কাফের কর্তৃক প্রচলিত আমল জায়েজ

 

কোন প্র্যাকটিসের সূচনা যদি বিধর্মীদের মাঝ থেকে হয়, তাহলে সেটা আমাদের মুসলিমদের জন্য করার কোন সুযোগ নেই। কারণ আমরা এটা করলে বিধর্মীদের অনুকরণ করা হবে, তাদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করা হবে। আর নবিজি বলেছেন, من تشبه بقوم فهو منهم "যে কোন জাতির সাদৃশ্য গ্রহণ করবে, সে ঐ জাতির অন্তর্ভূক্ত গণ্য হবে।"


চলুন, এই দাবির অসারতা ও অসংলগ্নতা নির্ণয় করা যাক।


বলা হচ্ছে, বিধর্মীদের মাঝ থেকে যা শুরু হয়, সেটা মুসলিমদের জন্য করা নিষিদ্ধ। এই দাবিদাররা যদি তাদের দাবিতে অটুট থাকতেন এবং দ্বিমুখিতার পরিচয় না দিতেন, তাহলে তারা আরবি ভাষায় কথা বলাও নিষিদ্ধ করতেন। কারণ আরবি ভাষা পৌত্তলিকদের কাছ থেকে এসেছে। আমাদের নবির পূর্বপুরুষ ছিলেন ইসমাইল আঃ। তিনি জুরহুম গোত্রের মুশরিক আরবদের কাছ থেকে আরবি ভাষা শিখেছিলেন এবং তার সন্তানরাও আরবিভাষী হয়। সুতরাং বিধর্মীদের মাঝ থেকে উৎপত্তি হবার কারণে যদি কোন বিষয় আমাদের জন্য নিষিদ্ধ হয়, তবে আজ থেকে আমাদের বাংলাতে কথা বলাও বন্ধ করে দিতে হবে।


আমাদের এমন কথা শুনে এই দাবিদারদের অনেকেই বলে উঠবেন, আমরা তো বিধর্মীদের মাঝ থেকে শুরু হওয়া সবধরণের কাজ বোঝাই নি। কারণ যেই প্রযুক্তি ও যন্ত্রের উপর নির্ভর করে আমরা ফেসবুক চালাচ্ছি, তার সবগুলোই বিধর্মীদের মাঝ থেকে আবির্ভাব ঘটেছে। তারা যখন নিজের কথার অসংলগ্নতা বুঝতে পারবে, তখন আরো কিছু শব্দ যুক্ত করে, তাদের দাবির গণ্ডিকে আরেকটু ছোট করবে। চা, কফি এগুলোও তাদের মাঝ থেকে শুরু হয়েছে। তারা বলবে, আমরা কেবল সেসব কাজ বোঝাচ্ছি, যেগুলো বিধর্মীরা তাদের বিধর্মীয় বিশ্বাস থেকে করত! জন্মদিন পালনের পেছনে পৌত্তলিকদের অনেক কুসংস্কার যুক্ত ছিল। তাই এটা আরবি ভাষা কিংবা চা-কফির সাথে তুলনীয় না।


রাসুলের সুন্নাহ ও আলেমদের বক্তব্য দিয়ে এই দাবিকে খণ্ডন করা যায়। কিন্তু সেটা করার আগে কমনসেন্স থেকে যুক্তি দেয়া যাক। এই যে সপ্তাহের ৭ দিনের নাম - শনি, রবি, সোম... এগুলো সবই যে হিন্দুদের পৌরাণিক দেবদেবীর নাম অবলম্বনে তৈরি, তা কি আপনারা জানেন? ইংরেজি মাসের নামগুলোর কথাই ভাবুন, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, এপ্রিল, মে... এগুলো সবই গ্রিক-রোমান দেবদেবীর নাম অবলম্বনে তৈরি। আমরা যে দিনে অসংখ্যবার ইংরেজি মাস ও বাংলা দিনের নাম মুখে উচ্চারণ করছি, এটা কি বিধর্মীদের কুসংস্কারের অনুকরণ হচ্ছে না? এটা কি নিষিদ্ধ?


রাসুলের সুন্নাহ বলে, বিধর্মীদের মাঝ থেকে কোন কিছুর উদ্ভব ঘটলেই সেটা হারাম হয়ে যায় না। যদি সেই কাজটি করার সময় বিধর্মীয় কুসংস্কার ও কুফরি বিশ্বাস আপনার মাঝে না থাকে, তবে সেই কাজ করতে কোন সমস্যা নেই।


عَنْ أبِي هُرَيْرَةَ ﵁، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قالَ: «لاَ فَرَعَ ولاَ عَتِيرَةَ» والفَرَعُ: أوَّلُ النِّتاجِ، كانُوا يَذْبَحُونَهُ لِطَواغِيتِهِمْ، والعَتِيرَةُ فِي رَجَبٍ


বুখারিতে আবু হুরায়রার হাদিসে আছে, রাসুল বলেছেন, "নয় ফারআ, নয় আতিরা"। বুখারি বলেন, ফারআ হল প্রথম শাবক, তারা এটা তাদের দেবদেবীর জন্য জবাই করত। আতিরা করত রজব মাসে।


ইমাম নববী ‘আল মাজমু’তে বলেন,


قال الشافعي رحمه الله فيما رواه البيهقي باسناده الصحيح عن المزني قال ما سمعت الشافعي يقول في الفرع هو شئ كان أهل الجاهلية يطلبون به البركة في أموالهم فكان أحدهم يذبح بكر ناقته أو شاته فلا يغدوه رجاء البركة فيما يأتي بعده فسألوا النبي صلى الله عليه وسلم عنه فقال فرعوا إن شئتم أي اذبحوا ان شئتم وكانوا يسألونه عما كانوا يصنعون في الجاهلية خوفا أن يكره في الاسلام فاعلمهم أنه لا مكروه عليهم فيه


“বায়হাক্বী থেকে বিশুদ্ধ সুত্রে বর্ণিত আছে, মুযানি বলেন, ইমাম শাফেয়ীকে আমি এই  বিষয়ে যা বলতে শুনেছি তা হচ্ছে, ফারআহ এমন একটি প্রথা ছিল, যা জাহেলি যুগের পৌত্তলিকরা ধনসম্পদে বরকত লাভের আশা করত। তারা পরবর্তী বাচ্চাদের মাঝে বরকতের আশায় উট অথবা মেষের প্রথম বাচ্চাকে জবাই করে মেরে ফেলত এবং তাকে বাচতে দিত না। সাহাবীরা নবীজিকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, তোমাদের ইচ্ছা হলে ফারআহ করতে পারো। অর্থাৎ তোমরা চাইলে জবাই করতে পারো। তারা প্রশ্ন করেছিল জাহেলি যুগের কর্মকাণ্ডের কথা মাথায় রেখে। এই ভয়ে যে ইসলামে হয়ত এটা অপছন্দনীয় হতে পারে। এতে নবি তাদের জানালেন যে, এই বিষয়ে কোন অপছন্দনীয়তা নেই।”


ইমাম মনসুর আল বুহুতী এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন,


(وَلَا يُكْرَهَانِ) أَيْ: الْفَرَعَةُ وَالْعَتِيرَةُ؛ لِأَنَّ الْمُرَادَ بِالْخَبْرِ نَفْيُ كَوْنِهِمَا سُنَّةً، لَا تَحْرِيمُ فِعْلِهِمَا وَلَا كَرَاهَتُهُ وَلَكِنْ إذَا لَمْ يَكُنْ عَلَى وَجْهِ التَّشْبِيهِ بِمَا كَانَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَهَذَا وَاضِحٌ لِحَدِيثِ «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ» .


হাদিসে বর্ণিত "নয় ফারআ, নয় আতিরা" কথার উদ্দেশ্য হল এটা জানানো যে, এই দুইটি কাজ করা সুন্নত নয়। হাদিসে এই কাজগুলোকে হারাম কিংবা মাকরুহ বলা হয় নি। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি এগুলো জাহেলি যুগের সাথে সাদৃশ্য অর্জনের নিয়তে করে তবে এর বিধান "যে কোন জাতির সাদৃশ্য গ্রহণ করবে সে তাদের দলভুক্ত" এই হাদিস থেকে স্পষ্ট। 


– কাশশাফুল ক্বিনা, ৩/৩২-৩৩।


এখানে আমরা দেখেতে পাচ্ছি যে, কোন একটি প্র্যাকটিস পৌত্তলিক সংস্কৃতি কিংবা কুসংস্কার থেকে জন্ম নিলেও সে কাজটি যদি সেই পৌত্তলিক চিন্তাভাবনা বর্জন করে করা হয়, তবে তা নিষেধাজ্ঞার অন্তর্গত হয় না।


সুতরাং 'যে জাতির সাদৃশ্য গ্রহণ করবে, সে জাতির অন্তর্ভূক্ত হবে' হাদিসটি সঠিকভাবে বোঝা প্রয়োজন। একজন মানুষ হিসেবে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের যেকোন মানুষের সাথে আপনার সাদৃশ্য থাকবে। একজন বিধর্মী যেভাবে হাত দিয়ে খায়, আপনিও তেমনি হাত দিয়ে খান, পা দিয়ে নয়। একজন বিধর্মী যেভাবে পোশাক পরে, আপনি তেমনি পোশাক পরেন। বিধর্মীদের বিরোধিতা করতে গিয়ে উলঙ্গ হয়ে থাকেন না। আপনার হাত দিয়ে খাওয়া কিংবা বস্ত্রাবৃত হওয়া এই হাদিসের ধমকির অন্তর্ভূক্ত নয়, কেননা আপনার অন্তরে এই কাজগুলো করার সময় "বিধর্মীদের সাদৃশ্য গ্রহণের" নিয়ত থাকে না। একইভাবে সাহাবায়ে কেরাম যখন ইসলাম আনার পর জাহেলি যুগ থেকে চলে আসা ফারআ ও আতিরা প্রথা অব্যাহত রাখেন, তখন তাদের মনে জাহেলি যুগের অনুকরণ করার কোন অনুপ্রেরণা থাকত না। আর তাই নবি তাদের এমনটি চালিয়ে যাওয়ার অনুমোদন দিয়েছিলেন। কিন্তু যদি কোন কাজ ইচ্ছাকৃতভাবে কাফিরদের অনুরূপ হবার জন্য কেউ করে, তবে সেটা নিষিদ্ধ হবে। আর এটাও কেবল এমন সব কাজের জন্যই যা কাফিররা তাদের কোন বিশেষ ধর্মীয় অনুভূতি থেকে করে। আপনি নিজেকে মুসলিম দাবি করে যখন বিধর্মীদের কোন প্রতীকী কাজের প্রতি আকৃষ্ট হন, যার মাধ্যমে তারা অন্যদের চেয়ে ভিন্নতা ও স্বাতন্ত্র লাভ করে, তবে এটা আপনার ঈমানের দূর্বলতা নির্দেশ করে। অর্থাৎ সমস্যাটা তখনই হয়, যখন আপনি কাজের অনুকরণের পরিবর্তে, কাজ যে করেছে অর্থাৎ কর্তা, তার প্রতি আকৃষ্ট থাকেন। দেখুন, হাদিসেও কিন্তু কওম বা জাতি শব্দটি এসেছে। আপনি যখন কোন জাতির প্রতি অনুরক্ত হয়ে তাদের কাজকর্ম অনুকরণ শুরু করেন, তখন আপনিও মানসিকভাবে সেই জাতির অন্তর্ভূক্ত হয়ে যান। কিন্তু কাজটি করার সময় যদি বিধর্মীদের প্রতি কোন ধরণের ভক্তি বা অনুরক্তি উপস্থিত না থাকে, তখন আপনার উপর আর হাদিসটি প্রয়োগ করা যায় না।


আরেকটি বিষয়। এমনও অনেক কাজ আছে, যার সূচনা পৌত্তলিক অনুভূতি বা বিশ্বাস থেকে হলেও কালক্রমে সেই কাজের সাথে ঐ অনুভূতি বা বিশ্বাসের সম্পর্ক দূর্বল হতে হতে একসময় হারিয়ে যায়। কিংবা কোন একটি কাজ একসময় কোন একটি জাতির স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকলেও সময়ের পরিক্রমায় সেটি সবার মাঝে ব্যাপক হতে হতে, সকল জাতি ও ধর্মের মানুষের মাঝে সমানভাবে ছড়িয়ে যায়। অর্থাৎ সেই কাজটি তখন আর কোন নির্দিষ্ট এক জাতির প্রতীক বা শি'আর থাকে না। অবস্থা যখন এমনই হয়, তখন আর সেই কাজকে বিস্মৃত অতীতের মানদণ্ডে বিচার করা যায় না। জন্মদিন উদযাপনও এখন এমন একটি বিষয়। উপমহাদেশে যখন ব্রিটিশরা আক্রমন করে, তখন ব্রিটিশদের বিরোধিতা করতে গিয়ে অনেক আলেম শার্ট, প্যান্ট, কোট, টাই পরা হারাম ঘোষণা দেন, ইংরেজি শিক্ষা নিষিদ্ধ করেন। কিন্তু শত বছর পরে এসে ইংরেজি এখন সারা বিশ্বের ভাষা, কোট-টাই-প্যান্ট-সুট হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-মুসলিম সকলের পোশাক। তাই এখন আর এই বিষয়গুলোকে সুদূর অতীতের প্রেক্ষাপট দিয়ে বিচার করা যাবে না। যেমন...


ফাতহুল বারীতে ইবনে হাজার আসকালানী বলেন,


وإنْ قُلْنا النَّهْيُ عَنْها مِن أجْلِ التَّشَبُّهِ بِالأعاجِمِ فَهُوَ لِمَصْلَحَةٍ دِينِيَّةٍ لَكِنْ كانَ ذَلِكَ شِعارُهُمْ حِينَئِذٍ وهُمْ كُفّارٌ ثُمَّ لَمّا لَمْ يَصِرِ الآنَ يَخْتَصُ بِشِعارِهِمْ زالَ ذَلِكَ المَعْنى فَتَزُولُ الكَراهَة


যদি কেউ বলে যে, এই পোশাক নিষেধ করার কারণ ছিল অনারবদের সাথে সাদৃশ্য অর্জন পরিত্যাগ করা, আর এটা ধর্মীয় স্বার্থ। কিন্তু এই পোশাক অনারবরা যখন কাফের ছিল, তখন এটা তাদের প্রতীক ছিল। কিন্তু বর্তমানে এটা আর তাদের স্বতন্ত্র কোন বিষয় নয় এবং এর প্রতীকী অর্থও হারিয়ে গেছে, তাই এই পোশাক পরার ব্যাপারে যেই অপছন্দনীয়তা সেটাও এখন আর বহাল নয়। (ফাতহুল বারী, ১০/৩০৮)


তায়ালিসা নামক পোশাকের ক্ষেত্রেও তিনি অনুরূপ কথা লিখেছেন,


وإنَّما يَصْلُحُ الِاسْتِدْلالُ بِقِصَّةِ اليَهُودِ فِي الوَقْتِ الَّذِي تَكُونُ الطَّيالِسَةُ مِن شِعارِهِمْ وقَدِ ارْتَفَعَ ذَلِكَ فِي هَذِهِ الأزْمِنَةِ فَصارَ داخِلًا فِي عُمُوم المُباح وقد ذكره بن عَبْدِ السَّلامِ فِي أمْثِلَةِ البِدْعَةِ المُباحَةِ 


ইহুদিদের ঘটনা বলে কেবল সেই সময়েই দলিল দেয়া সম্ভব, যে সময়ে তায়ালিসা পরিধান তাদের শিয়ার বা প্রতীক ছিল। কিন্তু বর্তমান যুগে এসে সেই প্রতীকী গুরুত্ব হারিয়ে গিয়েছে, আর তাই তায়ালিসা পরিধান করা বৈধতার গণ্ডিতে শামিল হবে। ইয বিন আব্দুস সালামও তাই একে নব উদ্ভাবিত বৈধ কাজের অন্তর্ভূক্ত করেছেন। (ফাতহুল বারী, ১০/২৮৫)


ইমাম ইবনে বাত্তাল আল মালেকি তার বুখারীর ব্যাখ্যাগ্রন্থে বলেন,


سئل مالك عن لباس البرانس أتكرهها، فإنها لباس النصارى؟ قال: لا بأس بها، وقد كانت تلبس هاهنا. وقال عبد الله بن أبى بكر: ماكان أحد من القراء إلا له برنس يغدو فيه وخميصة يروح فيها - شرح البخاري لابن بطال ، ٩/٨٧


ইমাম মালিককে বুরনুস পরা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি এটা অপছন্দ করেন, এটা তো খ্রিস্টানদের পোশাক? ইমাম মালিক বললেন, তাতে কোন সমস্যা নেই। আমাদের এখানে এই পোশাক পরার চল আছে। আব্দুল্লাহ বিন আবি বকর বলেন, এমন কোন কারী নেই যিনি সকালে বুরনুস, আর বিকালে খামিসা পরেন না। (৯/৮৭)


তো দেখুন, বুরনুস নামের পোশাকটি একসময় খ্রিস্টানদের স্বতন্ত্র পোশাক ছিল। কিন্তু কালক্রমে মুসলিমদের মাঝে এর প্রচলন এমনই বেড়ে যায় যে, কোরআনের কারীরা সকাল-সন্ধ্যায় এই পোশাক পরা শুরু করে। মদিনাতেও এই পোশাক ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। তার তাই ইমাম মালিক বলেন, আমাদের এখানে এই পোশাকের প্রচলন আছে। তাই এককালে এটা খ্রিস্টানদের প্রতীক হয়ে থাকলেও এখন আর এটা সমস্যাজনক না।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সাড়ে তিন হাত বডিতে ইসলাম !

শর্ষীনা, ফুরফুরা, জৌনপুরী, ফুলতলী, সোনাকান্দা সহ সকল বালাকোটি পীরগনের শেরেকী আকীদা

নির্ভেজাল ইসলামের স্বরুপ সন্ধানে