কে এই মাওলানা মওদুদী?


আমার নিরপেক্ষ অনুসন্ধান মতে, মাওলানা সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী (২৫ সেপ্টেম্বর ১৯০৩ – ২২ সেপ্টেম্বের ১৯৭) ছিলেন হিজরী চতুর্থদশ শতকের শ্রেষ্ঠতম ইসলামী মুজাদ্দিদ (সংস্কারক)। শ্রেষ্ঠতম হবার কারণ ছিল, তিনি ইসলামের প্রকৃত ধারক ও বাহক আহলে বায়েতে মোস্তফা (আ:) এর অধস্তন পুরুষ (শহীদে কারবালা সাইয়েদুনা হুসাইনের ৩৬ তম বংশধর) ছিলেন এবং ইসলামের সকল দিক নিয়ে যুক্তিপূর্ণ আলোচনা পেশ করেছেন। 


বর্তমানে মাওলানা শব্দটির অহরহ অপব্যবহার হলেও সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী ছিলেন সত্যিকার অর্থে মাওলানা। আরবী শব্দ মাওলানার অর্থ 'আমাদের (মুসলমানদের) অভিভাবক'। মুসলমানদের অভিভাবক হবার জন্য সাইয়েদুনা আলী (র.), সাইয়েদুনা হাসান (র.) ও সাইয়েদুনা হুসাইন (র.) এর মাঝে যেসব গুণের সমাবেশ ঘটেছিল, তা তাদের লিগ্যাসি বাহক সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদূদী (রহ.) এর মাঝেও ঘটেছিল। 


তবে এজিদী চিন্তার মুসলমান ও তাদের ধর্মজীবিরা উনাকে শত্রু ভেবেছেন এবং তাদের দ্বারা প্রভাবিত হুজুররা না বুঝে উনার বিরুদ্ধে ইসলামের বিকৃত ব্যাখ্যা করার অভিযোগ এনেছেন। শেষোক্ত হুজুরদের মাঝে ভারতের মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানী (রহ.), শায়খুল হাদীস যাকারিয়া কান্ধলবী (রহ.), মাওলানা মনযুর নোমানী (রহ.), মুফতী রশিদ আহমদ লুধিয়ানবী (রহ.) ও পাকিস্তানের ইউসুফ বানুরী (রহ.) অন্যতম। তাঁরা ইমাম হুসাইন (র.) ও আবদুল্লাহ বিন যুবাইর (র.) এর মত বিপ্লবী চিন্তাধারা লালন না করায় মুসলিম নামধারী ভন্ড ও কাপুরুষ সেক্যুলারদের অধীনে ব্যক্তিগত ভাবে ইসলাম চর্চার পক্ষে ছিলেন। মাওলানা মওদুদী এ চিন্তার বিরোধী হওয়ায় তিনি পাকিস্তানের হিজরত করার পর সেখানে একত্রে সেক্যুলার ও সেক্যুলার বান্ধব এজিদী চিন্তার ধর্মজীবি এবং তাদের দ্বারা প্রভাবিত হুজুরদের পক্ষ থেকে ভয়াবহ অপবাদ ও তথ্য সন্ত্রাসের শিকার হয়েছিলেন।  


তবে আরব দেশের ইসলামপন্থী গবেষকগণ মাওলানা মওদুদীকে মাথার উপর তুলে নিয়েছিলেন। ইসলামের সেবায় অবদান রাখার জন্য বিখ্যাত বাদশা ফয়সল পুরস্কার সর্বপ্রথম (১৯৭৮) মাওলানা মওদুদীকেই দেওয়া হয়েছিল। পুরস্কারের সে অর্থ তিনি জামায়াতে ইসলামীকে দান করে দেন। সেই সাথে সৌদি আরবের দাম্মামে মাওলানা মওদুদীর নামে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়। ইন্তেকালের পর থেকে এ পর্যন্ত মাওলানা মওদুদীকে নিয়ে আরব বিশ্বে অসংখ্য গবেষণা, থিসিস এবং জীবনীগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।


আমার অনুসন্ধান মতে, ইসলামপন্থী আরবদের মাঝে মাওলানা মওদুদীর মর্যাদা মিসরের শহীদ হাসানুল বান্না ও সাইয়েদ কুতুব শহীদের চেয়েও বেশি। তারা মাওলানা মওদুদীকে যুগ শ্রেষ্ঠ ইমাম হিসেবে স্মরণ করে থাকেন। এ বিষয়ে কিছুটা ধারণা পেতে শামের ইসলামী গবেষক উমর আল-আবসুর লেখা شخصية الإمام المودودي في الشعر الإسلامي المعاصر শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধটি পড়তে পারেন। লিঙ্ক-

https://www.odabasham.net/%D9%86%D9%82%D8%AF-%D8%A3%D8%AF%D8%A8%D9%8A/90245-%D8%B4%D8%AE%D8%B5%D9%8A%D8%A9-%D8%A7%D9%84%D8%A5%D9%85%D8%A7%D9%85-%D8%A7%D9%84%D9%85%D9%88%D8%AF%D9%88%D8%AF%D9%8A-%D9%81%D9%8A-%D8%A7%D9%84%D8%B4%D8%B9%D8%B1-%D8%A7%D9%84%D8%A5%D8%B3%D9%84%D8%A7%D9%85%D9%8A-%D8%A7%D9%84%D9%85%D8%B9%D8%A7%D8%B5%D8%B1

-

মাওলানা মওদুদীকে নিয়ে উনার সমসাময়িক ইসলামী চিন্তাবিদদের কিছু মতামত নীচে উল্লেখ হলো:

১. পাকিস্তানের আল্লামা ডক্টর ইকবাল (১৮৭৭-১৯৩৮) বলেছেন:

"إن هذا الشيخ يعرض دين الرسول صلى الله عليه وسلم بقلم مداده الدم".

অর্থ: "এ মাওলানা রসূলুল্লাহ (স.) এর দীনকে উনার রক্তের কালি দিয়ে উপস্থাপন করছেন।"


২. ইখওয়ানুল মুসলিমীনের তৃতীয় মুর্শিদে আম উমর তিলমিসানী -আলজেরিয়া- (১৯০৪-১৯৮৬) বলেছেন: 

إنهما بحق إماما الجيل الظاهران المنفردان.. وإنهما استمدا كل معلوماتهما ومناهجهما وأساليبهما ووسائلهما في الدعوة إلى الله من القرآن وسنة الرسول صلى الله عليه وسلم،

অর্থ: "তারা উভয়ে (ইমাম বান্না ও ইমাম মওদূদী) এ প্রজন্মের অনন্য সাধারণ নেতা। তাদের উভয়ে দাওয়াত ইল্লাল্লাহের ক্ষেত্রে কোরআন ও সুন্নাহ থেকেই জ্ঞান, নীতি, পদ্ধতি ও মাধ্যম গ্রহণ করেছেন।"


৩. ভারতের শায়খ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (.১৯১৩-১৯৯৯) বলেছেন: 

إنني لا أعرف رجلا أثر في الجيل الإسلامي الجديد، فكريا وعمليا مثل المودودي، فقد قامت دعوته على أسس علمية، أعمق وأمتن من أسس تقوم عليها دعوات سياسية، وردود فعل للاستعمار الأجنبي، وكانت كتاباته وبحوثه موجهة إلى معرفة طبيعة هذه الحضارة الغربية، وفلسفتها في الحياة وتحليلها تحليلا علميا، قلما يوجد له نظير في الزمن القريب.

অর্থ: "চিন্তা ও কর্মগত দিক থেকে নব ইসলামী প্রজন্মের উপর  মওদূদীর চেয়ে অধিক প্রভাব কেউ বিস্তার করেছেন বলে আমার জানা নেই। তার দাওয়াত বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত, যা রাজনৈতিক দাওয়াত ও উপনিবেশবাদের প্রতিক্রিয়াজনিত আন্দোলনের ভিত্তি থেকে অনেক গভীর ও অনেক মজবুত। উনার লিখনী ও গবেষণা এ পশ্চিমা সভ্যতার প্রকৃতি ও তার জীবন দর্শন উপলব্ধির তরে এবং তার বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ তুলে ধরার জন্য নিবেদিত, যার নজির নিকট অতীতে খুবই বিরল।"


৪. আল-আযহারের ডক্টর মুহম্মদ রজব বায়ুমী (১৯২৩-২০১১) বলেছেন:

والحق أن مفكرا كبيرا من طراز المودودي، يجب أن لا تخلو مكتبة في بيت مسلم من مؤلفاته، إذ يعطي المسلم ما قد لا يجده عند سواه، وكأنه في عطائه الفسيح الزاخر مؤيد بروح الله".

অর্থ: "সত্য হলো, মওদুদীর মত একজন বড় মাপের চিন্তাবিদের রচনাবলী প্রতিটি পাঠাগারে স্থান পাওয়া উচিত। কারণ, এতে মুসলমানরা এমন বিষয় পাবে, যা তারা অন্য কারো কাছে পাবে না। বিশাল এ রচনায় তিনি যেন আল্লাহর সাহায্য প্রাপ্ত ছিলেন।"


৫. মিসরের ডক্টর ইউসুফ কারাজাভী  (১৯২৬-২০২২):

والإمام أبو الأعلى المودودي كانت الأولوية عنده لمحاربة الجاهلية الحديثة، ورد الناس إلى الدين والعبادة بمعناها الشامل، والخضوع لـ "حاكمية الله" وحده، ورفض حاكمية المخلوقين، أيا كانت منزلتهم أو وظيفتهم، مفكرين أو قادة سياسيين.

অর্থ: "ইমাম মওদূদীর কাছে প্রাধান্যের বিষয় ছিল আধুনিক জাহেলিয়াতের সাথে যুদ্ধ করে পরিপূর্ণ অর্থে মানুষকে দীন ও ইবাদতের দিকে ফেরানো এবং একমাত্র আল্লাহর সার্বভৌমত্বের কাছে তাদেরকে আত্মসমর্পণ করানো। তিনি পদ, কর্ম, চিন্তা-দর্শন ও সমাজের নেতৃত্ব নির্বিশেষে সকল সৃষ্টির সার্বভৌমত্ব অস্বীকার করেছেন।"


৬. কুয়েতের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপদেষ্টা শায়খ আব্দুল্লাহ আল-আকীল (১৯২৮-জীবিত) বলেছেন:

والعلامة المودودي علم من أعلام الإسلام المعاصرين، ومفكر من مفكريه، وداعية من دعاته، آتاه الله الحكمة وبعد النظر، والعمق في الفهم، والصبر على العلم، والتأمل في الواقع، والدراسة الميدانية للأفكار الرائجة، والأوضاع السائدة، والتتبع لمصادر المعرفة وتمييزها وتوثيقها، والنقد الموضوعي لحضارة الغرب، بأخذ الصالح منها وطرح الضار، وتقديم الإسلام كحل لمشكلات الحياة في جميع جوانبها.

অর্থ: "আল্লামা মওদুদী এ যুগে ইসলামের বিখ্যাত ব্যক্তি, চিন্তাবিদ ও দাঈদের অন্যতম। মহান আল্লাহ তাঁকে প্রজ্ঞা, দূরদৃষ্টি, উপলব্ধির গভীরতা, জানার ধৈর্য্য, পরিস্থিতি নিয়ে ভাবনা, প্রচলিত চিন্তাধারা ও বিদ্যমান অবস্থার মাঠ পর্যায়ের পাঠ, জ্ঞানের উৎস অনুসরণ ও তা যাচাই-বাছাই এবং পশ্চিমা সভ্যতার গঠনমূলক সমালোচনার শক্তি দান করেছেন। তিনি তাদের উপকারী বিষয়গুলো গ্রহণ করতেন এবং ক্ষতিকর বিষয়গুলো ছুড়ে ফেলে দিতেন। তিনি মানব জীবনের সকল দিক সমূহের সমস্যার সমাধান হিসেবে ইসলামকেই পেশ করেছেন।"

সূত্র: 

عملاق الفكر الإسلامي المعاصر (أبو الأعلى المودودي)

- إعداد: نور محمد جمعة

أستاذ بالجامعة الإسلامية العالمية بإسلام آباد.

লিঙ্ক - https://ketabonline.com/ar/books/23701/read?part=1&page=1&index=864835

-

৭. কানাডিয়ান ইসলামী চিন্তাবিদ ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষক উইলফ্রেড ক্যান্টওয়েল স্মিথ (১৯১৬–২০০০) মাওলানা মওদুদীকে "আধুনিক ইসলামের সবচেয়ে নিয়মতান্ত্রিক চিন্তাবিদ" হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

সূত্র: Wilfred Cantwell Smith, Islam in Modern History, Princeton University Press, 1957, p. 233

-

মাওলানা মওদুদী ১৯৫৬ সালে শাম এবং এর কয়েক বছর পর মিসর ভ্রমণ করেন। মিসরের তৎকালীন শায়খুল আযহার আল্লামা মাহমুদ শালতুত محمود شلتوت মাওলানার সম্মানে একটি সভার আয়োজন করেছিলেন।

মাওলানা মওদুদী ১৯৬২ সালে সৌদি সরকারের আহ্বানে আন্তর্জাতিক ইসলামী সম্মেলনে যোগদান করেন এবং সরকারের অনুরোধে মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে নিজের মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন।

-

মাওলানা মওদুদী কোরআনের ব্যাখ্যা, হাদীস, আইন, দর্শন এবং ইতিহাসের মতো বিভিন্ন শাখায় প্রচুর কাজ করেছেন। তার লেখাগুলো মূলত উর্দুতে। পরে তার লেখাগুলো ইংরেজী, আরবী, হিন্দি, বাংলা, তামিল, তেলুগু, কন্নড়, বর্মি, মালয় এবং অন্যান্য অনেক ভাষায় অনুবাদ করা হয়। তিনি মুসলিম উম্মাহর কাছে ইসলামের আসল রুপ তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। সংস্কারক হওয়ার কারণে দ্বীনী জ্ঞান অর্জন ও প্রচারের ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত সচেতন ছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, "আমি অতীত ও বর্তমানের কারো কাছ থেকে দ্বীনকে বুঝবার চেষ্টা না করে সর্বদা কোরআন ও সুন্নাহ থেকে বুঝবার চেষ্টা করেছি। অতএব খোদার দ্বীন আমার ও প্রত্যেক মুমিনের কাছ থেকে কি দাবি করে, এ কথা জানার জন্যে আমি দেখার চেষ্টা করি না যে, অমুক বড়জন কি বলেন ও কি করেন। বরঞ্চ শুধু দেখার চেষ্টা করি যে, কোরআন কি বলে এবং তাঁর রসূল (স.) কি করেছেন।"


মাওলানা মওদুদী বিশ্বাস করতেন যে, মুসলিমদের জন্য রাজনীতি অপরিহার্য। তিনি মুসলিম বিশ্বে ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্রকে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের কুফল হিসেবে দেখতেন।


তিনি পাকিস্তানের একজন শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও ছিলেন। তিনি এশিয়ার বৃহত্তম ইসলামী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

-

জন্ম, শিক্ষা, কর্ম ও অবদান:


মাওলানা মওদুদী ১৯০৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ভারতের হায়দারাবাদের (বর্তমান মহারাষ্ট্রের) আওরঙ্গবাদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। উনার পিতার নাম সাইয়েদ আহমদ হাসান। তিনি পেশায় ছিলেন আইনজীবী। মাওলানা মওদুদী বংশীয় দিক দিয়ে সাইয়েদুনা হুসাইন (র.) এর ৩৬তম উত্তর পুরুষ। তাঁর ২৩তম পূর্বপুরুষ খাজা কুতুব উদ্দীন মওদুদ চিশতী (মৃত- ৫২৭ হিজরী) ভারতে চিশতিয়া তরিকার আদি পীর হিসেবে পরিচিত। তাঁর নামানুসারেই এ বংশের লোকজন ‘মওদুদী’ নামে পরিচিত। মওদুদী খান্দানের কয়েক প্রজন্ম বংশ পরম্পরায় দাওয়াত-তাবলীগ ও পীর-মুরিদির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।


সাইয়েদ মওদুদীর মাতার নাম রুকাইয়া বেগম। মায়ের দিক দিয়ে তিনি তুর্কি বংশোদ্ভূত। সাইয়েদ আহমদ হাসানের তিন সন্তানের মধ্যে তিনি সব থেকে ছোট ছিলেন। তাঁর নানা মির্যা কোরবান আলী বেগ খান একজন তুর্কী কবি ও সাহিত্যিক ছিলেন (১৮১৬-১৮৮১)। তিনি দিল্লির সুপরিচিত লেখক ও কবি, বিখ্যাত উর্দু কবি গালিবের বন্ধু ছিলেন। তবে সৈনিক বৃত্তিই তাঁর পূর্ব-পুরুষগণের আসল পেশা ছিল। মির্যা তোলক বেগ নামক তাঁর পূর্ব পুরুষ বাদশাহ আওরঙ্গজেব আলমগীরের আমলে ভারতে আগমন করে সেনা বিভাগে যোগদান করেন। মোগল বাদশাহ শাহ আলমের রাজত্বকাল পর্যন্ত উক্ত পরিবারের লোকজন কোন না কোন শাহী মসনদ অধিকার করেছিলেন। তবে মোঘল সাম্রাজ্যের পতনের পর তারা বিভিন্ন দিকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।


প্রখর মেধার অধিকারী সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদীর শিক্ষাজীবনের সূচনা হয় বাড়িতে গৃহশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে। তিনি তার পিতার হাতে এবং তার দ্বারা নিযুক্ত বিভিন্ন শিক্ষকের কাছ থেকে দীনি শিক্ষা লাভ করেন। তাঁর পিতার ইচ্ছা ছিল তাঁকে আলেম বানানো। নয় বছর বয়স পর্যন্ত তিনি তৎকালীন প্রসিদ্ধ আলেম আব্দুস সালাম নিয়াযীর কাছে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। এই শিক্ষার মধ্যে ছিল আরবি, ফারসি, সাহিত্য, কোরআন, ফেকাহ, ইসলামী আইন ও হাদীস শিক্ষা। তিনি মানতিকের (যুক্তিবিদ্যা) বইগুলিও অধ্যয়ন করেন। ১১ বছর বয়সে তিনি মিসরের কাসিম আমিনের লেখা বই المرأة الجديدة (নতুন নারী) আরবী থেকে উর্দুতে অনুবাদ করেন। এর কয়েক বছর পর তিনি পারস্যের বিখ্যাত দার্শনিক সদরুদ্দিন সিরাজী ওরফে মোল্লা সদরার বই 'আসফার' الحكمة المتعالية في الأسفار الأربعة العقلية এর প্রায় ৩,৫০০ পৃষ্ঠার অনুবাদ করেন। সাম্রাজ্যের পুনর্জীবনের ধারণা এবং মানুষের আধ্যাত্মিক পুনরুজ্জীবনের জন্য ইসলামী আইন (শরিয়া) শাসনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মোল্লা সদরার লেখা মওদুদীর চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করে, যার প্রতিচ্ছবি তার লেখা ও কাজে পাওয়া যায়।


শৈশবের গৃহশিক্ষক মাওলানা নিয়াযীর কাছ থেকে মাওলানা আরবি ব্যাকরণ, মাআনি ও বালাগাত শিক্ষা লাভ করেন। ১৯১৬ সালে ১৩ বছর বয়সে তাকে আল্লামা শিবলী নোমানীর প্রতিষ্ঠিত فوقانيه مدرسه 'ফওকানিয়া মাদরাসায়' রুশদিয়া শ্রেণীতে (৮ম শ্রেণী) ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তিনি 'ম্যাট্রিকুলেশন’ মানের ‘মৌলভি’ পাশ করেন। এরপর তিনি হায়দ্রাবাদের ঐতিহ্যবাহী দারুল উলূমে চলে যান। তিনি সেখানে আলিম তথা উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন। কিন্তু অধ্যয়নের ছয় মাসের মাথায় পিতার অসুস্থতার কারণে তাঁকে খেদমতের জন্য লেখাপড়া অসমাপ্ত রেখে ভূপালে চলে যেতে হয়। পিতার অসুস্থতায় উপার্জনের তাগিদে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় তার ইতি ঘটে।


১৯২০ সালে পিতা সাইয়েদ আহমদ হাসান মৃত্যুর পর মাওলানা মওদুদী ভুপাল থেকে দিল্লি চলে যান। জীবিকার প্রয়োজনে তিনি সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি পুনরায় জ্ঞানার্জনে মনোযোগ দেন তিনি। এসময় তিনি সমাজবিজ্ঞান, পশ্চিমা দর্শন এবং ইতিহাস অধ্যয়ন করার জন্য ইংরেজী ও জার্মান ভাষা শিখেন। এ সময় তিনি কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি না হলেও খ্যাতনামা আলেমদের কাছ থেকে ইলম হাসিল করেন এবং সনদ লাভ করেন। দিল্লির দারুল উলুম ফতেহপুর এর শিক্ষক মাওলানা শরিফুল্লাহ খানের তত্ত্বাবধানে তিনি ১৯২৬ সালের ১২ জানুয়ারি ‘উলুমে আকলিয়া, আদাবিয়্যা, বালাগাত ও ফুরুইয়াত’- এর সনদ অর্জন করেন। একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মাওলানা আশফাকুর রহমান কান্ধলভির কাছ থেকে ১৯২৭ সালে হাদিস, ফিকহ ও আরবি সাহিত্যে সনদ লাভ করেন। ১৯২৮ সালে সেখানে জামে তিরমিযি এবং মুয়াত্তায়ে মালেক সমাপ্তির সনদপ্রাপ্ত হন।

-

মাওলানা মওদুদী ১৯১৮ সালে মাত্র পনেরো বছর বয়সে কর্মজীবনে প্রবেশ করেছিলেন। তার বড়ো ভাই সাইয়েদ আবুল খায়ের মওদুদী বিজনৌর থেকে প্রকাশিত 'মদিনা’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। বড়ো ভাইয়ের সাথে দুই মাস কাজ করেন সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী। এভাবেই তার কর্মজীবনের সূত্রপাত হয়। 


মাওলানা মওদুদী ১৯২০ সালে ১৭ বছর বয়সে ‘সাপ্তাহিক তাজ’ পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হন । তার সম্পাদনায় পত্রিকাটি পরবর্তী সময়ে দৈনিকে রুপান্তরিত হয়। কিন্তু অল্প কিছুকাল পরেই ব্রিটিশবিরোধী সম্পাদকীয় লেখার কারণে তাজ পত্রিকার অফিসিয়াল সম্পাদক ও মালিক তাজ উদ্দিন সরকারী মামলায় পড়েন। তখন সাইয়েদ মওদুদী আবার জবলপুর ছেড়ে দিল্লি চলে আসতে বাধ্য হন।


১৯২২ সালে দিল্লিতে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা আহমদ সাঈদ ও মুফতি কেফায়ত উল্লাহর অনুরোধে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের মুখপত্র ‘মুসলিম’ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী। ১৯২৩ সালে সে পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ১৯২৪ সালে ‘আল-জমিয়ত’ নামে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের নতুন মুখপত্রের প্রকাশনা শুরু হয়। সাইয়েদ মওদুদীকে ‘আল-জমিয়ত’-এর সম্পাদক পদে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯২৮ সাল পর্যন্ত টানা দায়িত্ব পালনের পর জমিয়ত কর্তৃপক্ষের সাথে জাতীয়তার প্রশ্নে মতবিরোধ সৃষ্টি হলে তিনি পদত্যাগ করেন। চার বছর বিরতির পর ১৯৩২ সালে নিজ উদ্যোগে মাসিক ‘তরজুমানুল কুরআন’ প্রকাশনার মধ্য দিয়ে পুনরায় সাংবাদিকতায় জড়িত হন সাইয়েদ মওদূদী। উনার প্রতিষ্ঠিত এ মাসিক পত্রিকাটি পাকিস্তানের লাহোর থেকে এখনও নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে।

-

১৯২৬ উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতা স্বামী শ্রদ্ধানন্দ ‘শুদ্ধি আন্দোলন’ শুরু করে। তাদের পক্ষ থেকে অপপ্রচারণা চালিয়ে, লোভ-ভয় দেখিয়ে এবং চাপ সৃষ্টি করে কিছু নিঃস্ব অসহায় মুসলিমকে হিন্দু ধর্মে দীক্ষিত করা হয়। এ ঘটনা মুসলিমদের মাঝে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি করে। এ পরিস্থিতিতে দিল্লি শাহী জামে মসজিদে মাওলানা মুহাম্মদ আলী জওহর এ উস্কানীমূলক প্রচারণায় অতীব দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, "আহা! আজ যদি ভারতে এমন কোন মর্দে মুজাহিদ আল্লাহর বান্দা থাকতো, যে তাদের এসব হীন প্রচারণার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতো, তাহলে কতই না ভাল হতো!"


মাওলানা মুহাম্মদ আলী জওহরের এ কথায় প্রচন্ড প্রভাবিত হন সাইয়েদ মওদুদী। ১৯২৭ সালে উগ্র হিন্দুবাদী অপপ্রচারের জবাব এবং জিহাদের যৌক্তিকতা প্রমাণে তিনি জমিয়ত পত্রিকায় ‘আল-জিহাদ ফিল ইসলাম’ শীর্ষক প্রবন্ধ সিরিজ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করেন। পরবর্তী সময়ে তা বিরাট গ্রন্থ আকারে প্রকাশিত হয়। হিন্দুত্ববাদীদের অপপ্রচারের সমুচিত ও যৌক্তিক জবাব সম্বলিত বইটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। মহাকবি ডক্টর মুহাম্মদ ইকবাল বকইটি সম্পর্কে মন্তব্য করে বলেছিলেন, "জেহাদ, যুদ্ধ ও সন্ধি সম্পর্কে ইসলামী আইন-কানুন সম্বলিত এ গ্রন্থখানা অভিনব ও চমৎকার হয়েছে। প্রত্যেক জ্ঞানী ও সুধী ব্যক্তিকে গ্রন্থখানি পাঠ করতে অনুরোধ করছি।"


১৯৩২ সালে মাওলানা মওদুদীর নিজের উদ্যোগে মাসিক 'তরজুমানুল কুরআন' প্রকাশিত হবার পর তাঁর জিহাদ সম্পর্কিত সিরিজ লেখাগুলো সেখানে প্রকাশ করতে থাকেন। ১৯৩৩ সাল থেকে ১৯৪০ পর্যন্ত সময়ে তরজুমানুল কুরআনে সাইয়েদ মওদুদীর গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক গবেষণাপূর্ণ অনেক লেখা প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকার মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক চিন্তাধারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে যেতে থাকে। সমসাময়িক বিষয়, খিলাফত, ইসলামের পুনরুজ্জীবন, ব্যক্তিজীবনে ইসলামকে ফিরিয়ে আনা, ইত্যাদি বিষয়ে তিনি ধারাবাহিক ভাবে লিখতে থাকেন। এ সময় তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেন।


ইসলামের বুনিয়াদী শিক্ষা, সুদ ও আধুনিক ব্যাংকিং, ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন, ইসলাম ও জাতীয়তাবাদ, ইসলাম ও পাশ্চাত্য সভ্যতার দ্বন্দ্ব, ইসলামী সংস্কৃতির মর্মকথা, পর্দা, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুসলমান প্রভৃতি মূল্যবান গ্রন্থ এই সময়ে রচিত হয়। মওলানার জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ কাজ হচ্ছে তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন (উর্দু: تفہيم القرآن‎, ইংরেজী: Towards Understanding the Qur'an বাংলা: তাফহীমুল কুরআন)। উর্দু এই তাফসীরটি লিখতে তিনি তাঁর জীবনের বড় অংশ ব্যয় করেন। 

-

১৯৩৭ সালের ১৫ই মার্চ দিল্লির এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সাইয়েদ নাসির উদ্দিন শামসির কন্যা মাহমুদা বেগমের সাথে মাওলানা মওদুদীর বিবাহ সম্পাদিত হয়। তখনকার দিল্লির ধনী পরিবারগুলোর বিয়েতে লক্ষাধিক টাকার মোহরানা ধরা হলেও তা পরিশোধ করা হতো না। মাওলানা মওদূদী এ অনৈসলামিক রীতি প্রত্যাখ্যান করেন। ফলে মাত্র দুই হাজার টাকার মোহরানায় নিতান্ত অনাড়ম্বরভাবে তাঁর বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।


ইরানের ইসলামী বিপ্লবের নেতা ও শিয়া ইসলামের পণ্ডিত আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ্ খোমেনী ১৯৬৩ সালে মাওলানা মওদুদীর সাথে সাক্ষাত করেন। পরবর্তীতে আয়াতুল্লাহ খোমেনী মওদুদীর বইগুলো ফার্সি ভাষায় অনুবাদ করেন। 


মাওলানা মওদুদী ১৯৭৯ সালে ভক্তদের অনুরোধে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন। ১৯৭৯ এর ২২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে তার ইন্তেকাল হয়। পাকিস্তানের লাহোর শহরের ইসরা মহল্লায় তাঁকে দাফন করা হয়। তাঁর ইন্তেকালে মসজিদে হারামের তৎকালীন ইমাম ও খতীব শায়খ মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ আল-সুবাইল (রহ.) মুসল্লিদের নিয়ে গায়েবানা জানাজার নামায পড়েন।


নীচে মাওলানা মওদুদী (রহ.) এর রচিত বাংলায় অনুবাদ হওয়া শতাধিক বড়-ছোট বইয়ের তালিকা ও পিডিএফ লিঙ্ক দেওয়া হলো:


১। অর্থনৈতিক সমস্যার ইসলামী সমাধান – সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী

২। আজকের দুনিয়ায় ইসলাম – সাইয়েদ আবুল আলা মমওদুদী

৩। আদর্শ মানব – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৪। আধুনিক নারী ও ইসলামী শরিয়ত – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৫। আন্দোলন সংগঠন কর্মী – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৬। আল জিহাদ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৭। আল্লাহর পথে জিহাদ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৮। আসমাউল হুসনা – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৯। ইসলাম ও আধুনিক অর্থনৈতিক মতবাদ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

১০। ইসলাম ও জাতীয়তাবাদ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

১১। ইসলাম ও জাহেলিয়াত – সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী

১২। ইসলাম ও ধর্মহীন গণতন্ত্র – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

১৩। ইসলাম ও পাশ্চাত্য সভ্যতার দ্বন্দ্ব – সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী

১৪।ইসলাম ও সামজিক সুবিচার – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

১৫। ইসলাম পরিচিতি – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

১৬। ইসলামী অনুষ্ঠানের তাৎপর্য – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

১৭। ইসলামী অর্থনীতি – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

১৮। ইসলামী অর্থব্যবস্থার মূলনীতি – সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী

১৯। ইসলামী আইন – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

২০। ইসলামী আন্দোলনঃ সাফল্যের শর্তাবলী – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

২১। ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী  বা Desktop

০। ইসলামী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচী – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

২২। ইসলামী আন্দোলনের সঠিক কর্মপন্থা – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

২৩। ইসলামী এবাদাতের মর্মকথা – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

২৪। ইসলামী জীবন ব্যবস্থার মৌলিক রূপরেখা – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

২৫। ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

২৬। ইসলামী দাওয়াত ও তার দাবী – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

২৭। ইসলামী দাওয়াতের পথ – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

২৮। ইসলামী বিপ্লবের পথ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

২৯। ইসলামী রাষ্ট্র ও সংবিধান – সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী

৩০। ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের অধিকার – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৩১। ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন – সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী

৩২। ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রণয়ন – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৩৩। ইসলামী সংস্কৃতির মর্মকথা – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৩৪। ইসলামে মৌলিক মানবাধিকার – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৩৫। ইসলামের জীবন পদ্ধতি – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী অথবা Desktop

৩৬। ইসলামের দৃষ্টিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৩৭। ইসলামের নৈতিক দৃষ্টিক্ষণ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৩৮। ইসলামের বুনিয়াদী শিক্ষা – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৩৯। ইসলামের রাজনৈতিক মতবাদ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৪০। ইসলামের শক্তির উৎস – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৪১। ইসলামের হাকীকত – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৪২। ঈমানের হাকীকত – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৪৩। উপমহাদেশর স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুসলমান ২ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৪৪। একটি সত্যনিষ্ঠ দলের প্রয়োজন – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৪৫। একমাত্র ধর্ম – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৪৬। কাদিয়ানী সমস্যা – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৪৭। কুরআনের চারটি মৌলিক পরিভাষা – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৪৮। কুরআনের মর্মকথা – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৪৯। কুরআনের মহত্ত্ব ও মর্যাদা – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৫০। কুরবানীর তাৎপর্য – সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী

৫১। খতমে নবুয়্যাত – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৫২। খেলাফত ও রাজতন্ত্র – সাইয়েদ আবুল আ‘লা মওদুদী

৫৩। গীবত একটি ঘৃণ্য অপরাধ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী বা এটা

৫৪। জাতীয় ঐক্য ও গণতন্ত্রের ভিত্তি – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৫৫। জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশ্য ইতিহাস ও কর্মসূচী – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৫৬। জামায়াতে ইসলামীর ঊনত্রিশ বছর – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৫৭। জিহাদের হাকীকত – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৫৮। তাওহীদ রেসালাত ও আখিরাত – সাইয়েদ আবুল আ‘লা মওদুদী

৫৯। তাকদীরের হাকীকত – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৬০। দা‘য়ী ইলাল্লাহ দাওয়াতে ইলাল্লাহ – সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী

৬১। নবী জীবনের বৈশিষ্ট্য – সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী

৬২। নবীর কুরআনী পরিচয় – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৬৩। নামায রোযার হাকীকত – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৬৪। নির্বাচিত রচনাবলী ১ম খণ্ড – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৬৫। নির্বাচিত রচনাবলী ২য় খণ্ড – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৬৬। নির্বাচিত রচনাবলী ৩য় খন্ড – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৬৭। পত্রাবলী – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৬৮। পর্দা ও ইসলাম – সাইয়েদ আবুল আ‘লা মওদুদী

৬৯। ভাঙা ও গড়া – সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী

৭০। ভূমির মালিকানা বিধান – সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী

৭৩। মুমিনের করনীয় – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৭৪। মুরতাদের শাস্তি – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৭৫। মুসলিম নারীর নিকট ইসলামের দাবী – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৭৬। মুসলিম বিশ্বে ইসলামী আন্দোলনের কর্মপন্থা – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৭৭। মুহাররমের শিক্ষা – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৭৮। মোগল সাম্রাজ্য পতনের ইতিহাস – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৭৯। যাকাতের হাকীকত – সাইয়েদ আবুল আ‘লা মওদুদী

৮০। যুগ জিজ্ঞাসার জবাব ১ম খন্ড – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৮১। যুগ জিজ্ঞাসার জবাব ২য় খন্ড – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৮২। রাসায়েল ও মাসায়েল – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৮৯। রাহমাতুল্লিল আ‘লামীন – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৯০। শান্তির পথ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী৯১। শিক্ষাব্যবস্থা ইসলামী দৃষ্টিকোণ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী৯২। সত্যের সাক্ষ্য – মাওলানা সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী

৯৩। সাহাবায়ে কিরামের মর্যাদা – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৯৪। সীরাতে রাসূলের পয়গাম – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

৯৫। সীরাতে সরওয়ারে আলম ১ম খণ্ড – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৯৬। সীরাতে সরওয়ারে আলম ২য় খণ্ড – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৯৭। সীরাতে সরওয়ারে আলম ৩য় ও ৪র্থ খণ্ড – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৯৮। সীরাতে সরওয়ারে আলম ৫ম খণ্ড – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

৯৯। সুদ ও আধুনিক ব্যাংকিং – সাইয়েদ আবুল আ‘লা মওদুদী

১০০। সুন্নতে রাসুলের আইনগত মর্যাদা – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী

১০২। স্বামী স্ত্রীর অধিকার – সাইয়েদ আবুল আ‘লা মওদুদী

১০৩। হজ্জের হাকীকত – সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী

১০৪। হেদায়াত – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী


বইগুলোর পিডিএফ ফ্রি ডাউনলোড করতে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন।

-

https://datafromrony.wordpress.com/%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%93%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%87%E0%A6%A6-%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%86/

-

শেষ কথা

মাওলানা মওদুদী (রহ.) আহলে বায়েতে মোস্তফা (আ:) এর গৃহে জন্মগ্রহণকারী ইসলামের একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। জামায়াতে ইসলামীর বিরোধী অথবা দুনিয়াবী ধান্দার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সাথে সম্পৃক্ত হওয়া কেউই কেয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করেও এ নক্ষত্রের ছড়ানো আলো নিভিয়ে দিতে পারবে না।

উল্লেখ্য, 'মোগল সাম্রাজ্য পতনের ইতিহাস' শীর্ষক গ্রন্থে মাওলানা মওদুদী (রহ.) মোগল শাসকদের পতনের জন্য তাদের ভোগবিলাসী জীবন ও তাজমহলের মত অতি বিলাসী অসংখ্য স্থাপনার অপচয়কে দায়ী করেছেন। অবশ্যই একই কারণে স্পেনেও মুসলমানদের পতনে হয়েছিল। তবে ইদানিং মুসলিম লীগের জাহেলী জাতীয়তাবাদী চিন্তা লালনকারী ইশরাক নামের এক যুবকসহ জামায়াত-শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু লোক মাওলানা মওদুদীর সাথে প্রকাশ্যে বা গোপনে দ্বিমত পোষণ করে পশ্চিমা পূঁজিবাদী চিন্তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে। ভোগবাদী কুফরী সভ্যতার অসার উন্নয়ন ও আরব উপদ্বীপের বেদুইনদের উঁচু উঁচু টাওয়ার দেখে তারা বিভ্রান্ত। আর এতে করে তারা একসময়ের তুখোড় মুসলিম লীগ নেতা শেখ মুজিবের মত সরাসরি ইসলাম থেকেই বিচ্যুত হয়ে ফ্যাসিবাদের সৈনিক হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা হচ্ছে আমার।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সাড়ে তিন হাত বডিতে ইসলাম !

শর্ষীনা, ফুরফুরা, জৌনপুরী, ফুলতলী, সোনাকান্দা সহ সকল বালাকোটি পীরগনের শেরেকী আকীদা

নির্ভেজাল ইসলামের স্বরুপ সন্ধানে