻢْ ﺑِﻤَﺎ ﻛُﻨْﺘُﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ
সম্পূর্ণ আয়াতটির সঠিক অনুবাদ >>> আর যদি (মাতা-পিতা) তোমাকে আমার সাথে শির্ক করতে জোর চেষ্টা করে, যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তাদের কাউকে মানবে না এবং পৃথিবীতে তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে এবং যে বিশুদ্ধ চিত্তে আমার অভিমুখি হয়েছে তাঁর পথ অনুসরণ কর, তারপর আমার কাছেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন হবে তখন আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দেব, যা তোমরা করতে। লুকমান, ৩১/১৫
ভুল অনুবাদ >>> ৭) জিকির সম্বন্ধে তোমাদের জানা না থাকলে যিনি জানেন তাঁর নিকট হতে জেনে নাও ।(সুরাঃ আম্বিয়া, আয়াতঃ ৭)।
মন্তব্যঃ সে এখানে অনুবাদ ভুল করেছে তারপর আবার সম্পুর্ণ আয়াতটি দেয়নি।
ﻭَﻣَﺎ ﺃَﺭْﺳَﻠْﻨَﺎ ﻗَﺒْﻠَﻚَ ﺇِﻻ ﺭِﺟَﺎﻻ ﻧُﻮﺣِﻲ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ ﻓَﺎﺳْﺄَﻟُﻮﺍ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟﺬِّﻛْﺮِ ﺇِﻥْ ﻛُﻨْﺘُﻢْ ﻻ ﺗَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ
সঠিক অনুবাদ >>> (হে নবী) তোমার পূর্বে আমি যে সব রসূল পাঠিয়েছিলাম, যাদের কাছে আমি ওহী করতাম তারা মানুষই ছিল সুতরাং যদি তোমাদের জানা না থাকে তবে (অবতীর্ণ) কিতাবের জ্ঞান যাদের আছে তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর। আম্বিয়া, ২১/৭
ভূল অনুবাদ >>> ৮) হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং (ছাদেকিন) সত্যবাদী গণের সঙ্গী হয়ে যাও । (সুরাঃ তাওবাহ, আয়াতঃ ১১৯) ।
মন্তব্যঃ এই আয়াতটি তাদের মনমতো। ‘তাকওয়াল্লাহ’ আল্লাহকে ভয় করার যে বৈশিষ্ট্য এই বিষয় কুরআনে বহু আয়াত আছে, যা তারা মানে না, এই বিষয় আমার কয়েকটি পোস্টও আছে। আপনারা পড়ে দেখবেন তাহলে পরিস্কার ধারণা নিতে পারবেন।
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺍﺗَّﻘُﻮﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﻛُﻮﻧُﻮﺍ ﻣَﻊَ ﺍﻟﺼَّﺎﺩِﻗِﻴﻦَ
সঠিক অনুবাদ >>> হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর আর তোমরা সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও। তাওবা, ৯/১১৯
ভুল অনুবাদ >>> ৯) নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাকের রহমত (মুহসিনিন) আউলিয়া কিরামগনের নিকটবর্তী । (সুরাঃ আরাফ, আয়াতঃ ৫৬) ।
মন্তব্যঃ সম্পূর্ণ আয়াতটি দেয়নি। মুহসিনিন মানে আউলিয়া কিরামগন, এই অর্থ তাদের নিজেদের মনগড়া। আগের আয়াতসহ আমি দুটি আয়াত পেশ করলাম। দেখুন তারা আগের আয়াতটি মানে না। তারা হু, হু, জিকির করে চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে। আল্লাহ কিভাবে ডাকতে হবে তা আপনারা নিজেরাই পড়ুন।
ﺍﺩْﻋُﻮﺍ ﺭَﺑَّﻜُﻢْ ﺗَﻀَﺮُّﻋًﺎ ﻭَﺧُﻔْﻴَﺔً ﺇِﻧَّﻪُ ﻻ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻤُﻌْﺘَﺪِﻳﻦَ ﻭَﻻ ﺗُﻔْﺴِﺪُﻭﺍ ﻓِﻲ ﺍﻷﺭْﺽِ ﺑَﻌْﺪَ ﺇِﺻْﻼﺣِﻬَﺎ ﻭَﺍﺩْﻋُﻮﻩُ ﺧَﻮْﻓًﺎ ﻭَﻃَﻤَﻌًﺎ ﺇِﻥَّ ﺭَﺣْﻤَﺔَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻗَﺮِﻳﺐٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤُﺤْﺴِﻨِﻴﻦَ
সঠিক অনুবাদ >>> তোমরা বিনীতভাবে ও নীরবে তোমাদের রবকে ডাক নিশ্চয় তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে ভালবাসেন না। আর তার সংশোধনের পরে তোমরা পৃথিবীতে বিপর্য্য় সৃষ্টি করো না আর তাকে ডাক ভয় ও আশা নিয়ে নিশ্চয় আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীল/ নেকলোকদের নিকটবর্তী। আল-আরাফ, ৭/৫৫-৫৬
ভুল অনুবাদ >>> ১০) আল্লাহ্ যাকে সৎপথে পরিচালিত করেন, সে সৎপথ প্রাপ্ত হয় এবং তিনি (আল্লাহ্) যাকে পথভ্রষ্ট করেন,তুমি কখনো তাঁর জন্য কোন পথপ্রদর্শনকারী (অলি-মুরশিদ) পাবে না । (সুরাঃ কাহাফ, আয়াতঃ ১৭) ।
মন্তব্যঃ এখানে অনুবাদ ভুল। অলি-মুরশিদ নিজেদের মনগড়া অর্থ। মুরশিদ শব্দটি কুরআনের এক জায়গায় আছে আর এখানেই আছে তাই তাদের এটি পছন্দ। মুরশিদ অর্থ পথ প্রদর্শক। কুরআনকেও আল্লাহ পথ প্রদর্শক বলেছেন, আল-বাকারা, ২/২, আন-নামল, ২৭/১-২, তাহলে বলুন কুরআন কি মুরশিদ নাকি? ওলী শব্দের অনেকগুলি অর্থ্ হয়, যেমন- বন্ধু, অভিভাবক, সাহায্যকারী, সুহৃদ, কর্তা, মালিক, পৃষ্ঠপোষক। ওলী শব্দের বহুবচন হল আওলিয়া। সে এখানে সম্পূর্ণ আয়াত দেয়নি। আমিও প্রয়োজনবোধ করলাম না তাই আমিও সম্পূর্ণ আয়াত দিলাম না। কারণ এই বাক্যগুলি সাথে আগের বাক্যের কোন সম্পর্ক নেই।
ﻣَﻦْ ﻳَﻬْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻓَﻬُﻮَ ﺍﻟْﻤُﻬْﺘَﺪِ ﻭَﻣَﻦْ ﻳُﻀْﻠِﻞْ ﻓَﻠَﻦْ ﺗَﺠِﺪَ ﻟَﻪُ ﻭَﻟِﻴًّﺎ ﻣُﺮْﺷِﺪًﺍ
সঠিক অনুবাদ >>> আল্লাহ যাকে সৎ পথে পরিচালিত করেন সে সৎ পথ প্রাপ্ত আর তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি তার জন্য কক্ষনো কোন অভিভাবক, পথ প্রদর্শক পাবে না। আল-কাহফ, ১৮/১৭
ভুল অনুবাদ >>> ১১) সাবধান! নিশ্চয়ই আল্লাহ্র অলিগণের কোন ভয় নেই, এবং তারা কোন বিষয় এ চিন্তিতও নহে । তাঁদের জন্য আছে সুসংবাদ দুনিয়া ও আখেরাতে, আল্লাহ্র কথার কোন পরিবর্তন হয় না, উহাই মহা সাফল্য । (সুরাঃ ইউনুছ, আয়াতঃ ৬২-৬৪)।
মন্তব্যঃ এখানে তিনটি আয়াতের কথা বলে ৬৩ নং আয়াতটি দেয়নি। কারণ তাতে আল্লাহর বন্ধুদের বৈশিষ্ট্যের কথা আছে। ৬৩ নং আয়াতটি দিলে তারা ধরা খেয়ে যেত। এই বৈশিষ্ট্য তাদের মধ্যে নেই।
ﺃَﻻ ﺇِﻥَّ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻻ ﺧَﻮْﻑٌ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﻭَﻻ ﻫُﻢْ ﻳَﺤْﺰَﻧُﻮﻥَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻭَﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳَﺘَّﻘُﻮﻥَ ﻟَﻬُﻢُ ﺍﻟْﺒُﺸْﺮَﻯ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺤَﻴَﺎﺓِ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻭَﻓِﻲ ﺍﻵﺧِﺮَﺓِ ﻻ ﺗَﺒْﺪِﻳﻞَ ﻟِﻜَﻠِﻤَﺎﺕِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺫَﻟِﻚَ ﻫُﻮَ ﺍﻟْﻔَﻮْﺯُ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴﻢُ
সঠিক অনুবাদ >>> জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই আর তারা চিন্তিত হবে না। তারা হলো যারা ঈমান এনেছে ও তাকওয়া অবলম্বন করেছে। তাদের জন্যই সুসংবাদ দুনিয়ার জীবনে আর আখেরাতে; আল্লাহর বানীসমূহের কোন পরিবর্তন হয় না; এটাই হচ্ছে মহাসাফল্য। ইউনুস, ১০/৬২-৬৪
ভুল অনুবাদ >>> যিনি আমার দিকে রুজু তথা মনোনিবেশ করেছেন তোমরা তার পথ অনুসরণ কর (সুরাঃ লোকমান, আয়াতঃ ১৫)
মন্তব্যঃ আয়াতের মধ্য অংশ থেকে নিয়েছে কারণ এই অংশটি তাদের মনমত। এতে আয়াতের আসল উদ্দেশ্য কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। আমি সম্পূর্ণ আয়াত দিলাম।
>>> আয়াতে কি আছে দেখুন <<<
ﻭَﺇِﻥْ ﺟَﺎﻫَﺪَﺍﻙَ ﻋَﻠﻰ ﺃَﻥْ ﺗُﺸْﺮِﻙَ ﺑِﻲ ﻣَﺎ ﻟَﻴْﺲَ ﻟَﻚَ ﺑِﻪِ ﻋِﻠْﻢٌ ﻓَﻼ ﺗُﻄِﻌْﻬُﻤَﺎ ﻭَﺻَﺎﺣِﺒْﻬُﻤَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻣَﻌْﺮُﻭﻓًﺎ ﻭَﺍﺗَّﺒِﻊْ ﺳَﺒِﻴﻞَ ﻣَﻦْ ﺃَﻧَﺎﺏَ ﺇِﻟَﻲَّ ﺛُﻢَّ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣَﺮْﺟِﻌُﻜُﻢْ ﻓَﺄُﻧَﺒِّﺌُﻜُﻢْ ﺑِﻤَﺎ ﻛُﻨْﺘُﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ
সম্পূর্ণ আয়াতটির সঠিক অনুবাদ >>> আর যদি (মাতা-পিতা) তোমাকে আমার সাথে শির্ক করতে জোর চেষ্টা করে, যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তাদের কাউকে মানবে না এবং পৃথিবীতে তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে এবং যে বিশুদ্ধ চিত্তে আমার অভিমুখি হয়েছে তাঁর পথ অনুসরণ কর, তারপর আমার কাছেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন হবে তখন আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দেব, যা তোমরা করতে। লুকমান, ৩১/১৫


================================================================================ 


প্রশ্ন: সাহাবায়ে কেরাম যেভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাতে বাইআত করেছেন, খুলাফায়ে রাশেদীন এর হাতে বাইআত করেছেন সেভাবে প্রত্যেক মুসলমানকে কী অন্য কোন ব্যক্তির হাতে বাইআত করতে হবে?

উত্তর:
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
বাইআত করতে হয় শুধুমাত্র মুসলিম শাসকের হাতে। আহলে হিল্ল ও আকদ তাঁর হাতে বাইআত করবেন। আহলে হিল্ল ও আকদ হচ্ছে- আলেম সমাজ, সম্মানিত ও প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ। এ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে বাইআত করার মাধ্যমে তাঁর কর্তৃত্ব সাব্যস্ত হবে। সাধারণ মানুষকে ব্যক্তিগতভাবে রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে বাইআত করতে হবে না। বরং তারা তার আনুগত্য করবে যতক্ষণ না সেটা গুনাহর আওতায় না পড়ে।
আল-মাজেরি বলেন: “যারা আহলে হিল্ল ওয়াল আকদ শুধু তারা ইমাম বা রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে বাইআত করলে যথেষ্ট; সর্বসাধারণের বাইআত করা ওয়াজিব নয়। প্রত্যেক ব্যক্তিকে সশরীরে তার কাছে হাযির হয়ে হাতে হাত রাখতে হবে এটা জরুরী নয়। বরং প্রত্যেকে তার আনুগত্য করবে, তার কথা মেনে চলবে, তার বিরোধিতা করবে না, তার বিপক্ষে যাবে না।”[ফাতহুল বারী থেকে সংকলিত]
ইমাম নববী ‘শরহে সহিহ মুসলিম’ গ্রন্থে বলেন: বাইআতের ব্যাপারে সকল আলেম একমত যে, বাইআত শুদ্ধ হওয়ার জন্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে বাইআত করতে হবে এমন কোন শর্ত নেই। আহলে হিল্ল ওয়াল আকদের প্রত্যেক ব্যক্তিকে বাইআত করতে হবে সেটাও শর্ত নয়। বরং শর্ত হচ্ছে- আলেমসমাজ, নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও প্রভাবশালী লোকদের মধ্যে যাদেরকে একত্রিত করা সম্ভব হয় তাদের বাইআত করা...।
প্রত্যেক ব্যক্তিকে ইমাম বা রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে এসে হাতে হাত রেখে বাইআত করতে হবে এমনটি ওয়াজিব নয়। বরং সকলের উপর ওয়াজিব হচ্ছে- রাষ্ট্রপ্রধানের নির্দেশ মেনে চলা, তার বিরোধিতা না করা, বিদ্রোহী না হওয়া।” সমাপ্ত
যেসব হাদিসে বাইআতের কথা এসেছে সেখানে বাইআত দ্বারা রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে বাইআত করা উদ্দেশ্য।
যেমন- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করল কিন্তু তার গর্দানে বাইআত নেই সে জাহেলিয়াতের মৃত্যুবরণ করল।” [সহিহ মুসলিম (১৮৫১)]
এ হাদিসের ব্যাখ্যায় অন্য হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে বলেনঃ
“যে ব্যক্তি কোন রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে বাইআত করেছে, হাত দিয়ে ও অন্তর থেকে তার সাথে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছে সে যেন যথাসম্ভব সে রাষ্ট্রপ্রধানের আনুগত্য করে। যদি কোন লোক এ রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব নিয়ে টানাটানি করতে আসে তখন তোমরা সে লোকের গর্দান ফেলে দাও।” [সহিহ মুসলিম (১৮৪৪)]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “যদি দুইজন খলিফার হাতে বাইআত করা হয় তখন শেষের জনকে হত্যা কর” [সহিহ মুসলিম (১৮৫৩)]
এ হাদিসগুলো প্রত্যেকটি রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে বাইআত করা সংক্রান্ত; এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
বিভিন্ন দলের বা ব্যাক্তির হাতে বাইআত করা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে শাইখ সালেহ আল-ফাওযান বলেন: বাইআত শুধুমাত্র মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে করতে হবে। এ ছাড়া যত বাইআত আছে এগুলো বিদআত।
এ বাইআতগুলো অনৈক্যের কারণ।
একই দেশের একই রাজ্যের মুসলমানদের উপর আবশ্যকীয় হলো একজন রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে বাইআত করা। একাধিক বাইআত করা নাজায়েয।
[আল-মুনতাকা মিন ফাতাওয়াস শাইখ সালেহ আল-ফাওযান ১/৩৬৭]
রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে বাইআত করার পদ্ধতি:
পুরুষের বাইআত করার পদ্ধতি হবে মৌখিকভাবে ও কর্মের মাধ্যমে অর্থাৎ মুসাফাহা করে। আর নারীদের ক্ষেত্রে শুধু মৌখিকভাবে। এ পদ্ধতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাতে সাহাবায়ে কেরামের বাইআতের মাধ্যমে সাব্যস্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে আয়েশা (রাঃ) এর উক্তি হচ্ছে- “না, আল্লাহর শপথ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাত কখনো কোন নারীর হাতকে স্পর্শ করেনি। তিনি তাদেরকে মৌখিকভাবে বাইআত করাতেন।”[সহিহ বুখারী (৫২৮৮) সহিহ মুসলিম (১৮৬৬)]
ইমমা নববী (রহঃ) হাদিসটির ব্যাখ্যায় বলেন: এ হাদিসে মহিলাদের হাত না ধরে মৌখিকভাবে বাইআত করানোর দলিল রয়েছে এবং পুরুষের হাত ধরে ও মৌখিকভাবে বাইআত করানোর দলিল রয়েছে।” 
 =====================================================================================

সুন্নাহ (السنة) শব্দটি سن- يسن থেকে ক্রিয়ামূল। যার অর্থ তরীকা বা পন্থা, পদ্ধতি, রীতিনীতি, হুকুম ইত্যাদি।
এই পদ্ধতি ও রীতিনীতি নন্দিত বা নিন্দিত কিংবা প্রশংসিত বা ধিকৃত উভয়েই হ’তে পারে। যেমন- السنة من الله (আল্লাহর নীতি)। মহান আল্লাহ্ বলেন, سُنَّةَ مَنْ قَدْ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِن رُّسُلِنَا وَلاَ تَجِدُ لِسُنَّتِنَا تَحْوِيلاً ‘আপনার পূর্বে আমি যত রাসূল প্রেরণ করেছি, তাদের ক্ষেত্রেও এরূপ নিয়ম ছিল। আপনি আমার নিয়মের কোন ব্যতিক্রম পাবেন না’ (ইসরা ১৭/৭৭)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, وَمَنْ سَنَّ فِى الإِسْلاَمِ سُنَّةً سَيِّئَةً كَانَ عَلَيْهِ وِزْرُهَا وَوِزْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَىْءٌ ‘যে ব্যক্তি ইসলামে কোন নিকৃষ্ট সুন্নাত (রীতি) চালু করল, অতঃপর তার অবর্তমানে সেটার উপরে আমল করা হ’ল, তাহ’লে তার জন্য আমলকারীর সমান গোনাহ লেখা হবে, অথচ আমলকারীর গোনাহ সামান্যতম কম করা হবে না’।[1]
শারঈ পরিভাষায় সুন্নাত হ’ল রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ)-এর ঐ সকল বাণী, যা দ্বারা তিনি কোন বিষয়ে আদেশ-নিষেধ, বিশ্লেষণ, মৌন সম্মতি ও সমর্থন দিয়েছেন এবং কথা ও কর্মের মাধ্যমে অনুমোদন করেছেন, যা সঠিকভাবে জানা যায় তাকে সুন্নাহ বলা হয়।[2]
অনুরূপভাবে ছাহাবী, তাবিঈ ও তাবে-তাবিঈদের আছার ও ফৎওয়াসমূহ অর্থাৎ তাদের ইজতেহাদ ও যেসব বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেছেন, তাকেও সুন্নাহ বলে অভিহিত করা হয়।
যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِىْ وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِيْنَ الْمَهْدِيِّيْنَ ‘তোমাদের উপরে অবশ্য পালনীয় হ’ল আমার সুন্নাত ও সুপথ প্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত’।[3]
সুন্নাহর গুরুত্ব : 
ইসলামী শরী‘আতের উৎস দু’টি, পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ। পবিত্র কুরআন যেমন আল্লাহর প্রেরিত অহী, ঠিক তেমনি সুন্নাহও রাসূল (ছাঃ)-এর অন্তরে প্রক্ষিপ্ত অহী।
কুরআন পঠিত অহী, আর সুন্নাহ অপঠিত অহী। পবিত্র কুরআনের পরই সুন্নাহর স্থান। সুন্নাহ প্রকৃতপক্ষে আল-কুরআনের বিস্তারিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যে পূর্ণাঙ্গ দ্বীন মানব জাতিকে উপহার দিয়েছেন, সুন্নাহ মূলতঃ এরই বহিঃপ্রকাশ। তাই বলা হয়, পবিত্র কুরআন ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের হৃদপিন্ড স্বরূপ। আর সুন্নাহ এ হৃদপিন্ডের চলমান ধমনী।
হৃদপিন্ডের চলমান ধমনী যেমন দেহের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের শোণিত ধারা সতেজ, সক্রিয় ও গতিশীল করে রাখে, সুন্নাহও অনুরূপ দ্বীন ইসলামকে সতেজ, সক্রিয় ও গতিশীল রাখে। এজন্যই ইসলামে ছহীহ সুন্নাহর গুরুত্ব অপরিসীম। সুন্নাহ উন্নত ও মহামূল্যবান জ্ঞান সম্পদ হিসাবে সমাদৃত। দ্বীন ইসলাম পূর্ণাঙ্গ। এই পূর্ণতা ধরে রাখতে সুন্নাহর ভূমিকা অপরিসীম। কারণ যারা সুন্নাহর জ্ঞান থেকে বিমুখ তারা বিদ‘আতী পথ অন্বেষণে সর্বদা ব্যস্ত। সুন্নাহ ব্যতীত দ্বীন ইসলামের পূর্ণতা কল্পনা করা যায় না।
কুরআনের মত সুন্নাহও অহী : 
পবিত্র কুরআন যেমন আল্লাহ প্রেরিত অহী, ঠিক তেমনি রাসূলের কথা, কাজ, মৌন সম্মতি তথা সুন্নাহও আল্লাহর অহী, যা রাসূল (ছাঃ)-কে জানিয়ে দেয়া হ’ত।
কুরআন ও সুন্নাহ উভয়টি জিব্রাঈল (আঃ)-এর মাধ্যমে অবতীর্ণ হয়েছে।
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, وَأَنْزَلَ اللهُ عَلَيْكَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ ‘আল্লাহ তোমার প্রতি কিতাব (কুরআন) ও হিকমাত (সুন্নাহ) নাযিল করেছেন’ (নিসা ৪/১১৩)।
‘আর তিনি শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমাত’ (জুমু‘আ ৬২/২)।
অবশ্য কুরআন ও সুন্নাহ উভয়টির তথ্যসমূহ আল্লাহর পক্ষ থেকেই আগত।[4]
এ মর্মে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, أَلاَ إِنِّىْ أُوتِيْتُ الْكِتَابَ وَمِثْلَهُ مَعَهُ ‘জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আমাকে কুরআন ও তার সাথে অনুরূপ বিষয় (সুন্নাহ) দান করা হয়েছে’।[5]
হাসান বিনতে আতিয়া বলেন, জিব্রাঈল (আঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে সুন্নাহ নাযিল করতেন, যেভাবে কুরআন নাযিল করতেন।[6]
কুরআন প্রত্যক্ষ অহী ও হাদীছ অপ্রত্যক্ষ অহী। কুরআন অহী মাতলূ যা তেলাওয়াত করা হয়। কিন্তু হাদীছ গায়ের মাতলূ যা তেলাওয়াত করা হয় না।[7] যার ভাষা ও অর্থ আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ, তাই কুরআন। আর যার অর্থ আল্লাহর পক্ষ থেকে ও রাসূলের ভাষায় তা ব্যক্ত করেন, তাই হাদীছ ও সুন্নাহ।[8]
রাসূল (ছাঃ) বলেন, وَلْيَقْضِ اللهُ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّهِ مَا شَاءَ ‘আল্লাহ যা পসন্দ করেন, তাঁর নবীর মুখ দিয়ে তা প্রকাশ করেন’।[9]
রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) নিজের খেয়াল-খুশিমত কোন ফায়ছালা দিতেন না এবং ইচ্ছামত কোন কথা বলতেন না।
মহান আল্লাহ বলেন,وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى، إِنْ هُوَ إِلاَّ وَحْيٌ يُوحَى، عَلَّمَهُ شَدِيْدُ الْقُوَى ‘তিনি (রাসূল) তাঁর প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলেন না। কেবলমাত্র অতটুকু বলেন, যা তাঁর নিকটে অহী হিসাবে নাযিল করা হয়। আর তাকে শিক্ষা দান করে এক শক্তিশালী ফেরেশতা’ (নাজম ৫৩/৩-৫)।
হাদীছে এসেছে, একদা জনৈক ইহুদী আলেম রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করল, পৃথিবীর কোন ভূখন্ড সর্বাপেক্ষা উত্তম? রাসূল (ছাঃ) বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর জিব্রাঈল (আঃ) এসে তা জানিয়ে দেয়ার পর বললেন, شَرُّ الْبِقَاعِ أَسْوَاقُهَا وَخَيْرُ الْبِقَاعِ مَسَاجِدُهَا ‘সর্বনিকৃষ্ট স্থান হ’ল বাজার ও সর্বোৎকৃষ্ট স্থান হ’ল মসজিদ’।[10]
অতএব সুন্নাহও কুরআনের মতই অহী। একে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।
[1]. মুসলিম হা/১০১৭; নাসাঈ হা/২৫৫৪; মিশকাত হা/২১০।
[2]. শাইখ যাকারিয়া আল-আনছারী, ফাতহুল বাকী আলা আলফাযিল ইরাকী (বৈরুত: দারুল কুতুবিাল ইলমিয়্যাহ, তা.বি.), পৃঃ ১২।
[3]. তিরমিযী হা/২৬৭৬; ইবনু মাজাহ হা/৪৩; মিশকাত হা/১৬৫, সনদ ছহীহ।
[4]. তাফসীর মা‘আরেফুল কুরআন, ২৮২ পৃঃ।
[5]. আবু দাউদ হা/৪৬০৪; মিশকাত হা/১৬৩।
[6]. আশ-শারহুল ইবানা, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের পরিচিতি।
[7]. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, হাদীছের প্রামাণিকতা, পৃঃ ৫।
[8]. তাফসীর মাআরেফুল কুরআন, পৃঃ ১৩০৩।
[9]. বুখারী হা/৬০২৭।
[10]. আহমাদ, ইবনু হিববান, হাকেম, মিশকাত হা/৭৪১, সনদ হাসান।
=====================================================================================
বিদআতি আমল ও আল্লাহর বিচার!
আল্লাহ বলেনঃ
وَقَدِمْنَا إِلَىٰ مَا عَمِلُوا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنَاهُ هَبَاءً مَنْثُورًا 
''আমি তাদের আমলগুলি বিবেচনা করব, অতঃপর সেগুলিকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব। 
(২৫ঃ২৩)
********
এরা ঐ সব লোক যারা রাসুলের সঃ পদ্ধতি বাদ দিয়ে নিজেদের পন্তায় ইবাদত ও আমল করে এবং মনেও করে যে, তারা অনেক কিছু পূণ্যময় কাজ করলো এবং সেগুলো আল্লাহ তাআ'লার নিকট গ্রহণীয় ও পছন্দনীয় ।
কিন্তূ তাদের ঐ আমলগুলো আল্লাহ তাআ'লার নির্দেশিত পন্তায় ছিল না এবং তাঁর রাসূল (সঃ) নির্দেশ মুতাবেকও ছিল না বলে সেগুলো গ্রহণীয় হওয়ার পরিবর্তে বর্জনীয় হয়ে গেলো এবং প্রিয় হওয়ার পরিবর্তে অপ্রিয় হয়ে গেলো ।
কেননা, তারা আল্লাহর একত্ববাদ এবং তাঁর রাসূল (সঃ) রিসালাতের সমস্ত প্রমাণ তাদের সামনে বিদ্যমান ছিল । কিন্তূ তারা ওগুলি হতে চক্ষু বন্ধ করে নেয় এবং মেনে নেয়ার পরেও অমান্য করে । তাদের পুণ্যের পাল্লা সম্পূর্ণ শূন্য থাকবে ।
=====================================================================================
যারা রাসুলের আনুগত্য ছেড়ে বাপ দাদা ইমাম হুজুর নেতার আনুগত্য করে তারা জাহান্নামে হায় হায় করতে থাকবে!!
يَوْمَ تُقَلَّبُ وُجُوهُهُمْ فِي النَّارِ يَقُولُونَ يَا لَيْتَنَا أَطَعْنَا اللَّهَ وَأَطَعْنَا الرَّسُولَا ''যেদিন তাদের মুখ-মন্ডল আগুনে উলট পালট করা হবে সেদিন তারা বলবেঃ হায়! আমরা যদি 
আল্লাহকে মানতাম ও রাসূলকে মানতাম! '
وَقَالُوا رَبَّنَا إِنَّا أَطَعْنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَاءَنَا فَأَضَلُّونَا السَّبِيلَا ''তারা আরও বলবেঃ হে আমাদের রাবব! আমরা আমাদের নেতা ও বড় লোকদের আনুগত্য করেছিলাম এবং তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল। '
সুরা আহযাব, আয়াত ৬৭-৬৮
=====================================================================================
সেই বড় জালিম যাকে কোরআন দিয়ে বুঝানোর পরও মুখ ফিরিয়ে নেয়!
আল্লাহ বলেনঃ 
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن ذُكِّرَ بِآيَاتِ رَبِّهِ فَأَعْرَضَ عَنْهَا وَنَسِيَ مَا قَدَّمَتْ يَدَاهُ إِنَّا جَعَلْنَا عَلَى قُلُوبِهِمْ أَكِنَّةً أَن يَفْقَهُوهُ وَفِي آذَانِهِمْ وَقْرًا وَإِن تَدْعُهُمْ إِلَى الْهُدَى فَلَن يَهْتَدُوا إِذًا أَبَدًا (
তার চাইতে অধিক জালেম কে, যাকে তার পালনকর্তার কালাম দ্বারা বোঝানো হয়, অতঃপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তার পূর্ববর্তী কৃতকর্মসমূহ ভুলে যায়? আমি তাদের অন্তরের উপর পর্দা রেখে দিয়েছি, যেন তা না বোঝে এবং তাদের কানে রয়েছে বধিরতার বোঝা। যদি আপনি তাদেরকে সৎপথের প্রতি দাওয়াত দেন, তবে কখনই তারা সৎপথে আসবে না।
সূরা কাহফ:57।

وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن ذُكِّرَ بِآيَاتِ رَبِّهِ ثُمَّ أَعْرَضَ عَنْهَا إِنَّا مِنَ الْمُجْرِمِينَ مُنتَقِمُونَ (
যে ব্যক্তিকে তার পালনকর্তার আয়াতসমূহ দ্বারা
উপদেশ দান করা হয়, অতঃপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার চেয়ে যালেম আর কে? আমি অপরাধীদেরকে শাস্তি দেব।
সূরা সেজদাহ:22।
=====================================================================================
"কিয়ামতের আলামত" হলো মুসলমানেরা সর্বত্র শির্কে লিপ্ত হবেঃ
অধিকাংশ মুসলিম দেশের মাজারগুলোর প্রতি দৃষ্টি দিলে সহজেই অনুধাবন করা যাবে যে, কিয়ামতের এই আলামতটি প্রকাশিত হয়েছে। উম্মতে মুহাম্মাদীর বিরাট একটি অংশ আইয়্যামে জাহেলীয়াতের ন্যায় শির্কে লিপ্ত হয়েছে।
কবর পাকা করে, বাঁধাই করে, কবরের উপর গম্বুজ ও মসজিদ নির্মাণ করে তাতে বিভিন্ন প্রকার শির্কের চর্চা হচ্ছে। কা’বা ঘরের তাওয়াফের ন্যায় কবরের চারপার্শ্বে তাওয়াফ হচ্ছে, বরকতের আশায় কবরের দেয়াল চুম্বন করা হচ্ছে, তাতে নযর-মানত পেশ করা হচ্ছে অলী-আওলীয়ার নামে পশু যবেহ করা হচ্ছে এবং কবরের পাশে ওরছ সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান হচ্ছে।
নবী সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَلْحَقَ قَبَائِلُ مِنْ أُمَّتِي بِالْمُشْرِكِينَ وَحَتَّى يَعْبُدُوا الْأَوْثَانَ
‘‘আমার উম্মাতের বহু সংখ্যক লোক মুশরেকদের সাথে মিলিত না হওয়া এবং মূর্তিপূজায় লিপ্ত না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত হবেনা’’।[1]
মোটকথা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর ভবিষ্যৎ বাণী বাস্তবায়িত হয়েছে। এই উম্মতের বহু সংখ্যক মানুষের অবস্থা এরূপ হয়েছে যে, কোন কোন মাজারে দাফনকৃত অলীর জন্য সিজদা পর্যন্ত করা হচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে জীবিত পীরের সামনেও মাথানত করে সিজদা করা হচ্ছে, যা প্রকাশ্য শির্কের অন্তর্ভূক্ত। কুরআন ও হাদীছের শিক্ষা ভুলে গিয়ে মুসলিম জাতির অসংখ্য লোক এমনি আরো অগণিত শির্ক করছে যা বর্ণনা করে শেষ করা যাবেনা।
[1] - তিরমিজী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান, ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামে আস্ সাগীর, হাদীছ নং- ৭২৯৫।
=====================================================================================
 অহংকার মানে হল সত্য ও ন্যায় তথা কোরআন ও সহিহ হাদিস অস্বীকার করা ও মেনে না নেওয়া! !
যে কোরআন ও সহিহ হাদিসের রেফারেন্স দেওয়ার পরও মেনে নিতে পারেনা তারা জাহান্নামী!!!
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلىَّ اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; 
لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ كِبْرٍ
যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
قَالَ رَجُلٌ إِنَّ الرَّجُلَ يُحِبُّ أَنْ يَكُونَ ثَوْبُهُ حَسَنًا وَنَعْلُهُ حَسَنَةً 
এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, মানুষ চায় তার পোশাক সুন্দর হোক, তার জুতা সুন্দর হোক, এও কি অহংকার?
قَالَ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
إِنَّ اللَّهَ جَمِيلٌ يُحِبُّ الْجَمَالَ الْكِبْرُ بَطَرُ الْحَقِّ وَغَمْطُ النَّاسِ
নিশ্চয়ই আল্লাহ সুন্দর, তিনি সুন্দরকে ভালবাসেন। অহংকার হচ্ছে দম্ভভরে সত্য, ন্যায় অস্বীকার করা আর মানুষকে ঘৃণা করা। (সহীহ মুসলিম: হা/১৬৬, ১৬৮)
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلىَّ اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন;
لاَ يَدْخُلُ النَّارَ أَحَدٌ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ وَلاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ أَحَدٌ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِنْ كِبْرِيَاءَ
যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমান ঈমান থাকবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। আর যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ অহংকার থাকবে সেও জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সহীহ মুসলিম: হা/১৬৭)
=====================================================================================
মৃত কোন মানুষ তিনি ওলী সাহাবী বা নবী যেই হোন তারা কি জীবিত কারো উপকার বা ক্ষতি করতে পারেন??
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
উত্তরঃ মরার পর মানুষ বড়ই অসহায়। হয়ে যায় লাশ। মশা মাছি তো দূরের কথা সামান্য পিপড়াও তাড়াতে পারে না। সে কি করে মানুষকে সাহায্য করবে? আপনি আপনার বিবেক দিয়ে কি একটু চিন্তা করবেন না?
আল্লাহ বলেনঃ
.
وَمَا يَسْتَوِي الْأَحْيَاء وَلَا الْأَمْوَاتُ إِنَّ اللَّهَ يُسْمِعُ مَن يَشَاء وَمَا أَنتَ بِمُسْمِعٍ مَّن فِي الْقُبُورِ (22
আরও সমান নয় জীবিত ও মৃত। আল্লাহ শ্রবণ করান যাকে ইচ্ছা। আপনি কবরে শায়িতদেরকে শুনাতে সক্ষম নন l
সুরা ফাতির,আয়াত ২২
অর্থাৎ মৃত আর জীবিত সমান নয়! জীবিতরা মানুষের জন্য চাইলে যেমন কিছু করতে পারে মৃতরা তেমন পারেনা l
মরার পর যদি মৃত ব্যক্তি নিজের জন্য কিছু করতে পারতো, অথবা অন্যের কিছু করতে পারতো তাহলে রাসুলুল্লাহ ﷺ ও তাঁর সাহাবীরা অবশ্যই তা করতে পারতেন। রাসুল স. মারা যাওয়ার পর সৃষ্টি সমস্যা সমূহের সমাধান সাহাবাগণ তাঁর নিকট হতে জেনে নিতেন। কিন্তু কোরআন হাদীসের কোথায়ও এই রকম কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না।
.
মৃত মানুষ কিছুই করতে পারে না; না তার জন্য না অপরের জন্য। নিচের হাদীসটি দেখুন-
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ مَرَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِحَائِطٍ مِنْ حِيطَانِ الْمَدِينَةِ أَوْ مَكَّةَ، فَسَمِعَ صَوْتَ إِنْسَانَيْنِ يُعَذَّبَانِ فِي قُبُورِهِمَا، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " يُعَذَّبَانِ، وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ "، ثُمَّ قَالَ " بَلَى، كَانَ أَحَدُهُمَا لاَ يَسْتَتِرُ مِنْ بَوْلِهِ، وَكَانَ الآخَرُ يَمْشِي بِالنَّمِيمَةِ ". ثُمَّ دَعَا بِجَرِيدَةٍ فَكَسَرَهَا كِسْرَتَيْنِ، فَوَضَعَ عَلَى كُلِّ قَبْرٍ مِنْهُمَا كِسْرَةً. فَقِيلَ لَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ لِمَ فَعَلْتَ هَذَا قَالَ " لَعَلَّهُ أَنْ يُخَفَّفَ عَنْهُمَا مَا لَمْ تَيْبَسَا أَوْ إِلَى أَنْ يَيْبَسَا "
-ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল ﷺ একবার মদিনা বা মক্কার কোন এক কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি এমন দু’ব্যাক্তির আওয়াজ পেলেন, যাদের কবরে আযাব হচ্ছিল। তখন রাসূল ﷺ বললেনঃ এদের দু’জনকে আযাব দেওয়া হচ্ছে, অথচ কোন বড় গুনাহের জন্য এদের আযাব দেওয়া হচ্ছে না। তাদের একজন তার পেশাবের নাপাকি থেকে সতর্কতা অবলম্বন করত না। আর একজন চোগলখুরী করত। তারপর তিনি একটি খেজুরের ডাল আনালেন এবং তা ভেঙ্গে দু’খন্ড করে প্রত্যেকের কবরের উপর একখন্ড রাখলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘ইয়া রাসূল ﷺ এরূপ কেন করলেন?’ তিনি বললেনঃ হয়ত তাদের আযাব কিছুটা লাঘব করা হবে, যতদিন পর্যন্ত এ দু’টি না শুকায়।
[বোখারী হা/২১৬,২১৮, ১৩৬১, ১৩৭৮, ৬০৫২, ৬০৫৫; মুসলীম ২/৩৪, হা/২৯২; আহমাদ হা/১৯৮০]
.
☞ মৃত্যুর পর এ রকম কঠিন অবস্থায় কবরে শায়ীত বান্দার যদি কোন করনীয় থাকতো তবে রাসুল ﷺ নিশ্চয় তা তার সাহাবীদেরকে শিখিয়ে দিতেন। বরং রাসুল ﷺ কবরের দুরবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সব সময় দু’আ করতেন। 
যেমন-
للَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ 
-হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে কবরের আযাব থেকে মুক্তি চাই। তোমার কাছে দাজ্জালের ফিৎনা থেকে মুক্তি চাই, তোমার নিকট জীবন ও মৃত্যুর ফিৎনা থেকে মুক্তি চাই। 
[আবু দাউদ হা/৮৮০]
.
কোরআন হাদীসে এমন কোন কথা নেই যেখানে মৃত্যুর পর মানুষের কোন কিছু করার ক্ষমতা আছে এমন কোন প্রমান পাওয়া যায়। তবে মানুষ মৃত্যুর পর তিনটি আমলের প্রতিদান পাবে মর্মে হাদীস রয়েছে।
যেমন-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا مَاتَ الإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلاَّ مِنْ ثَلاَثَةِ أَشْيَاءَ مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ "
-আবু হুরাইরাহ (রা.) সূত্রে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন, মানুষ যখন মৃত্যু বরণ করে তখন তার আমলের সুযোগও বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিনটি আমলের সাওয়াব বন্ধ হয় না।
১। সাদক্বাহ জারিয়া।
২। এমন জ্ঞান যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয় এবং
৩। নেক সন্তান, যে তার জন্য দু’আ করে।
[সূনান আবু দাউদ হা/২৮৮০]
☞ উপরের হাদিসের দিকে একটু খেয়াল করুন! রাসুল সঃ সুস্পষ্টভাবে বলেছেন মৃত্যুর পর মানষের আমল বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু কেউ যদি মৃত্যুর পরও কারো উপকার করতে পারে তাহলে সে একটি ভাল আমল করল! অথচ এইই সহিহ হাদিস বলছে মৃত্যুর পর আমল বন্ধ হয়ে যায়!
এই হাদীসও মৃত্যূর পূর্বের আমল। মোট কথা মৃতূবরণ করার পর মানুষ আর কিছুই করতে পারে না। সুতরাং মাজারে গিয়ে কিছু চাওয়া, কবরের কাছে গিয়ে কোন কিছু মান্নাত করা বোকামী ছাড়া আর কিছুই নয়। মৃত মানুষ তো আপনার আহবান শুনতেই পায় না, সে কিভাবে আপনার কোন উপকারে আসবে? মহান আল্লাহ বলেন,
وَلَا تُسْمِعُ الصُّمَّ الدُّعَاءَ إِذَا وَلَّوْا مُدْبِرِينَ
-তুমি মৃতদেরকে শুনাতে পারোনা৷ যেসব বধির পিছন ফিরে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে তাদের কাছে নিজের আহবান পৌছাতে পারনা৷
[সূরা নামল ৮০]
=====================================================================================
মানুষ কোরআন হাদিস বাদ দিয়ে নিজ ইচ্ছা বা খেয়াল খুশির অনুসরন করে! 
যা আল্লাহ নিষেধ করেছেন! আর এরাই হেদায়াত থেকে বিচ্যুত!!
✔✔
মানুষ ধারণা-অনুমান আর প্রবৃত্তির (ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষার) অনুসরণ করে
إِنْ هِيَ إِنْ هِيَ إِلا أَسْمَاءٌ سَمَّيْتُمُوهَا أَنْتُمْ وَآبَاؤُكُمْ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ بِهَا مِنْ سُلْطَانٍ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلا الظَّنَّ وَمَا تَهْوَى الأنْفُسُ وَلَقَدْ جَاءَهُمْ مِنْ رَبِّهِمُ الْهُدَى
এগুলো কেবল কতিপয় নাম ছাড়া আর কিছুই নয় যে নামগুলো তোমরা ও তোমাদের পূর্ব্‌-পুরুষেরা রেখেছ, যার সমর্থনে আল্লাহ কোন দলীল-প্রমাণ প্রেরণ করেননি; তারা কেবলমাত্র ধারণা-অনুমান আর নিজেদের প্রবৃত্তি (ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা) যা কামনা করে তাছাড়া আর কিছুই অনুসরণ করে না অথচ তাদের নিকট তাদের রবের পক্ষ থেকে হিদায়াত এসেছে। আন্-নাজ্‌ম, ৫৩/২৩
✔✔
প্রবৃত্তির অনুসরণ করতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন
فَلا تَتَّبِعُوا الْهَوَى أَنْ تَعْدِلُوا وَإِنْ تَلْوُوا أَوْ تُعْرِضُوا فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا
সুতরাং ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে তোমরা প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা সত্য এড়িয়ে যাও তবে নিশ্চয় তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ ভালভাবেই অবগত আছেন। আন-নিসা, ৪/১৩৫
✔✔
প্রবৃত্তির অনুসরণ করলে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবে
فَاحْكُمْ بَيْنَ النَّاسِ بِالْحَقِّ وَلا تَتَّبِعِ الْهَوَى فَيُضِلَّكَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ إِنَّ الَّذِينَ يَضِلُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ بِمَا نَسُوا يَوْمَ الْحِسَابِ
অতএব তুমি মানুষের মাঝে ন্যায়বিচার কর আর নিজের প্রবৃত্তির (খেয়াল খুশীর) অনুসরণ করো না, কেননা তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে; নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয় তাদের জন্য রয়েছে কঠিন আযাব, কারণ তারা হিসাবের দিবসকে ভুলে রয়েছে। সোয়াদ, ৩৮/২৬
===================================================================================== 

যদি নবীর শাফায়াত চান তাহলে শির্ক ছাড়ুন !!
শিরককারীকে রাসুল সঃ শাফায়াত করবেননা!!
শিরক থেকে বাচতে চাইলে তাওহীদকে জানুন!তাওহীদ না জানলে শিরক থেকে বাচা অসম্ভব!!
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ فَتَعَجَّلَ كُلُّ نَبِيٍّ دَعْوَتَهُ وَإِنِّي اخْتَبَأْتُ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأُمَّتِي فَهِيَ نَائِلَةٌ مَنْ مَاتَ مِنْهُمْ لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا
আবূ হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক নবীর জন্য একটি করে দু‘আ আছে যা কবুল করা হয়। আর প্রত্যেক নবী তাঁর দু‘আর ব্যাপারে তাড়াহুড়া করেছেন আর আমি আমার দু‘আ আমার উম্মাতের শাফাআতের জন্য জমা রেখেছি।
অতএব আমার উম্মাতের মধ্যে যারা আল্লাহর সাথে শিরক না করে মারা যাবে তারা আমার শাফাআত প্রাপ্ত হবে।
সহীহুল বুখারী ৬৩০৪, 
মুসলিম ১৯৮, 
তিরমিযী ৩৬০২, 
ইবনে মাজাহ ৪৩০৭
আহমাদ ৭৬৫৭, ২৭৩৪৮, ৮৭৩৬, ৮৮৯৮, ৯০৪৮, ৯২২০, ৯২৬৮, ৯৯৩৮, 
মুয়াত্তা মালেক ৪৯২, 
দারেমী ২৮০৫। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
 ===================================================================================== 
প্রশ্নঃ রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে কোন বিপদে সাহায্য কামনা করা জায়েয কি??
উত্তর-রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে কোন বিপদে সাহায্য কামনা করা বড় শিরকের অন্তর্ভুক্ত।
আল্লাহ বলেন,
قُلْ إِنِّي لَا أَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلَا رَشَدًا
‘(হে নবী!) তুমি বলে দাও যে, আমি তোমাদের কোনরূপ ক্ষতি বা উপকার করার ক্ষমতা রাখি না’ (সূরাঃ জীন ২১)
রাসূল (ছাঃ) নিজ কন্যা ফাতেমা (রাঃ)-কে উদ্দেশ্য করে বলেন,
يَا فَاطِمَةُ أَنْقِذِي نَفْسَكِ مِنَ النَّارِ فَإِنِّي لاَ أَمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا غَيْرَ أَنَّ لَكُمْ رَحِمًا سَأَبُلُّهَا بِبَلاَلِهَا ‏"‏ ‏
হে ফাতেমা বিনতে মুহাম্মাদ! তুমি নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও। আমি ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর শাস্তি থেকে তোমাকে রক্ষায় কিছুই করতে পারব না’
(মুসলিম হা/৩৯৫ ইফা; মিশকাত হা/৫৩৭৩)
আল্লাহ বলেন,
قُل لاَّ أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَلاَ ضَرًّا إِلاَّ مَا شَاء اللّهُ وَلَوْ كُنتُ أَعْلَمُ الْغَيْبَ لاَسْتَكْثَرْتُ مِنَ الْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِيَ السُّوءُ إِنْ
হে নবী! তুমি বলে দাও, আমি আমার নিজের কোন উপকার ও ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখি না, আল্লাহ যা চান তা ব্যতীত। আর আমি যদি গায়েব জানতাম, তাহ’লে অধিক অধিক কল্যাণ লাভ করতাম এবং আমাকে কোন ক্ষতিস্পর্শ করতে পারত না
(আ‘রাফ ৭ঃআয়াত ১৮৮)।
রাসূল (সাঃ) নিজের ও তার পরিবারের কোন উপকার করার ক্ষমতা রাখেন না, উনার মৃত্যুর পরে উনার পক্ষে অপরের উপকার করা কিভাবে সম্ভব? 
তাহ’লে তো তিনি জামাতা আলী (রাঃ) এবং নাতি হাসান ও হোসাইনকে (রাঃ) নিহত হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারতেন।
সেজন্যই রাসূল (ছাঃ) আব্দুল্লাহ্ ইবনু আববাসকে উদ্দেশ্য করে বলেন,
‘তুমি কিছু চাইলে আল্লাহর নিকট চাও, সাহায্য প্রার্থনা করলে আল্লাহর কাছেই প্রার্থনা কর’
(আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৫৩০২)।
 ===================================================================================== 
ও হুজুর মদিনার ইসলামকে গালি দিওনা!
রাসুল সঃ বলেছেন ইসলাম মদিনার দিকেই ফিরে যাবে!!

باب بَيَانِ أَنَّ الْإِسْلَامَ بَدَأَ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ غَرِيبًا وَأَنَّهُ يَأْرِزُ بَيْنَ الْمَسْجِدَيْنِ وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، وَالْفَضْلُ بْنُ سَهْلٍ الأَعْرَجُ، قَالاَ حَدَّثَنَا شَبَابَةُ بْنُ سَوَّارٍ، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، - وَهُوَ ابْنُ مُحَمَّدٍ الْعُمَرِيُّ - عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ إِنَّ الإِسْلاَمَ بَدَأَ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ غَرِيبًا كَمَا بَدَأَ وَهُوَ يَأْرِزُ بَيْنَ الْمَسْجِدَيْنِ كَمَا تَأْرِزُ الْحَيَّةُ فِي جُحْرِهَا ‏"‏ ‏.‏
মুহাম্মাদ ইবনু রাফি ও আল ফাযল ইবনু সাহল আল আরাজ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, তিনি ইরশাদ করেন:
" অপরিচিতের বেশে ইসলাম শুক হয়েছিল, অচিরেই তা আবার অপরিচিত অবস্হায় ফিরে যাবে। সাপ যেমন সংকুচিত হয়ে তার গর্তে প্রবেশ করে তদ্রুপ ইসলামও দুই মসজিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে। "
বইঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ১/ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নম্বরঃ ২৭১
باب بَيَانِ أَنَّ الْإِسْلَامَ بَدَأَ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ غَرِيبًا وَأَنَّهُ يَأْرِزُ بَيْنَ الْمَسْجِدَيْنِ حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، وَأَبُو أُسَامَةَ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ إِنَّ الإِيمَانَ لَيَأْرِزُ إِلَى الْمَدِينَةِ كَمَا تَأْرِزُ الْحَيَّةُ إِلَى جُحْرِهَا ‏"‏ ‏.‏
আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইবনু নূমায়র (রাঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ
" সাপ যেমন সঙ্কুচিত হয়ে আপন গর্তের দিকে প্রত্যাবর্তন করে তদ্রুপ ইসলামও সঙ্কুচিত হয়ে মদিনার দিকে প্রত্যাবর্তন করবে। "
বইঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ১/ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নম্বরঃ ২৭২
  ===================================================================================== 
যারা বলে নবীর কাছে সাহায্য চাওয়া যায় এরা আল্লাহ ও নবীকে বিশ্বাস করেনা,
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আর যারা আল্লাহ ও নবীকে বিশ্বাস করেনা তারা তো মুসলিমই হতে পারেনা,
নিচে দেখুন
أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللّهَ لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَا لَكُم
مِّن دُونِ اللّهِ مِن وَلِيٍّ وَلاَ نَصِيرٍ(107
তুমি কি জান না যে, আল্লাহর জন্যই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আধিপত্য? আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু ও 
সাহায্যকারী নেই।
সুরা বাকারাহ,আয়াত ১০৭
إِن يَنصُرْكُمُ اللّهُ فَلاَ غَالِبَ لَكُمْ وَإِن يَخْذُلْكُمْ فَمَن ذَا الَّذِي يَنصُرُكُم مِّن بَعْدِهِ وَعَلَى اللّهِ فَلْيَتَوَكِّلِ الْمُؤْمِنُونَ(160যদি আল্লাহ তোমাদের সহায়তা করেন, তাহলে কেউ তোমাদের উপর পরাক্রান্ত হতে পারবে না। আর যদি তিনি তোমাদের সাহায্য না করেন, তবে এমন কে আছে, যে তোমাদের সাহায্য করতে পারে? আর আল্লাহর ওপরই মুসলমানগনের ভরসা করা উচিত।
সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৬০
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيبُواْ لِي وَلْيُؤْمِنُواْ بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ(186আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুতঃ আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নেই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করা তাদের একান্ত কর্তব্য। যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে।
সুরা বাকারাহ, আয়াত ১৮৬
وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ(60তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব। যারা আমার এবাদতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে লাঞ্ছিত হয়ে।
সুরা মুমিন,আয়াত ৬০
উপরের আয়াতগুলো থেকে সুস্পষ্ট বুঝা গেল যে সাহায্য চাইতে হবে একমাত্র আল্লাহর কাছে,
আর যারা আল্লাহর কাছে সাহায্য না চেয়ে অন্য কোন নবী বা ওলীর কাছে সাহায্য চাইল তারা মুসলিম থেকে খারিজ হয়ে গেল,
নিচে একটি হাদিস লক্ষ্য করুন
-----------------------------------
বইঃ সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪০/ কিয়ামত অধ্যায়।, হাদিস নম্বরঃ ২৫১৮
২৫১৮. আহমাদ ইবন মুহাম্মদ ইবন মূসা ও আবদুল্লাহ ইবন আবদুর রহমান (রহঃ) ...... ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন একদিন আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পিছনে (আরোহী) ছিলাম। তিনি বললেনঃ ওহে বালক, আমি তোমাকে কিছু কালেমা শিখিয়ে দিচ্ছি। আল্লাহর (বিধানসমূহের) হিফাযত করবে। তিনি তোমার হিফাযত করবেন; আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্য রাখবে তাঁকে তোমার সামনে পাবে। যখন কিছু চাবে তখন আল্লাহর কাছেই চাবে, যখন সাহায্য চাবে তখন আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাবে। জেনে রাখ, সমস্ত উম্মতও যদি তোমার উপকার করতে একত্রিত হয়ে যায় তবে আল্লাহ যা তোমার তকবদীরে লিখে রেখেছেন তা ছাড়া কোন উপকার তারা তোমার করতে পারবে না। আর সব উম্মত যদি তোমার কোন ক্ষতি করতে একত্রিত হয়ে যায় তবে তোমার তাকদীরে আল্লাহ তাআলা যা লিখে রেখছেন তা ছাড়া তোমার কোন ক্ষতি তারা করতে পারবে না। কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে আর লিখিত কাগজসমূহও শুকিয়ে গেছে। -মিশকাত ৫৩০২, যিলালুল জান্নাত ৩১৬-৩১৮
(আবু ঈসা বলেন) এ হাদীসটি হাসান-সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ
উপরের হাদিসে নবী সঃ ও আমাদের শিক্ষা দিচ্ছেন কোন কিছু চাইলে আল্লাহর কাছেই চাইতে হবে,
কোন সাহায্য চাইলে আল্লাহর কাছেই চাইতে হবে,
কোরআনে আল্লাহ বললেন তিনিই একমাত্র সাহায্যকারী,আমরা যেন তার কাছেই সাহায্য চাই,
হাদিসে নবী সঃ বললেন আমরা যেন একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাই,
তারপরও যারা বলবে নবীর কাছে সাহায্য চাওয়া যায় তারা মুলত আল্লাহদ্রোহী নবীদ্রোহী,এরা আল্লাহ ও মানেনা নবীও মানেনা বরং এরা নিজেদের খেয়াল খুশিকে রব বা মাবুদ বানিয়ে নিয়েছে....
কাজেই এরা মুসলিম হতে পারেনা..
 ===================================================================================== 
কজন পীর,নেতা,আমীর কিভাবে আরেকজন মানুষের রব বা ইলাহ হয়ে যায়??
আল্লাহ ইহূদী-নাছারাদের পথভ্রষ্টতার কারণ নির্দেশ করে বলেন,
اِتَّخَذُوْا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِّنْ دُوْنِ اللهِ وَالْمَسِيْحَ ابْنَ مَرْيَمَ وَمَا أُمِرُوْا إِلاَّ لِيَعْبُدُوْا إِلَـهًا وَاحِدًا لاَّ إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ سُبْحَانَهُ عَمَّا يُشْرِكُوْنَ- (الةوبة ৩১)-
‘তারা আল্লাহকে ছেড়ে তাদের আলেম ও সংসার বিরাগীদের এবং মরিয়মপুত্র ঈসাকে ‘রব’ হিসাবে গ্রহণ করেছিল। অথচ তাদের কেবলমাত্র এক আল্লাহর দাসত্ব করতে হুকুম দেওয়া হয়েছিল। বস্ত্ততঃ আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আর তারা যে শিরক করে, তা হ’তে তিনি পবিত্র’
(তওবা ৯/৩১)।
উক্ত আয়াত সম্পর্কিত ঘটনাটি নিম্নরূপ :
عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ قَالَ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي عُنُقِي صَلِيبٌ مِنْ ذَهَبٍ، فَقَالَ: يَا عَدِيُّ اطْرَحْ هَذَا الْوَثَنَ مِنْ عُنُقِكَ، فَطَرَحْتُهُ فَانْتَهَيْتُ إِلَيْهِ وَهُوَ يَقْرَأُ سُورَةَ بَرَاءَةَ فَقَرَأَ هَذِهِ الْآيَةَ (اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُوْنِ اللهِ وَالْمَسِيْحَ ابْنَ مَرْيَمَ) قُلْتُ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! إنَّا لَسْنَا نَعْبُدُهُمْ، فَقَالَ: أَلَيْسَ يُحَرِّمُوْنَ مَا أَحَلَّ اللهُ فَتُحَرِّمُوْنَهُ، ويُحِلُّوْنَ مَا حَرَّمَ اللهُ فَتُحِلُّونَهُ؟ قُلْتُ: بَلَى، قَالَ: فَتِلْكَ عِبَادَتُهُمْ، رواه ابن جرير في تفسيره واللفظ لحديث أبي كريب-
‘(তৎকালীন খ্যাতনামা খ্রিষ্টান ধর্মনেতা) ‘আদী বিন হাতেম হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি (৯ম হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে (ইসলাম কবুলের জন্য মদীনায়) আসি। এমতাবস্থায় আমার গলায় স্বর্ণের একটি ক্রুশ ঝুলানো ছিল। এটা দেখে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, হে আদী! তোমার গলা থেকে ঐ মূর্তিটা ফেলে দাও। তখন আমি ওটা খুলে ফেলে দিলাম এবং তাঁর নিকটে গিয়ে বসলাম। এ সময় তিনি সূরা তওবাহর (উপরে বর্ণিত ৩১) আয়াতটি পড়ছিলেন। আমি বললাম, لَسْنَا نَعْبُدُهُمْ ‘আমরা তাদের ইবাদত করি না’। জবাবে তিনি বললেন, ‘তারা কি আল্লাহর হালালকৃত বিষয়গুলিকে হারাম করে না? অতঃপর তোমরাও সেগুলিকে হারাম গণ্য কর। তারা কি আল্লাহর হারামকৃত বিষয়গুলি হালাল করে না? অতঃপর তোমরাও তা হালাল গণ্য কর। আদী বললেন, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, فَتِلْكَ عِبَادَتُهُمْ ‘ওটাই তো ওদের ইবাদত হ’ল’।
উক্ত হাদীছের ব্যাখায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন,
لَمْ يَأْمُرُوْهُمْ أَنْ يَّسْجُدُوْا لَهُمْ، وَلَكِنْ أَمَرُوْهُمْ بِمَعْصِيَةِ اللهِ، فَأَطَاعُوْهُمْ، فَسَمَّاهُمُ اللهُ بِذَلِكَ أَرْبابًا.
‘ইহূদী-নাছারা ধর্মনেতাগণ তাদেরকে সিজদা করার জন্য বলেননি। বরং তারা আল্লাহর নাফরমানীর কাজে মানুষকে হুকুম দিতেন এবং লোকেরা তা মান্য করত। ফলে আল্লাহ তাদেরকে ‘রব’ হিসাবে অভিহিত করেন’।[1]
1]. ইবনু জারীর হা/১৬৬৩২, ১৬৬৪১, তাফসীর জামে‘উল বায়ান (বৈরূত ছাপা : ১৯৮৭), ১০/৮০-৮১; ছহীহাহ হা/৩২৯৩; তিরমিযী হা/৩০৯৫ ‘তাফসীর’ অধ্যায় ‘সূরা তওবা’ অনুচ্ছেদ, সনদ হাসান।
এভাবেই একজন মানুষ আরেকজন মানুষের রব হয়ে যায় যা কেউই বুঝতে পারেনা!
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,
لَيَأْتِيَنَّ عَلَى أُمَّتِي مَا أَتَى عَلَى بَنِي إِسْرَائِيْلَ حَذْوَ النَّعْلِ بِالنَّعْلِ...رواه الترمذىُّ-
‘আমার উম্মতের উপরে এমন অবস্থা অবশ্যই আসবে, যেমন এসেছিল বনু ইস্রাঈলের উপরে, একজোড়া জুতার একটি অপরটির ন্যায়’।[2]
2]. তিরমিযী হা/২৬৪১; ইবনু মাজাহ হা/৩৯৯২; মিশকাত হা/১৭১; ছহীহাহ হা/১৩৪৮।
ঐ অবস্থা থেকে বাঁচার জন্য আমাদেরকে ছালাতের প্রতি রাক‘আতে সূরা ফাতিহায় প্রার্থনা করতে হয় غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ ‘(হে আল্লাহ!) আমাদেরকে সে পথে পরিচালিত করো না, যে পথে চলার কারণে লোকেরা অভিশপ্ত হয়েছে ও পথভ্রষ্ট হয়েছে’ (ফাতিহা ১/৭)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, এখানে ‘মাগদু (অভিশপ্ত) হ’ল ইহূদীরা এবং ‘দোয়াল্লীন’ (পথভ্রষ্ট) হ’ল নাছারারা’।[3]
[3]. তিরমিযী হা/২৯৫৪; ছহীহুল জামে‘ হা/৮২০২।
অর্থাৎ মুসলিম উম্মাহর অবস্থা বিগত ইহূদী-নাছারাদের ন্যায় হবে। তবে পার্থক্য এই যে, তারা তাদের নিকটে প্রেরিত এলাহী গ্রন্থ তাওরাত-ইঞ্জীলকে পরিবর্তন করে তা একেবারেই বিকৃত ও বিনষ্ট করে ফেলেছে। পক্ষান্তরে মুসলমানেরা সেটা করতে না পেরে বহু ক্ষেত্রে কুরআন ও হাদীছের ‘তাবীল’ অর্থাৎ দূরতম ব্যাখ্যা ও অপব্যাখ্যা করেছে। তাফসীরের নামে বহু বাজে গল্প রটনা করেছে। এমনকি সুযোগ মত হাদীছ তৈরী করে অথবা সেখানে কিছু যোগ-বিয়োগ করে ধর্মীয় বিধানকে নিজেদের মনমত করে নিয়েছে।
ফলে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর বদলে মুসলিম জীবনের ধর্মীয় বিষয়গুলির বহু ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাযহাব ও তরীকার ধর্মনেতাদের রচিত বিধানসমূহ তাক্বলীদে শাখছীর নামে চোখ বুঁজে মান্য করা হচ্ছে। এভাবে আল্লাহর নাযিলকৃত বিধানের পরিবর্তে মানবরচিত বিধান সমূহ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে ধর্মের নামে, যার পিছনে আল্লাহর কোন অনুমতি নেই।
এভাবেই মানুষ মানুষের রব বা ইলাহ হয়ে যাচ্ছে অথচ এরা টেরই পাচ্ছেনা!
 ===================================================================================== 
✔✔ মক্কার মুশরিকরা আর এ যুগের কতিপয় মুসলিমরা একই
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
শিরক আসলো কিভাবে?
~~~~~~~~~`~~~~~~~~~~~
আল্লাহ তাআলা মানুষকে পৃথিবীতে তাঁর এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেনঃ আমি জিন ও
মানব জাতিকে আমার এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি। (সূরা যারিয়াতঃ ৫৬)
সুতরাং আল্লাহ তাআলা মানুষকে
তাওহীদসহ প্রেরণ করেছেন। তাওহীদ তাদের সৃষ্টিগত স্বভাবের সাথে সামঞ্জস্যশীল। আর শির্ক উহার ভিতরে নতুনভাবে অনুপ্রবেশ করেছে মাত্র। রাসূল (সাঃ) বলেনঃ
( كل مولود يولد على الفطرة فأبواه يهودانه أو ينصرانه أو يمجسانه )
প্রতিটি শিশু ইসলামের উপর জন্মগ্রহণ করে। অতঃপর তার পিতা-মাতাকে তাকে ইহুদী বানায় বা খৃষ্টান বানায় অথবা অগ্নি পূজক বানায়। (বুখারী ও মুসলিম)
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ আদম ও নূহ (আঃ)এর মধ্যে ১০টি শতাব্দির ব্যবধান ছিল।
এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে সকলেই তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। শির্ক সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা
ছিল না। তারপর সৎ লোকদের নিয়ে বাড়াবিাড়ি করার কারণে তাদের মধ্যে সর্বপ্রথম শিক প্রকাশ
পায়। (ইবনে কাছীরঃ ৩/৪৩১)
সর্ব প্রথম নূহ (আঃ)এর জাতির মধ্যে শির্ক বিস্তার লাভ করে। তাই আল্লাহ তাআলা নূহ (আঃ)কে
তাদের হেদায়াতের জন্য প্রেরণ করেন।
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
আমি আপনার প্রতি ওহী পাঠিয়েছি, যেমন করে ওহী পাঠিয়েছিলাম নূহের প্রতি এবং সে সমস্ত
নবী-রসূলের প্রতি যারা তার পরে প্রেরিত হয়েছেন। (সূরা নিসাঃ ১৬৩)
নূহ (আঃ) যখন তাদেরকে শির্ক প্রত্যাখ্যান করে এককভাবে আল্লাহর ইবাদত করার প্রতি আহবান
জানালেন, তখন তাঁর জাতির লোকেরা বললঃ
وَقَالُوا لا تَذَرُنَّ آلِهَتَكُمْ وَلا تَذَرُنَّ وَدًّا وَلا سُوَاعًا وَلا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسْرًا
অর্থাৎ তারা বললঃ তোমরা তোমাদের উপাস্যগুলোকে পরিত্যাগ করো না। আর পরিত্যাগ করো না ওয়াদ, সুওয়া, ইয়াগুস, ইয়াউক ও নসরকে। (সূরা নূহঃ ২৩)
বুখারী ও মুসলিম শরীফে ইবনে আব্বাস (রাঃ)এর বর্ণনায় এসেছে আয়াতে বর্ণিত লোকগুলো ছিলেন
নূহ (আঃ)এর জাতি পূণ্যবান ব্যক্তি।
তারা যখন মারা গেল তখন শয়তান তাদেরকে বললঃ তোমরা তাদের মজলিসে তথা বসার স্থানে তাদের মূর্তি খাড়া করো এবং তাদের নামানুসারে এগুলোর নামকরণ কর। তখন তারা তাই করলো।
তবে তখন সেগুলোর এবাদত হয় নি। দীর্ঘ দিন পর শয়তান তাদের কাছে পুনরায় আগমণ করে তাদেরকে এগুলোর এবাদত করতে আহবান জানালো। তারা শয়তানের আহবানে সাড়া দিয়ে শির্কে লিপ্ত হলো।
✔✔ সুতরাং দেখা যাচ্ছে সৎ ও পূণ্যবান ব্যক্তিদের ছবি নির্মাণ ও তাদেরকে নিয়ে অতিরঞ্জন করার কারণেই পৃথিবীতে শির্কের বিস্তার লাভ করেছে।
আরবের লোকেরাও ইবরাহীম (আঃ)এর ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। আমর বিন লহাই নামক এক
ব্যক্তি সর্বপ্রথম ইবরাহীম (আঃ)এর দ্বীনের মধ্যে পরিবর্তন করে। সেই সর্বপ্রথম আরব উপদ্বীপে মূর্তি পূজা ও শির্কের আমদানী করে। অতঃপর এগুলোর এবাদত চালু হয়ে যায়। পার্শবর্তী দেশগুলোতেও পরবর্তীতে তা ছড়িয়ে পড়ে।
তখন আল্লাহ তাআলা মুহম্মাদ (সাঃ)কে শেষ নবী হিসেবে তাদের কাছে পাঠান। তিনি তাদেরকে
ইবরাহীম (আঃ)এর দ্বীনে ফেরত আসার ও এককভাবে আল্লাহর এবাদত করার আহবান জানান।
তারা তাঁর ডাকে সাড়া দিলো। আরবদেশ সমূহ থেকে শির্কের অবসান হল। মুসলমানেরা দীর্ঘ দিন
তাওহীদের বাণী বিশ্বময় প্রচার করলেন। পৃথিবী তাওহীদের আলোয় আলোকিত হলো। আল্লাহর দিন পূর্ণতা লাভ করলো।
✔✔ পরবর্তীতে আবার মুসলিম জাতির মাঝে মুর্খতার প্রসার হল। মুসলমানেরা ধর্মের নামে অন্যান্য ধর্মের আচরণাদীর অনুসরণ করতে লাগল। সুতরাং পুনরায় তাদের অধিকাংশের মাঝে শির্কের অনুপ্রবেশ ঘটলো।
✔✔ এ পর্যায়েও দেখা যায় যেই কারণে নূহ (আঃ)এর জাতির মধ্যে শির্ক প্রবেশ করেছিল, সেই একই কারণে এই উম্মতের মধ্যে তা প্রবেশ করেছে।
✔✔ পথভ্রষ্ট ও ভ্রান্ত আলেমদের কারণে এবং কবরসমূহ পাকা করার কারণে। উহা মূলতঃ ঘটেছিল অলী-আওলীয় এবং সৎ লোকদেরকে অতিরিক্ত সম্মান দেখাতে গিয়ে। এমন কি তাদের কবরের উপর গম্বুজ ও প্রাসাদ তৈরী করা হয়েছে। শুরু হয়েছে তাদের কাছে দুআ করা, মদদ প্রার্থনা করা এবং তাদের জন্য পশু যবাইসহ বিভিন্ন প্রকার শির্ক।
এই শির্ককে তারা উসীলা নামে নামকরণ করেছে। তাদের ধারণা অনুযায়ী এটি শির্ক নয় বা
অলী-আওলীয়াদের এবাদত নয়। তারা ভুলে গেছে মক্কার মুশরিকদের কথা। কারণ মক্কার মুশরিকরাও বলত আমরা লাত-মানাতসহ ইত্যাদির এবাদত করি না। এরা আমাদের জন্য আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করবে।
আল্লাহ তাদের কথা কুরআনে উল্লেখ করেছেন।
وَيَقُولُونَ هَؤُلاءِ شُفَعَاؤُنَا عِنْدَ اللَّهِ
অর্থাৎ এরা হচ্ছে আমাদের জন্য আল্লাহর দরবারে সুপারিশকারী। (সূরা ইউনুসঃ ১৮)
সুতরাং মক্কার মুশরিকদের মধ্যে যেই শির্ক ছিল বর্তমানে মাজার পূজারী নামধারী মুসলমানদের মধ্যে সেই একই শির্ক বিদ্যমান।
✔✔ তাদেরকে যখন লাত-মানাতসহ অন্যান্য মূর্তির উপাসনা ত্যাগ করে এককভাবে আল্লাহর এবাদত করতে বলা হত তখন তারা বলতঃ আমরা এদের এবাদত এজন্য করি যে তারা আমাদেরকে আল্লাহর দরবারে পৌঁছিয়ে দিবে। সরাসরি আমরা তাদের উপসনা করি না।
কুরআনে তাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
مَا نَعْبُدُهُمْ إِلا لِيُقَرِّبُونَا إِلَى اللَّهِ زُلْفَى
অর্থাৎ আমরা তাদের এবাদত এ জন্যেই করি, যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়।
(সূরা যুমারঃ ৩)
আপনি যদি বর্তমানে মাজারপন্থী ও পীরপন্থীদের প্রতিবাদ করেন তাহলে তারাও বলছে, আমরা
অলী-আওলীয়াদের এবাদত করি না; বরং তারা উসীলা মাত্র। তাদের উসীলায় আমরা আল্লাহর
উপাসনা করি এবং আমরা তাদের সুপারিশ কামনা করি মাত্র।
প্রিয় পাঠকগণ লক্ষ্য করুন! নূহ (আঃ)এর জাতি এবং মক্কাবাসীরাও সৎ লোকদের সরাসরি এবাদত
করত না, তারা বলতঃ এরা আমাদের উসীলা মাত্র। বর্তমান যামানার অলী-আওলীয়ার পূজাকারীগণ
একই কথা বলছে। ৩৬। পীরবাদ, নক্সাবন্দিয়া,চিশতিয়া,মোজাদ্দেদিয়া সহো যতসব তরিকা ,সব বাতিল। সকল পীরের সকল তরিকা শিরিক। ব্যাখ্যাঃ পীর শব্দটি ফারসী শব্দ। এর অর্থ বয়োজ্যেষ্ঠ মুরুব্বী, ইত্যাদি। ব্যবহারিক ভাবে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা পুংলিঙ্গ বা স্ত্রীলিঙ্গ উভয়কেই ‘পীর’ বলা হয়। মূলত সূফীবাদী বা তাসাওউফপন্থীদের গুরুকে ‘পীর’ নামে অভিহিত করা হয়। তৃতীয় হিজরীতে গ্রীক, পারসিক ও হিন্দু সভ্যতার সংমিশ্রণে পীর-মুরীদী প্রথার উৎপত্তি হয়। ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিমরা একসময় তাদের ধর্মীয় দিক-নির্দেশনা প্রদানকারী ব্যক্তিকে ‘পীর’ নামে অভিহিত করতো। যা এখনো বহু জায়গায় প্রচলিত আছে।বর্তমানে এ দেশে পীরবাদের মহোৎসব চলছে। যেমনঃ দেওয়ানবাগী, কুতুববাগী, রাজারবাগী, সুরেশ্বরী, ফরীদপুরী, এনায়েতপুরী, চন্দ্রপুরী, মাইজভান্ডারী, কেল্লাবাবা, খাজাবাবা, রেজভী, লেংটা বাবা, তালা বাবা, শিকল বাবা ইত্যাদি। এমন আরো বিভিন্ন নামে ঈমান বিধ্বংসী পীর রয়েছে। যারা আল্লাহ ও বান্দার মাঝে ‘অসীলা’ হিসাবে পূজিত হচ্ছে। তারা নিজেদের তৈরি বিভিন্ন জঘন্য বুলি, নিয়ম-নীতি ও নোংরা দর্শনের মাধ্যমে মুসলমানদেরকে যেমন ধোঁকা দিচ্ছে, তেমনি ভ্রান্তিতে নিপতিত করে পকেট সাফ করছে। জীবিত হোক বা মৃত হোক তাদের সন্তুষ্টির উপরে মুরীদের ইহকালীন মঙ্গল ও পরকালীন মুক্তি নির্ভর করে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা প্রচলিত রয়েছে। অথচ ইসলামী শরী‘আতে পীর ধরা বা মুরীদ হওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয কাজ। কারণ রাসূলুল্লাহ সাঃ সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈ এমনকি তাবে-তাবেঈনের যুগে পীর-মুরীদীর কোনো অস্তিত্ব ছিল না। মানুষ মূলতঃ পরকালে মুক্তির অসীলা হিসাবে পীর ধরে থাকে এ বিশ্বাসে যে, তারা তাদের জন্য আল্লাহর নিকটে সুফারিশ করবে। যে ব্যক্তি এরূপ বিশ্বাস করবে, সে বড় শিরকে লিপ্ত হবে, যা মানুষকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয় ও তার সমস্ত নেক আমল বরবাদ হয়ে যায় ।কেননা মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলুল্লাহ সাঃ কোনো পীরের অনুসরণ করার নির্দেশ দেননি। বরং মহান আল্লাহ তার ‘অসীলা’ তথা নৈকট্য অন্বেষণ করতে বলেছেন। পীরবাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি এই যে, তারা মানুষকে কুরআন-হাদীস থেকে মুখ ফিরিয়ে পীরের ধ্যানে মগ্ন রাখেন। পীরের কথিত কাশফ ও কেরামত এবং ভিত্তিহীন অলীক কল্পকাহিনী সমূহ এদের নিকট প্রধান দলীল হিসাবে গণ্য হয়। যুগে যুগে মানুষকে ধর্মের নামে শিরকে লিপ্ত করেছে এই শ্রেণীর লোকেরা। অথচ কাশফ ও কেরামত ইসলামী শরী‘আতের কোন দলীল নয়। সুতরাং এসব দল থেকে মানুষকে দূরে রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো আবশ্যক। আবার বলা হয়, হক্কানী পীর। পীর কখনো হক্কানী হয় না।পীর এবং ঠাকুর একই সূত্রে গাঁথা। যত বড় পীর, ততবড় শয়তান। তাই, বড় পীর ধরে আনন্দিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। ইসলামে পীর-মুরিদীর স্থান নেই। ইসলামে রয়েছে শিক্ষক ও ছাত্রের সম্পর্ক। আলেমগণ জনসাধারণের মধ্যে ইলম শিক্ষা দিবেন। একজন আলেম বা শিক্ষক তার ছাত্র ও অনুসারীদেরকে কুরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক দ্বীনের তালীম দিবেন, হেদায়েতের রাস্তা বাতলিয়ে দিবেন, তাওহীদ ও সুন্নাহর রাস্তা দেখাবেন, শিরক-বিদআত, কুসংস্কার, অপসংস্কৃতি ইত্যাদি থেকে সতর্ক করবেন। কিন্তু কখনো মানুষের নিকট বাইআত নিয়ে তাদেরকে মুরিদ বানাবেন না। কারণ, এটি একটা বিদআতি প্রথা। ইসলামে বায়‘আতের বিধান হল ইসলামী রাষ্ট্রের মুসলিম শাসকের হাতে মুসলিমদের বায়‘আত করা অপরিহার্য। ইসলামী খলীফা বা মুসলিম রাষ্ট্র প্রধান ব্যতীত অন্য কোন সাধারণ ইসলামী সংগঠনের নেতা,পীর বা আমীরের হাতে বাইয়াত করার কোনো বিধান নাই। প্রচলিত পীর সাহেবরা পবিত্র কুরআনের যে তিনটি আয়াতের সবচেয়ে বেশি অপব্যাখ্যা করে তাদের পীর মুরিদের ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছে আজ আমরা সেগুলোর সঠিক ব্যখ্যা জানার চেষ্টা করবো। (১) পীর সাহেবদের প্রথম দলিল: পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আল-বলেন, "আল্লাহ যাকে সুপথ প্রদর্শন করেন, সেই-ই সুপথপ্রাপ্ত হয়। আর তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি তার জন্য কোন সুপথ প্রদর্শনকারী অভিভাবক পাবে না।" সুরা কাহফ -১৭ এই আয়াত দিয়ে পীর সাহেবরা দলিল দিয়ে বলেন, অত্র আয়াতে বর্ণিত মুরশিদ বলতে পীরকে বুঝানো হয়েছে। সুতরাং পীর কোন নতুন শব্দ নয়; বরং এর বর্ণনা কুরআনে এসেছে। অথচ বিশুদ্ধ তাফসীর অনুযায়ী উক্ত আয়াতে ‘মুরশিদ’ বলতে সরাসরি আল্লাহকে বুঝানো হয়েছে। এখানে মুরশিদ শব্দের অর্থ পথ প্রদর্শনকারী। আল্লাহ মানুষের পথ প্রদর্শনকারী। তিনি যাকে পথ দেখান সেই কেবল পথ প্রাপ্ত হয়। পক্ষান্তরে তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাকে কেউ পথ প্রদর্শন করতে পারে না। পীর-ফকীরদের উক্ত দাবী সঠিক নয়। তাদেরকেও যদি আল্লাহ সঠিক পথ না দেখান তাহলে তারাও সঠিক পথ পাবে না। অর্থাৎ সকল মানুষের মুরশিদ আল্লাহ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, "আপনি যাকে পছন্দ করেন তাকে সৎপথে আনতে পারবেন না; বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করে থাকেন।" সুরা ক্বাসাস- ৫৬ (২) পীরদের দ্বিতীয় দলীল: "মনে রেখো (আখিরাতে) আল্লাহর অলী বা বন্ধুদের কোন ভয় নেই এবং তাঁরা চিন্তান্বিত হবে না।" সুরা ইউনুস-৬২ অতএব আল্লাহর অলীদের যেমন কোন ভয় ও চিন্তার কারণ নেই; তাদের ভক্তদেরও তেমন কোন ভয় ও চিন্তার কারণ নেই। আর স্বয়ং আল্লাহই তাদের অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন তিনি বলেন, "আর যে ব্যক্তি আমার অভিমুখী হয়েছে, তুমি তার রাস্তা অবলম্বন কর।" সুরা লোক্বমান -১৫ এই আয়াত দিয়ে পীর সাহেবরা দলিল দিয়ে বলেন,আর পীরেরাই যেহেতু আল্লাহর অভিমুখী হয়েছে এবং আল্লাহর বন্ধু হিসাবে পরিগণিত হয়েছে, তাই পীরের অনুসরণ-ই পরকালে মুক্তির একমাত্র উপায়। এখানে আল্লাহর অলীগণ বলতে কোন পীর-দরবেশকে বুঝানো হয়নি। বরং আল্লাহর অলী কারা তা তিনি পরের আয়াতেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, "তারাই আল্লাহর অলী বা বন্ধু, যারা ঈমান আনে এবং সর্বদা আল্লাহকে ভয় করে। তাদের জন্যই সুসংবাদ পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে।" সুরা ইউনুসঃ ৬৩-৬৪ সুতরাং আল্লাহর অলী হওয়ার জন্য দু’টি গুণের অধিকারী হতে হয়ঃ (১) ঈমানদার হওয়া (২) আল্লাহকে ভয় করা। সুতরাং আল্লাহকে ভয়কারী সকল ঈমানদার ব্যক্তিই তাঁর অলী বা বন্ধু। আর তাঁর অলী না হতে পারলে কেউ জান্নাতে যেতে পারবে না। তাই বিশেষ কোন ব্যক্তিকে আল্লাহর অলীর সার্টিফিকেট না দিয়ে নিজেকে আল্লাহর অলী হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অলী বা বন্ধুদের কোন ভয় ও চিন্তার কারণ নেই বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তিনি কুরআন মাজীদের কোথাও এমন কথা বলেননি যে, আল্লাহর অলী বা বন্ধুর ভক্ত বা অনুসারীদের কোন ভয় ও চিন্তার কারণ নেই। সুতরাং কোন পীরের মুরীদ হওয়ার মাধ্যমে পরকালে ভয় ও চিন্তা মুক্ত থাকার মিথ্যা আশা চরম মূর্খতা ছাড়া কিছুই নয়। পীরের মুরীদ হয়ে নয়, বরং নিজেকেই আল্লাহর অলী বা বন্ধু হিসাবে প্রস্তুত করার মাধ্যমে পরকালে ভয় ও চিন্তা মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। সুরা লোক্বমানের ১৫ নং আয়াতে আল্লাহর অভিমুখীদের রাস্তার অনুসরণের নির্দেশ দ্বারা কোন পীর-দরবেশের অনুসরণ বুঝানো হয়নি। বরং তা দ্বারা মুমিনদের রাস্তার অনুসরণ বুঝানো হয়েছে। সুত্রঃতাফসীর ইবনে কাছীর। (৩) পীরদের তৃতীয় দলীল: "হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর ও তাঁর অসীলা সন্ধান কর। আর আল্লাহর পথে জিহাদ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।" সুরা মায়েদা -৩৫ এই আয়াত দিয়ে পীর সাহেবরা দলিল দিয়ে বলেন, অত্র আয়াতে স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলাই অসীলা অনুসন্ধান করতে বলেছেন। সুতরাং পীরকে অসীলা মানার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের চেষ্টা করতে হবে। প্রথমত উক্ত আয়াতে বর্ণিত অসীলা বলতে কোন পীরের মুরীদ হওয়া উদ্দেশ্য নয়; বরং অসীলা হল,যা কিছুর মাধ্যমে ব্যক্তি তার উদ্দেশ্য (আল্লাহর নৈকট্য) হাছিল করতে পারে। সুত্রঃতাফসীর ইবনে কাছীর। সুতরাং অসীলা অর্থ পীর ধরা নয়; বরং সালাত, সিয়াম, হজ্জ, যাকাত সহ আল্লাহর পছন্দনীয় কর্মসমূহ সম্পাদনের মাধ্যমে তাঁর নৈকট্য হাছিল করা। অসীলার অর্থ পীর ধরা করলে তা পবিত্র কুরআনের অনেকগুলি আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক হবে। কেননা আল্লাহ কোন মাধ্যম ধরে তাঁকে ডাকতে নিষেধ করেছেন। যেমন আল্লাহ বলেন, "তোমরা আমাকে ডাক। আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।" সুরা মুমিন-৬০ এখানে তিনি কোন মাধ্যম দিয়ে ডাকতে বলেননি; বরং সরাসরি ডাকতে বলেছেন। তিনি আরো বলেন, "তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের পক্ষ হতে যা নাযিল করা হয়েছে, তা অনুসরণ কর এবং তাকে ছাড়া অন্য কোন অভিভাবকের অনুসরণ করো না। তোমরা সামান্যই উপদেশ গ্রহণ করে থাকো‌।" সুরা আ‘রাফ -৩ এমনকি তারা একথাও বলেন, যার পীর নেই তার পীর শয়তান, (নাউজুবিল্লাহ) অথচ এটি কুফরী আক্বীদা। ইসলামে পীরের কোন অস্তিত্ব নেই। কারণ আল্লাহ ও রাসূল সাঃ কোন পীরের অনুসরণ করার নির্দেশ দেননি। আল্লাহ বলেন, "হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তোমাদের আমীরের আনুগত্য কর।" সুরা নিসা-৫৯ পীর’ এদেশে সুফীদের একটি উপাধি। প্রাচীন ও আধুনিককালে মুসলমানদের তাওহীদ বিশ্বাসে ফিতনা সৃষ্টির সবচেয়ে বড় মাধ্যম হল ছূফীবাদ। পীরপ্রথা কোরআনের সাথে সাংঘর্ষিক। এটা কুকরি মতবাদ।পীরসাব নিজেকে আল্লাহর নিকট সুপারিশকারী দাবি করেন। অথচ, সে নিজেই জান্নাতে যাবে, এমন কোনো নিশ্চয়তা নাই। মহান আল্লাহ বলেন, "তিনিই তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং পাপরাশী ক্ষমা করেন, আর তোমরা যা কর তিনি তা জানেন।" সুরা শূরা- ২৫ অথচ, পীরবাদ এ আয়াতের বিপরীত ছবক দিয়ে থাকেন, "পীরের কাছে মুরীদ হওয়ার অর্থ আল্লাহ পাকের কাছে মানুষের বিক্রি হইয়া যাওয়া । পীর সহেব শুধু উছীলা মাত্র । বান্দা অসংখ্য গুণাহ করার ফলে আল্লাহ পাক তাহাকে কবুল করিতে চান না । পীর সাহেব আল্লাহ পাকের দরবারে অনুনয় বিনয় করিয়া ঐ বান্দার জন্য দুআ করিবেন, যাহাতে তিনি তাহাকে কবুল করিয়া নেন।" ভেদে মারেফত,পৃষ্ঠা নম্বর -৩৪ শরিয়তের কোনো হুকুম কোরআনের বিরুদ্ধে গেলে তা পরিত্যাগ করতে হবে। অথচ, পীরের সব হুকুম পীরসাব নির্দিধায় পালনের নির্দেশ দিয়ে থাকেন। "শরীয়তের কামেল পীর সাহেব যদি এমন কোন হুকুম দেন, যাহা প্রকাশ্যে শরীয়তের খেলাফ হয়, তবুও তুমি তাহা নিরাপত্তিতে আদায় করিবে। কেননা, তিনি রাস্তা সব তৈরী করিয়াছেন। তিনি তাহার উঁচু-নীচু অর্থাৎ ভাল-মন্দ সব চিনেন, কম বুঝের দরুণ জাহেরাভাবে যদিও তুমি উহা শরীয়তের খেলাফ দেখ কিন্তু মূলে খেলাফ নহে।" আশেক মাশুক বা এস্কে এলাহী পৃষ্ঠা -৪১ মৃত্যুর সময় কি পীর শয়তান থেকে মানুষকে বাঁচাতে পারে? কত উদ্ভট কল্পকাহিনী!!! "মৃত্যুর সময় যখন শয়তান ঈমান লুটিবার জন্য আসিবে, তখন পীর ছাড়া উপাই নাই।" ভেদে মা'রেফত,পৃষ্ঠা- ৩২ অথচ, আল্লাহ বলেন, "শয়তানের কুমন্ত্রনা যদি তোমাকে প্ররোচিত করে তবে তুমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ । যারা আল্লাহকে ভয় করে চলে, শয়তান যখন তাদেরকে কুমন্ত্রনা দিয়ে খারাপ কাজে নিমগ্ন করে, সাথে সাথে তারা আত্মসচেতন হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে । ফলে তৎক্ষণাৎ তাদের জ্ঞান চক্ষু খুলে যায়।" সুরা আরাফঃ ২০০-২০১ "আর আপনি বলুন ! হে আমার পালনকর্তা ! আমি আপনার কাছে শয়তানের প্ররোচনা ও কুমন্ত্রনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং আপনার কাছে আরো আশ্রয় কামনা করছি যে তারা (শয়তানরা) যেন আমার কাছে উপস্থিত হতে না পারে।" সুরা মুমিনুনঃ ৯৭-৯৮ "যারা ঈমানদার এবং যারা তাদের পালনকর্তার উপর ভরসা করে তাদের উপর শয়তানের কোনই কর্তৃত্ব-ক্ষমতা নেই।" সুরা নাহাল-৯৯ কেয়ামতের অবস্থা এতটা ভয়াবহ হবে যে, সেদিন নবী-রাসূলরাও ইয়া নফসি, ইয়া নফসি, বলতে থাকবে। অথচ, পীরসাব তখন নিজেকে সুপারিশকারী দাবি করছেন। "সত্যই কেয়ামতের অবস্থা এইরূপ (ভয়ানক) হইবে এবং আল্লাহর হুকুমে সেই দিন নিঃসন্দেহে পীরগণ থেকে সাহায্য পাওয়ার আশা করা যায়।" ভেদে মারেফত, পৃষ্ঠাঃ ২৫-২৬ "কামেল পীর হইলেন আখেরাতের উকীল স্বরুপ।" ভেদে মারেফত, পৃষ্ঠা -৬১ অথচ, আল্লাহ পাক বলেন, "দয়াময় আল্লাহ্‌ যাকে অনুমতি দেবেন এবং যার কথায় সন্তুষ্ট হবেন সে ছাড়া কারো সুপারিশ সেদিন (কিয়ামতের দিন) কোন উপকারে আসবে না।" সুরা ত্বাহা-১০৯ "আকাশে অনেক ফেরেশতা আছে । তাদের সুপারিশ কোন কাজে আসবে না, যতক্ষণ আল্লাহ্‌ যার জন্যে ইচ্ছা ও যাকে পছন্দ করেন, অনুমতি না দেন।" সুরা নাজম- ২৬ "হে মুহাম্মাদ সাঃ আপনি এই কুরআন দ্বারা তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করুন যারা তাদের পালনকর্তার কাছে একত্রিত হওয়াকে ভয় করে, সেদিন তিনি (আল্লাহ) ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী বন্ধু থাকবে না এবং কোন সুপারিশকারী হবে না।" সুরা আনআম-৫১ "ওরা কি আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিরাপদ হয়ে গেছে ? ক্ষতিগ্রস্থ জাতি ছাড়া কেউ আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিজেকে নিরাপদ ভাবতে পারে না।" সুরা আরাফ-৯৯ "কে সেই এমন ব্যক্তি যে আল্লাহর কাছে তাঁর অনুমতি ব্যতীরেকে কারো জন্যে সুপারিশ করতে পারবে ?" সুরা বাকারা- ২৫৫ "তাঁর অনুমতি ব্যতীত কেউ কারো জন্যে সুপারিশ করতে পারবে না।" সুরা ইউনুস- ৩ মুরীদদের সাহায্য বা সুপারিশ করার জন্যে পীর সাহেবগণ কি দুনিয়াতেই আল্লাহর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে নিয়েছেন ? কোথায় সেই অনুমতি পত্র, দয়া করে তারা দেখাবেন কি ? আল্লাহ্‌ বলেন, "তারা কি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে সুপারিশকারী গ্রহণ করেছে ? তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন ! তাদের কোন কিছুতে মালিকানা না থাকলেও এবং তারা না বুঝলেও (সুপারিশ করতে পারবে) ? বলে দিন, যাবতীয় সুপারিশ আল্লাহরই আয়ত্বাধীন, আসমান ও যমীনে তাঁরই সম্রাজ্য । অতঃপর তাঁরই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।" সুরা যুমারঃ ৪৩-৪৪ আল্লাহ্‌ ব্যতীত সুপারিশের কেউ মালিক নয়, অধিকারী নয়, অতএব তাঁর অনুমতি ব্যতীত কেউ সুপারিশ করার ক্ষমতা রাখে না । কেউ যদি আল্লাহর অনুমতি না পেয়েই নিশ্চিতভাবে আখেরাতে সুপারিশ করতে পারবে এমন দাবী দুনিয়াতে করে বসে, তবে সে যে নিজেকে আল্লাহর সমকক্ষ নির্ধারণ করে নিল এবং মুশিরক হয়ে গেল তাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই । বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে যে, হাশরের মাঠে মানুষ যখন বিপদে পড়ে যাবে এবং অসহনীয় আযাবে গ্রেপ্তার হবে, তখন তারা একজন সুপারিশকারী খুঁজে ফিরবে । যাতে করে তারা এই ভীষণ সংকট থেকে রেহাই পেতে পারে । প্রথমে তারা আদম (আঃ) এর কাছে গমণ করবে । অতঃপর পর্যায়ক্রমে নূহ, ইবরাহীম, মূসা, ঈসা (আঃ) এর কাছে যাবে । তাঁরা কেউ সুপারিশ করতে সাহস করবেন না । প্রত্যেক নবী নিজেদের অক্ষমতার কথা প্রকাশ করবেন । অবশেষে তারা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আসবে । তিনি মানুষকে এই বিপদজনক অবস্থা হতে মুক্ত করার জন্য আল্লাহর আরশের নীচে সিজদাবনত হবেন । আল্লাহর প্রশংসা ও গুণকীর্তণ করবেন । তখন আল্লাহ তাঁকে মাথা উঠিয়ে প্রার্থনা করার অনুমতি দিবেন । তিনি তখন সমগ্র মানুষের হিসাব-নিকাশের জন্যে আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবেন । আল্লাহ তাঁর দুআ এবং শাফাআত কবুল করবেন । এটিই হল মাক্বামে মাহমূদ বা সুমহান মর্যাদা, যা আল্লাহ তাকে দান করেছেন (এ সম্পর্কে দীর্ঘ হাদিস বর্ণিত হয়েছে; দেখুন সহীহ্ বুখারী, অধ্যায় তাওহীদ, অনুচ্ছেদঃ কিয়ামতের দিন নবী-রাসুল ও অন্যদের সাথে আল্লাহর কথা বলার বিবরণ, হা/৬৯৫৬; সহীহ্ মুসলিম, অনুচ্ছেদঃ জান্নাতের সর্বনিম্ন মর্যাদার অধিকারী ব্যক্তি হা/২৮৬) পুলসিরাত পার হতে পীর নয় তাওহীদ দরকারঃ পীর সাহেব আরো লিখেছেনঃ “হযরত থানবী লিখেছেন, জনৈক দরবেশ সাহেবের মৃত্যুর পর এক কাফন চোর কবর খুড়িয়া (দরবেশের) কাফন খুলিতে লাগিল । দরবেশ সাহেব চোরের হাত ধরিয়া বসিলেন । তা দেখে চোর ভয়ের চোটে চিৎকার মারিয়া বেহুঁশ হইয়া মরিয়া গেল । দরবেশ স্বপ্নযোগে তার এক খলীফাকে আদেশ করিলেন চোরকে তার পার্শ্বে দাফন করিতে । খলীফা এতে আপত্তি করিলে দরবেশ বলিলেনঃ কাফন চোরের হাত আমার হাতের সঙ্গে লাগিয়াছে, এখন কেয়ামত দিবসে ওকে ছাড়িয়া আমি কেমনে পুলছেরাত পার হইয়া যাইব ?” (ভেদে মারেফতঃ ২৭-২৮ পৃঃ) একমাত্র তাওহীদ ও নেক আমলই মানুষকে পুলসিরাত পার করিয়ে জান্নাতে নিয়ে যাবে । পীরের হাতে হাত রাখলে জান্নাত পাওয়া যাবে একথা কুরআন-সুন্নাতের কোথাও নেই। কোরআন পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, পীরপ্রথা একটি সুস্পষ্ট শিরিকি পন্থা। আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: "যারা ঈমান এনেছে এবং তারা তাদের ঈমানকে শির্কের সাথে মিশ্রিত করেনি, তাদের জন্য রয়েছে নিরাপত্তা আর তারাই হল সুপথ প্রাপ্ত।" সুরা আনআম- ৮২ "আর তাঁরা (মুশরেকরা) আল্লাহ ভিন্ন এমন কতিপয়ের ইবাদত করে, যারা তাদের কোন অপকারও করতে ‎পারেনা এবং তাদের কোন উপকারও করতে পারেনা, ও তারা বলে-এরা হল আল্লাহ তায়ালার কাছে ‎আমাদের সুপারিশকারী । (হে রাসূল!) আপনি বলে দিন, তোমরা কি আল্লাহ তায়ালাকে এমন বিষয়ের ‎সংবাদ দিচ্ছ যা আছে বলে তিনি (নিজেও) জানেন না, না আসমানে না জমিনে ! তিনি তাদের শিরকী ‎কার্যকলাপ হতে পবিত্র ও অনেক ঊর্দ্ধে।" সুরা ইউনুস-১৮ "বল, তাদেরকে ডাক, আল্লাহ ছাড়া তোমরা যাদেরকে (উপাস্য) মনে কর । তারা তো তোমাদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করার ও পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে না।" সুরা ইসরা- ৫৬ আল্লাহ আমাদের পীরপ্রথার শিরক থেকে হেফাজত করুক। আমিন।
 ===================================================================================== 




মন্তব্যসমূহ

  1. আপনি পারলে সরাসরি Shaykhul Islam
    Dr Muhammad Tahir ul Qadri এ মানুষটির সাথে চ্যালেঞ্জ করেন। অহেতুক বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তিমুলক কথা বলে,ঈমান নষ্ট করবেন না। কি পারবেন? পারবেন না!😁
    সাহস আছে? উনি গোল্ড ম্যাডেলিস্ট। আর আপনি ওনার সামনে কিছুইনা।
    আর এ সব বাংলায় নিজের জন্য সহায়ক অনুবাদী হাদিস এর হুদিস আপনি ভাল জানেন।
    খাতুনে জান্নাত ও উম্মুল মুমেনিন এর কি বিচার হবে? নবী রাসুলকে তো আপনি রোবট বানিয়ে ফেলেছেন,আচ্ছা জিবরীল (আঃ) রসুলুল্লাহর (সাঃ)কাছে সরর্ব মোট কত বার আসেছেন?
    ভাই গিরিশচন্দ্র সেন এর বাংলা কোরআন কি আপনাকে আরবিভাষার সঠিক অনুবাদ এনেদিতে
    পারছে।
    যান Shaykhul IslamDr Muhammad Tahir ul Qadri কাছে কিছু হেকমত নিয়ে আসেন।

    উত্তরমুছুন
  2. নাজিবুল্লা ভাই
    আপনার প্রোফাইলে দেখলাম আপনার নিজের তো কোন যোগ্যতাই নাই। কি কপি পেস্ট করেছেন নিশ্চয়,বাহ! ভাল অনেক কস্ট করেছেন সব বেকার।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সাড়ে তিন হাত বডিতে ইসলাম !

শর্ষীনা, ফুরফুরা, জৌনপুরী, ফুলতলী, সোনাকান্দা সহ সকল বালাকোটি পীরগনের শেরেকী আকীদা

নির্ভেজাল ইসলামের স্বরুপ সন্ধানে